উইকিশৈশব:রাসায়নিক মৌল/অ্যান্টিমনি
ধাতুটি দেখতে, স্পর্শে, স্বাদে, অথবা গন্ধে কেমন লাগে?
[সম্পাদনা]অ্যান্টিমনি নীলচে রূপালী-সাদা রঙের ভঙ্গুর পদার্থ। অ্যান্টিমনিকে ধাতুকল্প বলা হয়। এর কোনো গন্ধ নেই। অ্যান্টিমনি মানুষের জন্য বিষাক্ত, তাই দুর্ভাগ্যবশত এটির স্বাদ আমরা নিতে পারি না! তোমরাও এর স্বাদ নেবার চেষ্টা করো না।
ধাতুটি কিভাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল?
[সম্পাদনা]বহু প্রাচীনকাল থেকেই অ্যান্টিমনির সাথে মানুষের পরিচয় ছিল। তাই এর আবিষ্কারক এবং আবিষ্কারের সময়কাল উভয়ই অজানা। বহুদিন পর্যন্ত এই মৌলটিকে সীসার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়েছিলো। ১৭০০ সালের গোড়ার দিকে ফরাসি রসায়নবিদ নিকোলাস লেমেরি সর্বপ্রথম অ্যান্টিমনি এবং এর যৌগগুলি নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করেন। ১৭০৭ সালে তার গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল।
ধাতুটির নাম কোথা থেকে এসেছে?
[সম্পাদনা]"অ্যান্টিমনি" নামটি দুটি গ্রীক শব্দের সংমিশ্রণ থেকে এসেছে। অ্যান্টি শব্দের অর্থ হলো বিরুদ্ধে এবং মনোস শব্দের অর্থ নির্জনতা। এই শব্দ দু'টি একত্রিত করলে অর্থ দাঁড়ায় "নির্জনতার বিরুদ্ধে" অর্থাৎ "একা নয়"। Sb হলো অ্যান্টিমনির রাসায়নিক প্রতীক।
ধাতুটি কোথায় পাওয়া যায়?
[সম্পাদনা]তুমি কি জান?
- প্রাচীন মিশরীয়রা প্রসাধনে কালো আইশ্যাডো করতে অ্যান্টিমনির খনিজ স্টিবনাইট ব্যবহার করত।
- অ্যান্টিমনির ধাতু এবং অধাতু দুটিরই বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি একটি ধাতুকল্প।
- অ্যান্টিমনি অম্লের সাথে সহজে বিক্রিয়া করে না।
অ্যান্টিমনি প্রকৃতিতে সাধারণত স্টিবনাইট (Sb2S3) এবং ভ্যালেন্টিনাইট (Sb2O3) খনিজ থেকেপাওয়া যায়। ভূত্বকে এটি খুবই নগণ্য পরিমাণে থাকে। ভূত্বকে অ্যান্টিমনির পরিমাণ হলো প্রতি লক্ষ ভাগে মাত্র দুই ভাগ। চীন দেশে পৃথিবীর ৮০ ভাগ অ্যান্টিমনি মজুত রয়েছে। রাশিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতেও এর মজুত ভাণ্ডার রয়েছে।
এর ব্যবহার কোথায়?
[সম্পাদনা]সীসাকে শক্ত করার জন্য অ্যান্টিমনি ব্যবহার করা হয়। প্লাস্টিক এবং রাসায়নিক উৎপাদনেও অ্যান্টিমনি ব্যবহৃত হয়। অ্যান্টিমনি ধাতুর সংকর ব্যাটারি, কম ঘর্ষণধর্মী ধাতু, টাইপ ধাতু, তারের উপর প্রলেপ প্রভৃতি পণ্য তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। অ্যান্টিমনির যৌগগুলি অগ্নি নিরোধক উপকরণ তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়। রঙ, সিরামিক সামগ্রী, কাচ এবং মৃৎপাত্র তৈরিতে অ্যান্টিমনি কাজে লাগে।
ধাতুটি কি বিপজ্জনক?
[সম্পাদনা]অ্যান্টিমনি অত্যন্ত বিপজ্জনক। এটি একসময় পরজীবী মারার জন্য ব্যবহৃত হতো। এর অনেক যৌগই অত্যন্ত ক্ষতিকর।