গরু পালন/গর্ভকালীন গাভীর পরিচর্যা

উইকিবই থেকে

গাভী সাধারণত ২৭০-২৯০ দিন নিজ গর্ভে বাছুর বহন করে। এই সময়কে গর্ভকাল বলে। গর্ভাবস্থায় গাভীর যত্ন ও অন্যান্য পরিচর্যার উপরই স্বাভাবিক প্রসব, ভালো বাছুর, দুগ্ধ উৎপাদন ও পরবর্তী কালে স্বাভাবিক গর্ভধারণ নির্ভর করে। কাজেই গাভী পালনের ক্ষেত্রে গর্ভবতী গাভীর যত্ন ও খাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নিম্নলিখিত নিয়মে গর্ভবতী গাভীর যত্ন নিতে হবে।

  • গাভীর গর্ভধারণ কালের হিসাব ও সম্ভাব্য বাচ্চা প্রসবের তারিখ জানা থাকতে হবে।
  • গর্ভকালের সাত মাস পর্যন্ত গাভীর খাদ্য, পরিচর্যা, দুধ দোহন, স্বাভাবিক ভাবেই চলবে। তবে ৭ মাসের পরেই গাভীকে অবশ্যই পৃথক করতে হবে। এই সময় খাদ্য, পরিচর্যা ও বাসস্থান গাভীর অবস্থার উপযোগী হতে হবে।
  • পর্যাপ্ত আলো বাতাসযুক্ত সুপরিসর, সহজেই গাভী নড়াচড়া করতে পারে এমন ঘরে রাখতে হবে।
  • গাভীর ঘর দৈনিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে জীবাণুনাশক ঔষধ মিশ্রিত পানি দ্বারা ঘর ধুয়ে দিতে হবে।
  • গাভী যেন পড়ে গিয়ে আঘাত না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • গর্ভবতী গাভীর উপর অন্য কোনো গরু বা প্রাণি যেন লাফিয়ে উঠতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • গর্ভাবস্থার ৭-৮ মাস দুধ দোহন বন্ধ করতে হবে। দুধের প্রবাহ বন্ধ না হলে দানা খাদ্য কিছুটা কমিয়ে দিতে হবে তবে এমনভাবে কমানো যাবে না যাতে গাভীর স্বাস্থ্য ভেঙে যাওয়ার আশংকা থাকে।
  • গাভীর শোবার জায়গায় খড় দিয়ে বিছানা তৈরি করে দিতে হবে। বিছানার খড় নোংরা হয়ে গেলে তা পরিবর্তন করে দিতে হবে, তাছাড়া বিছানার খড় দৈনিক রোদে শুকাতে হবে।
  • গাভীকে কোনো ক্রমেই ভয় পাওয়ানো, দ্রুত তাড়ানো বা উত্তেজিত/উত্যক্ত করা চলবে না।
  • গর্ভবতী গাভী দ্বারা হাল টানা, ভারবহন, ফসল মাড়াই করানো যাবে না।
  • প্রসবের দুই সপ্তাহ আগে সহজপাচ্য খাদ্য খাওয়াতে হবে। এই সময় গাভীকে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। শীতের সময় পানি কুসুম কুসুম গরম করে দিতে হবে।
  • গরমের দিন হলে গাভীকে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে।
  • আসন্ন প্রসবা গাভীকে সব সময় চোখে চোখে রাখতে হবে। প্রসবের ২/৩ দিন আগে থেকে ২৪ ঘণ্টা তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে।