বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিশৈশব:মজার বৈজ্ঞানিক গবেষণা/লাল বাঁধাকপি

উইকিবই থেকে

একটি অম্ল এবং ক্ষার নির্দেশক হলো এমন একটি রাসায়নিক যা প্রমাণ করে যে বিভিন্ন রাসায়নিকগুলি অম্ল (যেমন: লেবুর রস) নাকি ক্ষার (যেমন: বেকিং পাউডার)। একে রাসায়নিকের pH বলা হয়। তুমি লাল বাঁধাকপি রস ব্যবহার করে একটি নির্দেশক তৈরি করতে পারো। রাসায়নিকটি কতটা অম্লীয় বা ক্ষারীয় ( অ্যালকালাইন) তার উপর নির্ভর করে বাঁধাকপির রসের রঙ পরিবর্তন হয়। pH স্তরটি পরীক্ষিত রাসায়নিকের হাইড্রোজেনের পরিমাণ ("pH" এর "H") আয়ন দ্বারা নির্দেশিত হয়। হাইড্রোজেন আয়ন হলো সেসকল প্রোটন যেগুলির ইলেকট্রনগুলিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল (যেহেতু হাইড্রোজেন পরমাণু একটি প্রোটন এবং একটি ইলেকট্রন নিয়ে গঠিত)।

সুইমিং পুল সঠিক pH এ রাখা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রায়শই এই ধরনের একটি পরীক্ষা করে থাকি। যদি একটি সুইমিং পুলের পানি খুব বেশি অম্লীয় বা খুব ক্ষারীয় ( অ্যালকালাইন) হয়, তবে এটি পুলের সরঞ্জাম, স্নানের পোষাকগুলির ক্ষতি করতে পারে বা ক্লোরিনকে বন্ধ করতে পারে যা পুলগুলিকে সঠিকভাবে কাজ করার জন্য পরিষ্কার রাখে।

১ থেকে ১৪ পর্যন্ত একটি স্কেলে pH পরিমাপ করা হয়। নিরপেক্ষ রাসায়নিকের pH থাকে ৭। অম্লীয় রাসায়নিকের pH থাকে ১ - ৬ । ক্ষারীয় (অ্যালকালাইন) রাসায়নিকের pH ৮ - ১৪ এর মধ্যে থাকে।

পরীক্ষণ[সম্পাদনা]

নিরাপত্তা[সম্পাদনা]

অন্যসকল পরীক্ষার মতো, তোমার সর্বদা একজন প্রাপ্তবয়স্কের কাছ থেকে সহায়তা নেওয়া উচিত। কিছু অম্ল এবং ক্ষার তোমার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে, সুতরাং তোমার পরা উচিত:

  • রাবার গ্লাভস
  • একটি বর্হিবাস
  • নিরাপত্তা চশমা (সাধারণ চশমা, সানগ্লাস বা সুইমিং গগলস ব্যবহার করা যাবে যদি তোমার নিরাপত্তা চশমা না থাকে )।

তুমি যদি তোমার হাত বা গ্লাভস দ্বারা কোনো রাসায়নিক ধরো তবে তোমার চোখ স্পর্শ করবে না। পরীক্ষা শেষ করার পর তোমার হাত ধুয়ে নেবে।

তোমার যা যা প্রয়োজন[সম্পাদনা]

  • একটি লাল বাঁধাকপি
  • একটি ছুরি বা গ্রেটার
  • একটি মাঝারি আকারের বাটি
  • কমপক্ষে ৪ টি ছোট কাপ
  • পরীক্ষা করার জন্য রাসায়নিক যেমন: লেবুর রস এবং বেকিং পাউডার বা সোডা
  • কফি ফিল্টার

ধাপ ১[সম্পাদনা]

  • বাঁধাকপির এক চতুর্থাংশ বা অর্ধেক ছোট টুকরো করে কাটতে বা গ্রেট করতে বাবা-মা, অভিভাবক বা শিক্ষককের সাহায্য নাও।
  • একটি মাঝারি আকারের বাটিতে বাঁধাকপি রাখো।
  • বাঁধাকপির উপর পানি ঢেলে দেও। তুমি ঠাণ্ডা পানি, উষ্ণ বা ফুটন্ত পানি ব্যবহার করতে পারো। ফুটন্ত পানি সবচেয়ে দ্রুত কাজ করবে, কিন্তু শুধুমাত্র তোমাকে সাহায্য করার জন্য যদি একজন প্রাপ্তবয়স্ক থাকে তবেই পানি ফুটিয়ে নেও।
  • বাঁধাকপিকে কিছুক্ষণ ( ৩০- ৪৫ মিনিট) পানিতে রাখো, যতক্ষণ না পানি গভীর বেগুনি রঙ ধারণ করে। প্রক্রিয়াটি দ্রুত করার জন্য তুমি মিশ্রণটি নাড়াতে পারো।

ধাপ ২[সম্পাদনা]

  • একটি কফি ফিল্টার বা ছাঁকুনি ব্যবহার করে, একটি কাপে রস ছেঁকে নেও। এটি গাঢ় নীলাভ বেগুনি রঙের হতে হবে।
  • ছোট প্লাস্টিকের কাপগুলোতে সমান পরিমাণে ছাঁকনকৃত তরল ঢেলে দাও। এগুলি হলো তোমার 'টেস্ট টিউব' যাতে তুমি বিভিন্ন রাসায়নিকের পরীক্ষা করবে।

ধাপ ৩[সম্পাদনা]

  • তোমার কাপগুলো ('টেস্ট টিউব') একপাশে রেখে দাও। এটা তোমার ইচ্ছামতো করতে পারো। এগুলোতে ইতিমধ্যে পানি রয়েছে, সাধারণত যার pH এর মান ৭ হয়। এর অর্থ হলো যে পানি কোনো অম্ল বা ক্ষার নয়।
  • কিছু পরীক্ষণ উপযোগী রাসায়নিক একত্রিত করো (নিম্নে পরীক্ষা করার জন্য কিছু ভালো রাসায়নিকের নাম উল্লেখ করা হলো )।
  • প্রত্যেকটি কাপে পরীক্ষণাধীন রাসায়নিকের নাম দিয়ে লেবেল করো যা কাপটিতে মেশানো থাকবে, তাহলে তুমি প্রতিটি কাপে কী রাখছো তা মনে রাখতে পারবে।

তুমি কোন রাসায়নিকটিকে সবচেয়ে অম্লীয় মনে করো?

ধাপ ৪[সম্পাদনা]

  • প্রত্যেকটি পরীক্ষণযোগ্য রাসায়নিকের অল্প পরিমাণ ঢালো, ফোঁটায় ফোঁটায় বা চামচ দ্বারা যে কাপে যার নামের লেবেল লাগানো আছে সেই কাপে যোগ করো।
  • জুসের রঙের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করো। যদি জুসটি লালচে হয়ে যায়, তবে তুমি যে রাসায়নিকটি পরীক্ষা করছো তা হলো অম্ল। পানির রঙ যদি নীলচে হয়ে যায়, তবে তুমি যে রাসায়নিকটি পরীক্ষা করছো সেটি একটি ক্ষার। যদি এটির রঙের কোনো পরিবর্তন না হয় তবে রাসায়নিকটি পানির মতো নিরপেক্ষ।


পরীক্ষা করার জন্য কিছু রাসায়নিক[সম্পাদনা]

  • লেবুর রস
  • বেকিং পাউডার বা সোডা
  • দুধ
  • দই
  • ভিনেগার
  • সাবান

পর্যবেক্ষণ[সম্পাদনা]

তোমার কাপগুলিকে লাল থেকে গোলাপী, গাঢ় বেগুনি, বেগুনি, নীল এবং সবুজ এভাবে পরপর সাজাও। তোমার কাছে এই সমস্ত রঙ হয়তো নাও থাকতে পারে, তবে এটা যথেষ্ট।

যে কাপটি সবচেয়ে লাল সেটি হলো সবচেয়ে অম্লীয়। যে কাপটি সবচেয়ে নীল বা সবুজ তা হলো সবচেয়ে ক্ষারীয় (অ্যালকালাইন)। কোন রাসায়নিক সবচেয়ে অম্লীয়? কোনটি সবচেয়ে ক্ষারীয় (অ্যালকালাইন)?