উদ্ভিদবিজ্ঞান/শৈবাল
<< বিষয়বস্তু পৃষ্ঠা | << অধ্যায় ৮ | অধ্যায় ৯ | অধ্যায় ১০ >>|
অধ্যায় ৯ ~ শৈবাল
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/3/36/Seaweed_%28Westerland%29.jpg/220px-Seaweed_%28Westerland%29.jpg)
শৈবাল বা Algae হলো একটি নিম্নশ্রেণির উদ্ভিদ। Algae একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ হচ্ছে সামুদ্রিক আগাছা। গঠনগত ভাবে শৈবালের দেহ সরল প্রকৃতির। এরা এক বা বহুকোষী। এককোষী শৈবাল একক বা দলবদ্ধভাবে বসবাস করতে পারে। শৈবাল আয়তনে আণুবীক্ষণিক হতে শুরু করে ৬০ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ Procglorococcus marincls -এর দৈর্ঘ্য ০.৫ মাইক্রন। আবার অপরদিকে Macrocystis pyrifera -এর দৈর্ঘ্য ৬০ মিটার। Macrocystis pyrifera -এই শৈবালটি দেখতে বাদামি রঙের। বাদামি ও লোহিত শৈবালের দেহ শাখাবিশিষ্ট ও জটিল প্রকৃতির।
শৈবালের কোষীয় গঠন অনেকটা উঁচুশ্রেণীর উদ্ভিদের মতো। প্রতিটি কোষ দ্বিস্তরী মৃত কোষপ্রাচীর দিয়ে আবৃত। রাসায়নিকভাবে প্রাচীরটি বিভিন্ন ধরনের কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা যেমন সেলুলোজ, পেকটিন, মিউসিলেজ প্রভৃতি দিয়ে গঠিত। শৈবালের কোষে সাধারণত কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা সঞ্চিত থাকে। তবে কিছু কিছু শৈবালে লিপিড বা চর্বি, অ্যালকোহল বা তৈল সঞ্চিত থাকে।
ধারণা করা হয় যে এপর্যন্ত পৃথিবীতে ত্রিশ হাজার প্রজাতির শৈবাল রয়েছে। এরা বিভিন্ন পরিবেশে জন্মাতে পারে। এরা স্থলজ, জলজ বা পরাশ্রয়ী হতে পারে। তবে স্থলজ বা পরাশ্রয়ী শৈবালের চেয়ে জলজ শৈবালের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। জলজ শৈবালেরা পুকুর, ডোবা, হ্রদ প্রভৃতির স্থির পানিতে অথবা নদী, সমুদ্র প্রভৃতির প্রবহমান পানিতেও এরা জন্মায়। সম্পূর্ণ ভাসমান শৈবালকে ফাইটোপ্লাংকটন বলে। জলাশয়ের পানির নিচের মাটিতে আবদ্ধ হয়ে যে শৈবাল উৎপন্ন হয় তাদেরকে লিথোফাইট শৈবাল বলে। উচ্চ শ্রেণীর জীবের টিস্যুর অভ্যন্তরে যে শৈবাল উৎপন্ন হাই তাদেরকে এন্ডোফাইট শৈবাল বলে। এপিফাইট হিসেবে কিছু শৈবাল অন্য শৈবালের গায়েও জন্মাতে দেখা যায়। শৈবাল বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং গবেষণা করাকে ফাইকোলজি (Phycology) বলে।
শৈবালের বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]- শৈবাল সালোকসংশ্লেষণকারী স্বভোজী অপুষ্পক উদ্ভিদ।
- এরা সুকেন্দ্রিক। এরা এককোষী অথবা বহুকোষী হতে পারে। শৈবালে কখনও সত্যিকার মূল, কাণ্ড ও পাতা থাকে না বা সৃষ্টি হয়না। এরা সমাঙ্গদেহী উদ্ভিদ।
- এদের দেহে ভাস্কুলার টিস্যু নেই।
- এদের জননাঙ্গ এককোষী। তবে জননাঙ্গ বহুকোষী হলে তা কোনো বন্ধ্যা কোষাবরণ দিয়ে বেষ্টিত নয়।
- এদের রেণুথলি সর্বদাই এককোষী।
- এদের জাইগোট স্ত্রীজননাঙ্গে থাকা অবস্থায় কখনও ভ্রূণ বহুকোষী হিসেবে পরিণত হয় না।
- শৈবালের কোষ প্রাচীর প্রধানত সেলুলোজ দ্বারা নির্মিত।
সায়ানোব্যাকটেরিয়া
[সম্পাদনা]সায়ানোব্যাকটেরিয়া গঠনগতভাবে সবচেয়ে সরল শৈবাল নিয়ে গঠিত এবং সম্ভবত এটা পৃথিবীর প্রাচীনতম সালোকসংশ্লেষিত জীবের একটি। এটি সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে শক্তি আহরণে সক্ষম। এই শৈবালগুলি ব্যাকটেরিয়ার সাথে সম্পর্কিত। এদের কোষের গঠন প্রোক্যারিওটা জগতের প্রাণীদের মতো।
- সায়ানোব্যাকটেরিয়া পড়ুন
প্রশ্ন
৮.১: কিভাবে আমরা জানবো যে কোন কোন শৈবাল মনোফাইলেটিক নয়?
৮.২: সব শৈবালের মধ্যে কি ধরনের সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যার কারণে এদেরকে একই শ্রেণীভুক্ত করা হয়?
৮.৩: সবুজ শৈবাল এবং সবুজ উদ্ভিদের মধ্যে তিনটি মিল উল্লেখ করো।
৮.৪: সালোকসংশ্লেষী সায়ানোব্যাকটেরিয়া কি সালোকসংশ্লেষী অর্গানেলের আগে বা পরে বিদ্যমান ছিল? কেন অথবা কেন নয় বর্ণনা করো।
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- অষ্টম অধ্যায় (অনুজীববিজ্ঞান)
- দশম অধ্যায় (ছত্রাকবিজ্ঞান)
- একাদশ অধ্যায় (মস)
- দ্বাদশ অধ্যায় (ফার্ন)
- চতুর্দশ অধ্যায় (কনিফার)
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]উদ্ভিদবিদ্যা স্টাডি গাইড ~ উইকি বিষয়বস্তুর সারণী পর্ব ২ অধ্যায় ৭ - উদ্ভিদের প্রকারভেদ ~ :অধ্যায় ৮ - অনুজীববিজ্ঞান ~ অধ্যায় ৯ - শৈবাল |