জ্যোতির্বিজ্ঞান
জ্যোতির্বিজ্ঞান কাকে বলে?
[সম্পাদনা]জ্যোতির্বিজ্ঞান (astronomy) মহাবিশ্বে ভ্রাম্যমাণ জ্যোতিষ্কদের বিষয়ে বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞান জ্যোতিষশাস্ত্র (astrology) নয়। জ্যোতির্বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞদের বলা হয় জোতির্বিজ্ঞানী (astronomer), আর জ্যোতিষশাস্ত্র বিশারদকে বলে জ্যোতিষী (astrologer)।
প্রাচীন মিশর (Egypt), ভারত, ব্যাবিলন, অ্যাজটেক ইত্যাদি সভ্যতায় গ্রহ, নক্ষত্র ইত্যদির আকাশে অবস্থান পরিবর্তন লক্ষ্য করে লিপিবদ্ধ করা হত। পরবর্তীকালে রোমান-অধিকৃত মিশরের জোতির্বিজ্ঞানী টলেমির পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভর করে জোহান কেপলার আধুনিক জোতির্বিজ্ঞানের মূল কয়েকটি সূত্র অনুধাবন করেন। জ্যোতির্বিজ্ঞান (Astronomy) বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যাতে মহাবিশ্বে অবস্থিত সকল বিচ্ছিন্ন এবং অবিচ্ছিন্ন বস্তুসমূহের উৎপত্তি, বিবর্তন, গঠন, দূরত্ব এবং গতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। এর মধ্যে জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান (Astrophysics) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যার উদ্দেশ্য মূলত মহাজাগতিক বস্তুসমূহের গাঠনিক বা বাহ্যিক ধর্ম এবং গঠন নিয়ে আলোচনা করা।
জ্যোতির্বিজ্ঞান একটি প্রাচীন বিজ্ঞান হলেও দূরবীন আবিষ্কার ছাড়া এর একটি আধুনিক বিজ্ঞানে পরিণত হওয়া সম্ভব ছিলনা। তাই এর আধুনিকায়নে বেশ দেরি হয়েছে। বিংশ শতাব্দীতে পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞান দুটি অংশে ভাগ হয়ে গিয়েছে: পর্যবেক্ষণিক জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং তাত্ত্বিক জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান। প্রথমটির কাজ হল উপাত্ত সংগ্রহ করা, যার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত যন্ত্র তৈরী ও এর সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ। দ্বিতীয়টির মূল বিষয় হচ্ছে এই পর্যবেক্ষণগুলোর সাপেক্ষে উপযুক্ত নকশা প্রণয়ন বা কম্পিউটার নকশায় এর রুপদান। বলা যায় তাত্ত্বিক জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের কাজ হচ্ছে পর্যবেক্ষণলব্ধ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক উপাত্তগুলোকে ব্যাখ্যা করা। জ্যোতির্বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণগুলো বিশুদ্ধ পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্বের প্রমাণেও কাজে লাগতে পারে, যেমন: সাধারণ আপেক্ষিকতা।