বিশ্বজুড়ে ইসলাম
এই বইটিতে মুসলমানদের অধিকার, ইসলামের সমালোচনা ও বিভিন্ন দেশে ইসলামের অবস্থান বিষয়ে পর্যালোচনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে কুরআনের বাণী, মুফাসসিরগণের উদ্ধৃত ব্যাখ্যা এবং ইসলামের সমালোচকদের মতামত আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আল্লাহপাক বলেন, "দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে বাড়ি-ঘর থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি সদয় ব্যবহার করতে এবং তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায় পরায়ণদেরকে ভালবাসেন।”[১]
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
[সম্পাদনা]ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা বিশ্বের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে। ৬১০ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মাদ এর নবুয়ত লাভের পর এর যাত্রা শুরু হয়। মক্কা পেরিয়ে এ ধর্ম মদিনায় প্রসার লাভ করে। তারপর বিভিন্ন যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয় ইসলামি সাম্র্যজ্যের সূচনা করে। ৭ম শতাব্দি থেকে ১৩ শতাব্দি পর্যন্ত পণ্ডিতগণ নতুন আইন, দর্শন ও ধর্মীয় বিষয়ে বিকাশ ঘটান। তারা শিল্প, সাহিত্য, প্রকৌশল, কবিতা, দর্শন, ব্যবসা, আইন, কৃষি, নৌ-চলাচল, বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, ভূগোল, গণিত, রসায়ন, পদার্থ ইত্যাদি বিষয়ে অবদান রাখেন। তারা এসব বিষয়ে নিজস্ব উদ্ভাবন সৃষ্টি করেন। ইতিহাসবিদ হাওয়ার্ড টার্নার উল্লেখ করেছেন যে: "মুসলিম শিল্পী, বিজ্ঞানী, রাজকুমার, শ্রমিকরা মিলে একটি অনন্য সংস্কৃতি তৈরি করেন যা প্রতিটি মহাদেশের সমাজকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করেছে"।
অবশেষে, মঙ্গোল ও তুর্কিরা যারা পারস্য, মধ্য এশিয়া, রাশিয়া ও আনাতোলিয়ার কিছু অংশ জয় করে এবং বসতি স্থাপন করে। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছিল। ফলে অনমনীয় রাষ্ট্র ধর্মের আবির্ভাব ঘটেছিল, যা নির্দেশ করে যে মানবজাতির জন্য আল্লাহর অভিপ্রায় সম্পর্কে মানুষের বোঝার আর কোন বিকাশ হতে পারে না। এ ধর্মে মূর্তি পূজা বা হস্তকর্মের কোন শৈল্পিক উপস্থাপনা নিষিদ্ধ। এভাবে প্রকৃতি পূজাও নিষিদ্ধ।
ইসলামের এ অগ্রযাত্রা চলমান থাকে। এশিয়া পেরিয়ে আফ্রিকা, ইউরোপে ইসলামি সাম্র্যাজ্য বিস্তার লাভ করে। স্পেন হয় মুসলিম সাম্র্যাজ্যের মডেল। সেখানে চলে জ্ঞান-বিজ্ঞানের গবেষণা। অমুসলিমরাও সেখানে পড়াশোনা করত। জ্ঞান-বিজ্ঞানের কোন শাখা ছিল না যেখানে চর্চা হত না। তবে ইসলামী স্বর্ণযুগের বিশাল প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনগুলো প্রায়শই প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। ১৩ শতকের শুরুতে মুসলিম এবং বাইজেন্টাইন ঐতিহ্যকে একীভূত করেছিল। যা আইবেরিয়ান উপদ্বীপের মধ্যযুগীয় খ্রিস্টান আক্রমণকারীরা ধ্বংস করেছিল। মধ্যযুগের শেষে ইউরোপীয় উচ্চশিক্ষার রূপান্তরের সূচনাকে চিহ্নিত করে যা অবশেষে আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার বিষয়ে পরিণত করে। ১৬-১৭ শতকে ধর্মীয় সংস্কার ও বিভেদ, ১৮-২০ শতকে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা বা হাইড্রোকার্বন এবং ইলেকট্রনিক অর্থনীতি ইসলামের পতন ঘটায়।
১৪ শতক থেকে আজ পর্যন্ত ইসলামিক গোঁড়ামি নৃশংস রাষ্ট্রীয় শক্তি দ্বারা ব্যাপকভাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়। খ্রিস্টান ও বৌদ্ধদের দ্বারা বহিরাগত উন্নয়নগুলো প্রায়ই 'অ-ইসলামিক' হিসাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়। তবুও অনেক মুসলমান তাদের ঐতিহ্যগত শিক্ষার নতুন ব্যাখ্যা বিকশিত করতে থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিতর্কিত একটি ধর্ম হল বাহাই ধর্ম। এটি একেশ্বরবাদী ভ্রান্ত ধর্ম যা ঊনবিংশ শতাব্দীতে পারস্যে বাহাউল্লাহ প্রতিষ্ঠা করে। বাহাই আধ্যাত্মিক ঐক্যের উপর জোর দেওয়ার দাবি করে এবং দাবি করে যে আল্লাহর বার্তাবাহক হলেন কৃষ্ণ, বুদ্ধ এবং অন্যান্যরা, যাদের মধ্যে আব্রাহাম ও ইসলামের কেন্দ্রীয় ধর্মীয় পাঠ্যের লেখক দ্বারা খ্রিস্ট অনুমোদিত ছিল।
প্রাচীন আরবীতে, ইসলাম একটি যথাযথ বিশেষ্য নয়, তবে সম্মতির একটি রেফারেন্স মাত্র। অতএব, এই কুরআন ইসলামকে জীবন বিধান হিসাবে উল্লেখ করে এবং ইসলামকে একটি ধর্ম হিসাবে উল্লেখ করতে সম্মতি ব্যবহার করে। একইভাবে, এর জীবনধারার অনুসারীদেরকে বোঝায়। আর মুসলিম বলতে ধর্মের অনুসারীদের বোঝায়।
পবিত্র কোরআন
[সম্পাদনা]বিশ্বজুড়ে পবিত্র কুরআনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। এ পবিত্র কুরআন বর্তমানে যেভাবে বিদ্যমান তা প্রায় ৬৫০ সালে মুহাম্মদের সাহাবীগণ (সাহাবা) দ্বারা সংকলিত হয়। সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বারা গৃহীত হয়। এটি পৃথিবীতে আল্লাহর শেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ হয়। এ কিতাব তার পূর্ববর্তী সকল নবী ও রাসূলের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিল, যা তার সত্যায়ন করে। পৃথিবীতে এটি আল্লাহর শেষ প্রত্যাদেশ, ফেরেশতা জিব্রাইল (জিব্রাইল) এর মাধ্যমে নবীকে দেওয়া হয়েছিল। এখানে বলা হয়েছে,
- কুরআনে নবী মুহাম্মাদকে নিয়ে সুরা আছে। আরও আছে ইবরাহিম, হুদ এর নামে। তবে ঈসা নবীকে নিয়ে কোনো সুরা নেই।
- কুরআনে ঈসা নবীর মাকে নিয়ে সুরা মারইয়াম আছে। তবে মুহাম্মাদের মাকে নিয়ে সুরা নেই।
এটি দৃঢ়ভাবে দেখায় যে মুহাম্মাদ কুরআনের রচয়িতা ছিলেন না। ঈসা ও মেরি সম্পর্কে সূরা এবং কুরআনের অন্যান্য সূরাগুলি ব্যাখ্যা করে যে যীশু একজন নবী ও আল্লাহর রাসূল ছিলেন। যীশু তদ্ব্যতীত, যেমন কুরআনে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, পিতা ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেছিলেন (কুমারী জন্ম), এবং তিনি ঈশ্বরের পুত্র নন।
ইসলাম
[সম্পাদনা]২০০৪ সালের ৯ নভেম্বর আম্মান ঘোষণায় ইসলামের ৮টি বিষয় একত্রিত করে এবং তার স্বীকৃতি দেয়। বিষয়গুলো হলো:
বিশ্বে ইসলাম
[সম্পাদনা]অন্য ধর্মের সাথে সম্পর্ক
[সম্পাদনা]মুসলিম
[সম্পাদনা]যারা কালেমা শাহাদাত মনে প্রাণে পড়ে ও ইসলামের বিধানে অটল থাকে তাকে মুসলিম বলে। কালেমা শাহাদাত হলো: আশ-হাদু আন লা ইলাহা ইল্লা-লাহ ওয়া আশ-হাদু আন্না মুহাম্মাদান রাসুলুল্লাহ "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া উপাসনার যোগ্য কোন ইলাহ নেই এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ তার শেষ রাসূল"
ব্যক্তি
[সম্পাদনা]ইসলামে বিনয়
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ কুরআন, ৬০ঃ৮