ছাগল পালন/খামার স্থাপনে বিবেচ্য বিষয়
একটি ছাগল খামার স্থাপনের পূর্বে বিভিন্ন ধরনের ছাগল পালন পদ্ধতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা প্রয়োজন। মূলত কোনো খামারে ছাগলে সংখ্যা, খামারের অর্থনৈতিক লক্ষ্য, খামার মালিকের পুঁজি, বিচরণ ভূমি ও খাদ্যের প্রাপ্যতা প্রভৃতি বিষয়ের উপর নির্ভর করে ছাগল পালন পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ১৫-২০ কেজি দৈহিক ওজনের একটি ছাগলকে দৈনিক গড়ে ১.৫-২.০ কেজি কাঁচা ঘাস সরবরাহ করা প্রয়োজন। ছাগল পালনের বিভিন্ন পদ্ধতির মধ্যে পারিবারিক ক্ষুদ্র খামার, মুক্তভাবে ছাগল পালন, সেমি- ইন্টেনসিভ/আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে ছাগল পালন, ইন্টেনসিভ/নিবিড় পদ্ধতিতে ছাগল পালন, ইন্টেগ্রেটেড/ সমন্বিত খামার প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। নিম্নে ছাগল পালনের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
পারিবারিক ক্ষুদ্র খামার
[সম্পাদনা]ছাগলের সংখ্যা ২-৫টি হলে পারিবারিক ক্ষুদ্র খামার তৈরি করা উচিত। এ খামারে ছাগলের জন্য আলাদা কোনো বাসগৃহের প্রয়োজন হয় না। সাধারণত গোয়াল ঘরে বা খামারীর শোয়ার ঘরে বা বসতঘরের পাশের বারান্দায় ছাগলকে রাখা হয়। ছাগলের খাদ্যের সংস্থান হয় বসত ঘরের আশপাশের পতিত জমি ও ক্ষেতের আইলের ঘাস হতে। তবে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে গমের ভূষি, চালের কুঁড়া, ছোলার ভূষি, ভাতের মাড়, কাঁঠাল পাতা প্রভৃতি সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করতে হয় বলে ভূমিহীন ক্ষুদ্র খামারী, প্রান্তিক চাষি এবং উচ্চ বিত্ত কৃষক সকলেই এ ধরনের খামার করতে পারেন। এ ধরনের খামার স্থাপনে অল্প জায়গা এবং ব্যবস্থাপনায় অল্প শ্রম প্রয়োজন হয়। বিনিয়োগ অল্প বলে এ ধরনের খামারে ঝুঁকির পরিমাণও কম। এক সাথে অল্প সংখ্যক ছাগল পালন করা হয় বলে ব্যবস্থাপনা সহজসাধ্য। এদের রোগ ব্যাধিও তুলনামূলকভাবে কম হয় এবং উৎপাদন ভালো হয়। সংখ্যা কম হওয়ায় বাজারজাতকরণও তুলনামূলকভাবে সহজ।
তবে অল্প সংখ্যক ছাগল পালনের কারণে বাৎসরিক আয় কম হয়। তাই একক পেশা হিসেবে গ্রহণের জন্য এ ধরনের ছাগল পালন পদ্ধতি উপযুক্ত নয়। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পালন করা হয় না বলে অনেক সময় ছাগলের খাদ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা খাতে কম অর্থ বিনিয়োগ করা হয়। ফলে উৎপাদন অনেক সময় আশানুরূপ হয় না।
এ ধরনের খামার হতে বছরে ১২-১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
মুক্তভাবে ছাগল পালন
[সম্পাদনা]এ খামারে ছাগলের সংখ্যা ৮-১০ টি হয়ে থাকে। বসত ঘরের আশে পাশের অনাবাদি জমি, পতিত জমি যেমন- রেল লাইনের ধার, বাঁধ, পুকুর পাড়, খেলার মাঠ, পাহাড়ী ভূমি, নদীর চর প্রভৃতি জায়গায় মুক্তভাবে সারাদিন ছাগল চরানো হয়। শুধু রাতের বেলায় ছাগলকে বাড়িতে নেয়া হয়। এ সময় শুধুমাত্র দানাদার খাবার ছাগলকে সরবরাহ করা হয়।
এ ধরণের খামারে পতিত/অনাবাদি জমিতে মুক্তভাবে চরে বেড়ায় বলে ছাগলের জন্য আলাদাভাবে ঘাস উৎপাদনের প্রয়োজন হয় না। আবার খাদ্য ব্যবস্থাপনা খাতেও খরচ কম হয়। মুক্তভাবে চরে বেড়ায় বলে ছাগলের রোগ-বালাই তুলনামূলকভাবে কম হয়।
কিন্তু মুক্তভাবে চরে বেড়ায় বলে রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখাশোনার কাজে নজরদারি করতে হয়। নতুবা ছাগল হারিয়ে যাওয়ার বা চুরি হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। মুক্তভাবে চরে বেড়ানোর কারণে অনেক সময় ছাগল কর্তৃক অন্যের ক্ষেতের ফসল নষ্ট করার সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া-বিবাদ হতে পারে। দেশব্যাপী নিবিড় কৃষি কাজের কারণে বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের অধিকাংশ স্থানে এ পদ্ধতিতে ছাগল পালন করা দুরুহ। মুক্তভাবে চরে বেড়ায় বলে ছাগলের পরিকল্পিত প্রজনন সম্ভব নাও হতে পারে।
এ ধরনের খামার হতে বছরে ২৫-৩৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
আধা নিবিড় পদ্ধতিতে ছাগল পালন
[সম্পাদনা]এ ধরনের পদ্ধতিতে খামারে ২০ বা ততোধিক সংখ্যক ছাগল পালন করা হয়। খামারীর বিনিয়োগ ও ইচ্ছার উপর এই সংখ্যা নির্ভরশীল। এ পদ্ধতিতে ছাগলকে দিনের বেলায় খামারের নিজস্ব ভূমিতে চরানো হয় এবং রাতের বেলায় ঘরে আবদ্ধ অবস্থায় রাখা হয়। ছাগলের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য দানাদার খাদ্য ও কাঁচা ঘাস সরবরাহ করা হয়।
এই পদ্ধতিতে পালন করলে ছাগল কর্তৃক অন্যের ক্ষেতের ক্ষতিসাধনের সম্ভাবনা থাকে না বলে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই পদ্ধতি বিশেষ উপযোগী। খাদ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার পেছনে বেশি বিনিয়োগ করা হয় বলে এই পদ্ধতিতে উৎপাদন আশাব্যঞ্জক হয়।
বিনিয়োগ বেশি করতে হয় বলে স্বল্প পুঁজির খামারীর জন্য এই পদ্ধতি কিছুটা ব্যয় বহুল। এক সাথে অনেক ছাগল পালন করা হয় বলে খামারের কোনো একটি ছাগলে সংক্রামক রোগ হলে তা দ্রুত খামারে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা খাতে খরচ বেশি হয়।
বিনিয়োগের উপর আয় নির্ভরশীল। বিনিয়োগ যত বেশি হবে অর্থাৎ যত বেশি সংখ্যায় ছাগল পালন করা হবে আয়ও সেই অনুপাতে বেশি হবে।
নিবিড় পদ্ধতিতে ছাগল পালন
[সম্পাদনা]এই পদ্ধতিতে খামারে শতাধিক হতে সহস্রাধিক ছাগল পালন করা সম্ভব। বিনিয়োগের পরিমাণের উপর এই সংখ্যা নির্ভরশীল। এই পদ্ধতিতে ছাগলকে সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় পালন করা হয় এবং কাঁচা ঘাস, দানাদার খাদ্যসহ সকল প্রকার খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা হয়। এই পদ্ধতিতে ছাগলের মুক্তভাবে চারণভূমিতে চরে বেড়ানোর কোনো সুযোগ থাকে না। তবে খামার গৃহের সাথে খামার গৃহের প্রায় বিগুণ জায়গা নিয়ে খোঁয়াড় তৈরি করা হয় যার চারপাশে বেড়া দেয়া থাকে। উক্ত ধোঁয়াড়ে ছাগলকে দিনের বেলা ছেড়ে দেয়া হয় এবং সকল প্রকার রাফেজ জাতীয় খাদ্য খোঁয়াড়ে সরবরাহ করা হয়।
এ পদ্ধতিতে পরিকল্পিতভাবে খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় করা হয় বলে উৎপাদন আশানুরূপ হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রজনন ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। অল্প জায়গায় অধিক সংখ্যক ছাগল পালন করা হয় বলে তুলনামূলকভাবে জনবল খাতে ব্যয় কম হয়। বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি অনুসরণ করার মাধ্যমে ছাগল পালনকে শিল্প হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
তবে এ পদ্ধতিতে ছাগল পালনে কতিপয় অসুবিধা রয়েছে। গৃহ নির্মাণ ও খোঁয়াড় স্থাপনে প্রাথমিক বিনিয়োগ তুলনামূলকভাবে বেশি। এই পদ্ধতিতে খাদ্য ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় তুলনামূলকভাবে অন্য পদ্ধতির চেয়ে বেশি। সময়মতো কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন নিশ্চিত করা না গেলে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পায়। ফলে কখনো কখনো এই পদ্ধতি লাভজনক হয় না। আবার একসাথে অধিক সংখ্যক ছাগল পালন করা হয় বলে খামারের কোনো একটি ছাগলে সংক্রামক রোগ হলে তা দ্রুত খামারে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা খাতে ব্যয় বৃদ্ধি পায়।
বিনিয়োগের উপর আয় নির্ভরশীল। বিনিয়োগ যত বেশি হবে অর্থাৎ যত বেশি সংখ্যায় ছাগল পালন করা হবে আয়ও সেই অনুপাতে বেশি হবে।
সমন্বিত খামার
[সম্পাদনা]ফলজ বা বনজ বাগানে সমন্বিত উপায়ে আধা-নিবিড় বা পারিবারিকভাবে ছাগল পালন করা যেতে পারে। সাধারণত পেয়ারা, পেঁপে, আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা প্রভৃতি ফলজ বাগান অথবা বনজ বাগানের নিচে পারা, সিগনাল, মাসকালাই, কাউপি, ধইঞ্চা প্রভৃতি মাস/রাফেজ চাষ করা যেতে পারে। ফলে ঘাস চাষের জন্য আলাদা কোনো জমির প্রয়োজন হয় না। উক্ত ঘাস কেটে খাওয়ানো যেতে পারে বা এতে ছাগল চরানো যেতে পারে। এ ছাড়া ফল বাগানের অতিরিক্ত পাতা কেটে ছাগলকে খাওয়ানো যেতে পারে।
সমন্বিত উপায়ে খামার গড়ে তোলা হয় বলে ছাগলের জন্য আলাদা চারণভূমি বা ঘাস চাষের ভূমির প্রয়োজন হয় না। একই ব্যক্তি একই সাথে বাগানের তদারকি ও ছাগল দেখাশোনা করতে পারেন বলে এই পদ্ধতিতে শ্রমের সাশ্রয় হয়। ছাগলের মল-মূত্র জৈব সার হিসেবে খামারে ব্যবহার করা যায়। এই পদ্ধতিতে ছাগর চরে বেড়ানোর সুযোগ পায় এবং অল্প জায়গায় আবদ্ধ থাকতে হয় না বলে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ কম হয়।
তবে ছাগল পালনের সময়ে নজরদারী না থাকলে ছাগল কর্তৃক বাগানের চারা গাছ, ছোট গাছ, সবজি ক্ষেত খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে।
সমন্বিত উপায়ে পালন করা হয় বলে খামারীগণ বাগান ও ছাগল খামার হতে তুলনামূলকভাবে বেশি আয় করতে পারেন।
ছাগল খামারের স্থান নির্বাচন
[সম্পাদনা]স্বাস্থ্যসম্মত ও লাভজনক ছাগল খামার স্থাপনের জন্য স্থান নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ছাগল খামার স্থাপনের সময় কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যথাসম্ভব উঁচু ও শুষ্ক জায়গায় ছাগল খামার স্থাপন করতে হবে, যাতে বন্যার পানি খামারে প্রবেশ করতে না পারে এবং বৃষ্টির পানি জমে না থাকে। খোলামেলা এবং প্রচুর আলো বাতাস রয়েছে এমন জায়গায় খামার স্থাপন করা বাঞ্ছনীয়। ঘাস চাষের উপযোগী উর্বর মাটি যেমন- দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ মাটিতে খামার স্থাপন করলে ঘাস চাষের সুবিধা হয়। লোকালয় হতে সামান্য দূরে কিন্তু বাজার বা শহরের সাথে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে এমন স্থানে খামার স্থাপন করা উচিত। এতে খামারের প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পরিবহন সহজতর হয়। বিশুদ্ধ পানির উৎস/সরবরাহ রয়েছে এমন স্থানে খামার স্থাপনা করা প্রয়োজন। বিদ্যুতের সুবন্দোবস্ত রয়েছে এমন স্থানে খামার স্থাপন করতে হবে। খামারে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় নালা নর্দমা থাকতে হবে। কাছাকাছি চারণভূমি আছে এমন স্থানে খামার স্থাপন করা লাভজনক। এ ছাড়া জীবন ধারণের আধুনিক সুযোগ সুবিধা রয়েছে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো, সামাজিক অসন্তোষ নেই এমন স্থানে খামার স্থাপন করা বাঞ্ছনীয়।
ছাগলের বাসস্থান ব্যবস্থাপনা
[সম্পাদনা]ছাগলের বাসগৃহ শুদ্ধ ও উঁচু স্থানে নির্মাণ করা দরকার। ঘরে আলো-বাতাস ঢোকার ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। ঘরের মেঝে সব সময় শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করা উচিৎ। ছাগলের ঘর পূর্ব পশ্চিমে লম্বা লম্বি দক্ষিণ দিক খোলা থাকলে ভালো।
পারিবারিক পদ্ধতিতে এবং মুক্তভাবে ছাগল পালন করলে ছাগলের জন্য আলাদা ঘরের তেমন প্রয়োজন হয় না। মানুষের থাকার ঘরের একপাশে, ঘরের পাশের বারান্দায় অথবা গোয়াল ঘরের গরুর সাথে ছাগল পালন করা হয়। আধা নিবিড় ও নিবিড় পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে একসাথে অনেক ছাগল পালন করা হয় বলে ছাগলের জন্য আলাদা করে বিভিন্ন ঘর তৈরি করতে হয়।
একটি বাণিজ্যিক ছাগল খামারে নিম্নবর্ণিত আলাদা আলাদা ঘর থাকা বাঞ্ছনীয়:
- প্রজনন উপযোগী ও দুগ্ধবতী ছাগলের ঘর, ব্রুডিং পেন
- বাচ্চা ছাগলের ঘর (দুধ ছাড়ানো পর্যন্ত)
- মাংস উৎপাদনকারী ছাগলের ঘর (২-৩ মাস বয়স হতে প্রাপ্ত বয়স্ক)
- পাঠা ছাগলের ঘর (৩ মাস বয়স হতে সার্ভিসকালীন সময়
- গর্ভবতী ছাগলের ঘর
- আইসোলেশন শেড (অসুস্থ ছাগলের জন্য)
- কোয়ারেন্টাইন শেড (নতুন ক্রয়কৃত ছাগলের জন্য ক্রয়ের পর ২ সপ্তাহ পর্যন্ত)
- দানাদার খাদ্য রাখার ঘর
- সবুজ ঘাস ও রাফেজ জাতীয় খাদ্য রাখার ঘর
পালন পদ্ধতি অনুসারে ছাগলের ঘরকে দুই ভাবে শ্রেণি বিভাগ করা যায়।
- মেঝে পদ্ধতির ঘর: এ ধরনের ঘরে ছাগলকে মেঝেতে পালন করা হয়।
- মাচা পদ্ধতির ঘর: এ ধরনের ঘরে মেঝের উপর মাচা তৈরি করে তার উপর ছাগল পালন করা হয়।
নির্মাণ উপকরণের উপর ভিত্তি করে মেঝে পদ্ধতির ঘর তিন রকম হতে পারে।
- কাঁচা মেঝের ঘর
- অর্ধ পাকা মেঝের ঘর
- পাকা মেঝের ঘর