উইকিশৈশব:মজার বৈজ্ঞানিক গবেষণা/How to Make an Electromagnet
জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল এফআরএসই এফআরএস (১৩ জুন ১৮৩১ - ৫ নভেম্বর ১৮৭৯) ছিলেন একজন বিশিষ্ট স্কটিশ বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদ। তিনি তাড়িৎচৌম্বক তরঙ্গের সর্বোত্তম তত্ত্বটি বর্ণণা করেছিলেন। যার সাহায্যেই তড়িৎ, চুম্বকত্ব, তড়িৎ চুম্বক এবং আলোকে একই শক্তির বিভিন্ন রূপ হিসেবে বর্ণনা করা সম্ভব হয়েছিল।
জেমস ক্লার্ক ম্যাক্স ওয়েলের তড়িৎচুম্বকীয় বিষয়টি নিম্নরূপে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি দেওয়া হয়েছে:
তড়িৎচুম্বক (Electromagnet) বলতে এমন এক ধরনের চুম্বককে বোঝায় যার চৌম্বকীয় ক্ষেত্রটি তড়িৎপ্রবাহের কারণে সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে চৌম্বকীয় ক্ষেত্রটিও বিনষ্ট হয়ে যায়।
নরম এবং কাঁচা লোহা ব্যবহার করা হয় তড়িৎ চুম্বক তৈরির ক্ষেত্রে। ফলে তড়িৎচুম্বকীয় প্রবাহ চলাকালীন লোহা কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ব্যবহৃত লোহাটির কোনরকম চুম্বকত্ব ধর্ম থাকবে না। কারণ, লোহাটিতে তড়িৎ প্রবাহ করা হলে চুম্বকত্ব ধর্ম বজায় থাকবে এবং তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গেই চুম্বকত্ব আবার বিনষ্ট হয়ে যাবে।
সাধারণত, অন্তরিত তড়িৎপরিবাহী তারকে লোহার মজ্জার ওপর কুণ্ডলীকৃত করে পেঁচিয়ে তড়িৎচুম্বক তৈরি করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, বাড়িতে কিছু তড়িৎ চুম্বকের (Electromagnet) ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে একটি বৈদ্যুতিক পাখা, বৈদ্যুতিক ডোরবেল, ইন্ডাকশন কুকার, ম্যাগনেটিক লক ইত্যাদি। বৈদ্যুতিক পাখায়, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশন মোটরকে ঘুরিয়ে রাখে এবং পাখার ব্লেডকে ঘোরানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
সাধারণ পদ্ধতিতে ইলেকট্রোম্যাগনেট বা তড়িৎচুম্বক তৈরি:
প্রথমত, একটি ব্যাটারি কোষ নিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, ব্যাটারির ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক প্রান্তে তার যুক্ত করতে হবে।
তৃতীয়ত, উক্তি কাঁচা নরম লোহার দণ্ড নিতে হবে এবং তার ওপর অন্তরিত তড়িৎ পরিবাহী তারকে কয়েক পাক পেঁচিয়ে নিতে হবে।
চতুর্থত, ব্যাটারির দুই প্রান্তে লোহায় পেঁচানো তারের বা কয়েলের দুটি তারের প্রান্ত দুই দিকে যুক্ত করতে হবে।
পঞ্চমত, এবার লোহার উপরে পাকানো তারের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হওয়ার কারণে লোহাটি তড়িৎ চুম্বকে পরিণত হয়েছে। এখন লোহার সংস্পর্শে অন্য কোন লোহাকে আনা হলে তা চুম্বকত্বের মাধ্যমে ওই লোহা সঙ্গে আটকে যাবে।
এই পদ্ধতিকে অবলম্বন করেই সমস্ত ধরনের ওয়ারলেস ট্রান্সফরমার, টেসলা কয়েল এবং ওয়ারলেস সমস্ত ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র প্রস্তুত করা হয়।
তড়িৎচুম্বকের শক্তি বৃদ্ধি:
প্রথমত, চৌম্বকীয় উপাদানের কেন্দ্রের চারপাশে কয়েলের সংখ্যা বৃদ্ধি করে, কাঁচা লোহার গুণ বৃদ্ধি করে তড়িৎ চুম্বকের শক্তি বৃদ্ধি করা পারে।
দ্বিতীয়ত, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট বাড়িয়ে তড়িৎচুম্বকের শক্তি বাড়ানো হয়। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটের মধ্য দিয়ে যাওয়া ভোল্টেজ বাড়িয়ে তড়িৎচুম্বকের শক্তি বাড়ানো হয়।
আধুনিক সভ্যতায় বড় বড় উন্নয়নমূলক কারখানায় ইলেকট্রোম্যাগনেটিক এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সেখানে লোহার চূর্ণকে একত্রিত করার জন্য তড়িৎ চুম্বকীয় বল প্রয়োগ করা হয়।
বৈজ্ঞানিক গবেষণাগারও তড়িৎচুম্বকীয় শক্তির ব্যবহার অনেক।