বিষয়বস্তুতে চলুন

ব্যবহারকারী:সৈয়দ তানভীর আহমদ/খেলাঘর

উইকিবই থেকে

কলম

আল্লাহ তা'আলা সবসময় ছিলেন , আছেন এবং থাকবেন । পৃথিবীতে আমরা যা কিছু দেখতে পাই  আমাদের জানা অজানা যত কিছুর অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে রয়েছে তার সবকিছুই রাব্বে কারিম সৃষ্টি করেছেন । এবং একদিন তাঁর হুকুমেই এই পৃথিবীর সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে । কোরআন কারিম রাব্বে কারিম বলেন ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সবকিছুই নশ্বর ।  আর অবিনশ্বর শুধু আপনার রবের চেহারা , যিনি মহিমাময় , মহানুভব।[] হযরত উবাদা ইবনুস সামিত রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণনা করেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছিঃ মহান আল্লাহ তা'আলা ( পৃথিবীর সকল বস্তুর মধ্য হতে )  সর্বপ্রথম যে বস্তু সৃষ্টি করেছেন তা হচ্ছে কলম । অতঃপর তিনি তাকে বললেন , লিখো ! কলম বললো , হে রব ! কি লখবো ? তিনি বললেন , কিয়ামাত সংঘটিত হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক বস্তুর তাকদীর লিখো। []। অতঃপর কলম সে সময় থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত সংঘটিত হবে এমন সকল বিষয় লিপিবদ্ধ করে নেয়। অন্য একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন আল্লাহ তা'আলা জমিন ও আসমান সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে মানুষের তাকদির লিপিবদ্ধ করেছেন। ( মুসলিম ৬৭৪৮[] ) । সে সময় থেকে নিয়ে কেয়ামত পর্যন্ত যত কিছু হয়েছে, হচ্ছে , এবং ভবিষ্যতে হবে তার সবকিছুই কলম রাব্বে কারিমের হুকুমে প্রথম থেকেই লিপিবদ্ধ করে রেখেছে।

আসমান ও জমিন সৃষ্টি

সমগ্র পৃথিবী এবং তার মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুই আল্লাহ তা'আলার অনুপম সৃষ্টি । কোরআন কারিমে আসমান ও জমিন সৃষ্টির কথা বিভিন্ন আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে । এবং কিছু কিছু জায়গায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে , আসমান জমিনের কোন জিনিস কতদিনে সৃষ্টি করা হয়েছে । এসকল আয়াতকে সামনে রাখলে একথা পরিস্কার ভাবে বুঝে আসে যে , আল্লাহ তা'আলা প্রথমে ভূমন্ডলের মাঠি সৃষ্টি করেন , অতঃপর আসমানের দিকে মনোনিবেশ করেন যা ছিলো ধুম্রকুঞ্জ , এবং জমিনকে বিস্তৃত করেন , জমিনের মধ্যকার সবকিছুকে সৃষ্টি করেন ।এরপর সাত আসমান সৃষ্টি করেন । এভাবেই আসমান জমিন এবং তার মধ্যকার সবকিছু সৃষ্টি করা হয় । এসকল কাজ ছয়দিনে পূর্ণতা লাভ করে । কোরআন কারিমে আল্লাহ তা'আলা বলেন আর অবশ্যই আমি আসমানসমূহ, যমীন ও তাদের অন্তর্বতী সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে ; আর আমাকে কোন ক্লান্তি স্পর্শ করেনি । সূরা কাফ ৩৮

ফেরেশতা আল্লা'হর মাখলুক

ফেরেশতা একটি ফার্সি শব্দ , আরবি ভাষায় ফেরেশতাকে মালাকুন বলা হয় , বহুবচন মালাঈকা , যার আভিধানিক অর্থ হলো বার্তাবাহক , ফেরেশতা  আল্লাহ্ তা'আলার সৃষ্টি  এমন এক মাখলুক যাদেরকে তিনি নূর দ্বারা সৃষ্টি করেছেন , ফেরেশতারা আমাদের দৃষ্টির আড়ালে অদৃশ্য অবস্থায় বিদ্যমান থাকেন ।  তারা কখনো আল্লাহ তা'আলার অবাধ্যতা করেন না , তাঁর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করেন না । তাদের কোন গোনাহ নেই , আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত রেখেছেন । তারা সবসময় সে সকল কাজে নিবিষ্ট থাকেন ।  ফেরেশতাদের সংখ্যা অগণিত , তার সঠিক পরিসংখ্যান একমাত্র আল্লাহ তা'আলাই জানেন । অসংখ্য ফেরেশতাদের মধ্য থেকে চারজন প্রসিদ্ধ ফেরেশতা রয়েছেন ১ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম , যিনি আল্লাহ্ তা'আলার কিতাবসমূহ এবং হুকুম আহকাম নবি রাসূলদের কাছে নিয়ে আসতেন । ২ হযরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম যিনি কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলার আদেশে শিঙায় ফুঁৎকার দিবেন । ৩ হযরত মিকাইল আলাইহিস সালাম যিনি পৃথিবীতে বৃষ্টি বর্ষণ , এবং সকল জীবের জীবিকা নির্বাহের দায়িত্বে নিয়োজিত ,  ৪ হযরত আযরাঈল আলাইহিস সালাম ( মালাকুল মাউত ) যিনি  সকল জীবের আত্মা কবজ করার দায়িত্বে নিয়োজিত , এছাড়াও আরো অনেক ফেরেশতা রয়েছেন যারা সবসময় আল্লাহ তা'আলা র তাসবীহ তাহলীল পাঠে সর্বদা নিয়োজিত থাকেন।

  1. সূরা রহমান ২৭
  2. আবু দাউদ ৪৭০০
  3. মুসলিম ৬৭৪৮