গরু পালন/গাভী গরম হওয়া ও পরবর্তী করণীয়

উইকিবই থেকে

গাভী গরম হওয়ার লক্ষণ[সম্পাদনা]

বকনা বা গাভী গরম হলে বিভিন্ন ধরনের স্বভাবগত ও শারীরবৃত্তীয় লক্ষণ ও পরিবর্তন দেখা দেয়। এগুলো হলো-

  • বকনা বা গাভী অশান্ত থাকবে এবং একজায়গায় দাঁড়িয়ে না থেকে ছটফট করবে।
  • গরম হওয়ার শুরুতে নিজে অন্য পশুর উপর লাফ দিবে এবং পুরোপুরি গরম অবস্থায় অন্য পশুকে নিজের উপর লাফ দিতে উদ্বুদ্ধ করবে।
  • অন্য পশুকে নিজের পশ্চাৎদেশ চাটতে দিবে।
  • খাওয়ার আগ্রহ কমে যাবে ও দুধালো গাভীর ক্ষেত্রে হঠাৎ করে দুধ দেয়া কমে যাবে।
  • বকনা বা গাভীকে খুব সতর্ক মনে হবে এবং সবসময় কান খাড়া করে থাকবে।
  • ঘনঘন অল্প পরিমাণে প্রস্রাব ও পায়খানা করবে।
  • লেজ নাড়তে থাকবে।
  • যোনি পথ দিয়ে স্বচ্ছ মিউকাস বা শ্লেস্মা বের হবে।
  • হাত দিয়ে যোনিমুখ সামান্য ফাঁক করলে ভেতরটা অন্য সময়ের চেয়ে বেশি লালচে দেখাবে।
  • স্পেকুলামের সাহায্যে সার্ভিক্সের মুখ দেখলে মনে হবে সার্ভিক্স খোলা রয়েছে।
  • বকনা বা গাভী হাম্বা হাম্বা করে অনবরত ডাকতে থাকবে।
  • রক্তে প্রথমে ইস্ট্রোজেন ও পরে লিউটিনাইজিং হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাবে।

গাভী গরম হলে করণীয়[সম্পাদনা]

বকনা বা গাভী গরম অবস্থায় প্রধান কাজ হলো পাল দেয়া। এজন্য প্রথমেই পাল দেয়ার উপযুক্ত সময় নির্ণয় করতে হবে। সাধারণত গাভী গরম হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পাবার পর থেকে পরবর্তী ১৮ ঘণ্টার মধ্যে পাল দিলেই চলে। এন্ট্রাস ধাপ শুরু হওয়ার ৮ ঘণ্টা পর গাভীতে গরম হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং পরবর্তী ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত গরম অবস্থা স্থায়ী থাকে। এরপর থেকে গরম অবস্থা চলে যেতে থাকে। গরম অবস্থায় আসার শুরু থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে পাল দিলে সফলতার হার হবে শতকরা ৪৫-৭০ ভাগ আর ৭ থেকে ১৮ ঘণ্টার মধ্যে পাল দিলে শতকরা ৭০-৯০ ভাগ পর্যন্ত সফলতা পাওয়া যাবে। তবে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে ১২-১৮ ঘণ্টার মধ্যে পাল দিলে। ১৮ ঘণ্টার পর পাল দিলে ক্রমান্বয়ে সফলতার হার কমতে থাকবে।

পাল দেওয়ার পদ্ধতি[সম্পাদনা]

  1. প্রাকৃতিক পদ্ধতি: বকনা বা গাভীর সঙ্গে প্রজননক্ষম ষাঁড়ের মিলনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পাদিত হয়।
  2. কৃত্রিম পদ্ধতি: এক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবে ষাঁড়ের বীর্য বকনা বা গাভীর জননতন্ত্রে প্রবেশ করানো হয়। বকনা বা গাভীর ক্ষেত্রে মলদ্বার যোনি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়ে থাকে।