বিষয়বস্তুতে চলুন

উইকিশৈশব:বিখ্যাত ভারতীয়/আদি শঙ্করাচার্য

উইকিবই থেকে
আদি শঙ্করাচার্য


(৭৮৮-৮২০)


রাজা রবি বর্মার আঁকা আদি শঙ্করাচার্যের ছবি

আদি শঙ্করাচার্য ছিলেন একজন দার্শনিক। ‘অদ্বৈত বেদান্ত’ নামে হিন্দু দর্শনের যে শাখাটি আছে, তিনি ছিলেন সেই শাখার একজন প্রবক্তা। সারা ভারত ঘুরে ঘুরে তিনি তার মত প্রচার করেছিলেন। দেশের চার প্রান্তে স্থাপন করেছিলেন চারটি মঠ। মূলত তারই প্রচেষ্টায় হিন্দুধর্ম ও তার অদ্বৈত বেদান্ত মতটি নতুন করে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।

এখনকার কেরল রাজ্যের কালাডি নামে একটি গ্রামে শঙ্করাচার্যের জন্ম হয়েছিল। ছেলেবেলা থেকেই লেখাপড়ায় বেশ ভাল ছিলেন। মাত্র আট বছর বয়সেই চারখানি বেদ পড়ে শেষ করে ফেলেন। তারপর খুব অল্প বয়সে সন্ন্যাসী হয়ে যান তিনি। কেরল ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন উত্তর ভারতের উদ্দেশ্যে। হিন্দুধর্মকে পথনির্দেশ দেওয়ার জন্য ভারতের চার প্রান্তে স্থাপন করেন চারখানি মঠ। এই মঠগুলি হল শৃঙ্গেরী (এখনকার কর্ণাটক রাজ্যে), দ্বারকা (এখনকার গুজরাত রাজ্যে), পুরী (এখনকার ওড়িশা রাজ্যে) ও জ্যোতির্মঠ বা জোশিমঠ (এখনকার উত্তরাখণ্ড রাজ্যে)। হিন্দুদের তিনখানি অন্যতম প্রধান ধর্মগ্রন্থ হল উপনিষদ, ব্রহ্মসূত্র ও ভাগবত গীতা। এই তিনটি বইয়ের উপর শঙ্করাচার্য যে ভাষ্য বা টীকা লিখেছিলেন, তা খুবই বিখ্যাত। এছাড়া আরও কয়েকটি দর্শন গ্রন্থ এবং দেবদেবীদের স্তবস্তুতিও রচনা করেছিলেন তিনি।

সেই সময় হিন্দুধর্ম নানাভাবে পিছিয়ে পড়েছিল। শঙ্করাচার্য সেই পিছিয়ে পড়া হিন্দুধর্মকে পুনরায় জাগিয়ে তোলার ব্যাপারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন। তার প্রচারকার্যের ফলে ভারতে বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্মের প্রভাব কমতে শুরু করে। মাত্র বত্রিশ বছর বেঁচেছিলেন তিনি। কিন্তু তার হিন্দুধর্ম সংস্কারের কথা আজও লোকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করে। একটি সম্প্রদায় আজও তার মতাবলম্বী।