উইকিশৈশব:রাসায়নিক মৌল/বেরিলিয়াম
ধাতুটি দেখতে, স্পর্শে, স্বাদে, অথবা গন্ধে কেমন লাগে?
[সম্পাদনা]বেরিলিয়ামের স্বাদ সুমিষ্ট। কিন্তু এটি বিষাক্ত। তাই কখনও এটি খাওয়া বা স্বাদ গ্রহণ করা উচিত নয়। এর কোনো নিজস্ব গন্ধ নেই। এটি দেখতে ধূসর এবং ওজনে হালকা। এটির পারমাণবিক সংখ্যা ০৪ এবং এর প্রতীক হচ্ছে Be।
ধাতুটি কিভাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল?
[সম্পাদনা]১৭৯৮ সালে ফরাসি রসায়নবিদ লুই-নিকোলাস ভকুইলিন বেরিলিয়াম আবিষ্কার করেছিলেন। লুই-নিকোলাস ভকুইলিন আকরিক থেকে এই ধূসর রঙের পদার্থটি খুঁজে পান।
ধাতুটির নাম কোথা থেকে এসেছে?
[সম্পাদনা]ফরাসি রসায়নবিদ লুই-নিকোলাস ভকুইলিন এই পদার্থটির নাম দিয়েছিলেন 'গ্লুকিনিয়াম'। যা গ্রিক শব্দ glykys (গ্লাইকিস) থেকে নেওয়া হয়েছিল। এই শব্দটির অর্থ 'মিষ্টি'। তারপর ফ্রেডরিখ ভোলার জার্মানিতে উপাদানটি বিচ্ছিন্ন করার কাজ করেছিলেন। তিনি পদার্থটির জন্য বেরিলিয়াম শব্দটি পছন্দ করেন। আর শেষ পর্যন্ত রসায়ন বিষয়ক শীর্ষ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ পিউর অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি বেরিলিয়াম শব্দটিকে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
তুমি কি জানো?
- এটি উদ্ভিদ বা প্রাণী জীবনের জন্য দরকারী বা প্রয়োজনীয় নাকি সেটা এখনো জানা যায় নি।
- এটি সাধারণত কোন ধাতুকে মজবুত করতে ব্যবহার করা হয়।
এটি কোথায় পাওয়া যায়?
[সম্পাদনা]এটি পৃথিবীতে খুব কমই পাওয়া যায়। এটি ৩০টি খনিতে পাওয়া যায় যার মধ্যে রয়েছে:
- Terlandite(টেরল্যান্ডাইট)
- Beryl(বেরিল)
- Chrsoberge (ক্রসোবার্গ)
- Phenacite(ফেনাসাইট), প্রভৃতি।
এই মৌলটি পুরানো তারাগুলোতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। ১৯৯২ সালে মিল্কিওয়ে (এটির অপর নাম আকাশগঙ্গা) গ্যালাক্সির ৬টি প্রান্তে পুরানো তারাতে বিজ্ঞানীরা প্রচুর পরিমাণে বেরিলিয়াম খুঁজে পেয়েছিলেন।
এর ব্যবহার কোথায়?
[সম্পাদনা]বেরিলিয়াম হলো সবচেয়ে হালকা ধাতুগুলির মধ্যে একটি। এটির গলনাঙ্ক হালকা ধাতুগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এটি উচ্চ গতির বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। কারণ এটি স্পার্ক করে না। তাই এটি নন-স্পার্কিং সরঞ্জামগুলিতে ব্যবহার করা হয়। এটি নিউট্রন তৈরি করতে পোলোনিয়াম দ্বারা নির্গত আলফা কণার সাথে বিক্রিয়া করে এবং এটি এ নামক একটি বোমার ইনিশিয়েটরগুলিতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া এটি এসিড এবং ইউরেনিয়ামের সাথে বিক্রিয়া করে না। এটি পারমাণবিক জেনারেটর তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়।
ধাতুটি কি বিপজ্জনক?
[সম্পাদনা]এটি একটি বিষাক্ত ধাতু। এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে। যেমন, ফুসফুসের ক্যান্সার, দীর্ঘস্থায়ী ও প্রাণঘাতী অ্যালার্জিক রোগ বেরিলিয়াম ডিজিজ ইত্যাদি। বেরিলিয়াম ডিজিজটি আবার বেরিলিওসিস নামেও পরিচিত। সাধারণত এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়। এছাড়াও এর প্রভাবে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।