উইকিশৈশব:রাসায়নিক মৌল/টাংস্টেন
ধাতুটি দেখতে, স্পর্শে, স্বাদে, অথবা গন্ধে কেমন লাগে?
[সম্পাদনা]টাংস্টেন একটি ভারী ধাতু। এর রঙ ধূসর থেকে সাদা হতে পারে। বিশুদ্ধ টাংস্টেন নরম ধাতু। বিশুদ্ধ অবস্থায় ধাতুটি এতটাই নরম যে একে করাত দিয়ে সহজেই কাটা যায়। তবে টাংস্টেন কার্বাইড অত্যন্ত শক্ত এবং এটি কাটা খুব কঠিন।
ধাতুটি কিভাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল?
[সম্পাদনা]১৭৮৩ সালে দু'জন স্প্যানিশ রসায়নবিদ যোয়ান জোস এলুয়ার এবং ফাউস্ট এলুয়ার সর্বপ্রথম বিশুদ্ধ টাংস্টেন ধাতুকে আলাদা করতে সক্ষম হন। সম্পর্কে এই দুই রসায়নবিদ সহোদর। উলফ্রামাইট খনিজে টাংস্টেন সর্বপ্রথম পাওয়া গিয়েছিল। "উলফ্রামাইট" মানে "টিনের গ্রাসকারী।"
ধাতুটির নাম কোথা থেকে এসেছে?
[সম্পাদনা]টাংস্টেন এর নামটি এসেছে সুইডিশ শব্দ টাং স্টেন থেকে যার অর্থ "ভারী পাথর"। টাংস্টেনের জার্মান নাম উলফ্রাম, এর থেকেই এই মৌলের প্রতীক "W" রাখা হয়।
তুমি কি জান?
- সমস্ত ধাতুর মধ্যে টাংস্টেনের গলনাঙ্ক সর্বোচ্চ। এর গলনাঙ্ক ৩৪২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ধাতুটি কোথায় পাওয়া যায়?
[সম্পাদনা]উলফ্রামাইট ((Fe, Mn)WO4) এবং শিলাইট (CaWO4) সহ কিছু খনিজ পদার্থে টাংস্টেন পাওয়া যায়। বিশ্বের প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগ টাংস্টেন চীন দেশ থেকে আসে। এছাড়া ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, দক্ষিণ কোরিয়া, বলিভিয়া, রাশিয়া এবং পর্তুগালে টাংস্টেনের খনিজ ভান্ডার রয়েছে।
এর ব্যবহার কোথায়?
[সম্পাদনা]টাংস্টেনের গলনাঙ্ক অনেক বেশি। তাই ভাস্বর আলোর বাল্ব ফিলামেন্টে টাংস্টেন ব্যবহৃত হয়। যেহেতু ভাস্বর আলোর বাল্বে বিদ্যুৎ শক্তি বেশি খরচ হয় তাই আজকাল এই বাল্বের ব্যবহার কম দেখা যায়। ফ্লুরোসেন্ট আলোর বাল্ব, টেলিভিশন এবং এক্স-রে টিউবও টাংস্টেন ব্যবহৃত হয়।
নানারকম সংকর ধাতু তৈরিতে টাংস্টেন কাজে লাগে। টাংস্টেনের সঙ্গে কার্বনের বিক্রিয়া করে টাংস্টেন কার্বাইড (WC) তৈরি করা হয়। টাংস্টেন কার্বাইড অসম্ভব রকমের শক্ত একটি যৌগ। ড্রিল বিট, উচ্চ-গতির ধাতু কাটার যন্ত্র এবং খনির যন্ত্রপাতি তৈরি করতে টাংস্টেন কার্বাইড ব্যবহৃত হয়।
ধাতুটি কি বিপজ্জনক?
[সম্পাদনা]টাংস্টেন ধাতুর মধ্য দিয়ে যখন বৈদ্যুতিক প্রবাহ যায়, তখন এটি খুব গরম হয়। সেইসময় এটি স্পর্শ করলে পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।