উইকিশৈশব:মানবদেহ/পাচনতন্ত্র/বৃহদন্ত্র

উইকিবই থেকে

বৃহদন্ত্র হল পাচনতন্ত্রের একদম শেষ অংশ। বৃহদন্ত্রে এসে, খাদ্য সম্পূর্ণ পাচিত হয়ে যায়, এখানে খাদ্যের শেষ অংশের পুষ্টি শোষণ করে নেওয়া চলতে থাকে। পাচিত খাদ্যের সম্পূর্ণ পুষ্টি গ্রহণ হয়ে গেলে যা পড়ে থাকে তাকে বলা হয় বর্জ্য। এটি শরীর থেকে বার করে দিতে হয় এবং সেই কাজটিও এই শেষ অংশেই হয়।

বৃহদন্ত্রকে কেমন দেখতে?[সম্পাদনা]

বৃহদন্ত্র চেহারায় ক্ষুদ্রান্ত্রের চেয়ে বড় কিন্তু দৈর্ঘ্যে এটি অনেক কম। এটি প্রায় ২.৫ ইঞ্চি (৬.৪ সেমি) প্রশস্ত এবং ৫ ফুট (১.৫ মিটার) লম্বা। এটি ইংরেজির ওল্টানো 'ইউ' এর মত দেখতে এবং এটি ক্ষুদ্রান্ত্রের চারপাশ আবৃত করে রাখে।

বৃহদন্ত্রের অংশগুলি কি কি?[সম্পাদনা]

বৃহদন্ত্রটি দেখতে একটি ওল্টানো অশ্ব ক্ষুরের মত (অশ্বক্ষুরাকৃতি)। বাম দিকের অংশটি ওপর দিকে উঠে গেছে, একে বলা হয় কোলন। ওপরে ওঠার পর যে অংশটি আড়াআড়ি গেছে সেটিকে বলা হয় ট্রান্সভার্স কোলন। যে অংশটি নীচে ফিরে আসে তার নাম হল অবরোহী কোলন। এর শেষে আছে মলদ্বার। এইখানে যে ছিদ্র আছে তার মাধ্যমে বর্জ্য শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

বৃহদন্ত্রের কাজ কি?[সম্পাদনা]

বৃহদন্ত্রে এসে খাদ্যের পাচন শেষ হয়। পাচনতন্ত্রের অন্যান্য যে কোন অংশের চেয়ে বৃহদন্ত্রের মধ্যে খাদ্য বেশি সময় ধরে থাকে। সারা দিন বা তার বেশি সময় পর্যন্তও সেখানে খাবার থাকতে পারে। খাদ্যের অবশিষ্ট পুষ্টিকর অংশ এখানে এসে রক্তে শোষিত হয়। বৃহদন্ত্রের মধ্যে যে তরল প্রবেশ করে তার অধিকাংশই জল। এই জলেরও অনেকটা অংশ রক্তে শোষিত হয়।

এরপরে যা অবশিষ্ট পড়ে থাকে তা হল বর্জ্য বা মল। তুমি বাথরুমে গিয়ে এই অংশটি শরীর থেকে বাইরে বার করে দাও।

বৃহদন্ত্র কিভাবে শরীরের অন্যান্য অংশের সাথে যোগাযোগ করে?[সম্পাদনা]

বৃহদন্ত্র সংযুক্ত থাকে ক্ষুদ্রান্ত্রের সাথে। যদিও বৃহদন্ত্র দৈর্ঘ্যে ক্ষুদ্রান্ত্রের থেকে অনেক ছোট, কিন্তু পাচন ব্যবস্থায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জল মিশ্রিত খাদ্য ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে বৃহদন্ত্রের মধ্যে আসে।

খনিজ এবং জল বৃহদন্ত্র থেকে রক্তে শোষিত হয়। তারপর সেগুলি শরীরের বাকি অংশে ব্যবহার করা যায়।

বৃহদন্ত্রের সাথে সংযুক্ত একটি অঙ্গ থাকে, যাকে বলা হয় অ্যাপেন্ডিক্স। এটি আমাদের শরীরে কোন কাজ করে বলে জানা যায়নি। কখনও কখনও, এখানে সংক্রমণ ঘটতে পারে এবং সেক্ষেত্রে এটি ফুলে যায়। সংক্রামিত অ্যাপেন্ডিক্সকে ফেটে যাওয়ার আগে অপসারণ করতে হয়, না হলে শেষ পর্যন্ত মৃত্যু ঘটতে পারে।