বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিশৈশব:ভাষা/তেলুগু

উইকিবই থেকে

এই ভাষাটি লেখার কোন পদ্ধতি(গুলি) ব্যবহার করে?[সম্পাদনা]

তেলুগু লেখা হয় আধুনিক তেলুগু লিপি ব্যবহার করে, এই লিপি উদ্ভূত হয়েছিল বিজয়নগরের বিজয়া লিপি থেকে; এটি কন্নড় লিপির অনুরূপ। লাতিন বর্ণমালার মতো, তেলুগু বর্ণমালাতে অক্ষর হিসেবে স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ রয়েছে। উপরন্তু, এখানে, স্বরবর্ণ এবং ব্যঞ্জনবর্ণ সমন্বিত অক্ষর রয়েছে, যেটি লাতিন বর্ণমালায় নেই! উদাহরণস্বরূপ, তেলুগু লিপি ব্যবহার করে 'প' উপস্থাপন করতে আমাদের ব্যঞ্জনবর্ণ ప్ (প্) -এর সাথে একত্রিত করতে হবে স্বরবর্ণ అ (অ) কে এবং তৈরি হবে ప (প)। এই ধরনের অক্ষরকে সহজভাবে গুনিন্তালু বা স্বর-ব্যঞ্জনবর্ণ বলা হয়। তেলুগু লিপিতে ১৬টি (+২ / +৩) স্বরবর্ণ, ৩৯টি ব্যঞ্জনবর্ণ এবং ৬২৪টি স্বর-ব্যঞ্জনবর্ণ (১৬টি স্বরবর্ণ x ৩৯টি ব্যঞ্জনবর্ণ = ৬২৪টি স্বরবর্ণ-ব্যঞ্জনবর্ণ) রয়েছে। এ ছাড়া এখানে আরসুন্না নামে একটি বিশেষ বর্ণ রয়েছে (ఁ) যাকে একটি ব্যঞ্জনবর্ণ বা স্বরবর্ণ হিসাবে আলাদা করে শ্রেণীবদ্ধ করা হয় না। সুতরাং, সম্পূর্ণ লিপিটি ৬২৫টি অক্ষর নিয়ে গঠিত! যদিও এগুলির অনেক এখন ব্যবহার নাও হতে পারে। উচ্চারণ অনুসারে, লিখিত রূপ কথ্য রূপ থেকে আলাদা হতে পারে। তেলুগুতে, স্বরবর্ণকে বলা হয় আচ্চালু যার অর্থ আত্মা-অক্ষর, ব্যঞ্জনবর্ণকে বলা হয় হাল্লালু, যার অর্থ দেহ-অক্ষর এবং স্বর-ব্যঞ্জনবর্ণগুলিকে গুনিন্তালু বলা হয় যার অর্থ দেহ এবং আত্মা অক্ষর। কেন স্বরধ্বনিকে আত্মা বলা হয় সে সম্পর্কে তোমার কি কোন ধারণা আছে? এর উত্তর হল তারা শব্দহীন ব্যঞ্জন বর্ণকে (দেহ) জীবন (শব্দ) দেয়! তুমি এখন যে অক্ষরগুলি পড়ছ তার থেকে তেলুগু লিপি একটু আলাদা হয়। উদাহরণস্বরূপ, তেলুগু লিপিতে লেখা তেলুগু শব্দটি বাম দিকের ছবিতে রয়েছে।

কত মানুষ এই ভাষায় কথা বলে?[সম্পাদনা]

প্রায় ৭.৪ কোটি (৭৪ মিলিয়ন) মানুষের কাছে তেলুগু ভাষা হল তাদের মাতৃভাষা। হিন্দি এবং বাংলার পরে এটি ভারতে তৃতীয় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা।

এই ভাষা কোথায় বলা হয়?[সম্পাদনা]

তেলুগু ভাষাটি প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ ভারতে কথ্য একটি ভাষা। এটি দ্রাবিড় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। যাদের মাতৃভাষা তেলুগু নয় এমন মানুষ ধরলে, শুধুমাত্র অন্ধ্র প্রদেশেই প্রায় ৯ কোটি (৯০ মিলিয়ন) মানুষ তেলুগু ভাষায় কথা বলেন। তবে তেলুগু ভাষাভাষীর মানুষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ফিজি দ্বীপপুঞ্জ, মরিশাস এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতেও উপস্থিত রয়েছেন, যেখানে এই ভাষায় কথা বলার মানুষ ভ্রমণ করে চলে এসেছেন।

এই ভাষার ইতিহাস কি?[সম্পাদনা]

তেলুগু বিশ্বের প্রাচীনতম ভাষাগুলির মধ্যে একটি, এই ভাষার প্রাচীন রূপটি ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দেও পাওয়া গেছে। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে প্রাথমিক শিলালিপি পাওয়া যায়। কিন্তু সঠিক সাহিত্যকর্ম শুরু হয় পাঁচ শতাব্দী পরে ১১ শতকে। ভারতের প্রাচীনতম ভাষা সংস্কৃত, আধুনিক সময়ের তেলুগু ভাষার ওপর একটি বিশাল প্রভাব ফেলেছে এবং এর অনেক শব্দ তেলুগু ভাষায় প্রবেশ করেছে। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের রাজা শ্রীকৃষ্ণ দেবরায় তেলুগু ভাষাকে সর্বোচ্চ আসন দিয়েছিলেন। তাঁর শাসনকালে তেলুগু অত্যন্ত সম্মানিত ভাষা ছিল এবং এটি রাজ্যের ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হত।

এই ভাষার কিছু বিখ্যাত লেখক বা কবি কারা?[সম্পাদনা]

নান্নয়াভট্টারকুড়ু ছিলেন তেলুগু ভাষায় প্রথম কবি, তাঁকে "আদি কবি" হিসেবে সম্বোধন করা হয়। আদি কবির অর্থ প্রথম কবি। তিনি ১০২০ খ্রিস্টাব্দে মহাভারত মহাকাব্যকে সংস্কৃত থেকে তেলুগুতে অনুবাদ করেন।

এই ভাষার কিছু মৌলিক শব্দ কি যা আমি শিখতে পারি?[সম্পাদনা]

తెలుగు - তেলুগু
వెలుగు - আলো
బ౦తి - বল
ఆవు - গরু
అమ్మ - মা

একটি সহজ গান/কবিতা/গল্প কি যা আমি এই ভাষায় শিখতে পারি?[সম্পাদনা]

নিচে ভেমানার একটি বিখ্যাত কবিতা আছে :

উপ্পু করপুরম্বু, ওক্কা পলিকানুন্দু,
চুড়া চুড়া রুচুলা, জাদা ভেরিয়া,
পুরুষুলান্দু পুণ্য পুরুষুলু ভেরিয়া,
বিশ্ব ধবি রামা বিনুরা ভেমা।

অর্থ:

"লবণ এবং কর্পূরের চেহারা একই রকম। শুধু স্বাদের দ্বারাই এদের পার্থক্য করা যায়। একইভাবে, পুরুষ ও মহাপুরুষদের মধ্যে পার্থক্য থাকবে যদিও তারা একই রকম দেখতে হবে। হে বিশ্বজগতের প্রভু রাম, ভেমের কথা শুনুন।"

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]