মালপোয়া
রন্ধনপ্রণালী সূচিপত্র | উপকরণ সমূহ | রন্ধনপ্রণালী | প্রস্তুতপ্রণালী
মালপোয়া | |
---|---|
রন্ধনপ্রণালী বিভাগ | পিঠা প্রস্তুতপ্রণালী |
পরিবেশন | ৫ জন |
তৈরির সময় | ২৫ মিনিট |
কষ্টসাধ্য |
মালপোয়া একধরণের ভারতীয় উপমহাদেশীয় মিষ্টি পিঠা জাতীয় খাবার যা বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার ও মহারাষ্ট্রে জনপ্রিয়। মালপোয়া সাধারণত: ভাজা মিষ্টি, কিন্তু শুকনো বা রসালো হয়ে পারে। ওড়িশার ও আহমেদাবাদের জগন্নাথ মন্দিরে জগন্নাথদেবকে সকালের পূজার জলখাবার বা "সংকল্প ধুপ" ভোগ এবং সন্ধ্যা-আরতির ভোগ বা "সাঁঝধুপ" হিসাবে নানা রকম মালপোয়া (যেমন বড়া আমালু, সানা আমালু) উৎসর্গ করা হয়। বাংলায় পৌষ সংক্রান্তিকে পিঠা পার্বণ বলা হয় এবং এই দিন অন্যান্য পিঠার সংগে মালপোয়াও তৈরি করা ও খাওয়া হয়। বিহারের মিথিলাতে হোলির সময় মাটন কারির সংগে মালপোয়া খাওয়া হয়।
রকমারী মালপোয়া প্রস্তুত প্রণালী
[সম্পাদনা]পাকা কলা বা নারকেলের মধ্যে চালগুঁড়া বা আটা ও চিনি, দুধ বা ক্ষীর ও জল মিশিয়ে মালপোয়ার প্রাথমিক মিশ্রণ প্রস্তুত হয়। তারপর তার উপরে নানা রকমের মশলা যেমন লবঙ্গ, এলাচ ইত্যাদি যোগ করা হয়। তারপর ভাজা হয়। বিহারের মালপোয়া ভাজার আগেই অনেক চিনি দিয়ে শুকনো মিষ্টি হিসাবে তৈরি হয়। বাংলা ও ওড়িশাতে ভাজার পরে মিষ্টি রসে সিক্ত করে রসের মিষ্টি হিসাবে পরিবেশন করা হয়। অনেক সময় কলার বদলে আনারস বা আমের মালপোয়া বানানো হয়। উত্তর ভারত বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানের মালপোয়াতে কোন ফল থাকে না। উপরিউক্ত মাল মশলা (ময়দা, চালগুঁড়া দুধ, চিনি) ছাড়াও অনেক সময় দই যোগ করে খানিকক্ষণ গেঁজিয়ে নেওয়া হয় তারপর ফেনাওয়ালা প্যানকেকের মত ভাজা হয় যার কিনারা থাকে মুচমুচে আর মাঝখানটা নরম। তারপর মিষ্টি রসে ডুবিয়ে রাখা হয়। ওড়িশার মালপোয়া(আমালু)র প্রস্তুতিতেও দই ব্যবহার হয়ে থাকে। বাঙালি মালপোয়া রেসিপির এক্ষেত্রে মালপোয়ার বৈচিত্র্য হচ্ছে ভাজা মালপোয়া। বাঙালি রেসিপিতে মালপোয়া তেলে ভেজেও পরিবেশনের রেওয়াজ রয়েছে। এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে পরিবেশনের পূর্বে মালপোয়াগুলো চিনির মিশ্রণে চুবিয়ে তারপর পরিবেশন করা হয়।
প্রস্তুতপ্রণালী-১
[সম্পাদনা]উপকরণসমূহ
[সম্পাদনা]- ২.৫ কাপ ময়দা
- ০.৫ কাপ চালের ময়দা
- ২.০ কাপ চিনি
- ৩.০ কাপ পানি
- ১.০ কাপ নারকেল কুচি
প্রস্তুতি
[সম্পাদনা]উপকরণগুলো একত্রে মিশ্রিত করে একটি নরম মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। বেশি মিষ্টি করতে চাইলে মিশ্রণের সাথে চিনি মিশ্রিত করা যেতে পারে। অধিক পরিমানে মালপোয়া তৈরির ক্ষেত্রে পাঁচগুন ময়দার সাথে পাঁচগুন চালের ময়দা মিশ্রিত করা যেতে পারে। কাপের এক চতুর্থাংশ মিশ্রণ প্যান এ দেয়া তেল এর মধ্যে ছাড়তে হবে। একসাথে অনেকগুলো পিঠা প্রস্তুত করা যেতে পারে, কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে যে প্রতিটি মালপোয়াই যেনো তেলের ভেতর ঠিকমতো চোবানো থাকে।
প্রস্তুতপ্রণালী-২
[সম্পাদনা]উপকরণসমূহ
[সম্পাদনা]- ৫০০ মি.গ্রা. ঘি
- এলাচ ৫০ গ্রাম
- মৌরি বীজ
- সুজি
প্রস্তুতি
[সম্পাদনা]একটি বড় কড়াই এ ঘি জ্বাল দিতে হবে। সুজি পানিতে ভিজিয়ে পেস্ট করে একটি নরম মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এলাচ, মৌরি বীজ এবং এর সাথে ১০ গ্রাম চিনি মিশাতে হবে। সুজির নরম মিশ্রণটি গরম ঘি এ ভেজে চিনির মিশ্রণে ডুবিয়ে রাখতে হবে। ওড়িষা মালপোয়া রেসিপি জগন্নাথ মন্দিরে সান্ধ্যকালীন ধূপ অনুষ্ঠানে প্রদানের সময় সাধারণভাবে একে আমালু বলা হয়ে থাকে এবং প্রভুকে উৎসর্গ করার জন্য বিভিন্ন আমালু (বড়া আমালু, সানা আমালু) ইত্যাদি সান্ধ্যকালীন ধূপ অনুষ্ঠানে ভোগ হিসাবে উৎসর্গ করা হয়।
প্রস্তুতপ্রণালী ৩
[সম্পাদনা]উপকরণসমূহ
[সম্পাদনা]- ২৫০ মি.গ্রা. দই
- ৩ টেবিল চামচ ময়দা
- ৩-৪ টেবিল চামচ ঘি/তেল,
- ভাজার জন্য ১ টেবিল চামচ গুঁড়ো করা মৌরি বীজ
- চিনির মিশ্রণের জন্য(সিরা/রস) ২০০ গ্রাম চিনি
- ১টি মিষ্টি লেবুর খোসা ২০০ মি.লি.
- পানি
প্রস্তুতি
[সম্পাদনা]ঘি, ময়দা এবং মৌরি বীজ মিশিয়ে নিতে হবে। নরম থকথকে মিশ্রণ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত নাড়তে হবে। কড়াই বা প্যান এ ঘি/তেল গরম করে এক চামচের মতন ময়দা মিশ্রণ হালকা আঁচে ভেজে নিতে হবে। বড়ার মত করে ভাজা হয়ে গেলে চিনি, পানি এবং মিষ্টি লেবুর খোসা দিয়ে তৈরি মিশ্রণে/সিরাপে মালপোয়াগুলো ভিজিয়ে রাখতে হব। এটি গরম কিংবা ঠান্ডা উভয়ভাবেই পরিবেশিত হতে পারে।