বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিশৈশব:ভাষা/সংস্কৃত

উইকিবই থেকে

এই ভাষায় কোন লিখন পদ্ধতি (গুলি) ব্যবহৃত হয়?[সম্পাদনা]

সংস্কৃত বিশ্বের প্রাচীনতম লিখন পদ্ধতিগুলির মধ্যে অন্যতম দেবনাগরী হরফে লেখা হয়। অন্যান্য কয়েকটি ভাষা যেমন হিন্দি এবং মারাঠীও দেবনাগরীতে লেখা হয়, কিন্তু সংস্কৃত ভাষাতেই প্রথম এই লিখন পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে সংস্কৃত একটি লিখিত ভাষা ছিল না এবং যখন থেকে এটি লেখা শুরু হল, দেবনাগরী আদর্শ রূপে গণ্য হওয়ার আগে পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন ধরনের হরফ ব্যবহৃত হয়েছিল।

কত সংখ্যক মানুষ এই ভাষায় কথা বলেন?[সম্পাদনা]

বিশ্বের দুই লক্ষেরও (২০০,০০০) বেশি মানুষ সাবলীলভাবে সংস্কৃত ভাষা বলতে পারেন। সংস্কৃত একটি প্রাচীন ভাষা এবং বেশিরভাগ পুরোহিত ও বহু ধর্মগ্রন্থ সহ বিভিন্ন গ্রন্থে পন্ডিত ব্যক্তি এই ভাষা ব্যবহার করতেন। অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় এবং হিন্দু ধর্মে সংস্কৃতের গুরুত্বের কারণে অনেক মানুষ কমপক্ষে একটু হলেও সংস্কৃত জানেন।

কোন জায়গায় এই ভাষায় কথা বলা হয়?[সম্পাদনা]

প্রাচীনকালে সংস্কৃত বহুল ব্যবহৃত হত, কিন্তু বর্তমানে বিশ্বের খুব কম জায়গাতেই এই ভাষায় কথা বলা হয়। এই ভাষার উৎপত্তি ভারতেই এবং ভারতের কয়েকটি জনগোষ্ঠী এখনও সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে। অনেক এশীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীও সংস্কৃত বলতে পারেন। হিন্দু ধর্মের পবিত্র রচনাবলী এবং প্রশস্তি-তে এই ভাষার সন্ধান মেলে। যদিও দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি অঞ্চলে এটি নিয়মিতভাবে ব্যবহৃত হত বলে জানা যায়। ভারতের অনেক প্রত্যন্ত গ্রামে আজও সংস্কৃত ভাষা ব্যবহৃত হয়। ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের সরকারী ভাষা সংস্কৃত।

এই ভাষার ইতিহাস কী?[সম্পাদনা]

সংস্কৃত ভাষার ব্যুৎপত্তি নিয়ে অনেক মতভেদ আছে। এক মতানুযায়ী, আর্যরা পশ্চিম থেকে ভারতে আসার সাথে সাথেই তাদের ভাষা এদেশে প্রচলিত হয়। সংস্কৃত একটি প্রাচীন ভাষা এবং ইউরোপের লাতিন ভাষার সঙ্গে তুলনীয়। বিশ্বের প্রাচীনতম গ্রন্থটি সংস্কৃত ভাষাতেই লেখা হয়েছিল। উপনিষদগুলি সম্পূর্ণ হওয়ার পরে, স্তরবিন্যাসের কারণে সংস্কৃত ম্লান হয়ে যায়। সংস্কৃত খুব জটিল এবং সমৃদ্ধ ভাষা। অনেক আধুনিক ভারতীয় ভাষার উৎস এই ভাষা, ঠিক যেমন ইউরোপের ফরাসি ও স্প্যানিশ ভাষার উৎপত্তি হয়েছে লাতিন ভাষা থেকে।

সংস্কৃতকে উচ্চস্তরের ভাষা বলে মনে করা হত এবং আধিকারিক, সম্রাট, অভিজাত ব্যক্তি প্রমুখ এই ভাষায় কথা বলতেন। সাধারণ মানুষের পক্ষে সংস্কৃত বুঝতে পারা কঠিন ছিল। সংস্কৃত কালক্রমে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যেতে থাকে কিন্তু ধার্মিক মানুষ, পন্ডিত ব্যক্তি এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা এই ভাষাকে জীবিত রাখে।

এই ভাষার বিখ্যাত লেখক বা কবি কারা?[সম্পাদনা]

ব্যাসদেব, বাল্মীকি, কালিদাস, ভাস, ভর্তৃহরি এবং চাণক্যের মতো অনেক প্রাচীন লেখক সংস্কৃত ভাষায় লিখেছেন। একটি সমৃদ্ধ ভাষা এবং এটিকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্য তাঁরা খ্যাতি অর্জন করেন। ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারত সহ বেদ, উপনিষদ এবং সুভাষিতরত্নানি সংস্কৃত ভাষায় লেখা হয়েছিল।

এই ভাষার কয়েকটি প্রাথমিক শব্দ কী যা আমি শিখতে পারি?[সম্পাদনা]

দেবনাগরী লাতিন অনুবাদ
शून्य shoonya শূন্য
एकम् ekam এক
द्वी dvi দুই
त्रीणि trINi তিন
चत्वारि Catvāri চার
पंच pancha পাঁচ
षट ShaTa ছয়
सप्त sapta সাত
अष्ट ashTa আট
नव nava নয়
दश dasha দশ
एकादश Ēkādaśa এগারো

এই ভাষার একটি সহজ গান/কবিতা/গল্প কী যা আমি শিখতে পারি?[সম্পাদনা]

সংস্কৃত[সম্পাদনা]

कर्मण्येवाधिकारस्ते मा फलेषु कदाचन।

मा कर्मफलहेतुर्भूर्मा ते सङ्गोस्त्वकर्मणि॥

—श्रीमद्भगवद्गीता (२:४७)

বাংলা বর্ণে[সম্পাদনা]

কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।

মা কর্মফলহেতুর্ভূর্মা তে সঙ্গোস্ত্বকর্মণি।।

—শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (২:৪৭)

বাংলা অনুবাদ[সম্পাদনা]

শুধু কর্ম করে যাও,

কখনও ফলের আশা কোরো না;

কর্মফলের আশাকে তোমার উদ্দেশ্য হতে দিও না,

নিষ্কর্মতার প্রতিও নিজেকে আসক্ত হতে দিও না।

—শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা (২:৪৭)

বাংলা অর্থ[সম্পাদনা]

  • কর্মাণি—নির্ধারিত কর্তব্য
  • এবা—নিশ্চিতভাবে
  • অধিকার‌‌—অধিকার
  • তে—তোমার
  • মা—কখনও
  • ফলেষু—ফলে
  • কদাচন—কদাচিৎ
  • মা—কখনও
  • কর্ম-ফল—কাজের ফল
  • হেতু—কারণ
  • ভূ—পরিণত হওয়া
  • মা—কখনও
  • তে—তোমার
  • সঙ্গ—আসক্তি
  • অস্তু—সেখানে থেকো
  • অকর্মাণি—নিষ্কর্মতার মধ্যে

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]