উইকিশৈশব:পাখপাখালির দেশে/শালিক

উইকিবই থেকে
হিলডাব্রান্টের শালিক

শালিক বা শালিখ স্টার্নিডি গোত্রের অন্তর্গত একদল ছোট ও মাঝারি আকারের বৃক্ষচর পাখি। স্টার্নিডি নামটি লাতিন স্টারনাস থেকে এসেছে যার অর্থ শালিক। এটি পক্ষী শ্রেণীর প্যাসেরিফর্ম বর্গের প্যাসেরি উপবর্গের অন্তর্গত। অধিকাংশ বড় আকৃতির এশীয় শালিক প্রজাতি ময়না নামে পরিচিত। ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং বিষুবীয় অঞ্চলের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলোতে শালিক দেখা যায়। কয়েক প্রজাতির এশীয় ও ইউরোপীয় শালিক প্রজাতিকে উত্তর আমেরিকা, হাওয়াই ও নিউজিল্যান্ডে অবমুক্ত করা হয়েছে।

শালিক বেশ কয়েক ধরনের হয়। সাদা-কালো শালিককে ডাকা হয় গো-শালিক বা গোবরে-শালিক নামে। এদের ঠোঁটের রং গাঢ় কমলা-হলুদ এবং চোখের মণি হালকা হলুদ রঙের। অন্যদিকে ঝুঁটি-শালিকও সাদা-কালো রঙের হয় কিন্তু এর মাথায় একটি ঝুঁটি রয়েছে। গাঢ় বাদামি শালিককে বলা হয় ভাত শালিক। এদের ঠোঁট ও পা উজ্জ্বল হলুদ রঙের। এর বাইরেও রয়েছে গাঙশালিক, বামন-শালিক ইত্যাদি।

শালিকের স্বরতন্ত্রী বেশ জটিল হওয়ায় এদের ডাক বিচিত্র ও বিভিন্ন স্বরে ওঠানামা করে। এরা খুব সহজেই আশেপাশের আওয়াজ আর মানুষের কথা অনুকরণ করতে পারে। এরা মানুষের গলার স্বর শুনে নির্দিষ্ট কাউকে চিনতে সক্ষম এবং বর্তমানে এরা মানব ভাষা বিষয়ক গবেষণার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে।[১] গায়ক পাখি হিসেবেও শালিকের সুনাম রয়েছে, তবে কাঠ-শালিক সবচাইতে ভালো গাইতে পারে। প্রায় সব প্রজাতির শালিকই বিভিন্ন স্বরে ডাকতে পারে এবং অন্য শালিকের কণ্ঠ নকল করতে পারে।

সামাজিক পাখি হিসেবে শালিকের সুনাম রয়েছে। এরা দলবেঁধে ডাকে ও ঝগড়াঝাঁটিও করে।

সধারণত শালিকের বাসা বাঁধতে সময় লাগে ৫-৭ দিন; তবে গো-শালিক ১০-১৫ দিন সময় নেয়। শালিক একবারে ৩-৭টি ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটতে বাচ্চা মালিক জন্ম নিতে সময় লাগে ১৫-২১ দিন। বাচ্চা শালিকগুলো সাধারণত ১৯-২৭ দিন সময় হয় উড়তে শেখার জন্য।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Zimmer, Carl. "Starlings' Listening Skills May Shed Light on Language Evolution". The New York Times, May 2, 2006. Accessed 14 January 2009.