বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিশৈশব:ভাষা/কন্নড়

উইকিবই থেকে

এই ভাষাটি লেখার কোন পদ্ধতি(গুলি) ব্যবহার করে?[সম্পাদনা]

কন্নড় লিপি সহ একটি সাইন বোর্ড

কন্নড় লিপিটি ব্রাহ্মিক পরিবারের একটি আবুগিদা (একটি লিখন পদ্ধতি যাতে ব্যঞ্জনবর্ণ এবং স্বরবর্ণকে যুক্ত করে লেখা হয়, ব্যঞ্জনবর্ণটি প্রাথমিক উপাদান এবং স্বরবর্ণটি গৌণ) বলে মনে করা হয়, প্রাথমিকভাবে ভারতের দক্ষিণ ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে একটি ভাষা হল কন্নড়। এটি কোঙ্কনি, টুলু এবং কোদাভা ভাষার জন্যও ব্যবহৃত হয়। কন্নড় লিপি অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় ভাষা লেখার জন্য ব্যবহৃত বর্ণমালার মতোই হয়। কন্নড় লিপিতে এবং ইংরেজিতে লেখা শব্দ সহ একটি সাইন বোর্ডের উদাহরণ বাম দিকে দেখানো আছে।

কত মানুষ এই ভাষায় কথা বলে?[সম্পাদনা]

দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে প্রায় ছয় কোটি (ষাট মিলিয়ন) মানুষ কন্নড় ভাষায় কথা বলে। অন্যান্য ভারতীয় রাজ্যে এবং প্রধানত পশ্চিমী দেশগুলির মানুষ কন্নড়ভাষী জনসংখ্যার একটি ছোট শতাংশ গঠন করে।

এই ভাষা কোথায় বলা হয়?[সম্পাদনা]

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের একটি কথ্য ভাষা হল কন্নড়। এটি রাজ্যের সরকারি ভাষাও বটে এবং কন্নড় ভারতের আঠারোটি সরকারি ভাষার মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়।

এই ভাষার ইতিহাস কি?[সম্পাদনা]

সংস্কৃতের পরে কন্নড় ভারতের প্রাচীনতম ভাষাগুলির মধ্যে একটি। এটির ২,৩০০ বছরেরও বেশি সময়ের মৌখিক ইতিহাস রয়েছে এবং সম্রাট অশোকের অনুশাসন লিপিতে কন্নড় শব্দগুলি চিহ্নিত করা যেতে পারে। ৪র্থ শতাব্দীতে কন্নড় প্রশাসনিক ভাষায় পরিণত হয়েছিল। এই ভাষা ষষ্ঠ শতাব্দীতে সাহিত্যের ভাষা হয়ে উঠেছিল, যদিও পুরানো গ্রন্থের বিদ্যমান প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কন্নড় ভাষার প্রাচীনতম শিলালিপিগুলি চতুর্থ শতাব্দীর সময়কালে লেখা "হল্মিডি শাসন"-এ পাওয়া যায়। কন্নড়ের প্রাচীনতম সাহিত্যিক মহাকাব্য "কবিরাজমার্গ", এটি কাব্যবিদ্যার সংস্কৃত ঐতিহ্য অনুসরণ করে লিখিত। পম্পা হলেন প্রাচীনতম কবিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। তাঁর "আদিপুরাণ" এবং "বিক্রমার্জুনবিজয়ম" কন্নড় সাহিত্যের ইতিহাসে উজ্জ্বলতম রত্ন।

এই ভাষার বিখ্যাত লেখক বা কবি কারা?[সম্পাদনা]

কবিতা ও ভাষার ওপর প্রথম সাহিত্যকর্ম ছিল "কবিরাজমার্গ" গ্রন্থ। যদিও এই গ্রন্থের লেখক কে তা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে, শিক্ষাবিদরা সর্বত্র লেখককে "কবিরাজমার্গকার" বলে অভিহিত করেছেন। পম্পা, রান্না এবং পোন্না "রত্নত্রয়" গঠন করেছিলেন যার অর্থ তাঁরা ছিলেন প্রাথমিক কন্নড় সাহিত্যের "রত্ন ত্রিত্ব"। বাসবান্না, আক্কামহাদেবী, আল্লামাপ্রভু, জেদারা দাসিমাইয়া প্রমুখ ভক্তি ঐতিহ্যবাদীদের নিয়ে বচন সহিত্য তখন কন্নড় সাহিত্যের সবচেয়ে বড় মাইলফলক তৈরি করেছিল। এটি কর্ণাটকের বীরশৈব আন্দোলনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিল এবং শেষ হয়েছিল একটি বিশাল সামাজিক উত্থান ও এই অঞ্চলের জনসংখ্যার একটি বিভাজনের মধ্যে দিয়ে। স্বীকৃত কিছু শৈব কবি হলেন হরিহর এবং রাঘবাঙ্ক। কুমারব্যাস এবং লক্ষ্মীশা মহাভারত রচনা করেছিলেন যেটি কন্নড় ভাষা ও সংস্কৃতির নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। পুরন্দর দাস, কনাকদাস এবং দ্বৈত ঐতিহ্যের অন্যান্য সন্ন্যাসীদের দ্বারা উত্থাপিত দাস সহিত্যও কন্নড় সাহিত্যে একটি বিভাজন তৈরি করেছিল।

সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য অবদানের ক্ষেত্রে একটি দীর্ঘ মন্দা শেষ হয়েছিল নবোদয় সাহিত্যের হাত ধরে, শতাব্দীর শুরুতে। বি. এম. শ্রীকান্তাইয়া, টি এস ভেঙ্কানাইয়া, ডি. ভি.গুন্ডাপ্পা, কুভেম্পু, ডি. আর. বেন্দ্রে, পু. তি. নরসিমাচারের মতো মহান লেখকেরা এই সময় সাহিত্য রচনা করেছেন। "রামায়ণদর্শনম" এবং "মানকুটিম্মনা কাগ্গা" -র মতো দুর্দান্ত কাজগুলি কন্নড় নীতিকে পুনরুদ্ধার করেছিল এবং কন্নড় মানসিকতার স্বতন্ত্রতাকে সমর্থন করেছিল। নবোদয়ের পদানুসরণ করে আসা নব্য ঐতিহ্যের লেখকেরা প্রাচীন ঐতিহ্যবাদীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং একটি নতুন পথ তৈরি করে। এই পথের প্রবক্তা ছিলেন গোপালকৃষ্ণ আদিগা, ভি কে গোকাক, ইউ আর অনন্তমূর্তি প্রমুখ। এছাড়াও, দেবানুরু মহাদেব এবং সিদ্দালিঙ্গাইয়া-এর মতো লেখকদের দ্বারা দলিত এবং বান্দায়া সাহিত্য কন্নড় সাহিত্যের বৈচিত্র্যময় পরিসরকে সমৃদ্ধ করেছে।

শতাব্দীর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বিশিষ্টরা হলেন শিবরাম কারান্থ, শ্রীরঙ্গা, নিরঞ্জনা, এ. না. কৃষ্ণরাও, পি. লঙ্কেশ, গিরিশ কারনাড। সম্প্রতি পর্যন্ত কন্নড় ভাষা সাতটি জ্ঞানপীঠ পুরস্কার পাওয়ার অনন্য গৌরব অর্জন করে কন্নড় সাহিত্যের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে।

এই ভাষার কিছু মৌলিক শব্দ কি যা আমি শিখতে পারি?[সম্পাদনা]

আম্মা, আম্মাজী, মাতে - মা

আপা, আপ্পাজি, পিতা, আইয়া - বাবা

তাতা - দাদু

আজ্জি - ঠাকুমা

আন্না, আন্নাইয়া - বড় ভাই

তাম্মা, তাম্মায়্যা - ছোট ভাই

আক্কা, আক্কায়া - বড় বোন

তাঙ্গি, তাঙ্গাম্মা - ছোট বোন

বাওয়া - বড় জামাই

ভাওমাইদা, মাইদুনা, মাইদা - ছোট ভাই

মাওয়া - শ্বশুর

আত্তে - শাশুড়ি

দোদ্দম্মা - বড় পিসি

চিক্কাম্মা - ছোট পিসি

দোডাপ্পা - বড় কাকা

চিক্কাপ্পা - ছোট কাকা

নানু, নান, এন, না, এর - আমি

নাভু, এম, নাম - আমরা

নিভ, ইভ, - তোমরা

নিন, নি - তুমি

উটা - দুপুরের খাবার, রাতের খাবার

টিন্ডি - খাবার জিনিস, টিফিন

হোগু, পোগু - যাও

বা, বারু - এসো

বারুভে, বারুথথিনি - আসছি

হোগুভে, হোগুথথিনি - যাচ্ছি

অন্ন - ভাত

আক্কি - চাল

জোলা - জোয়ার

রাগি - রাগি

হিট্টু - ময়দা, মিশ্র ময়দা

সারু, হুলি - ঘন মশলাদার স্যুপ

রস, তিলি সারু - পাতলা মশলাদার স্যুপ

মুদ্দে - কর্ণাটকের একটি বিশেষ খাবার যা চাল, রাগি, জোয়ার বা গম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়

রোটি (রুটির মতো)- কর্ণাটকের একটি বিশেষ প্যান-কেক পদ যা চাল, রাগি, জোয়ার বা গম দিয়ে তৈরি

একটি সহজ গান/কবিতা/গল্প কি যা আমি এই ভাষায় শিখতে পারি?[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]