বিষয়বস্তুতে চলুন

সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?/ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত ও জনপরিসর

উইকিবই থেকে

ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত ও জনপরিসর

[সম্পাদনা]

ভূমিকা

[সম্পাদনা]

"সবকিছুর জন্যেই ইন্টারনেট?" বইয়ের এই অধ্যায়টিতে ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত ও জনপরিসরের মূল ধারণা এবং ধারণাগুলো কেন্দ্র করে আলোচনা করা হয়েছে। মূল প্রশ্ন হলো ইন্টারনেটের ব্যবহার আমাদের ব্যক্তিগত পরিসরকে কতটা প্রভাবিত করে এবং কোথা থেকে জনপরিসর শুরু হয় এবং কোথায় ব্যক্তিগত পরিসর শেষ হয়, এই বিষয়টির ব্যাপারে ব্যক্তি তখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে কিনা। ব্যক্তিগত ও জনপরিসরে এই পরিবর্তন ইন্টারনেটের বিবর্তন এবং ডিজিটাল মিডিয়ার উত্থানের ফলে এসেছে। এই দুটোর মধ্যে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই বিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবকে স্থান ও কালের সংযোগ বিচ্ছিন্নতা হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। কারণ বর্তমানে সারা বিশ্ব থেকে যে কোনও সময় যেকোনো ধরণের বিষয়বস্তু পাওয়া যায় । একটি হাইব্রিড মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট অনলাইনে প্রচারণা তৈরি ও বৃদ্ধি করে। বিষয়টি ইমপ্রেশন ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়া দ্বারা চালিত হয়। এটি বিভিন্ন রূপে দেখা যায়, যেমনটি আত্ম-আখ্যান বা ন্যারেটিভ অফ দ্য সেল্ফ-এ আলোচনা করা হয়েছে। এই অধ্যায়টি প্রমাণ করবে যে ইন্টারনেটের কার্যকলাপ কতটা বেনামী হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। কারণ বেনামী ওয়েবের পক্ষে অনেক যুক্তি রয়েছে। যদিও অনেকেই হ্যাকার এবং ট্রোলিং এর বিরুদ্ধে। অনলাইনে ব্যক্তিগত ও জন পরিসরের অস্পষ্টতা এবং দৃশ্যমানতার ফলে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তার পাশাপাশি জগতের আক্রমণও একটি সমস্যা হয়ে উঠছে।এই অধ্যায়ে নাগরিকদের মাধ্যমে অনলাইন আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। এটি পূর্ববর্তী বেশ কিছু ঘটনাগুলির উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে আরব বসন্ত সর্বাগ্রে উল্লেখযোগ্য। সুতরাং বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে, কিভাবে সামাজিক মিডিয়া রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।পরিশেষে জন ও ব্যক্তিগত পরিসরের ধারণাগুলো বেশ কয়েকজন তাত্ত্বিক আলোচনা করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন ইয়ুর্গেন হ্যাবারমাস। তিনি এমন একটি জন পরিসরের আদর্শ সম্পর্কে লিখেছেন, যেখানে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোকে প্রভাবিত করার জন্য জনসাধারণের মধ্যে আলোচনা থাকবে। অন্যদিকে হ্যাবারমাসের প্রধান সমালোচকদের একজন জন থম্পসন বলেছেন যে মধ্যস্থতামূলক জনপরিসরের একটি নতুন রূপ রয়েছে। হামিদ ভ্যান কোটেন ম্যাকলুহান্সের তাপমাত্রা স্কেল সম্পর্কে কথা বলেছেন।উপরন্তু এটি গোপনীয়তার অধিকারের সাথেও জড়িত। হাইডেগার যুক্তি দিয়েছিলেন যে ব্যক্তিগত পরিসরের মাধ্যমেই কেউ সত্যিকার অর্থে নিজেকে প্রকাশ করতে পারে। ব্যক্তির ব্যক্তিগত পরিসরের ব্যবহার মূলত একটি নিরাপদ স্থান যেখানে সে একা থাকতে পারে। কিন্তু একাকী মানেই বিচ্ছিন্নতা নয়; সে যেভাবে ইচ্ছা নিজেকে উপস্থাপন করতে পারে।তদুপরি ব্যক্তিগত পরিসররে ঘর সহ অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু রেমন্ড উইলিয়ামস[] "ভ্রাম্যমাণ ব্যক্তিগতকরণ" শব্দটি উল্লেখ করেছেন, সমাজ এখন তাদের সোফার আরামের মধ্যে বসেই ভ্রমণ করতে এবং বিশ্বকে অনুভব করতে পারে। প্রযুক্তি আমাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া সহজ করে তুলেছে। কিন্তু সেগুলো গোপন রাখাও কঠিন করে পড়েছে।ডিজিটাল মিডিয়ার ব্যক্তিগত ক্ষেত্র হলো সেই স্থান যেখানে একজন ব্যক্তি নিজের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্তরের কর্তৃত্ব নিশ্চিত করতে পারে। এই কারণেই বেশিরভাগ সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে (SNS) একটি গোপনীয়তা অপশন থাকে, যাতে ব্যবহারকারী তাদের অনলাইন ব্যবহারে আরও সুরক্ষিত এবং নিয়ন্ত্রণে অনুভব করতে পারে।

ব্যক্তিগত পরিসরের সংজ্ঞা

[সম্পাদনা]

ইয়ুর্গেন হ্যাবারমাস জনপরিসরকে " ভার্চুয়াল বা কাল্পনিক সম্প্রদায়" হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তারমতে এটি অগত্যা কোনও শনাক্তযোগ্য স্থানে বিদ্যমান থাকে না। আদর্শ আকারে জনপরিসর "একটি জনসাধারণের মতো একত্রিত ব্যক্তিদের দ্বারা গঠিত এবং রাষ্ট্রের সাথে সমাজের চাহিদাগুলো প্রকাশ করে "।জনপরিসরের ধারণাটি অষ্টাদশ শতকে সৃষ্টি হয়েছিল। তবে এতে কোন সংশয় নেই যে এটি একটি আধুনিক গুরুত্ব বহন করে। এটি মূলত সমাজের নাগরিকদের তাদের স্বার্থ প্রকাশ করার একটি উপায়। এটির পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছে যে ইন্টারনেট জনসাধারণের ক্ষেত্রের ঘটনাটিকে সহজ করেছে কারণ এটি একটি ফোরাম হিসেবে কাজ করে যেখানে জনমত গঠিত হয়। কিন্তু সাইবার যুগে জনসাধারণের ক্ষেত্রের ভূমিকা কী?ইন্টারনেট ব্যক্তির জন্য একটি বিশ্বব্যাপী ফোরামে সরাসরি প্রবেশাধিকার তৈরি করেছে। সেখানে মানুষ সেন্সরশিপ ছাড়াই তাদের যুক্তি এবং মতামত প্রকাশ করতে পারে। আমরা দেখেছি যে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের উচ্ছ্বাসের ফলে উনিশ শতকের জনগণের ক্ষেত্রের সংজ্ঞা মৌলিকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। এই ধারণাটি এখনও বর্তমান; নেটওয়ার্ক সমাজে খুব জীবন্ত। অধিকন্তু, জন পরিসর এখনও জীবিত ও সুস্থ হলেও সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এটিকে কখনোই আগের মতো হতে দেবে না। এর ভবিষ্যৎ ডিজিটাল মিডিয়ার সঙ্গে জড়িত। তাই এটি একটি উত্তেজনাপূর্ণ ধারণা। হাবারমাসের ক্লাসিক যুক্তি যে গণমাধ্যম শক্তির কাঠামো দ্বারা অনিবার্যভাবে হুমকির মুখে পড়ে সেটি সঠিক। কারণ ডিজিটাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে ব্যক্তিরা আত্মবিশ্বাসী বোধ করতে পারে।

ডিজিটাল যুগের সংজ্ঞা

[সম্পাদনা]

"গতবার যখন আমি পরীক্ষা করেছিলাম, তখন ডিজিটাল মহাবিশ্ব প্রতি সেকেন্ডে পাঁচ ট্রিলিয়ন বিট স্টোরেজ এবং প্রক্রিয়াকরণের দিকে দুই ট্রিলিয়ন ট্রানজিস্টর হারে প্রসারিত হচ্ছিল।
আমি এমন একজনকেও চিনি না যে ডিজিটাল মহাবিশ্বে ডুবে নেই। এমনকি যারা প্রযুক্তির তীব্র বিরোধী তারাও সম্ভবত কোথাও কোনও ওয়েবসাইটে এই মতামত প্রকাশ করছে। বিদ্যুৎবিহীন তৃতীয় বিশ্বের গ্রামবাসীদের কাছে মোবাইল ফোন আছে"

১৮ শতকে শিল্প বিপ্লবের সময় বাষ্প ইঞ্জিনের মতো প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন প্রথম সমাজ নির্ধারণের পর ২০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কম্পিউটারের উন্নয়ন এবং তাদের একীকরণ এবং নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে দ্বিতীয় "যান্ত্রিক যুগ" শুরু হয়। ফলস্বরূপ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তৃতীয় সহস্রাব্দের শুরু থেকেই তথ্য সমাজের দিকে পরিচালিত করে। লেমকে এবং ব্রেনারের মতে এটি ডিজিটাল যুগ। তবে থমাস ফ্রিডম্যান ডিজিটাল যুগকে বিশ্বায়ন ৩.০ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তাঁর মতে ১৮ শতকের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী দেশগুলোকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বজয়ের দিকে পরিচালিত করে। ২০০০ সাল পর্যন্ত বিশ্বায়ন ২.০- এর পর বহুজাতিক কোম্পানি গোষ্ঠীগুলোর উত্থান ঘটে। এগুলো প্রযুক্তিগত ( হার্ডওয়্যার ) উন্নয়নের দ্বারা শক্তিশালী হয়। অবশেষে এখনও স্থায়ী তৃতীয় বিশ্বায়ন প্রতিটি ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করার এবং এর মাধ্যমে প্রযুক্তিগত উন্নতিকে রূপ দেওয়ার ও প্রভাবিত করার সুযোগ দেয়। কারণ বিশ্ব একটি সমতল প্ল্যাটফর্মে সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। ডিজিটাল যুগের প্রতিনিধিত্ব তথ্য যুগের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত, তা হলো তথ্য বেশিরভাগই ডিজিটাল আকারে সংরক্ষিত এবং স্থানান্তরিত হয়। "তথ্য, উপাত্ত এবং অ্যাপ্লিকেশনের ডিজিটালাইজেশন এবং নেটওয়ার্কিংয়ের একাধিক সম্ভাবনা, এর পাশাপাশি অবকাঠামো এবং হার্ডওয়্যারের গতিশীলতা এবং ক্ষুদ্রায়ন ডিজিটাল যুগে সমাজের উন্নয়নকে নির্ধারণ করে। এটি ভবিষ্যতে একটি বিশ্বায়িত বিশ্বের যান্ত্রিকতা, সামাজিক কাঠামো এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।"[]

ডিজিটাল যুগের বিবর্তনীয় পর্যায়[]
১ম পর্যায় ২য় পর্যায় ৩য় পর্যায় ৪র্থ পর্যায়
উত্থান এবং বিচ্ছুরণ সাধারণ গ্রহণযোগ্যতা এবং দৈনন্দিন মোবাইল ব্যবহার সাধারণ পরিপক্কতা এবং ইন্টারনেট অফ থিংস বাস্তব এবং ডিজিটাল নেটওয়ার্কযুক্ত বিশ্বের সম্পূর্ণ একীভূতকরণ
১৯৯০ - ২০০০ ২০০০ - প্রায়। ২০১৫ ২০১৫ - প্রায়। ২০৩০ ২০৩০ - ?

ডিজিটাল যুগের ধারণাগত কাঠামো অ্যালান টুরিং এবং ভানাভার বুশের কাছ থেকে পাওয়া যায়। প্রথম মডেলটি টুরিং মেশিনের প্রবর্তন করেছিল। এটি একটি কম্পিউটারের ক্রিয়াকলাপের নীতিগুলোকে খুব সহজ এবং গাণিতিক বিশ্লেষণযোগ্য উপায়ে চিত্রিত করে। তবে ভানভার বুশ তার বিখ্যাত প্রবন্ধ "As we may think"- এ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তার প্রকাশনার পরে উদ্ভাবিত ডিজিটাল মিডিয়ার ধরণ কী হবে। তিনি একটি কাল্পনিক তথাকথিত <i id="mwgw">মেমেক্স</i> মেশিনের বর্ণনা দিয়েছেন। এর সাহায্যে আমরা প্রত্যেকে একটি ডেস্কটপ থেকে কাজ করব যা আমাদের একে অন্যের সঙ্গে তথ্য সংরক্ষণ, অ্যাক্সেস এবং ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ করে দেবে।[] অর্থাৎ এটি ব্যক্তিগত কম্পিউটার, ইন্টারনেট, হাইপারটেক্সট এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ভিত্তি।ব্যক্তিগত কম্পিউটার (পিসি) -এর উন্নয়ন, বিশেষ করে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের, ডিজিটাল যুগের পথ প্রশস্ত করেছে। প্রথম পিসির আবিষ্কারক বিতর্কিত। ১৯৭০ সালের জন ব্ল্যাঙ্কেনবেকারের কেনবাক-১-কে প্রথম পিসি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[] কিন্তু ১৯৪৯ সালের শুরুর দিকে এডমন্ড বার্কলে তার সাইমন উপস্থাপনের রেকর্ড রয়েছে। ব্লিঙ্কেনলাইটস আর্কিওলজিক্যাল ইনস্টিটিউট প্রথম প্রবর্তিত ব্যক্তিগত কম্পিউটার সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা দেয়।

একটি টুরিং মেশিনের পরিচালনার ধারণা
কম্পিউটারগুলো মূলত সামরিক, বৈজ্ঞানিক, সরকারী এবং কর্পোরেট ব্যবহারকারীদের জন্য বিকশিত হয়েছিল যাদের যথেষ্ট চাহিদা ছিল... এবং প্রচুর বাজেট ছিল। তারা ল্যাব, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বড় বড় কোম্পানিগুলোকে জনবহুল করে তুলেছিল। বাড়ি? ছোট ব্যবসা? খুব বেশি না।
তবে সময়ের সাথে সাথে খরচ কমে গেছে।
সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কম্পিউটারগুলো এতটাই পরিশীলিত হয়ে উঠেছে যে তাদের জটিল, প্রযুক্তিগত দিকগুলোএকটি ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেসের আড়ালে লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে। মানুষ এখন কম্পিউটার কিনতে এবং বুঝতে পারছে, যা দৈনন্দিন জীবনকে নাটকীয়ভাবে বদলে দিয়েছে।

এই সময় থেকে শুরু করে লেমকে এবং ব্রেনারের বিবর্তনীয় সিঁড়ি ডিজিটাল যুগের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের পরিবর্তনগুলো বর্ণনা করার পাশাপাশি ভবিষ্যদ্বাণী করে। প্রথম পর্যায়ের মূল লক্ষ্য হলো কম্পিউটারের নেটওয়ার্কিং। ইন্টারনেট আবিষ্কারের পর এর ব্যবহারকারী ইন্টারফেস, বার্নার্স-লি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব, প্রথমবারের মতো একটি অ-বৈজ্ঞানিক ব্যবহার এবং অনলাইন এবং গণনামূলক সম্পদের (দূরবর্তী) অ্যাক্সেস সক্ষম করে। কয়েক বছর আগে প্রথম ওয়েবসাইটটি পুনঃপ্রকাশিত হয়। এটি এখনও এখানে অ্যাক্সেসযোগ্য। ইন্টারনেট এবং WWW এর বৈশিষ্ট্যগুলোর আরও বিস্তারিত ভূমিকা নীচে পাওয়া যাবে।ডিজিটাল যুগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো তথ্যকে একটি সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করা এবং নতুন মাধ্যমের মাধ্যমে ভালো, সাধারণভাবে পরিচালিত, নেটওয়ার্কযুক্ত এবং অ্যাক্সেসযোগ্য করে তোলা এবং অবশেষে সমাজকে জ্ঞান-ভিত্তিক এবং তথ্য অবকাঠামোতে রূপান্তর করা। সেই অনুযায়ী রিনগোল্ড বলেন:

প্রযুক্তিগত রোডম্যাপ: ইন্টারনেট অফ থিংস
কৃত্রিম জনহিতকর কাজের সবচেয়ে সফল সাম্প্রতিক উদাহরণ হলো ইন্টারনেট। [...] ইন্টারনেট যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে সংগঠিত এবং সম্মিলিত কর্মকাণ্ডের নতুন উপায়ের ফলাফল এবং সক্ষম অবকাঠামো উভয়ই। এই নতুন সামাজিক চুক্তি জনসাধারণের পণ্য, জ্ঞান সম্পদের জন্য একটি সাধারণ সম্পদ, তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণকে সক্ষম করে।

অসাধারণ সহযোগী উদ্যোগ ছাড়া ব্যক্তিগত কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট আজকের মতো বিদ্যমান থাকত না, যেখানে সহযোগিতার কাজগুলো মাইক্রোপ্রসেসরের মতোই অপরিহার্য ছিল।

এই ধরণের পরিবর্তন এবং স্মার্টফোন আবিষ্কারের মতো উদ্ভাবনের জন্য অবিরাম আকাঙ্ক্ষা আমাদের সমাজে মোবাইল এবং অনলাইন নেটওয়ার্কিংকে গভীরভাবে প্রোথিত করেছে। এটি একটি সর্বদাসক্রিয় সংস্কৃতির দিকে পরিচালিত করেছে। অবশেষে ইন্টারনেট অফ থিংস ধারণাটি ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত কম্পিউটারগুলোকে বুদ্ধিমান জিনিসপত্রের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করে যা অবচেতনভাবে একজনের কার্যকলাপকে সমর্থন করে।[]ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে লেমকে এবং ব্রেনার কর্তৃক ভবিষ্যদ্বাণী করা চতুর্থ বিবর্তনীয় পর্যায়ের সূচনা করা হয়েছে। প্রশ্নটি উন্মুক্তই রয়ে গেছে: ভবিষ্যতে ডিজিটাল যুগ কীভাবে পরিবর্তিত হবে এবং কখন এটি শেষ হয়ে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়?

দ্ব্যর্থতা নিরসন

[সম্পাদনা]

ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত ও জনপরিসরের মূল ধারণাগুলো উপস্থাপন করার আগে, ভুল বোঝাবুঝি এড়ানোর লক্ষ্যে শিরোনামের তিনটি মূল শব্দের দ্ব্যর্থতা নিরসনের মাধ্যমে একটি সংক্ষিপ্তসার দেওয়া উচিত।

ব্যক্তিগত পরিসরের সংজ্ঞা

[সম্পাদনা]

গ্রিক দর্শনে[] ব্যক্তিগত এবং জনপরিসরের মধ্যে পার্থক্য ছিল রাজনীতির একটি বাইরের জগৎ এবং পারিবারিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের একটি ব্যক্তিগত জগৎ। আধুনিক সমাজবিজ্ঞানে, এই পার্থক্যটি সাধারণত বাড়ি এবং কর্মসংস্থানের পৃথকীকরণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। ব্যক্তিগত পরিসরটি সর্বদা পরিবার বা বাড়ির সাথে যুক্ত। এটি ব্যক্তিগত ও জনপরিসরের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বিরোধিতা জোরদার করার জন্য কাজ করে।

ডিজিটাল মিডিয়ার বৈশিষ্ট্য

[সম্পাদনা]

ডিজিটাল মিডিয়ার ব্যক্তিগত ও জনপরিসরে কী প্রভাব রয়েছে তা উদাহরণ হিসেবে দেখানোর জন্য প্রথমে এই ধরণের মিডিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলো নির্ধারণ করতে হবে। বিশেষ করে এটি কীভাবে ঐতিহ্যবাহী মিডিয়ার ধরণ যেমন মুদ্রিত মিডিয়া (যেমন সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন, মুদ্রিত বই) বা অ্যানালগ মিডিয়া (যেমন ফিল্ম এবং অডিও টেপ, রেডিও, টেলিভিশন) থেকে আলাদা। এই বইটি ইন্টারনেটের উপর আলোকপাত করার সাথে সাথে, এই নির্দিষ্ট মাধ্যমের বৈশিষ্ট্যগুলোও ঘনিষ্ঠভাবে দেখা হবে।ডিজিটাল মিডিয়া হিসেবে সকল ধরণের মিডিয়াকে গণনা করা হয় যা ডিজিটাল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (অর্থাৎ ইন্টারনেট) এবং সেই সাথে প্রযুক্তিগত ডিভাইসের উপর ভিত্তি করে তৈরি।* ডিজিটালাইজেশন

  • রেকর্ডিং
  • প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং গণনা
  • ধারণ/ সংরক্ষণ
  • উপস্থাপনা এবং
  • বিতরণডিজিটাল বিষয়বস্তু এবং ডিজিটাল আর্টস বা সঙ্গীতের মতো চূড়ান্ত পণ্য
ডিজিটাল মিডিয়ার উদাহরণ
আদর্শ উদাহরণ
স্টোরেজ মিডিয়াম  সিডি, ডিভিডি, ডিস্ক, ইউএসবি স্টিক, ফ্ল্যাশকার্ড
ডিভাইস
  • কীবোর্ড, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন
  • এমপিথ্রি-প্লেয়ার, পিসি, নেভিগেশন সিস্টেম 
নেটওয়ার্কিং ইন্টারনেট, মোবাইল নেটওয়ার্ক, সোশ্যাল মিডিয়া

একটি বলা যেতে পারে: "ডিজিটাল মিডিয়া হলো ডিজিটাল তথ্য যা বৈদ্যুতিনভাবে প্রসেস করা হয়, একটি ফাইলে সংরক্ষিত হয় এবং কম্পিউটার সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কের মধ্যে সম্প্রচার করা হয়।"[]ডিজিটাল তথ্য একটি বাইনারি সিস্টেমে কোড করা হয় শুধুমাত্র off= 0 এবং on= 1 চিহ্ন ব্যবহার করে। এই পাটিগণিতের প্রয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল তথ্য উপস্থাপন করা যেতে পারে এবং মানের কোনও অবনতি ছাড়াই যতবার ইচ্ছা নিখুঁতভাবে অনুলিপি করা যেতে পারে। কিন্তু তাই প্রথমে অ্যানালগ সিগন্যালগুলোকে ডিজিটাল উপাত্তে রূপান্তর করার জন্য একটি ডিজিটাইজিং ডিভাইস প্রয়োজন এবং সেই সাথে পরবর্তীতে গ্রহণ এবং পরিচালনার জন্য ডিভাইসও প্রয়োজন।প্রায়ই ইন্টারনেটের সমার্থক হিসেবে ব্যবহৃত হলেও ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব হলো কেবলমাত্র টিম বার্নার্স-লি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ইন্টারনেটের ব্যবহারকারী ইন্টারফেস । বার্নার্স-লি নির্ধারণ করেছিলেন যে, নেটওয়ার্কের প্রতিটি ওয়েবসাইট একটি অনন্য ঠিকানা, ইউনিফর্ম রিসোর্স লোকেটার (URL) এর মাধ্যমে নির্ধারিত এবং অ্যাক্সেসযোগ্য। এরপর বিষয়বস্তুগুলোকে ক্রস রেফারেন্স, হাইপারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত করা যেতে পারে, যার মধ্যে URL থাকে।

ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের উন্নয়ন এবং ধারণা

এই অ-রৈখিক তথাকথিত হাইপারটেক্সট কাঠামো ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইন্টারঅ্যাক্টিভিটি বৃদ্ধি করে, যার ফলে মূলত বিষয়বস্তু নিয়ে একটি টান মাধ্যম হয়, যা সময় - স্থান - স্বাধীনভাবে এবং স্ব-নির্ধারিতভাবে অ্যাক্সেস করা যেতে পারে। সাধারণত, এই পদ্ধতিটি ইন্টারনেটের প্রতিটি অংশে পাওয়া যায়, তবে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারকারীদের এটি নির্বাচন করতে সাহায্য করতে পারে। এটি টেলিভিশনের মতো ঐতিহ্যবাহী মিডিয়া থেকে আলাদা, যা একটি সময়-নির্ভর প্রোগ্রাম অনুসরণ করে এবং শুধুমাত্র সম্প্রচার ফ্রিকোয়েন্সিগুলোর নাগালের মধ্যেই এটি গ্রহণযোগ্য।আজকাল ইন্টারনেট সারা বিশ্বের মানুষকে যোগাযোগমূলক কিন্তু আন্তঃব্যক্তিক স্তরে সংযুক্ত করে। তাৎক্ষণিক বার্তাপ্রেরণ, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেল বা ওয়েবব্লগের মতো অফারগুলোর মাধ্যমে, লোকেরা এক-থেকে-এক, এক-থেকে-অনেক বা বহু-থেকে-অনেকের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।[] এর অর্থ আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ এবং গণযোগাযোগের মধ্যে পার্থক্য। উপরন্তু, ইন্টারনেটে যোগাযোগ পারস্পরিক এবং ইন্টারেক্টিভ; প্রেরক এবং গ্রহণকারী সময় বিলম্ব ছাড়াই ভূমিকা বিনিময় করতে পারে। এবং মূলত ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সহ প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব সামগ্রী উপস্থাপন করতে পারে (এমনকি বেনামে ), যা ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রী হিসাবে পরিচিত। বিপরীতে, প্রেস এবং সম্প্রচার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সংগঠিত; তাই মিথস্ক্রিয়া মিডিয়া দ্বারা শুরু হয় (অর্থাৎ সম্পাদকের কাছে চিঠির মাধ্যমে) এবং দর্শকদের প্রতিক্রিয়া সময় বিলম্বিত হয়।ম্যাকলুহানের তত্ত্ব অনুসারে নতুন মিডিয়াতে পুরাতন মিডিয়াগুলো থাকে এবং ইন্টারনেটের চেয়ে স্পষ্টতই আর কোনও মাধ্যম এটি করে না: ওয়েব টিভি, ভিডিও-অন-ডিমান্ড বা অনলাইন সংবাদপত্রের মতো অসংখ্য ক্রসমিডিয়াল অফারগুলো বেশিরভাগই ঐতিহ্যবাহী মিডিয়ার ডিজিটালাইজড অফার। ইন্টারনেটে ডিজিটাল বিষয়বস্তু ফর্মটি অভ্যর্থনার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা চায় (কম্পিউটার, মোবাইল চূড়ান্ত পণ্য) তবে এটি উচ্চতর পুনরুৎপাদনযোগ্যতা এবং সঞ্চয়ের সম্ভাবনাও ধারণ করে।

স্থান ও কালের মিলন বিচ্ছিন্নকরণ

[সম্পাদনা]
অ্যানালগ এবং ডিজিটাল মিডিয়ার মধ্যে স্থান এবং উপস্থিতি
অ্যানালগ ডিজিটাল
মিডিয়া স্পেস সময় স্থানের ধরণ
  • স্থান পক্ষপাতদুষ্ট
  • সমকালীন
  • এক বিন্দু থেকে বহু বিন্দু
  • একমুখী
  • স্প্যাসিওটেম্পোরাল পক্ষপাতদুষ্ট
  • অ্যাসিঙ্ক্রোনাস
  • মাল্টিপয়েন্ট থেকে মাল্টিপয়েন্ট
  • ইন্টার‍্যাক্টিভিটি
মহাকাশে সম্পর্ক
  • প্রেরকের অভিযোজন
  • বিশ্ব সমাজ
  • যোগাযোগকারীর অভিযোজন
  • নেটওয়ার্ক
উপস্থিতির ধরণ উপস্থিতি পদ্ধতি
  • পরমাণু
  • ইলেকট্রনিক্স
  • রৈখিক
  • শব্দ ও চিত্র
  • বিট
  • তার, বেতার, হাইব্রিড
  • অ-রৈখিক
  • অভিসারী
সমাজ
  • আধুনিক
  • গঠন করুন
  • রাজ্যমুখী
  • সিমুলেশন
  • আধুনিক পরবর্তী
  • বিনির্মাণ করা
  • পোস্ট-স্টেট
  • সাইবারনেটিক্স

প্রথমে থম্পসনের প্রবর্তিত এই শব্দটি নতুন মিলিত প্রযুক্তির ক্ষমতা নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয় যা স্থান-কাল চলমানতাকে বাঁকাতে সক্ষম। এর সবচেয়ে নির্দিষ্ট রূপে, এটি নির্দেশ করে যে মিডিয়া ব্যবহারকারী এবং উৎপাদিত তথ্য ভৌগলিক এবং সময় সীমাবদ্ধতার দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়। যদিও প্রযুক্তির ইতিহাসে এটি কোনও নতুন ঘটনা নয়, ইন্টারনেট-ভিত্তিক মিডিয়ার বিকাশ অবশ্যই এই দুটি ধারণাকে ত্বরান্বিত করেছে এবং আরও আলাদা করেছে। সত্যিই যখন প্রকৃতিতে 'কোথায়' সময়ের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে সংযুক্ত, আধুনিক যুগ প্রথমে কিছু সীমাবদ্ধতা বিঘ্নিত করেছে:[১০] টেলিভিশন সম্প্রচার, টেলিগ্রাফ, টেলিফোন এবং রেডিও প্রথমে একটি বার্তা ছড়িয়ে দিতে অনুমতি দেয় 'কোথায়' অর্থাৎ একই 'কখন' নয়, পূর্ব-রেকর্ড করা প্রোগ্রাম এবং বিজ্ঞাপন সহ কিন্তু মাধ্যমটি নিজেই একটি নির্দিষ্ট এবং জনসাধারণের 'কোথায়' থাকতে হবে যেমন একটি সম্প্রচার কেন্দ্র।বিশেষ করে নতুন ডিজিটাল জগতে সময় এবং স্থানকে দুটি সম্পর্কিত ধারণা হিসেবে সম্পূর্ণ আলাদা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে এটি আমাদের সামাজিক এবং দৈনন্দিন জীবনে তাদের অভিজ্ঞতাকেও পরিবর্তন করছে। প্রকৃতপক্ষে, এই দুটি ধারণার রূপান্তর একটি জনসাধারণ এবং একটি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ককে বোঝার জন্য মৌলিক, যা মানুষের পরস্পরের ক্রিয়াকলাপের পাশাপাশি আমাদের সংবাদ উৎস এবং তথ্য অধিগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্বকে বোঝার উপায়ে প্রযোজ্য।উদাহরণস্বরূপ, আমাদের আর কোনও অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য কোনও জন স্থানে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকার প্রয়োজন নেই, তবে আমরা আমাদের নিজস্ব ব্যক্তিগত এবং ব্যক্তিগত পরিসর থেকে তা করতে পারি, যা ভৌগোলিকভাবে আমাদের বাড়ি বা অফিসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আমরা ইন্টারনেট লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে একযোগে ইভেন্টগুলোতে যোগ দিতে পারি, যেখানে আরও বেশি ওয়েবসাইট এই পরিষেবা প্রদান করে। এমনকি YouTube #Live এর মতো নন -পে-পার-ভিউ ফর্ম্যাটেও।একইভাবে, আমরা মূলধারার মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রবেশ না করেই, বরং ভৌগোলিকভাবে সেখানে অবস্থিত লোকেদের উপর নির্ভর করে, সারা বিশ্ব থেকে রিয়েল টাইমে জনসাধারণের তথ্য এবং সংবাদ পেতে পারি। একই সাথে, আমরা আমাদের ব্যক্তিগত পরিসরে জনসাধারণকে আমন্ত্রণ জানাতে পারি এবং আমাদের ক্ষেত্রের মধ্যে মুখোমুখি মিথস্ক্রিয়া উপভোগ করতে পারি।[১১]একইভাবে, ডিজিটাল যুগ আমাদের সময়ের দ্বারা কম আবদ্ধ করে তোলে। যেসব ইভেন্টের জন্য আগে একটি নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের শারীরিক উপস্থিতির প্রয়োজন হত, আজকাল সেগুলো ডিজিটাল তথ্য হিসেবে রেকর্ড করা যেতে পারে, যা সহজেই অনুলিপি এবং বিতরণ করা যায় এবং বিলম্বে এবং একাধিকবার দেখা যায়। [১২] তদনুসারে, যখনই মানুষ অন্যদের তাদের ব্যক্তিগত পরিসরে আমন্ত্রণ জানায়, তখন সকল পক্ষের একই সময়ে উপস্থিত থাকা আবশ্যক নয়, তবে বার্তা এবং তথ্য ডিজিটাল মিডিয়া[১৩] দ্বারা সংরক্ষণ করা যেতে পারে এবং সময় পরিবর্তনের মাধ্যমে অ্যাক্সেস করা যেতে পারে। ফলস্বরূপ, ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের জন্য সকল দলের শারীরিক বা একযোগে উপস্থিতির প্রয়োজন হয় না।তবে টেলিভিশনের মতো সময়-পরিবর্তনশীল অনুষ্ঠান সহ মিডিয়াতেও, সম্প্রচার পরিষেবাগুলো ছোট চিত্রগ্রহণ দলগুলোকে লাইভ ইভেন্টগুলোতে পাঠাতে পারে এবং তারপরে অনুষ্ঠানটি সময়-বিলম্বিত এবং বারবার সম্প্রচার করতে পারে ( সম্প্রচার বিলম্ব দেখুন)। এটি ডিজিটাল রেকর্ডিং সম্ভাবনার মাধ্যমে আরও উন্নত করা হয়েছে, যা আজকাল ব্যক্তিগত গ্রাহকদের জন্যও অ্যাক্সেসযোগ্য, এবং ডিজিটাল সম্প্রচার প্ল্যাটফর্মের বিস্তৃত পরিসরে মান হ্রাস না করে ডিজিটাল তথ্য পুনরুত্পাদন এবং আপলোড করার সম্ভাবনা। উদাহরণস্বরূপ, পেরিস্কোপ অ্যাপটি ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের তাদের অনুসারীদের কাছে বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে তাদের কাছাকাছি ঘটছে এমন যেকোনো ঘটনা, প্রতিবাদ, দৃশ্য সম্প্রচার করার অনুমতি দেয়। সম্প্রচারটি রেকর্ড করা হয় এবং ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত এর শিরোনাম খুঁজলে যে কেউ এটি দেখতে পাবে। এটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে, নির্মাতারা স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে তারা টেলি-পরিবহনের সবচেয়ে কাছাকাছি জিনিস তৈরি করতে চেয়েছিলেন। [1]অতএব, বার্তা যেভাবেই হোক না কেন, প্রাতিষ্ঠানিক বা ব্যক্তিগত, প্রেরকরা জনসাধারণের পরিসরে প্রবেশ করতে পারেন এবং তাদের জনসাধারণের দর্শকদের আরও সুনির্দিষ্টভাবে লক্ষ্য করতে পারেন:# এমনকি প্রচলিত মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেও তারা কম সময়সীমাবদ্ধ।

  1. তারা তাদের জন্য অথবা দর্শকদের জন্য সুবিধাজনক সঠিক সময় এবং সঠিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বেছে নিতে পারে।
  2. বৃহত্তর OTS এর মাধ্যমে তারা উচ্চ কভারেজ অর্জন করে।পরিশেষে, এই দুটি ক্ষেত্র, জন এবং ব্যক্তিগত, যার আন্তঃসংযোগ শতাব্দী ধরে আমাদের জীবনকে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে, তা এখন ক্ষণিক এবং স্থানিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে ব্যাঘাতের কারণে একটি নতুন রূপ ধারণ করে।

মোবাইল ব্যক্তিগতকরণ

[সম্পাদনা]

মোবাইল ব্যক্তিগতাইজেশন বলতে একজন ব্যক্তি এবং একটি মোবাইল ডিভাইসের মধ্যে সংযোগকে বোঝায় যা এটিকে তার ব্যক্তিগত পরিবেশের সাথে সংযুক্ত করে এবং সেই ডিভাইস ব্যবহারের মধ্যে একটি 'আরামদায়ক অঞ্চল'র অনুভূতি তৈরি করে। মোবাইল শব্দটিকে ব্যক্তিগতকরণের একটি অ-ভৌগোলিক পরিবেশ হিসেবে দেখা যেতে পারে কারণ মানুষ তাদের বাড়ি, যা মূলত প্রতিটি ঘরে চারটি দেয়াল বিশিষ্ট একটি ভবন হিসাবে দেখা হয়, ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত প্রতিটি স্থানে স্থানান্তর করতে পারে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি লি মিউং-বাক এবং ফুটবলার জি সো ইউন

জিজি পাপাচারিসি তার বইয়ে[১৪] বর্ণনা করেছেন 'এই ব্যক্তিগত পরিসরের মধ্যে নাগরিক একা থাকে। কিন্তু পুরোপুরি একাকী বা বিচ্ছিন্ন নয়। নাগরিকেরা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। তারা নির্ধারিত একটি পদ্ধতিতে এবং রাজনৈতিক ভাষায় কাজ করে।' ব্যক্তিগতকরণের এই কাজটি যেখানেই ব্যক্তি ব্যক্তিগত কারণে ডিভাইসটি ব্যবহার করেন সেখানেই ঘটতে পারে। এটি একটি ফোন কল বা এমনকি ফেসবুকে শেয়ার করা একটি ছবিও হতে পারে।বর্তমান চলমান জন পরিসরের ব্যক্তিগতকরণে ভাগাভাগি এবং চিত্রগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জন থম্পসনের যুক্তি অনুসারে এর একটি কারণ হতে পারে 'সময়ের স্থানের সংযোগ বিচ্ছিন্নতা'।[১৫] নানাবিধ বিষয়বস্তু সর্বত্র ও সর্বদা দেখা যেতে পারে যাতে অন্যজন কী করছে তা জানার জন্য লোকেদের আর দেখা করার প্রয়োজন না হয়। রেমন্ড উইলিয়ামস মোবাইল ব্যক্তিগতকরণ শব্দটিকে 'মিডিয়া দর্শকদের একই সাথে ঘরে থাকার এবং ভ্রমণের সুযোগ প্রদানের ক্ষমতা' হিসেবে বর্ণনা করেছেন।এই আন্দোলনটি সেলফি দিয়ে শুরু হয়েছিল যখন লোকেরা তাদের বন্ধুদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য নিজেদের ছবি তুলেছিল। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে এমন একটি ডিভাইস ব্যবহার করে ব্যক্তিগত ছবির এই দ্বন্দ্ব জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে। পরবর্তী উন্নয়নগুলো হলো ভ্লগ যেখানে লোকেরা ক্যামেরা ব্যবহার করে তাদের জীবন নথিভুক্ত করা শুরু করে এবং তাদের ভিডিওগুলো ইউটিউবের মতো জনসাধারণের কাছে আপলোড করে। মোবাইল ব্যক্তিগতকরণের এই ধরণটিকে সমালোচনামূলক দেখা যেতে পারে কারণ লোকেরা তাদের ব্যক্তিগত জীবনের কোন অংশগুলো অনলাইনে দেখা যাবে তা নির্ধারণ করতে পারে কিন্তু অন্যদিকে, এই ভিডিওগুলো কে দেখতে পারবে তার উপর তাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।ক্যাসেলস ব্যাখ্যা করেন যে 'এই ব্যক্তিগত পরিসরের গতিশীলতা দৈনন্দিন রুটিনগুলোকে এমনভাবে সংযুক্ত করার অনুমতি দেয় যা ব্যক্তিকে যে কোনও জায়গায় এবং যে কোনও সময় পৌঁছানোর সুযোগ করে দেয়, এমনভাবে যা দৈনন্দিন জীবনের নিয়ন্ত্রণকে "বিপ্লবী" করে তুলতে পারে।'[১৬]অতএব, মোবাইল ব্যক্তিগতকরণ সমাজের চলমান আন্দোলনের জন্য উপযুক্ত বর্ণনা হতে পারে। তবে এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর হুমকিও হতে পারে।

ডিজিটাল ফটোগ্রাফি এবং ছবি আদানপ্রদান

[সম্পাদনা]

ডিজিটাল ফটোগ্রাফির আবির্ভাবের সাথে সাথে, জন এবং ব্যক্তিগত ক্ষেত্রগুলো বিনিময়যোগ্য হয়ে উঠছে এবং যা আগে ঘনিষ্ঠ এবং ব্যক্তিগত ছিল তা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, স্মার্টফোনগুলো যে কারও কাছে সহজলভ্য হয়ে উঠছে, মানুষ যেখানেই থাকুক না কেন ছবি বা ভিডিও তুলতে পারে, এইভাবে অন্য মানুষের গোপনীয়তার সীমানা ভেঙে। মানুষ অপরিচিতদের অথবা নিজেদের ছবি তুলতে পারে এবং তারপর এই ছবিগুলো Flickr বা Deviantart এর মতো ওয়েবসাইটে দেখাতে পারে, যাতে সেগুলো অপরিচিতদের কাছে উপলব্ধ হয়। এই ধরণের অনুশীলন যেহেতু খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, তাই এর সাথে সম্পর্কিত গোপনীয়তা সংক্রান্ত উদ্বেগ মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।[১৭]

যদিও এমন কোনও সাধারণ আইন নেই যা জনসমক্ষে মানুষের ছবি তোলা এবং পরবর্তীতে তা প্রকাশ করা নিষিদ্ধ করে (যদি না ছবি তোলা ব্যক্তিটি শনাক্তযোগ্য হয়), তবুও যারা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এই অনুশীলনে জড়িত তাদের মনে হতে পারে যে তাদের গোপনীয়তা (অথবা ব্যক্তিগত পরিসর) লঙ্ঘিত হয়েছে। ফ্লিকারে এডগার গোমেজের করা একটি গবেষণা থেকে আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি যে, একজন অপরিচিত ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া তার ছবি তোলা কীভাবে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করতে পারে। যে মেয়েটির ছবি তার অজান্তেই তোলা হয়েছিল, আসলে সে যখন জানতে পারে যে ফ্লিকার ব্যবহারকারীরা " কেউ তাকে চেনে? " শিরোনামে তার দুটি ছবি দিয়ে ফোরাম রূপান্তর শুরু করেছে, তখন সে বিরক্ত হয়ে পড়ে। [1] তার দৃষ্টিকোণ থেকে, তারা তার গোপনীয়তা লঙ্ঘন করছিল, যদিও ছবিটি তোলার সময় সে একটি জন প্লেসে ছিল। এটি সোশ্যাল মিডিয়া এবং সেইসব ব্যক্তির সম্মতি ছাড়াই পোস্ট করা ছবিগুলোর ক্ষেত্রেও একটি প্রাসঙ্গিক বিষয়।অ্যালান ওয়েস্টিনের মতে, যখন মানুষ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে থাকে, তখনও তারা গোপনীয়তা রক্ষার চেষ্টা করে এবং সনাক্তকরণ এবং নজরদারি থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করে। অতএব, জনসাধারণের স্থানে থাকার অর্থ এই নয় যে আমরা যা কিছু করি তা সর্বজনীন, বরং আমরা এখনও কিছু গোপনীয়তা আশা করি এবং আমরা মনে করি না যে আমরা মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হব অথবা কেউ আমাদের রেকর্ড করবে এবং ওয়েবে আমাদের ছবি প্রকাশ করবে। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা, যারা নতুন প্রযুক্তি, অ্যাপ এবং সামাজিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে আত্ম-প্রতিকৃতি এবং সম্পর্কিত প্রকাশের সাথে অভ্যস্ত, তারা অপরিচিতদের সাথে তাদের ব্যক্তিগত জীবন ভাগ করে নেওয়াকে কোনও সমস্যা বলে মনে করেন না, তাই তারা অন্য মানুষের জীবনে প্রবেশ করতে দ্বিধা বোধ করেন।সম্প্রতি তৈরি হওয়া একটি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো স্ন্যাপচ্যাট । এটি স্মার্টফোনের একটি অ্যাপ্লিকেশন যেখানে লোকেরা তাদের পছন্দের যেকোনো কিছুর "সেলফি" এবং ভিডিও তুলতে পারে। কিছু স্তরে, Snapchat কে ব্যক্তিগত হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। ভিডিও এবং ছবি ১০ সেকেন্ডের বেশি স্থায়ী হতে পারে না, এবং এর পরে ভিডিও বা ছবি অদৃশ্য হয়ে যায়। তবে সেই ১০ সেকেন্ডের মধ্যে, স্ন্যাপচ্যাটের প্রাপকরা দ্রুত একটি স্ক্রিনশট নিতে পারে এবং এইভাবে কারও বিশ্বাস এবং গোপনীয়তা লঙ্ঘন করতে পারে।যখন স্ন্যাপচ্যাট প্রথম তৈরি করা হয়েছিল, তখন অন্য কাউকে পাঠানো কোনও কিছুর উত্তর দেওয়ার কোনও বিকল্প ছিল না। এটি বৃদ্ধি এবং বিকশিত হওয়ার সাথে সাথে এর বিকল্পগুলোও বিকশিত হয়েছিল, এবং মাধ্যমটি বিকশিত হয়েছিল এবং একটি উত্তর ফাংশন যুক্ত করা হয়েছিল। এর ফলে যে কেউ একটি স্ন্যাপচ্যাট যতবার ইচ্ছা পুনরাবৃত্তি করতে পারবে। এইভাবে অ্যাপটির মূল ধারণার উদ্দেশ্য হারিয়ে যাচ্ছে। তদুপরি, স্ন্যাপচ্যাটকে সবচেয়ে ব্যক্তিগত সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ আপনি যদি তাদের আপনার অনন্য ব্যবহারকারীর নাম দেন তবেই অন্যরা আপনাকে এতে অনুসরণ করতে পারে। ফেসবুকের মতো জন সাইটের তুলনায় স্ন্যাপচ্যাটে এটি খুঁজে পাওয়া অনেক বেশি কঠিন, যার অর্থ হলো স্ন্যাপচ্যাটে সীমিত দর্শকদের তৈরি করা আপনার নিজের ইচ্ছামতো হয়।ফেসবুকের থেকে আলাদা যেখানে যে কেউ কেবল আপনার প্রথম এবং শেষ নাম দিয়ে নিজেকে খুঁজে পেতে পারে। ডিজিটাল মিডিয়ার সাথে এমন কোনও সাইট খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন যা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। স্ন্যাপচ্যাটকে অন্যদের তুলনায় বেশি ব্যক্তিগত হিসেবে দেখা যেতে পারে কারণ সম্ভবত আপনার নিকটতম সহকর্মীরাই আপনার স্ন্যাপচ্যাটে অ্যাক্সেস পাবে, তাই পোস্ট করা ভিডিও এবং ফটোতে মাত্র কয়েকজনেরই অ্যাক্সেস থাকবে। তবে স্ন্যাপচ্যাটের "নিয়ম ও শর্তাবলী" অনুসারে উল্লেখ করা হয়েছে যে স্ন্যাপচ্যাট যেকোনো কিছু পোস্ট করতে এবং ব্যবহার করতে পারে।ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রী (UGC) (যা ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রী বা ব্যবহারকারী-চালিত সামগ্রী নামেও পরিচিত) হলো সমস্ত ডিজিটাল সামগ্রী যা ওয়েবসাইটের প্রকাশকের পরিবর্তে ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারীদের দ্বারা তৈরি, সম্পাদিত এবং প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে "যেকোনো ধরণের সামগ্রী যেমন ব্লগ, উইকি, আলোচনা, ফোরাম, পোস্ট, চ্যাট, টুইট, পডকাস্ট, ডিজিটাল ছবি, ভিডিও, অডিও ফাইল, বিজ্ঞাপন এবং ব্যবহারকারীদের দ্বারা তৈরি অন্যান্য ধরণের মিডিয়া […]"। [১৮]ইন্টারনেট মূলধারায় আসার ঠিক আগে, গণমাধ্যমের প্রকাশকরা বিষয়বস্তু পূর্বেই নির্বাচন এবং সম্পাদনা করতেন এবং তাদের প্রাপকরা কেবল একতরফা, নিষ্ক্রিয় উপায়ে বিষয়বস্তুটি গ্রহণ করতেন। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইন্টারনেটের দ্রুত প্রসার এবং ওয়েব ২.০ চালিত প্রযুক্তির উত্থান [১৯] মূলত ওয়েবের বিকাশকে একটি "অংশগ্রহণমূলক ওয়েব"। ব্যবহারকারী-চালিত প্রযুক্তির দিকে এই মৌলিক পরিবর্তনের অংশ হিসেবে, ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রীর ঘটনা ঘটে এবং অনলাইনে সামগ্রী সরবরাহকারীর ক্ষেত্রে একটি পরিবর্তন বা নতুন প্রবণতার দিকে পরিচালিত করে। ইন্টারনেটের প্রাথমিক বছরগুলোতে, বেশিরভাগ সামগ্রী ওয়েবসাইটের বেতনভুক্ত এবং পেশাদার প্রশাসকদের দ্বারা সমন্বিত এবং তৈরি করা হত। এই কারণে, ইন্টারনেটের ব্যবহার বিদ্যমান সামগ্রীর নিষ্ক্রিয় ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। একতরফা প্রকাশনার এই রূপটি এখনও প্রাসঙ্গিক এবং অনলাইনে সরবরাহ করা বেশিরভাগ সামগ্রীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ২০০৫ সালে সামাজিক নেটওয়ার্ক এবং আরও ব্যবহারকারী-চালিত প্ল্যাটফর্মের উত্থানের মাধ্যমে [১৮] ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রীর ঘটনাটিকে এমনভাবে জোর দেওয়া হয়েছিল যে সামগ্রীটি ব্যবহারকারীরা কেবল "টান" করে, তাদের উপর "ঠেলে" দেয় না। [১৯] আজকাল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা উচ্চ হারে বিষয়বস্তু তৈরি এবং শেয়ার করেন এবং বেশ কয়েকটি জরিপে দেখা গেছে যে তারা কেবল এটি ব্যবহার করেন না। “ [২০]অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (OECD) কেন্দ্রীয় বৈশিষ্ট্যগুলো সংজ্ঞায়িত করেছে যা ব্যবপ্রায়শইহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রীর জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি মানদণ্ডের রূপরেখা তৈরি করে: # প্রকাশনার প্রয়োজনীয়তাগুলোতে বলা হয়েছে যে কাজটি অবশ্যই কোনও প্রেক্ষাপটে প্রকাশ করা উচিত একটি সর্বজনীনভাবে অ্যাক্সেসযোগ্য ওয়েবসাইটে অথবা এমন একটি ওয়েবসাইটে যা শুধুমাত্র একটি নির্বাচিত গোষ্ঠীর জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য (যেমন সোশ্যাল মিডিয়া সাইট)।

  1. সৃজনশীল প্রচেষ্টা বলতে বোঝায় যে ব্যবহারকারীদের অবশ্যই সামগ্রী তৈরি করে তাদের নিজস্ব সৃজনশীল প্রচেষ্টা এবং মূল্য যোগ করতে হবে। এর মধ্যে ব্যবহারকারীরা বিদ্যমান বিষয়বস্তুকে এক ধরণের সহযোগিতামূলক কাজের জন্য নতুন করে রূপান্তরিত করার জন্য অভিযোজিত করছেন কিনা তাও অন্তর্ভুক্ত।
  2. পেশাগত রুটিন এবং অনুশীলনের বাইরে কাজ তৈরি করা যাতে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক বা বাণিজ্যিক বাজারের প্রেক্ষাপটে কাজ না হয় তার উপর জোর দেওয়া হয়।ব্যবহারকারী-সৃষ্ট বিষয়বস্তুের বিভিন্ন ফর্ম্যাট রয়েছে যা চারটি বিভাগে ভাগ করা যেতে পারে: [১] টেক্সট, ছবি এবং ছবি, অডিও এবং সঙ্গীতের পাশাপাশি ভিডিও এবং ফিল্ম। ব্যবহারকারী-সৃষ্ট বিষয়বস্তুের সবচেয়ে সাধারণ ফর্ম্যাট হলো টেক্সট টাইপ। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা মূল লেখা, কবিতা, উপন্যাস, কুইজ বা রসিকতা তৈরি করে অথবা বিদ্যমান কাজটি প্রসারিত করে এবং সম্প্রদায়ের সাথে শেয়ার করে। বেশিরভাগ বিষয়বস্তু ব্লগ, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক বা ওয়েবসাইটে এক ধরণের পর্যালোচনা হিসাবে প্রকাশিত হয়। এই ক্ষেত্রে, ফ্যান ফিকশনের ঘটনাটি গুরুত্বপূর্ণ। আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রকারগুলো হলো ব্যবহারকারী-সৃষ্ট ছবি এবং ছবি। এর বেশিরভাগই ডিজিটাল ক্যামেরা বা স্মার্টফোন দিয়ে তোলা হয় এবং ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাট, পিন্টারেস্ট, ফ্লিকার বা ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা হয়। [২] এই আপলোডগুলো হয়তো বিভিন্ন ফটো এডিটিং সফ্টওয়্যার দিয়ে ম্যানিপুলেট করা হয়। স্ব-সৃষ্ট সঙ্গীত, ম্যাশ-আপ বা একটি একক ট্র্যাকে বিদ্যমান গানের রিমিক্সের পাশাপাশি পডকাস্ট ব্যবহারকারী-সৃষ্ট অডিও এবং সঙ্গীত সামগ্রীর অন্তর্গত। ছবি ছাড়াও ব্যবহারকারী ভিডিও এবং ফিল্ম সামগ্রী তৈরি বা সম্পাদনা করেন। ব্যবহারকারী বাড়িতে তৈরি ভিডিও সামগ্রী, পূর্ব-বিদ্যমান কাজের রিমিক্স সরবরাহ করেন বা এই দুটি ফর্ম একত্রিত করেন। ইউরোপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হোস্টিং প্ল্যাটফর্মগুলো হলো Blip.tv, VideoEgg, Dailymotion, YouTube, Veoh এবং Google Video।[২১]ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রীর বিতরণ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সঞ্চালিত হয় এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজ করে। নিম্নলিখিত চার্টটি ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রীর জন্য বিতরণ প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি নির্বাচন এবং তাদের বৈশিষ্ট্যগুলো দেখায়।
প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রীর বর্ণনা উদাহরণ
ব্লগ ব্লগগুলোতে নিউজগ্রুপের মতো নিবন্ধ থাকে যা ঘন ঘন আপডেট করা হয়। পোস্টিংগুলোতে টেক্সট, ছবি, অডিও, ভিডিও, অথবা এর সংমিশ্রণ থাকে। ব্লগগুলো ডায়েরি, সংবাদপত্রের সম্পাদকীয় এবং হটলিস্টের মধ্যে একটি ক্রসের মতো যেখানে মালিকরা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখে রাখেন। ব্লগার, টাম্বলার, ওয়ার্ডপ্রেস, নিউক্লিয়াস সিএমএস, মুভেবল টাইপ
উইকি এবং অন্যান্য সহযোগিতার বিন্যাস (টেক্সট) যেসব ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারীরা সম্মিলিতভাবে বিষয়বস্তু যোগ, অপসারণ, বা সম্পাদনা এবং পরিবর্তন করেন উইকিপিডিয়া, উইকিবুক, পিবিউইকি, জোটস্পট, সোশ্যাল টেক্সট, লিখিতভাবে
ফোরাম এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে মানুষ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলে ২ চ্যানেল, ইয়াহু! গ্রুপ, পিএইচপিবিবি
গ্রুপ-ভিত্তিক সমষ্টি অনলাইন বিষয়বস্তুের লিঙ্ক সংগ্রহ করা এবং সহযোগিতামূলকভাবে রেটিং বা ট্যাগিং করা ডিগ, রেডিট, বাজফিড
পডকাস্টিং এবং ভিডিও শেয়ারিং
  • মোবাইল ডিভাইস বা ব্যক্তিগত কম্পিউটারে প্লেব্যাকের জন্য সিন্ডিকেশন ফিড ব্যবহার করে ইন্টারনেটে একটি মাল্টিমিডিয়া ফাইল বিতরণ।
  • নিজের তৈরি বা রিমিক্স করা ভিডিও ক্লিপ পোস্ট এবং শেয়ার করা
সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট ব্যক্তিগত প্রোফাইল তৈরির অনুমতি দেয় এমন সাইট এবং যেখানে ব্যবহারকারীরা চ্যাট, বার্তা লেখা, অথবা ছবি বা লিঙ্ক পোস্ট করার ক্ষেত্রে অন্যদের সাথে যোগাযোগ করে। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ভিকে, স্ন্যাপচ্যাট

ব্যবহারকারী সৃষ্টি আন্দোলন ছাড়াও ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যমের কাজ করার পদ্ধতিকে প্রভাবিত করে এবং অংশগ্রহণমূলক সাংবাদিকতার নতুন রূপের আবির্ভাব ঘটায়। [২২] মূলত অ-বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপট সত্ত্বেও, ব্যবহারকারী-সৃষ্ট সামগ্রী ইতিমধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ঘটনাতেও পরিবর্তিত হয়েছে। কোম্পানিগুলো ভিডিও-শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউবের মতো UGC-এর উপর ভিত্তি করে সফল ব্যবসায়িক মডেল তৈরি এবং প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে। সত্যিকার অর্থে সফল ইউটিউব তারকাদের সহযোগিতায়, তারা ব্যবহারকারী-উত্পাদিত ভিডিওগুলোকে বিজ্ঞাপনের সাথে সংযুক্ত করে এবং প্রতি বছর ২০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিজ্ঞাপন ডলার আয় করে।

ব্যবহারকারী-সৃষ্ট সামগ্রীর মালিকানা

[সম্পাদনা]

ইন্টারনেটের একটি সমস্যা হল, মানুষ সাহিত্যকর্ম, শিল্প, সঙ্গীত বা ভিডিওর মতো বিষয়বস্তু শিল্পীর কৃতিত্ব ছাড়াই আপলোড বা পুনরায় পোস্ট করতে পারে। ইন্টারনেট তাদের এই কাজের জন্য কৃতিত্ব নেওয়ার সুযোগও দেয়। কপিরাইট আইন বলে যে এটি আসলে অবৈধ, কারণ 'যেকোনো কাজের লেখকই প্রথম মালিক'। এর মধ্যে অনলাইনে পোস্ট করা কাজও অন্তর্ভুক্ত। তবে এই আইনগুলো সত্ত্বেও ইন্টারনেট এই নিয়মগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া অত্যন্ত সহজ করে তুলেছে। হাজার হাজার উদাহরণ রয়েছে যেখানে অনলাইনে শিল্পীদের, যেমন ফটোগ্রাফারদের, তাদের কাজ রক্ষা করার জন্য তাদের ছবিতে ওয়াটারমার্ক লাগাতে হয়, রেজোলিউশন এবং আকার কমাতে হয় অথবা শিল্প চোরদের মুখোমুখি হতে হয়। এমন কিছু ওয়েবসাইট আছে যা শিল্পীদের বলে যে তাদের মামলা করার অধিকার আছে, তবে এটি প্রায়ই একটি ব্যয়বহুল এবং দীর্ঘ প্রক্রিয়া এবং সর্বদা একটি সম্ভাব্য সমাধান নাও হতে পারে। ছোট, অনলাইন শিল্পী এবং লেখকদের চোরদের খুঁজে বের করা এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা কঠিন। এর অর্থ হতে পারে তাদের আইপি ঠিকানার মাধ্যমে ট্র্যাক করা যা বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে আসতে পারে, যার ফলে মামলার খরচ বেশি হতে পারে। তাই ইন্টারনেটের কারণে কপিরাইট আইন যাই হোক না কেন, নির্দিষ্ট কিছু নির্মাতার প্রাপ্য ক্রেডিট বৈধ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়েছে।তবে কেবল শিল্পকর্ম চুরি করার চেয়ে এটি আরও কঠিন, কারণ প্যারোডি করা ভিডিও, পরিবর্তিত টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ছবি, ফ্যানআর্ট এবং অন্যান্য ভক্তদের কাজের মতো বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে কপিরাইটের রেখাগুলো খুব ঝাপসা হয়ে যায়। প্রকৃতপক্ষে, মানুষ তাদের শিল্প ও সাহিত্যকর্ম থেকে লাভবান হয়েছে, যা তারা বই, টিভি-শো এবং চলচ্চিত্র, যেমন ফিফটি শেডস অফ গ্রে থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বা ধারণা অন্তর্ভুক্ত করে তৈরি করেছে। কিছু ফ্যান-আর্ট ফর্মকে চুরি হিসেবে দেখা হয়, যেমন টিভি-শো থেকে ক্লিপ নেওয়া। এই পরিস্থিতিতে ক্রিয়েটিভ কমন্স লাইসেন্সগুলো কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে, তবে সবসময় তা হয় না। এখানে কোনটা চুরি হিসেবে গণ্য হবে আর কোনটা শৈল্পিক প্রকাশ হিসেবে গণ্য হবে তা নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। একদিকে, এই ধরনের শিল্পকর্মের মূল বিষয়বস্তু ব্যবহারকারী নিজেই তৈরি করেন না, বরং যেহেতু তারা শিল্পকে রূপান্তরিত করে এবং একটি নতুন ধরণের শিল্প তৈরি করে, তাই নতুন ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রী তৈরি করা হয়েছে। এমন কিছু সংগঠন আছে যারা এই ধারণাকে সমর্থন করে যে এই রূপান্তরিত শিল্পকর্মগুলো প্রকৃতপক্ষে বৈধ বিষয়বস্তু যা ব্যবহারকারীর কাছে জমা দেওয়া উচিত। [২৩] তবে বিতর্ক এখনও কঠিন, শিল্পটি আসলে কার; মূল শিল্পীর, নাকি ব্যবহারকারীর যিনি এটি পরিবর্তন করেছেন।"দ্য প্রেজেন্টেশন অফ সেল্ফ ইন এভরিডে লাইফ" বইতে, গফম্যান মানুষের মিথস্ক্রিয়া সম্পর্কে তার গবেষণায় একটি নাটকীয় পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। মিথস্ক্রিয়াকে একটি পরিবেশনা হিসেবে দেখা হয় এবং এটি সময়, স্থান এবং দর্শকদের উপর নির্ভর করে; তাই মানুষ তাদের পরিবেশের উপর নির্ভর করে কিছু সাংস্কৃতিক বিশ্বাস অনুসারে কাজ করে। গফম্যানের মূল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো ব্যক্তিগত ও জনসাধারণের মধ্যে পার্থক্য, যা পিছনের অঞ্চল এবং সামনের অঞ্চল দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হয়। পিছনের অংশটিকে একটি ব্যক্তিগত বা গোপন স্থান হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে যেখানে ব্যক্তিরা নিজেরাই থাকতে পারে এবং যেখানে তাদের কোনও নির্দিষ্ট উপায়ে কাজ করার বা সামাজিক রীতিনীতি মেনে চলার প্রয়োজন হয় না। যেখানে সামনের অংশটি এমন একটি জনসাধারণের স্থানের সাথে মিলে যায় যেখানে মানুষকে একটি নির্দিষ্ট পরিচয় পরিবেশন করতে হয় এবং যেখানে শিল্পীরা সতর্ক থাকে, দর্শকদের কাছে ভুল ধারণা না দেওয়ার জন্য সতর্ক থাকে। ডিজিটাল যুগে, কেবল শ্রেণীকক্ষ বা থিয়েটারের মঞ্চের মতো ভৌত স্থানই এই বিভাগে আসে না, বরং সামাজিক নেটওয়ার্ক এবং অনলাইন যোগাযোগও এই বিভাগে আসে। মানুষ অনলাইনে যেভাবে তাদের পরিচয় প্রকাশ করে, বাস্তব জীবনের পরিস্থিতিতে তারা যেভাবে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করে তার থেকে খুব বেশি আলাদা নয়। আসলে, আজকাল, লোকেরা অনলাইনে বিভিন্ন উপায়ে অন্যদের তাদের সম্পর্কে যে ধারণা তৈরি করে তা প্রভাবিত করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যক্তিরা তাদের বয়স বা অবস্থানের মতো কিছু তথ্য তাদের সোশ্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে; তাদের গোপনীয়তা সেটিংস সেট করতে পারে যাতে বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে কেবল নির্দিষ্ট কিছু জিনিস দেখতে পায়; এবং তাদের ছবিগুলোকে এমনভাবে ব্যবহার করতে পারে যাতে অন্যরা তাদের সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট মতামত রাখে এবং একটি নির্দিষ্ট উপায়ে সেগুলো দেখতে পারে। এই সচেতন বা অবচেতন প্রক্রিয়াটি মুখোমুখি মিথস্ক্রিয়ায় ইতিমধ্যেই উপস্থিত ছিল এবং এটি ইমপ্রেশন ম্যানেজমেন্ট নামে পরিচিত। গফম্যান এই শব্দটি তৈরি করেছিলেন, যা স্ব-উপস্থাপনার ধারণার সাথেও যুক্ত হতে পারে। তার মতে, ইমপ্রেশন ম্যানেজমেন্ট হলো "একটি চরিত্রকে সফলভাবে মঞ্চস্থ করা"। একটি নিখুঁত নাট্য চরিত্র তৈরি করতে, অভিনেতাদের "তাদের দর্শকদের সামনে একটি কাঙ্ক্ষিত ধারণা তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ধরণের উদ্বেগের সাথে যুক্ত থাকতে হবে"। গফম্যান এই উদ্বেগগুলোর একটি বর্ণনা করার জন্য "পার্সোনাল ফ্রন্ট" শব্দটি গ্রহণ করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে পরিবেশনার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, "যেসব জিনিসপত্র আমরা সবচেয়ে ঘনিষ্ঠভাবে অভিনয়কারীর সাথে সনাক্ত করি এবং আমরা স্বাভাবিকভাবেই আশা করি যে অভিনয়কারী যেখানেই যান না কেন তাকে অনুসরণ করবে"। সম্ভবত, গফম্যানের মনে প্রাচীন গ্রিসের থিয়েটারের কথা ছিল, কারণ তিনি যে পরিবেশনাটি বর্ণনা করেছেন তা প্রাচীন গ্রিক নাটকের সেই পরিবেশনার কথা মনে করিয়ে দেয় যেখানে মঞ্চস্থ হতে এবং চরিত্র হয়ে ওঠার জন্য মুখোশের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

বিভিন্ন দর্শকের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব: মুখোশের জুঙ্গিয়ান ধারণা

[সম্পাদনা]

সোশ্যাল মিডিয়া এবং অনলাইন যোগাযোগের অন্যান্য রূপগুলো আমাদের যে সমস্ত সুবিধা দেয় তার সাথে সাথে, অনলাইনে 'পারফর্ম' করার জন্য একটি নির্দিষ্ট চাপও আসে; ইন্টারনেটে এবং পরবর্তীতে জনসাধারণের কাছে নিজের একটি সংস্করণ উপস্থাপন করার জন্য। মনোবিজ্ঞানী কার্ল জং এটিকে ব্যক্তিত্ব বা 'মুখোশ' হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যা 'টু এ্যাসেজ অন অ্যানালিটিক্যাল সাইকোলজি'- তে অন্বেষণ করা হয়েছে।প্রকৃতপক্ষে, জং ব্যক্তিত্বকে সেই মাধ্যম হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন যার মাধ্যমে ব্যক্তি নিজের এবং বাইরের জগতের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে। তবে এটি সংযোগের একটি আংশিক উপায় গঠন করে কারণ এটি অগত্যা একজন ব্যক্তির স্ব এবং অহংকারের সাথে মিলিত হতে হবে না। এই কারণেই এটিকে প্রায়ই একটি মুখোশ বলা হয়: যদিও এটি যে ব্যক্তি এটি পরে তার বৈশিষ্ট্যগুলো ধরে রাখে, এটি মূলত সামাজিক ভূমিকার সাথে সম্পর্কিত যা এটি বিনোদনের জন্য তৈরি। জং-এর মতে, মনস্তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে একজন ব্যক্তিত্ব থাকা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক এবং এটি ব্যক্তি এবং সে যে সমাজের অংশ, তার বিকাশের জন্য প্রকৃতপক্ষে মৌলিক। প্রকৃতপক্ষে, এটি পরিশীলিত সামাজিক সম্পর্কের জন্য প্রয়োজন এমন উচ্চ চাহিদা এবং ব্যক্তি কী হতে চায় বা কী হতে চায়, তার মধ্যে একটি আপসকে প্রতিনিধিত্ব করে। অতএব, এটি এমন একটি আচরণ ব্যবস্থা যা আংশিকভাবে সমাজ দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং আংশিকভাবে নিজের সম্পর্কে নিজের প্রত্যাশা এবং ইচ্ছা দ্বারা নির্ধারিত হয়। অনলাইনে বিভিন্ন ধরণের ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিদের পারফর্ম্যান্সের সাথে কেন ছদ্মবেশ ধারণের ধারণাটি এত ভালোভাবে খাপ খায় তা সহজেই বোঝা যায়।মানুষ জটিল, অর্থাৎ, সামাজিক যোগাযোগের কোনও একটি রূপই আমাদের বাস্তব জীবনে আমাদের ব্যক্তিত্বের প্রতিটি ব্যক্তিত্ব বা উপাদান প্রকাশ করার সুযোগ দেয় না। অনলাইন যোগাযোগের অদৃশ্য এবং প্রায়ই বেনামী প্রকৃতির অর্থ হলো লোকেরা তাদের পছন্দের যেকোনো ব্যক্তিত্ব উপস্থাপন করতে পারে এবং এটি কারও কারও জন্য মুক্তির কারণ হতে পারে। তাত্ত্বিক আদ্রিয়ান আথিকের যুক্তিগুলো জংয়ের যুক্তিগুলোর সাথে মিলে যায়। আথিক তার "ডিজিটাল মিডিয়া অ্যান্ড সোসাইটি: অ্যান ইন্ট্রোডাকশন" বইয়ে মন্তব্য করেছেন যে "গোষ্ঠীগত মিথস্ক্রিয়া পরিচালনাকারী সামাজিক নিয়মগুলো অনলাইনে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা ছিল, মূলত সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস নির্ধারণকারী চাক্ষুষ সংকেত হারিয়ে যাওয়ার কারণে।" এটি একটি উল্লেখযোগ্য যুক্তি। অনেকের কাছে, অনলাইনে মানুষকে আটকে রাখার মতো কিছুই নেই। যারা সম্ভবত অন্তর্মুখী এবং জনসাধারণের এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়ায় উদ্বিগ্ন, তারা অনলাইনে স্বাধীনতার অনুভূতি খুঁজে পেতে পারেন, বাস্তব জীবনে তারা যা করতে পারেন না তা 'মুখোশ' পরার এবং ইন্টারনেটে এমন কিছু বলার সুযোগ পেতে পারেন যা তারা ব্যক্তিগতভাবে করতে পারেন না বলে মনে করেন।জং ব্যক্তিত্বকে একজন ব্যক্তিকে মুক্ত করার এবং তার 'প্রকৃত স্বভাব' গোপন করার একটি বাস্তব এবং সৎ উপায় হিসেবে দেখেন। তবে, আমরা যেভাবে আমাদের অনলাইন জগতে চলাচল করি এবং এই ব্যক্তিত্বগুলিকে অনলাইনে উপস্থাপন করি তা জটিল। দর্শকরা, ব্যক্তিগতভাবে এবং ইন্টারনেটে, সবাই একে অপরের থেকে কিছুটা ভিন্ন ব্যক্তিত্ব পাবেন। তুমি সম্ভবত তোমার নিয়োগকর্তার সাথে ঠিক যেভাবে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সাথে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে না। এইভাবে সোশ্যাল মিডিয়া সীমাবদ্ধ হতে পারে। ফেসবুকের মতো নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতে কেবল আপনার বন্ধুবান্ধবই নয়, পরিবারের সদস্যরা এবং বর্তমান এবং সম্ভাব্য নিয়োগকর্তা উভয়ই থাকার অর্থ হলো আপনি সত্যিকার অর্থে নিজের মতো হতে পারবেন না, কারণ আপনার 'মাস্ক' এবং অনলাইন ব্যক্তিত্বগুলির মধ্যে মাত্র এক বা দুটি ব্যবহার করে খুশি করার এবং বিনোদন দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরণের দর্শক রয়েছে।ইন্টারনেট প্রায়ই যেকোনো একটি সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে আপনার নিজের উপস্থাপনা সীমাবদ্ধ করে দিতে পারে। এই কারণেই হয়তো মানুষ সাধারণত টাম্বলার থেকে পিন্টারেস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সাইটে একাধিক অনলাইন অ্যাকাউন্ট রাখে। বিভিন্ন সাইট বিভিন্ন দর্শকদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয় এবং প্রায়ই লোকেদের কেবল একটি ব্যক্তিত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে পারে। অনলাইনে বিভিন্ন জায়গায় আপনার ব্যক্তিত্ব এবং জীবনের বিভিন্ন উপাদান শেয়ার এবং অন্বেষণ করার জন্য আপনাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। টুইটারে মানুষ যা প্রকাশ করে, তা ফেসবুকে পোস্ট করার মতো মনে নাও হতে পারে। জনসাধারণের বিভিন্ন গোষ্ঠীর জন্য আলাদা মুখোশের প্রয়োজন হয়, পেশাদার থেকে ব্যক্তিগত পর্যন্ত। শুধুমাত্র চাকরি খোঁজা এবং পেশাদারিত্বের জন্য নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো আবির্ভূত হচ্ছে, লিঙ্কডইন একটি জনপ্রিয় সাইট। এই ধরণের দর্শকদের অবশ্যই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাইটগুলোতে প্রদর্শিত দর্শকদের থেকে আলাদা ব্যক্তিত্ব উপস্থাপন করা হবে। জং নিজে পর্যবেক্ষণ করেছেন যে প্রতিটি ভিন্ন পেশা এবং পেশার জন্য আলাদা বৈশিষ্ট্য এবং ব্যক্তিত্বের প্রয়োজন হয়।আমাদের সামাজিক পরিচয়গুলো তরল এবং বিকশিত হচ্ছে, এবং কখনও কখনও মনে হয় যে কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাইটের প্রকৃতি আমাদের সমস্ত 'ব্যক্তিত্ব' একসাথে উপস্থাপন করার অনুমতি দেয় না। সোশ্যাল মিডিয়া মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে বা প্রকাশ্যে একটি অনলাইন স্থান তৈরি করার সুযোগ দেয়, যেখানে তারা যা খুশি হতে পারে এবং যে কোনও মুখোশ পরতে পারে। আমাদের জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিভিন্ন দর্শকরা বাস্তব জীবনে নিজেদের সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা পান, এবং অনলাইনে এটি পরিবর্তিত হয় না। অনলাইন এবং অনলাইনের বাইরে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন মুখোশের ব্যবহার দেখা যায়, এবং আপনার অনলাইন ব্যক্তিত্ব বাস্তব জগতের মানুষের কাছে আপনি যে চিত্র তুলে ধরেন তার চেয়ে আপনার প্রকৃত সত্ত্বার কাছাকাছি হতে পারে। তা সত্ত্বেও, জং আমাদের সতর্ক করে বলেন, এটা বজায় রাখতে হবে যে নিজের ব্যক্তিত্বের সাথে পরিচয় ক্ষতিকারক; বিষয়বস্তুকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে যে তারা তাদের ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে যেভাবে প্রদর্শিত হয় তার সাথে সে অভিন্ন নয়। যদি তা না হয়, অর্থাৎ যদি এই ব্যক্তিত্ব অবাধে কোনও বিষয়কে অবচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, তাহলে বিভিন্ন প্রসঙ্গে একজনের উপস্থিতি এবং অন্যদের সাথে নিজেকে কীভাবে উপলব্ধি করা হয় তার মধ্যে একটি অসঙ্গতি দেখা দিতে পারে। এটি অনলাইনেও ঘটতে পারে, যার পরিণতি সমানভাবে গুরুতর।

নার্সিসিজম এবং তপস্বীতা

[সম্পাদনা]

পৌরাণিক চরিত্র নার্সিসাসকে এড়িয়ে চলার একটি উদাহরণ হিসেবে দেখা হত, বিশেষ করে প্রাচীন গ্রিসে যেখানে নাগরিকদের আত্ম-শোষণ এবং স্বার্থপরতাকে সম্প্রদায়, গণতন্ত্র এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণের জনসাধারণের মূল্যবোধের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে দেখা হত। প্রকৃতপক্ষে, যদিও আত্ম-প্রকাশকে জনসাধারণের মতামত প্রকাশের জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হত, যেমন এক্লেসিয়া (প্রাচীন এথেন্স), একটি আত্মকেন্দ্রিক মতামত গ্রহণ করা হত না।সময় পেরিয়ে গেছে, কিন্তু নার্সিসিজমকে এখনও প্রায়ই নেতিবাচক ভাষায় বর্ণনা করা হয়। তবে পাপাচারিসি, রিচার্ড সেনেট এবং ক্রিস্টোফার ল্যাশের কাজের উপর ভিত্তি করে, যুক্তি দেন যে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রেক্ষাপটে নার্সিসিজম অগত্যা তার রোগগত এবং অবমাননাকর বৈশিষ্ট্যগুলো ধরে রাখে না। প্রকৃতপক্ষে, এটি স্বায়ত্তশাসন, আত্ম-প্রকাশ এবং নিয়ন্ত্রণের উত্তর-আধুনিক মূল্যবোধের পাশাপাশি কাজ করে এবং নিজেই আত্মদর্শন এবং আত্মকেন্দ্রিকতার প্রয়োজনীয়তার পক্ষে, যা বিষয়বস্তু যে দ্রুততার সাথে ব্যক্তিগত ও জনপরিসরকে স্থানান্তরিত বা একত্রিত করতে পারে তার উপর নির্ভর করে। কারণ, প্রাচীনকালের মতো নয়, এই ধরণের নার্সিসিজম স্ব-নির্দেশিত এবং স্ব-ভিত্তিক, কিন্তু এটি নিজেই রোগগতভাবে স্বার্থপর নয়। যথা, যদিও এটি স্বয়ংক্রিয় প্রচার এবং উপস্থাপনার পক্ষে, বিষয় ব্যক্তিগতকরণের মাধ্যমে যে সোশ্যাল মিডিয়া সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করে তা কেবল বিষয়ের সরাসরি উপকারের উদ্দেশ্যে নয়: স্বীকৃতি অন্যদের মাধ্যমে ঘটে। গণতান্ত্রিক বিতর্কের মধ্যে নির্ভরযোগ্যতার দিক থেকে কোনও বিষয়ের সম্ভাব্য ব্যক্তিগতকরণের পরিমাণ থেকে অন্যান্য সমস্যাগুলোও উঠে আসতে পারে, তবে এই আত্মকেন্দ্রিক অনুশীলনগুলো, সেগুলো ওয়ার্ডপ্রেস, ফেসবুক প্রোফাইল বা টুইটার আপডেটে ব্লগ এন্ট্রির আকার ধারণ করুক না কেন, এগুলো মূলত বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে যোগাযোগের অনুসন্ধানের অংশ।তবে ধর্মযাজকেরা যে মতামত প্রকাশ করেছেন তার বিপরীতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা তাদের মিম্বর থেকে যা ঘোষণা করেন তা জনপরিসরে অবদান রাখার জন্য চূড়ান্ত নয়; এই মতামতগুলো নাগরিক সম্পৃক্ততা পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এবং কিছুটা হলেও এগুলো একজনের চিন্তাভাবনার রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রকাশের একটি রূপ গঠন করে, তবে প্রথমত, এগুলো যারা এগুলো তৈরি করেন তাদের দ্বারা বিষয়বস্তুর স্ব-তৃপ্তিমূলক মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে। একইভাবে, ল্যাশের মতে, এই প্রবণতাগুলো, রোগগত আচরণের বিপরীতে, নিরাপত্তাহীনতা এবং আত্ম-জিজ্ঞাসার অনুভূতি থেকে উদ্ভূত হয় যা জনসাধারণ এবং ব্যক্তিগত সীমানা অতিক্রম করে এবং যা এই অর্থে একচেটিয়াভাবে স্বার্থপর আকাঙ্ক্ষার দিকে পরিচালিত হতে পারে না। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই ধরণের নার্সিসিজম এমন একটি সমাজের হতাশা থেকে উদ্ভূত হয় যেখানে সরকারী এবং ব্যক্তিগতর মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য নেই এটি সেলফির সাম্প্রতিক ঘটনাটির ব্যাখ্যা হতে পারে, যেখানে কেবল নামটিই আত্ম-রেফারেন্সিয়াল এবং আত্ম-শোষণের মূল্যবোধের কথা বলে। তবে যারা সেলফি পোস্ট করেন তাদের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিক আচরণ এবং অহংকার প্রচারের বিষয়ে বেশ কিছু সমালোচনা সত্ত্বেও, এই ঘটনাটিকে অন্যদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার মাধ্যমে আত্মসম্মান পুনর্মূল্যায়ন এবং পুনঃআশ্বস্ত করার একটি রূপ হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। এটি নার্সিসিজমের এই ব্যাখ্যাটিকে বিশৃঙ্খলা থেকে অনেক দূরে এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রিত মধ্যস্থতার মাধ্যমে নিজেকে পৃথিবীতে প্রজেক্ট করার নতুন পথ হিসাবে উপস্থাপন করে। মানুষ কেন 'সেলফি' পোস্ট করে তা বিশ্লেষণ করলে এই মৌলিক সত্যটি দূর হতে পারে যে, অনেক দিক থেকেই এটি প্রকাশের একটি রূপ। অনেকের কাছে, 'সেলফি' হলো মনোযোগ বা প্রশংসার জন্য কোনও কৌশল নয়, বরং আত্মপ্রকাশ, উদযাপন, মুক্তি এবং স্বায়ত্তশাসনের একটি কাজ।একই সাথে, সেনেট এই অর্থে নার্সিসিজমকে তপস্যার এক রূপ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। মনোবিজ্ঞানের উপর হাইঞ্জ কোহুতের লেখা থেকে উদ্ভূত, সেনেট পরামর্শ দেন যে নার্সিসিজম একটি ক্লিনিকাল অবস্থা কম, বরং তার নিজের আত্ম-সচেতনতা সম্পর্কে বেশি ব্যস্ততা এবং "ব্যক্তিত্বের জন্য উদ্যোগ, ইচ্ছাশক্তি এবং ঐক্যের উৎস হিসেবে" আত্মার ভূমিকা পালন করে। সেনেট যুক্তি দেন যে, নার্সিসাস যখন ডুবে যায়, তখন সে যা খুঁজছে তা অবশ্যই তার আত্ম-প্রতিচ্ছবি, কিন্তু একই সাথে এই স্ব এবং এর গভীরতা "অন্য"-এর একটি লোভনীয় রূপ। [২৪] অর্থাৎ, প্রতিফলিত চিত্রটি এমন একটি আত্মকে উপস্থাপন করে যা মূল চিত্রের চেয়ে আরও গভীর, আকর্ষণীয় এবং প্রলোভনসঙ্কুল। নার্সিসাস যে প্রতিচ্ছবি দেখেন এবং নিজের নির্মাণ করেন, তা ভেতরের জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে এবং তার কাছে পৌঁছাতে চায় এবং তাকে জল থেকে আটকে, টেনে বের করতে চায়। অতএব, আত্ম-শোষণ স্বার্থপরভাবে মনস্তাত্ত্বিক অভ্যন্তরীণতা এবং বিবর্ধনের উপর নিবদ্ধ নয়, বরং এটি সেই ঊর্ধ্বমুখী চিত্রের উপর মনোনিবেশ করে যা আরও পছন্দনীয় এবং আকর্ষণীয় বলে মনে হয়। এই সেই ভাবমূর্তি যা নার্সিসাস বাইরে থেকে দেখতে চান এবং যার জন্য তিনি স্বীকৃতি পেতে চান। নিজের ভেতরে অভাবের অনুভূতি থাকা সত্ত্বেও, সেনেট নিজের ভেতরের ভাবমূর্তিকে নিজের থেকে সরে আসার জন্য এবং তপস্যার এক রূপ হিসেবে আরও ভালো ভাবমূর্তি খোঁজার জন্য একটি সূচনা বিন্দু হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষমতাকে চিহ্নিত করেছেন। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি নিজের আত্ম থেকে সরে আসে সে আত্ম-পরীক্ষা এবং নিজের প্রতিফলন পরিচালনা করে, এইভাবে আত্ম-বোঝাপড়া এবং স্বায়ত্তশাসনকে উৎসাহিত করে। [২৪] তা সত্ত্বেও, নার্সিসাস, যেহেতু একচেটিয়াভাবে বন্ধ এবং স্থির, সেইসব কার্যকলাপের প্রতি যা উপরে বর্ণিত উপায়ে নিজের এবং তার চরিত্রায়নের চারপাশে আবর্তিত হয় না, তাই একটি সক্রিয় জনসমাগম এড়িয়ে যায়। [২৪]

স্বায়ত্তশাসন, নিয়ন্ত্রণ এবং আত্ম-প্রকাশের পরিবেশ হিসেবে ব্যক্তিগত পরিসর

[সম্পাদনা]

MoveOn.org-এর অনলাইন প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করা, ব্লগে রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করা, ইউটিউবে বিষয়বস্তু দেখা বা পোস্ট করা, অথবা অনলাইন আলোচনা গোষ্ঠীতে মন্তব্য পোস্ট করা মূলধারার মিডিয়া এবং রাজনৈতিক অভিনেতাদের দ্বারা নির্ধারিত একটি জনসাধারণের এজেন্ডার সাথে ভিন্নমত প্রকাশের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি অন্যদের দ্বারা নির্ধারিত একটি জনসাধারণের এজেন্ডার উপর একটি ব্যক্তিগত, ডিজিটালভাবে সক্ষম, অনুপ্রবেশ হিসাবে দাঁড়িয়েছে।এই ডিজিটাল যুগে, সমাজকে ইন্টারনেটে স্বাধীনভাবে কথা বলার জন্য সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। একবার ব্যবহারকারীরা অনলাইনে একটি ব্যক্তিগত পরিসরের মধ্যে পোস্ট করার অ্যাক্সেস পেয়ে গেলে, ব্যক্তিরা তাদের দর্শকদের উপর নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং ফেসবুকের মতো সাইটগুলোতে, ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট দর্শকদের কাছে একটি জন ইমেজ তৈরি করার স্বাধীনতা রয়েছে। এই সাইটগুলোর গোপনীয়তা সেটিংস ব্যবহারকারীদের পোস্টগুলো ব্যক্তিগতকৃত করার অনুমতি দেয় এবং তাদের নিজস্ব সামগ্রীর উপর নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি দেয়। এই সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলোই একমাত্র জায়গা যেখানে লোকেরা সম্পূর্ণ আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রদর্শন করতে এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে কারণ তারা কী বলবে এবং কীভাবে নিজেদের উপস্থাপন করবে তা বেছে নিতে পারে।অনলাইনে পোস্ট করা ছবিগুলো মানুষ নিজের এবং তাদের জীবনের চিত্র তৈরি করতে পারে এবং তারপর অনলাইনে উপস্থাপন করতে পারে তার একটি ভালো উদাহরণ। উদাহরণস্বরূপ, ইনস্টাগ্রামে অনেক ফিল্টার অপশন এবং পোস্ট করা ছবি সম্পাদনা করার উপায় রয়েছে, পাশাপাশি। যদি ছবিটি কোনওভাবে সম্পাদনা করা হয়, তাহলে এর অর্থ হতে পারে যে ব্যবহারকারীর জীবনের চিত্রায়ন অনলাইনে জনসাধারণের জন্য সম্পাদনা করা হয়েছে। মানুষ অনলাইনে তাদের জীবনের কিছু বিবরণ বাদ দিতে পারে। ফেসবুক প্রোফাইল ছবিগুলো বেছে নেওয়া হয় সেরা কোণগুলো দেখানোর জন্য, এবং এটি এমন একটি ছবি যা ব্যবহারকারীদের তাদের "বন্ধুদের" এবং অন্য যেকোনো অপরিচিত ব্যক্তির কাছে উপস্থাপন করে যারা তাদের অ্যাকাউন্টে ক্লিক করতে পারে। ফেসবুকের গোপনীয়তার অর্থ হলো ব্যবহারকারীরা কাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে এবং কে তাদের পোস্ট দেখবে তার উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে। তবে প্রোফাইল ছবি এবং কভার ছবিও এই ওয়েবসাইটের ব্যক্তিগত পরিসরের বাইরে, তাই, এই ছবিগুলো বেছে নেওয়ার সময় লোকেরা জনপরিসরের ধারণাটি মাথায় রাখে এবং এইভাবে জনসাধারণের পাশাপাশি তাদের দর্শকদের কীভাবে দেখবে তার উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকেরা যে ছবি এবং মতামত পোস্ট করে তার অনেকগুলো তাদের অনলাইন দর্শকদের জন্য উপযুক্ত নাও হতে পারে, যা আত্মপ্রকাশের বিষয়টি বিবেচনা করার মতো বিষয়।পূর্বে উল্লিখিত উক্তিটির সাথে সম্পর্কিত, ব্যক্তিগত অভিব্যক্তির জন্য অনলাইন ফোরাম ব্যবহার করা হলো ব্যক্তিগত পরিসরকে ব্যবহারের আরেকটি উপায়। কোনও ওয়েবসাইটে বেনামী থাকা এবং মতামত দেওয়ার সম্ভাবনাকে ব্যক্তিগত পরিসরের অংশ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে, কারণ বেনামী ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি রক্ষা করে। ব্যক্তিগত পরিসর মানুষকে ডিজিটালভাবে সক্ষম সম্প্রদায়ের মধ্যে নিজেদের প্রকাশ করার সুযোগ দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থাকার এই দিকটি অনেক মানুষের জন্য মুক্তিদায়ক হতে পারে, যারা জনসমক্ষে স্বাধীনভাবে কথা বলতে অনিচ্ছুক হতে পারে। গোপনীয়তার এই অনুভূতি নেতিবাচক এবং ইতিবাচক উভয় অর্থেই উৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে। নেতিবাচক, কারণ লোকেরা যখন জানে যে তারা ধরা পড়বে না, তখন তারা অভদ্র হতে বা অনলাইনে অন্যদের 'ট্রল' করতে বেশি আগ্রহী। ইতিবাচক, কারণ এটি মানুষকে তাদের বিশ্বাস প্রকাশ করার জন্য আত্মবিশ্বাসের অনুভূতি দিতে পারে।অনেকের কাছে, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টই হয়তো একমাত্র জায়গা যেখানে অনেকেই সম্পূর্ণ আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রদর্শন এবং অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন। তারা কী বলবে এবং কীভাবে নিজেদের উপস্থাপন করবে তা বেছে নিতে পারে এবং সৃজনশীলতা এবং আত্ম-গ্রহণযোগ্যতাকে উৎসাহিত করতে পারে এমন একটি ব্যক্তিগত অনলাইন ক্ষেত্র তৈরি করতে সক্ষম। ব্যক্তির অনলাইন জীবনের প্রকাশ্য এবং ব্যক্তিগত সংস্করণ ভিন্ন হতে পারে, যার অর্থ হলো অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী তাদের অনলাইন দর্শকদের কাছে উপস্থাপন করার জন্য নিজেদের একটি সংস্করণ 'তৈরি' করতে শুরু করে।একটি মধ্যস্থতাকারী পরিবেশে লোকেরা যেভাবে তাদের সমবয়সীদের মধ্যে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারে তা বাস্তববাদের সাথে একটি সমস্যা হতে পারে। ফেসবুক, টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামে ব্যক্তিত্ব তৈরি করাকে নিজের এবং বাস্তব জীবনের একটি মিথ্যা চিত্র আঁকার মতো ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। একটি ব্যক্তিগত পৃষ্ঠায় পোস্ট করার পিছনে ইতিবাচক দিক থাকা সত্ত্বেও, একটি গেটেড সম্প্রদায়ের মধ্যে, এটি যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে লোকেরা এখনও তাদের অনুসারীদের প্রভাবিত করার জন্য মিথ্যা ব্যক্তিত্ব তৈরি করার উপায় হিসাবে এটি ব্যবহার করছে।তবে এটাও যুক্তি দেওয়া যেতে পারে যে, এই অনলাইন গেটেড কমিউনিটির মধ্যেই লোকেরা প্রায়ই তাদের প্রকৃত সত্ত্বা প্রকাশ করতে এবং এমন লোকেদের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয় যাদের তারা বাস্তব জীবনে পরিচিত লোকেদের তুলনায় তাদের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সাথে বেশি বিশ্বাস করে। অনলাইনে তারা যে দর্শকদের সেবা দিচ্ছে তার উপর নির্ভর করে, এটা বিশ্বাস করা যেতে পারে যে অনেকেই অনলাইনে 'পারফর্ম' করার বা প্রদর্শন করার জন্য কোনও জায়গা খোঁজেন না, বরং এমন একটি জায়গা খোঁজেন যা তারা নিজেরাই তৈরি করেছেন যেখানে তারা এমন একটি ভাবমূর্তি এবং ব্যক্তিত্ব উপস্থাপন করার জন্য যথেষ্ট নিরাপদ বোধ করেন যা তারা দৈনন্দিন জীবনে যা প্রদর্শন করে তার চেয়ে তাদের প্রকৃত পরিচয়ের কাছাকাছি।

আত্ম-ইম্প্রেশনের পরিচয় সম্পাদন এবং ব্যবস্থাপনা

[সম্পাদনা]

যেমন এরভিং গফম্যান ব্যাখ্যা করেছেন, [১] যে ব্যক্তি একটি সামাজিক গোষ্ঠীর অংশ এবং অন্যদের তাৎক্ষণিক উপস্থিতিতে থাকে, সে তাৎক্ষণিকভাবে একটি মঞ্চস্থ পরিবেশনার সূচনাকারী এবং অংশ হয়ে ওঠে। এই পরিবেশনার মধ্যে, ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে প্রকাশ করবে এবং গোষ্ঠীর অন্যান্য ব্যক্তিরা তার দ্বারা বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হবে। যদিও ব্যক্তি যে ধারণাটি প্রকাশ করবে তা কীভাবে গ্রহণ করা হবে তা সম্পূর্ণরূপে পূর্বাভাস দেওয়া যায় না, তবে বিষয়ের মূল আগ্রহ হলো বিষয়টি যেভাবে দেখাতে চায় তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করা।অর্থাৎ, বিষয়বস্তু তার গঠনের মাধ্যমে অন্যদের প্রতি পরিচালিত ধারণাকে প্রভাবিত করার জন্য কাজ করে, যাতে তারা সেই ধারণাটি পায় যা তাদের জানানোর কথা ছিল, এবং এইভাবে প্রাপক নিজেকে যে পরিস্থিতিতে পান তাও গঠন করে। তবে কখনও কখনও একটি বিষয় হতে পারে। উপরন্তু, ব্যক্তি তার জীবনের কিছু দিক কতটা প্রকাশ করে, এইভাবে কিছু তথ্য সেন্সর করে এবং প্রতিনিধিত্বকারী স্ব-এর "নৈপুণ্য" এর মাধ্যমে অন্যদের উপলব্ধি করে, তা প্রদত্ত ধারণাকে ব্যাপকভাবে আকার দেয়। এই পরিবেশনার মধ্যে, পর্যবেক্ষকদেরও একটি ভূমিকা রয়েছে যা কেবল পর্যবেক্ষণের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। দর্শক, যিনি এই প্রদর্শনীর অংশ, তিনি জানেন যে তাকে উপলব্ধি করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে এবং জানেন যে তার উপলব্ধি পরিবেশনার জন্য কাজ করে, কিন্তু একই সাথে, যদি তিনি নিজে একজন পরিবেশক হন, তবে তিনি জানেন যে কিছু লুকানো হচ্ছে। তবে তার ভূমিকা কেবল সামনের অংশে সীমাবদ্ধ এবং তিনি বিষয়টির নেপথ্যে যেতে পারবেন না। তা সত্ত্বেও, যদি পর্যবেক্ষক বিষয়টির যথেষ্ট কাছাকাছি থাকেন, তাহলে তিনি অনিচ্ছাকৃতভাবেও বিষয়টি নিজের উপর যে ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করেছেন তা ব্যাহত করতে পারেন, যার ফলে বিষয়টি বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। উদাহরণস্বরূপ, যখন SNS-তে বিষয়বস্তু ট্যাগ করা হয়েছে এমন ছবিগুলো পরবর্তীটির তৈরি মঞ্চস্থ স্ব-উপস্থাপনার থেকে অনেকটাই আলাদা হয়, তখন এটি এমন হতে পারে। অতএব, বিষয়গুলো যে ইমপ্রেশন ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণ করে, তা অনিবার্যভাবে সামাজিক সম্পর্কের দ্বান্দ্বিকতার সাথে সম্পর্কিত। এই কারণে, বিষয়কে পরিস্থিতি এবং অন্যরা কীভাবে তার নিজের আত্ম-প্রতিনিধিত্ব উপলব্ধি করবে সে সম্পর্কে নিয়ন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে হবে। তবে তিনি যেমন তাদের উপস্থাপনার কিছু দিককে অবমূল্যায়ন করেছেন এবং অতিরঞ্জিত করেছেন, তেমনি বিষয়ের ভূমিকায়ও অন্যদের করেছেন, বিশেষ করে তারা তাকে নিয়ে যেভাবে অনুভব করেন তাতে। অতএব, সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য সম্পর্কে সমস্ত প্রাসঙ্গিক সামাজিক তথ্য অনুপলব্ধ। তাদের অনুপস্থিতিতে, ব্যক্তি ইঙ্গিত, পরীক্ষা, ইঙ্গিত, অভিব্যক্তিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি, স্ট্যাটাস প্রতীক ব্যবহার করার প্রবণতা রাখে যা অন্যদের মনে তার চরিত্রায়নের জন্য অনুমানযোগ্য হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। প্রকৃতপক্ষে, তার উপস্থাপনার একটি উপজাত ছাপ এড়াতে, বিষয়বস্তুর কাছে তাদের উপস্থাপনাকে এমনভাবে পুনর্বিন্যাস করার বিকল্প রয়েছে যাতে পর্যবেক্ষক তার ব্যাখ্যায় সেই সংকেত, চিহ্ন এবং প্রতীক দ্বারা পরিচালিত হন। অর্থাৎ, পর্যবেক্ষকের চিহ্নের ব্যাখ্যা কী হবে তা না জানা থাকলে, চিহ্নটি বিষয় দ্বারা ব্যবহার করা যেতে পারে। এই কারণে, একটি বিশ্বাসযোগ্য ধারণা অগত্যা বিষয়বস্তু কী বা কী আছে তার সাথে সম্পর্কিত নয়, বরং এই উপাদানগুলো যথেষ্ট পরিমাণে তৈরি করা যেতে পারে যাতে তাদের অনুপস্থিতিতে পর্যবেক্ষককে বোঝানো যায় যে তারা প্রকৃতপক্ষে আবিষ্ট।নিজের উপস্থাপনা এবং ছাপ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে গফম্যান বলেছেন: "মানুষ যখন নিজেদের ছবি তোলার অনুমতি দেয় তখন তারা একটি 'পারফরম্যান্স' দেয়, এই অর্থে যে তারা এমন একটি জনসাধারণের জন্য অনুমতি দেয় যারা শেষ পর্যন্ত ছবিটি দেখবে।" তিনি 'পারফরম্যান্স' শব্দটি ব্যবহার করে 'একটি নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানে একজন অংশগ্রহণকারীর সমস্ত কার্যকলাপ যা অন্য যেকোনো অংশগ্রহণকারীকে যেকোনোভাবে প্রভাবিত করে' বোঝান। একবিংশ শতাব্দী ইন্টারনেটের প্রবর্তন এনেছে এবং এর ফলে ফেসবুকের মতো নতুন সামাজিক নেটওয়ার্কের সূচনা হয়েছে। এই ধরনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে, সমাজ অবচেতনভাবে এবং সচেতনভাবে বিভিন্ন রূপে নিজেদের প্রকাশ করার জন্য ছবি ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছে।অনলাইনে ছবি তোলা এবং নির্বাচন করার ক্ষেত্রে অনেকগুলো অবদানকারী কারণ রয়েছে যা অনলাইনে পোস্ট করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। চ্যালফেনের স্ন্যাপশট ভার্সনস অফ লাইফ (১৯৮৭) -এ একটি প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়েছে:- পরিকল্পনা- শুটিং (ক্যামেরা ছাড়াই)- শুটিং (ক্যামেরা ছাড়াই)- সম্পাদনা- প্রদর্শনীতবে মেন্ডেলসন এবং পাপাচারিসির "Look at us: Collective Narcissism in Facebook Photos" বিশ্লেষণ করার পর, যেকোনো সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে (SNS) ছবি আপলোড করার পিছনে কেবল পরিকল্পনা, পোজ, শুটিং ছাড়াও আরও অনেক কিছু জড়িত। গণমাধ্যম মানুষকে বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রকাশের সুযোগ করে দেয়। "মানুষ যখন নিজেদের উপস্থাপন করছে বলে মনে হচ্ছে, তখন তারা নিজেদের একটি অত্যন্ত নির্বাচনী সংস্করণ উপস্থাপন করছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটগুলো (SNS) সর্বশেষ নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্ম উপস্থাপন করে যা বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত দর্শকদের কাছে স্ব-উপস্থাপনা সক্ষম করে।" (মেন্ডেলসন এবং পাপাচারিসি) SNS মানুষকে বিভিন্ন দর্শকদের জন্য নিজেদেরকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ দেয়। উদাহরণস্বরূপ, কিছু ক্ষেত্রে মানুষ ফেসবুকের একাধিক সংস্করণ তৈরি করে, একটি তাদের বাবা-মায়ের জন্য এবং একটি তাদের সমবয়সীদের জন্য। এছাড়াও লোকেরা তাদের দর্শকদের উপর নির্ভর করে তাদের ছবি সম্পাদনা করে। সচেতনভাবে এবং অবচেতনভাবে মানুষ অন্যদের দ্বারা তাদের কীভাবে উপলব্ধি করা হয় তা নির্ধারণ করার জন্য কাজ করে, একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করার আশায়। এটি ঘটানোর জন্য, তাদের চেহারা, আচরণ এবং ত্রুটিগুলো আড়াল করার চেষ্টা করার জন্য প্রচেষ্টা করতে হবে। প্রোফাইল ছবি, অথবা যেকোনো ছবি আপলোড করা একটি প্রক্রিয়া কারণ এটি একজন ব্যক্তি কে তা প্রতিনিধিত্ব করে। আপলোড করার জন্য একটি ছবি নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি নির্ধারক প্রভাব হলো কে এটি দেখবে এই চিন্তাভাবনা। উদাহরণস্বরূপ, আপনার দাদীকে ফেসবুকে রাখার ফলে আপনি এমন কোনও সামাজিক রাতের ছবি পোস্ট করতে পারবেন না যা কেবল আপনার সামাজিক গোষ্ঠীর জন্যই মজার হবে।ডোনাথ এবং বয়েড SNS-কে সংজ্ঞায়িত করেন: "অনলাইন পরিবেশ যেখানে লোকেরা একটি স্ব-বর্ণনামূলক প্রোফাইল তৈরি করে [...] সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইটগুলোতে অংশগ্রহণকারীদের সাধারণত তাদের আসল নাম দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং প্রায়ই ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হয়; তাদের সংযোগের নেটওয়ার্ক তাদের স্ব-উপস্থাপনার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে প্রদর্শিত হয়।" ব্যক্তিরা যে আরও ব্যক্তিগতকৃত ছবি তোলেন তা জোর দেয় যে তারা কীভাবে তাদের জীবনকে স্মরণীয় করে রাখতে চান। সচেতনভাবে এবং অবচেতনভাবে ব্যক্তিরা ক্যামেরার সামনে নিজেদের রূপান্তরিত করে; নিজেদের এমন একটি সংস্করণ চিত্রিত করে যা আমরা হতে চাই। SNS-এর মতো ব্যক্তিগত ও জনসাধারণের সীমানা মিশ্রিত নেটওয়ার্কযুক্ত পরিবেশে, ফেসবুক অসাবধানতাবশত বিভিন্ন ধরণের দর্শকদের কাছে পারফর্মিং প্রকৃতির বিষয়বস্তু পৌঁছে দেয়।

সেলিব্রিটি সংস্কৃতি

[সম্পাদনা]
ফেসবুক এবং টুইটারে সংবাদের ব্যবহার বাড়ছে সেখান থেকে খবর পাওয়া ব্যবহারকারীদের %
টুইটার ফেসবুক
৬৩% ৬৩%
৫২%
৪৭%
২০১৩ ২০১৫ ২০১৩ ২০১৫

'সর্বদা চালু' সংস্কৃতির অংশ হওয়ার জন্য সেলিব্রিটিদের চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেলিব্রিটিদের সাথে মিথস্ক্রিয়ার জন্য ভক্তদের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। সেলিব্রিটিদের উপর সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব সম্পর্কে একটি আকর্ষণীয় উক্তি এই বিষয়টিকে সম্পূর্ণরূপে সারসংক্ষেপ করে:

>>একটি প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এটি কিভাবে মানুষকে পরিবর্তন করে।<<

— জন লেইনার[২৫]

এটি এই বিষয়টি প্রমাণ করে যে, সেলিব্রিটিরা একবার সফল হয়ে গেলে, প্রযুক্তিই তাদের পরিচয়, তাদের সামাজিক নৈতিকতা এবং মানুষ হিসেবে তাদের সাফল্য কীভাবে প্রভাবিত করে তার প্রথম প্রকাশ। প্রকৃতপক্ষে, অনেক সেলিব্রিটি তাদের পুরো ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন 'সর্বদা-অন' সংস্কৃতি এবং সেলিব্রিটি সংস্কৃতিকে উৎসাহিত করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়ার শক্তিকে কেন্দ্র করে। আজকাল, ইউটিউব, স্ন্যাপচ্যাট এবং ভাইনের মতো সাইটের মাধ্যমে 'সেলিব্রিটি'রা গড়ে উঠছেন।প্রতিটি সেলিব্রিটির বিশাল উত্তরাধিকারের কারণে, ভক্তরা তাদের আদর্শের সাথে একটি অবিচ্ছিন্ন সংযোগ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এর ফলে সেলিব্রিটিদের তাদের ভক্তদের সাথে সর্বদা উপলব্ধ এবং সংযুক্ত থাকতে হবে, যা উপযুক্ত বিষয়বস্তু বলে মনে করা হয় তা প্রদান করতে হবে। সেলিব্রিটিরা অনলাইনে কী ধরণের বিষয়বস্তু পোস্ট করেন এবং কোনটি 'সঠিক' মতামত বলে মনে করা হয়, তার সাথে জড়িত বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন।এর ফলে মানুষ তাদের পরিচয়ের বোধ হারিয়ে ফেলতে পারে এবং সমাজের আদর্শের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে - উপযুক্ত বিষয়বস্তু পোস্ট করতে পারে, সর্বদা 'নিখুঁত' দেখতে পারে, 'সঠিক' মতামত রাখতে পারে এবং একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি প্রকাশ করতে পারে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য অনেক সুবিধা প্রদান করে, তবুও এটি আমাদের এক মুহূর্তের সময় এবং মনোযোগের পরিমাণের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করা উচিত যে প্রযুক্তি কম রাজনৈতিক, ক্ষমতা ও সামাজিক মর্যাদার উপর বেশি নির্ভরশীল। প্রযুক্তি উত্তরাধিকারের প্রভাবের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এবং প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে সামাজিক মর্যাদা তৈরির ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, যা সমস্ত সেলিব্রিটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সোশ্যাল মিডিয়ার সকল দিকের উপর সেলিব্রিটিদের আধিপত্য ক্ষমতার একটি লক্ষণীয় ভারসাম্যহীনতার দিকে পরিচালিত করেছে এবং এই বিশ্বাসকে উৎসাহিত করে যে সেলিব্রিটিরা মানুষ নয় বরং দেবতা, যারা অনলাইনে ভুল করে।ব্যবহারকারীদের মধ্যে জালিয়াতির সমস্যা খুবই সাধারণ। ২০১৪ সালে আমেরিকার এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে এক বছরে প্রায় ৫০% মানুষ হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্রোগ্রামগুলো এতটাই পরিবর্তিত হচ্ছে যে কোম্পানি নিজেই প্রথমে দোষারোপ করা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং ব্যবহারকারীকে বেশি দোষারোপ করছে। সুতরাং, এটি দুটি উপায়ে কাজ করে - ব্যবহারকারী আরও নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতা লাভ করে কিন্তু বিনিময়ে, তারা তাদের অনলাইন সমস্যার জন্য প্রায় সম্পূর্ণরূপে দায়ী। ল্যানিয়ারের মতে, সংবাদপত্রের মান হ্রাস পাচ্ছে, তাই এখন ইন্টারনেটে আরও বেশি মূল্য দেওয়া হচ্ছে, যা সমস্যাযুক্ত হতে পারে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, অন্য যেকোনো উৎসের চেয়ে মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াকে বেশি গুরুত্ব দেয়। সংবাদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া যে অগ্রাধিকার নেয় তা সেলিব্রিটিদের জন্য একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা কারণ প্রধান প্ল্যাটফর্মগুলো সঠিক বা ভুল সংবাদ প্রচারের জন্য কুখ্যাত।ট্রোলিং হলো সেলিব্রিটি এবং তাদের অনলাইন গোপনীয়তার সাথে সম্পর্কিত সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায়, ট্রোলিং অত্যন্ত সাধারণ। ভক্ত বা বিরোধীরা কেউ কেউ নিজেকে সেলিব্রিটি বলে পরিচয় দিতে পারে এবং সেই কারণে এই ব্যক্তির উপর ভিত্তি করে একটি জাল অ্যাকাউন্ট বা পৃষ্ঠা তৈরি করতে পারে। এটি সমস্যাযুক্ত কারণ সেলিব্রিটিদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যাখ্যার জন্য উন্মুক্ত এবং এভাবেই ছড়িয়ে পড়ে - যার ফলে সেলিব্রিটির কোনও নিয়ন্ত্রণ বা গোপনীয়তার গুজব থাকে না। এর ফলে ভুল উপস্থাপনা হতে পারে এবং অনলাইনে এটি অনেক বেশি ব্যক্তিগত হয়ে ওঠে।সোশ্যাল মিডিয়া এবং তথ্য ও তথ্যের অ্যাক্সেসের কারণে সেলিব্রিটিদের মধ্যে একটি সাধারণ বিষয় হলো ক্ষতিকারক বিষয়বস্তু ফাঁস হওয়া। এটি সেলিব্রিটিদের জন্য একটি ক্রমবর্ধমান সমস্যা কারণ সাংবাদিক এবং মিডিয়া ব্যবহারকারীরা লুকানো বিষয়বস্তু অর্জনের জন্য তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। সেলিব্রিটিদের যে প্ল্যাটফর্ম দেওয়া হয়েছে, ইন্টারনেট কীভাবে তার অপব্যবহার করতে পারে তার একটি উদাহরণ হলো নারী সেলিব্রিটিদের হ্যাক করা এবং পরবর্তীতে নগ্ন ও ব্যক্তিগত ছবি ফাঁস করা। প্রচারের ছোঁয়ায় থাকা নারীরা বিভিন্ন ধরণের মিডিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন এবং তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি চুরি করে অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়া হয়, যেখানে ছবিগুলো চিরকাল থাকবে।"সমসাময়িক সংস্কৃতিতে অবিশ্বাস্য পরিমাণে কার্যকলাপ যা ব্যক্তিগত, ব্যক্তিগত, ঘনিষ্ঠ এবং জনসাধারণের সীমানা অন্বেষণ করে তা সেলিব্রিটির বক্তৃতার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ কিন্তু মহামারীগতভাবে সেই ক্ষেত্র ছাড়িয়ে প্রসারিত হয় কারণ এটি সাধারণ জনগণের সাথে সম্পর্কিত।" - ডেভিড মার্শাল সোশ্যাল মিডিয়াও সেলিব্রিটিদের 'পিছু নেওয়ার' জন্য উৎসাহিত করে। একজন সেলিব্রিটির খোলা পৃষ্ঠা, ব্যাখ্যামূলক পৃষ্ঠা এবং প্রোফাইল অ্যাক্সেস করার ক্ষমতা সেলিব্রিটিদের অনুসরণ করার একটি পথ তৈরি করে, যেখানে তাদের সমস্ত তথ্য বড় ঝুঁকিতে থাকে। স্টকিং এবং মনস্তাত্ত্বিক আচরণের উপর একটি গবেষণায়, এটি স্পষ্ট করা হয়েছে যে স্টকিং এর প্রধান অ্যাক্সেস এবং সোচ্চার পয়েন্ট হলো মিডিয়া। "সেলিব্রিটি ব্যক্তিত্বদের অনুসরণকারীরা জনপ্রিয় মিডিয়ার সংবেদনশীলতা, বিশেষ করে যদি তারা তাদের অনুসরণের বিষয়বস্তুর প্রতি হুমকি দিয়ে থাকে বা হিংসাত্মক আচরণ করে থাকে।" সেলিব্রিটিরা এই আদর্শ সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে; এমন একটি সংস্কৃতি যা অনেক দিক থেকেই অন্যদের দ্বারা আকাঙ্ক্ষিত এবং বিলাসিতা এবং উচ্চ শৈলীর। তবে অন্যভাবে, সেলিব্রিটিরা একটি 'স্বাভাবিক' জীবনের আখ্যান দেখানোর চেষ্টা করেন; তাদের আরও মানবিক করে তোলেন। এই আখ্যানে এমন কিছু উদাহরণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে যেখানে সেলিব্রিটিরা এমন কার্যকলাপ করার জন্য পোজ দেন যা সাধারণ ব্যক্তি করতে পারেন অথবা এমন ব্র্যান্ডের সাথে নিজেদের যুক্ত করেন যা 'সাধারণ' ব্যক্তি পছন্দ করতে পারেন। কিন্তু, সেলিব্রিটিদের সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা করার আসল কারণ হলো তারা কতটা প্রচার পান এবং এটি তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। একবার কেউ সেলিব্রিটি সংস্কৃতির গভীরে প্রবেশ করলে, সমস্ত গোপনীয়তা জানালার বাইরে চলে যায়।

অনলাইন পরিচয় - ব্যক্তিগত ও জনসাধারণের সীমানা অতিক্রম করা

[সম্পাদনা]

আমাদের অনলাইন পরিচয় এবং আমরা যে পরিচয় অনলাইনে গ্রহণ করি তা আমাদের ইন্টারনেট ব্যবহার পরিবর্তন করতে পারে; আমাদের এই বর্ণনা ডিজিটাল মিডিয়ার কার্যকারিতা পরিবর্তন করে। আমাদের অনলাইন ব্যবহারে জনসাধারণ বা ব্যক্তিগতের সীমানা তৈরি করার জন্য নিজের বর্ণনা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অনলাইনে যে আত্ম-সত্তা তৈরি এবং প্রদর্শন করি তা ইন্টারনেটের জন এবং ব্যক্তিগত ফাংশনের উপর সীমানা স্থাপন করতে শুরু করেছে এবং আমাদের ক্রমবর্ধমান সমাজের কারণে, জন এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কে আমাদের ধারণা বদলে গেছে।আমাদের অনলাইন পরিচয়ের একটি রূপ যা সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং ওপেন সোর্স । এর মানে হলো যে আমাদের প্রোফাইলগুলোতে আমাদের সম্পর্কে প্রচুর তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সীমানা অতিক্রম করে। এই বিষয়টি ব্যবহারকারীর অনলাইনে তথ্যের পরিমাণের কারণে ব্যক্তিগত থাকা আরও কঠিন করে তুলতে পারে। এছাড়াও আমাদের অনলাইন উপস্থিতির একটি অংশ আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, অর্থাৎ শেয়ার করা তথ্য, যা কোম্পানিগুলো ট্র্যাক করে । এবং যেহেতু বৈশিষ্ট্যগতভাবে ডিজিটাল উপাত্ত সহজেই অনুলিপি করা যায়, কেউ এটা আটকে রাখতে পারে না যে, এই কোম্পানিগুলো বা লোকেরা, যাদের সাথে আমরা বিষয়বস্তু শেয়ার করেছি, তারা এগুলো আরও ছড়িয়ে দিয়েছে - আমাদের ব্যক্তিগত পরিসর এমন একটি অংশে প্রসারিত, যা আমাদের কাছে অদৃশ্য। আরেকটি উদ্বেগের বিষয় হলো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার সহজাত প্রকৃতি, কারণ এই সাইটগুলোতে আমাদের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কী প্রচারিত হচ্ছে তা আমরা কখনই সত্যিকার অর্থে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। প্রায়ই আমাদের অনুমতি ছাড়াই ব্যক্তি এবং বড় কোম্পানি উভয়ের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য প্রকাশ করা হয়। আমাদের অজান্তে বা সম্মতি ছাড়া আমাদের পোস্ট করা ছবিগুলোর উপর আমাদের অনেকাংশে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। এইভাবেই আমাদের অনলাইন পরিচয় এমন কিছুতে রূপান্তরিত হয় যা আমরা সম্ভবত চিনতে পারি না বা সমর্থন করি না।তাই জনসাধারণের প্রতি আমাদের ধারণার অর্থ হলো আমরা বিশ্বাস করি যে আমাদের তথ্য সকলের জন্য উপলব্ধ, এবং যে কেউ আমাদের বিষয়বস্তু দেখতে পারে। তবে যেহেতু এটি ক্রমশ গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে, তাই অনলাইনে জনসাধারণের কাছে প্রকাশের বিপদ সম্পর্কে আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এটি জনসাধারণের সীমানাকে আরও ঠেলে দিচ্ছে কারণ আমরা যে ধরণের ব্যবহারকারী হতে চাই তা এই জনসাধারণের অবস্থানকে পরিবর্তন করে।অনলাইন পরিচয় হলো অনলাইনে আমাদের চরিত্র এবং আমরা অনলাইনে কাকে থাকতে পছন্দ করি তার গঠন। বাস্তব জীবনের তথ্য ভাগ করে নেওয়ার পছন্দ গোপনীয়তা পরিবর্তন করতে পারে বা এর বিরোধিতা করতে পারে; প্রচার পরিবর্তন করতে পারে কারণ আমরা কিছু তথ্য সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং আমাদের প্রোফাইলকে আরও গোপনীয় করে তুলতে পারি। অনলাইনে আমরা নিজেদের সম্পর্কে যে তথ্য প্রকাশ্য বা ব্যক্তিগত রাখতে চাই, তা আমাদের পরিচয় তৈরি এবং তারপর আমাদের অনলাইন দর্শকদের কাছে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। <i id="mwBH4">(অনুচ্ছেদ ১.৭.২ দেখুন: আত্মার পরিবর্তিত আখ্যান)</i>তাহলে, এটি এই প্রশ্নটি উত্থাপন করে যে আমাদের পরিচয় গোপনীয়তাকে কতটা সংজ্ঞায়িত করে? অনলাইনে যদি আমাদের কাছে তথ্য থাকে, তাহলে কি আমরা সত্যিই ব্যক্তিগত? এই প্রশ্নটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গোপনীয়তাকে কতটা সীমার মধ্যে ঠেলে দেয় তা তুলে ধরে এবং দেখায় যে উদাহরণস্বরূপ ফেসবুকে ব্যক্তিগত থাকা সত্ত্বেও, আমাদের এখনও একটি প্রোফাইল ছবি এবং মৌলিক তথ্যের প্রয়োজন।এটিকে মূল তাত্ত্বিক হামিদ ভ্যান কোটেনের সাথেও যুক্ত করা যেতে পারে যিনি পরিচয় এবং সংস্কৃতির মধ্যে একটি যোগসূত্রের পরামর্শ দেন। তিনি ইঙ্গিত করেন যে আমরা নিজেদের সম্পর্কে যা প্রকাশ করতে পছন্দ করি এবং জনসাধারণের বা ব্যক্তিগতভাবে যা পছন্দ করি তা আমাদের মানুষ, আমাদের পরিচয় এবং আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক কিছু বলে। সমাজ যত বিকশিত হচ্ছে, আমরা আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ার উপর আরও নিয়ন্ত্রণশীল হয়ে উঠছি এবং আমাদের নিজস্ব প্রোফাইল এবং অনলাইনে আমাদের তথ্য ব্যবহার এবং প্রদর্শনের পদ্ধতির উপর আরও বেশি এজেন্সি অর্জন করছি। এটি অনলাইনে দায়িত্বের প্রশ্ন উত্থাপন করে। যেহেতু আমাদের এত নিয়ন্ত্রণ আছে, তাই যখন কিছু ভুল হয় তখন কি আমরাই সম্পূর্ণরূপে দায়ী?ব্যবহারকারীদের মধ্যে জালিয়াতির সমস্যা খুবই সাধারণ। ২০১৪ সালে আমেরিকার এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে এক বছরে প্রায় ৫০% মানুষ হ্যাকিংয়ের শিকার হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্রোগ্রামগুলো এতটাই পরিবর্তিত হচ্ছে যে কোম্পানি নিজেই প্রথমে দোষারোপ করা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং ব্যবহারকারীকে বেশি দোষারোপ করছে। সুতরাং, এটি দুটি উপায়ে কাজ করে - ব্যবহারকারী আরও নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষমতা লাভ করে কিন্তু বিনিময়ে, তারা তাদের অনলাইন সমস্যার জন্য প্রায় সম্পূর্ণরূপে দায়ী।

আত্ম-আখ্যান

[সম্পাদনা]

প্রাচীন গ্রিক থিয়েটারে ব্যক্তিত্বের ধারণা, আত্মার নাট্যরূপ উপস্থাপনা

[সম্পাদনা]

"persōna" শব্দটি প্রাচীন গ্রিক শব্দ πρόσωπον ( Prosopon ) এর ল্যাটিন সমার্থক। গ্রিক শব্দটি নিজেই অব্যয় pros দ্বারা গঠিত - যার অর্থ 'towards' এবং শব্দ ops - যা সাধারণত hole বা eye শব্দ দিয়ে অনুবাদ করা হয়। অতএব, Prosopon শব্দটির অনুবাদ করা যেতে পারে মুখ (যা আমাদের চোখের সামনে), সামনের অংশ, চরিত্র এবং চেহারা, কিন্তু এর অর্থ মুখোশ, ব্যক্তিত্বও হতে পারে।

একজন যুবকের প্রতিনিধিত্বকারী থিয়েটার মাস্ক। ল্যুভর জাদুঘর।

যদিও এই দুটি শব্দের মধ্যে ব্যুৎপত্তিগত সম্পর্ক অনুমানমূলক, তবুও আধুনিক ব্যক্তিত্বের ধারণাটি এখনও এর মূল গ্রিক অর্থের উপর নির্ভর করে। আসলে, যখন আমরা "পারসোনা" ধারণাটি নিয়ে কথা বলি, তখন আমরা সাধারণত এর অর্থকে প্রাচীন গ্রিসের থিয়েটার এবং মুখোশের ধারণার সাথে যুক্ত করি। ধ্রুপদী গ্রিক যুগে, প্রোসোপন শব্দটি মঞ্চে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করার জন্য অভিনেতাদের পরার মুখোশ এবং মানুষের মুখোশ উভয়কেই বোঝাতে ব্যবহৃত হত। মুখোশের কাজ ছিল নির্দিষ্ট চরিত্রগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো চিত্রিত করা যাতে দর্শকরা চরিত্রগুলোর ভূমিকা বুঝতে পারে। ডায়োনিসাসের থিয়েটারের মতো একটি উন্মুক্ত থিয়েটারে, মুখোশধারীদের মুখোশধারী মুখের তীব্র, বহির্মুখী অভিব্যক্তি চরিত্রগুলোর মুখকে দর্শকদের আরও কাছে আনতে সক্ষম হয়েছিল, তাদের বৈশিষ্ট্যের জন্য ধন্যবাদ। তাছাড়া, মুখোশের আকৃতি নিজেই একটি অনুরণন কক্ষ তৈরি করেছিল যা দূরের আসনে বসা দর্শকদের কেবল চরিত্রগুলো আরও ভালভাবে শুনতে দেয়নি, বরং চরিত্র এবং থিয়েটারের মধ্যে একটি সংযোগও তৈরি করেছিল। অধিকন্তু, এটি মুখোশের আড়ালে মানবদেহকে একটি রূপান্তরের দিকে নিয়ে যায়, যার ফলে মানুষের মুখ মুখোশে পরিণত হয়। [২৬]নাট্য পরিবেশনার সময়, অভিনেতাকে চরিত্রের ভূমিকায় অদৃশ্য হয়ে যেতে হয়েছিল। জনসাধারণের সাথে একটি বিশেষ ধরণের মিথস্ক্রিয়া স্থাপনের জন্য অভিনেতাকে চরিত্র হতে হয়েছিল। নাট্য পরিবেশনার এই ধারণা থেকে শুরু করে, এরভিং গফম্যান দৈনন্দিন জীবনে মানুষ যেভাবে তাদের নিজস্ব পরিচয় তৈরি করে তার সাথে অভিনেতারা যেভাবে চরিত্রগুলো পরিবেশন করে তার তুলনা করেছেন।

অনলাইনে প্রচার

[সম্পাদনা]

যেখানে রেডিওর ৫ কোটি রিসিভারে পৌঁছাতে ৩০ বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল, সেখানে ইন্টারনেট ৫ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে তা সফল করেছে ( ইনফোগ্রাফিক দেখুন)। এই বিষয়টি মাথায় রেখে প্রশ্ন হল, একটি হাইব্রিড মাধ্যম হিসেবে ইন্টারনেট কীভাবে প্রচার তৈরি করে এবং বৃদ্ধি করে এবং এর ব্যক্তিগত ও জনপরিসরে কী প্রভাব পড়ে। আমাদের আলোচনায় আমাদের প্রচারের নিম্নলিখিত মাত্রাগুলো বিবেচনা করা প্রয়োজন:* প্রচারণা, অর্থাৎ একটি জন রুম যেখানে যে কেউ প্রবেশ করতে পারে।

  • জনসাধারণের যোগাযোগ এবং জনসাধারণের যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রচার
  • জনমতের মতো প্রচারণারাজনৈতিক সিদ্ধান্তের উপর নজরদারি এবং বৈধতা প্রদানের হাতিয়ার হিসেবে ঐতিহাসিকভাবে প্রচারণার দাবি উঠে এসেছে। তাই যেকোনো বিষয়ের জন্য এমন একটি ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে যেখানে সবাই সমানভাবে, পারস্পরিকভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারবে। ইন্টারনেট, অন্য কোনও মাধ্যমের মতো, বিভিন্ন তথ্য চ্যানেলের মাধ্যমে (রাজনৈতিক) আলোচনার জন্য একটি ফোরাম অফার করে না, যা তত্ত্বগতভাবে যে কেউ অ্যাক্সেস করতে পারে। উপরন্তু, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতে বক্তা এবং গ্রহীতার ভূমিকা ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং পরীক্ষিত বিষয়গুলোর বৈচিত্র্য বিশাল।
Global Digital Divide (Map) টেমপ্লেট:CSS image crop
যুক্তরাষ্ট্রে ডিজিটাল বিভাজন (ইনফোগ্রাফিক)

এই ধরনের একটি কক্ষ তৈরি করার অর্থ হলো একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা, যা আগের দিনগুলোতে একটি বাজার হতে পারত: গণযোগাযোগ, যা গণযোগাযোগের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, স্বচ্ছ এবং তাই যে কারও জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য হওয়ার লক্ষ্যে। সাধারণত এগুলো বিশাল এবং বেনামী শ্রোতাদের বোঝায়, যা বার্তার নাগাল, প্রতিফলন এবং প্রভাবকে অপরিসীম এবং অনিয়ন্ত্রিত করে তোলে, কিন্তু অনলাইন ট্র্যাকিং টুল এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে তাৎক্ষণিকভাবে উত্তর দেওয়ার সম্ভাবনার সাথে সাথে অনলাইন শ্রোতাদের যাচাই করার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তবে ইন্টারনেট সারা বিশ্বের মানুষকে সংযুক্ত করার সাথে সাথে, আজকাল দর্শকরা আরও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। শুলজের মতে, এগুলো আসলে প্রকৃত জন স্ফিয়ার, কারণ উপস্থিতি জন স্ফিয়ারের তুলনায় এগুলো আন্তর্জাতিক, যা শুধুমাত্র খণ্ডিত জন স্ফিয়ার, একইভাবে বাজার। [২৭]জনসাধারণের যোগাযোগ ব্যক্তিগত বা গোপন যোগাযোগ থেকে আলাদা, কারণ যোগাযোগের বার্তা বা যোগাযোগের পরিস্থিতি প্রকাশ্যে অ্যাক্সেসযোগ্য - তবে ডিজিটাল মিডিয়ার উচ্চ অনুলিপিযোগ্যতার কারণে ব্যক্তিগত বার্তাগুলো একে অপরের সম্মতি ছাড়াই বৃহত্তর দর্শকদের কাছে প্রকাশ করা যেতে পারে।সাধারণ অর্থে জনমত হলো প্রভাবশালী মতামত, যা জনসাধারণের যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়। এটিকে প্রকাশিত মতামত, জনসমক্ষে প্রকাশিত মতামত থেকে আলাদা করতে হবে, যাতে এটি বিশেষভাবে অনলাইনে সকলের জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য হয়। গণমাধ্যম জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে পারে, কিন্তু নোয়েল নিউম্যানের নীরবতার স্ফূর্তি মাথায় রেখে, এটি সংখ্যাগরিষ্ঠের চিন্তাভাবনা হতে হবে না। তবে অনলাইনে প্রচারের মূলনীতি হলো, আগ্রহী প্রতিটি গোষ্ঠীর সেই ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার রয়েছে। কিন্তু ডিজিটাল বিভাজন তা এড়িয়ে যায়, কারণ প্রত্যেকেরই ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সহ প্রযুক্তিগত ডিভাইস নেই, প্রযুক্তি ( ডিজিটাল বিশ্লেষণ ) বা তথ্য ওভারলোড মোকাবেলা করার সময় এবং ক্ষমতা নেই; পরবর্তীটি এমন ওয়েবসাইটগুলো খুঁজে পেতে বাধা দেয় যা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজ করা হয় না।

সংযোগের সর্বজনীন প্রদর্শন

[সম্পাদনা]

ডিজিটাল যুগে মানুষ অন্যদের সাথে সংযুক্ত থাকার কথা প্রকাশ করা নতুন কিছু নয়, এটি বহু বছর ধরে চলে আসছে কারণ আমরা সবসময় মানুষকে জানাতে আগ্রহী যে আমাদের বন্ধু আছে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, সামাজিক নেটওয়ার্ক প্রবর্তনের সাথে সাথে আমাদের সংযোগ দেখানোর ধরণ পরিবর্তিত হয়েছে।

বিশেষ করে ফেসবুক, ছবিতে লোকেদের ট্যাগ করার প্রবর্তনের মাধ্যমে, ব্যবহারকারীদের জন্য তাদের বন্ধু/সংযোগ বিশ্বের কাছে তুলে ধরা সহজ করে তুলেছে। এটি অনেক দিন ধরেই চলে আসছে, এমনকি ইন্টারনেটেও, যদি আমরা আবার উল্লেখ করি যে বেবো ব্যবহারকারীদের কেবল তাদের সেরা বন্ধুদের বেছে নেওয়ারই নয়, বরং "অন্য অর্ধেক" বেছে নেওয়ারও সুযোগ ছিল। মাইস্পেস ব্যবহারকারীদের তাদের সেরা বন্ধুদের বেছে নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল, জন ডিসপ্লে অফ কানেকশন প্রবন্ধে এই ডিসপ্লেগুলোর অর্থ কী এবং আধুনিক যুগে এগুলো কী প্রতিনিধিত্ব করে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই প্রবন্ধে প্রথমে "বাস্তব" বা "ভৌত" জগতে আমরা যে প্রকাশ্যে সংযোগ প্রদর্শন করি সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে আমাদের বন্ধুদের একে অপরের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, কারণ আমরা হয় মনে করি তারা একে অপরের বন্ধু হয়ে উঠবে অথবা একে অপরের প্রশংসা করবে, যার অর্থ তারা তাদের মতো বন্ধু থাকার জন্য আপনার প্রশংসা করবে। এটি হতে পারে একটি পার্টির আয়োজন করে এবং আপনার বন্ধুদের একত্রিত করে অথবা নাম বাদ দেওয়ার মতো সহজ কিছুর মাধ্যমেও।ফেসবুকের মতো ওয়েবসাইটগুলোতে ছবি ট্যাগ করার সুবিধা রয়েছে তবে "পারস্পরিক বন্ধুদের" প্রদর্শনও সাইটের একটি বিশাল অংশ। যখন একজন ব্যবহারকারী আপনাকে বন্ধু হিসেবে যোগ করেন, তখন আপনি দেখতে পাবেন আপনার একসাথে কতজন পারস্পরিক বন্ধু আছে। কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবেন কিনা তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ব্যবহারকারীরা প্রথমেই এটির দিকে নজর দেন, কারণ আপনি দেখতে পাবেন যে আপনার কতজন একই রকম বন্ধু আছে এবং ভবিষ্যতে আপনি তাদের চেনেন বা তাদের সাথে দেখা করার সম্ভাবনা আছে কিনা। টুইটার "আপনার পরিচিত অনুসারী" এর মাধ্যমে এটি চালু করেছে, অনুসারীরা ফেসবুকে বন্ধুদের মতোই, তবে কেউ আপনাকে অনুসরণ করতে পারে এবং আপনাকে তাদের অনুসরণ করার প্রয়োজন নেই এবং বিপরীতভাবেও। "আপনার পরিচিত অনুসারী" বৈশিষ্ট্যটি আপনার অনুসরণকারী সমস্ত ব্যবহারকারীদের প্রদর্শন করে যারা তাদের অনুসরণ করে, যা ফেসবুকের পারস্পরিক বন্ধুদের মতো আপনি তাদের অনুসরণ করবেন কিনা সে বিষয়ে আপনার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কনস্টান্টিন বেসনোসভ, ইয়াজান বোশমাফ, পুয়া জাফেরিয়ান এবং হুতান রাশটিয়ানের গবেষণা দেখিয়েছে যে ব্যবহারকারীর পারস্পরিক বন্ধু আছে কিনা এবং পারস্পরিক বন্ধুদের ঘনিষ্ঠতা তাদের বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি।যদিও কারো বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ করা উচিত কিনা তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পারস্পরিক বন্ধুদের ঘনিষ্ঠতা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, তবুও পারস্পরিক বন্ধু এবং যিনি আপনাকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠিয়েছেন তার মধ্যে সম্পর্ক পার্থক্য করা কঠিন। বয়েড এবং ডোনাথ তাদের প্রবন্ধে যেমন আলোচনা করেছেন, কেবল পারস্পরিক বন্ধুদের দেখেই সম্পর্কটি জানার কোনও বাস্তব উপায় নেই। একজন পারস্পরিক বন্ধু একজন সেরা বন্ধু, পরিবারের সদস্য, সঙ্গী থেকে শুরু করে একজন অপরিচিত আত্মীয় যার সাথে তারা সম্ভবত একবার বা দুবার দেখা করেছে, যদি না হয়।ট্যাগ করা ছবিগুলো আপনার পারস্পরিক বন্ধুদের সাথে একজন ব্যক্তির দৃঢ়, বাস্তব জীবনের সম্পর্ক খুঁজে বের করার আরও কার্যকর উপায় হতে পারে। ট্যাগ করা ছবিগুলো একজন ব্যবহারকারীকে একজন ব্যক্তি কেমন, কোন সামাজিক বৃত্তের সাথে যুক্ত এবং তারা এমন কেউ কিনা যাকে তারা চেনে, কোন সময়ে দেখা করার সম্ভাবনা থাকে অথবা জানতে চায় সে সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা দেয়। ট্যাগ করা ছবি এবং সাধারণভাবে ছবিগুলো আপনার ডিজিটাল সার্কেলের সাথে আপনার সংযোগগুলো প্রদর্শনের একটি বিশাল অংশ। বেজনোসভ, বোশমাফ, জাফেরিয়ান এবং রাশতাইন তাদের গবেষণায় দেখেছেন যে বন্ধুত্বের অনুরোধ গ্রহণ করার সময় কেউ প্রথমে যে জিনিসটি খোঁজে তা হলো তার প্রোফাইল ছবি।বেশিরভাগ মানুষই তাদের প্রোফাইল ছবি সহ একটি প্রোফাইল ছবি খুঁজবে, তবে তাদের প্রোফাইলে থাকা বাকি ছবিগুলোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছবি, বিশেষভাবে ট্যাগ করা ছবি, একজন ব্যক্তির এবং তার প্রোফাইলের সত্যতা প্রমাণ করতে পারে এবং মূলত প্রমাণ করতে পারে অথবা অন্তত কাউকে বোঝাতে পারে যে তারা "আসল"। বয়েড এবং ডোনাথ এই বিষয়ে কথা বলেন এবং বলেন যে আপনার প্রোফাইলে সংযোগ প্রদর্শন করা আপনার ব্যক্তিগত পরিচয় যাচাই করার একটি উপায়। কারো যত বেশি সংযোগ, পারস্পরিক বন্ধুত্ব, ট্যাগ করা ছবি ইত্যাদি থাকে, তাকে একজন প্রকৃত ব্যক্তির মতো মনে হয়। ক্যাটফিশিং বৃদ্ধির সাথে সাথে <i id="mwBPY">(বিভাগ 1.7.2.3 দেখুন),</i> এটি এমন একটি বিষয় যা আরও উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে, সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে সংযোগ প্রদর্শনের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।বয়েড এবং ডোনাথ আরও আলোচনা করেছেন যে কীভাবে এই সংযোগগুলো "অসঙ্গত" সংযোগগুলো প্রদর্শন করতে সাহায্য করতে পারে যার অর্থ আপনি কারও পারস্পরিক বন্ধু এবং ট্যাগ করা ছবিগুলো দেখে দ্রুত দেখতে পারেন যে তারা কারা এবং তারা কাদের সাথে মেলামেশা করে, এবং যদি আপনি যা দেখেন তা পছন্দ না করেন তবে আপনি তাদের বন্ধুত্বের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এর বিপরীতটিও সত্য।আপনি আপনার প্রোফাইলে সংযোগগুলো প্রদর্শন করার কথাও ভাবতে পারেন, যাতে অন্যরা নিশ্চিত করতে পারে যে আপনি জনপ্রিয় এবং আপনার বন্ধু আছে। অনেকেই কেবল ছবিতে নিজেদের ট্যাগ করবেন না, বরং টুইটারের "@" ট্যাগিং পদ্ধতি যোগ করার মাধ্যমে আপনি ফেসবুকে আপনার বন্ধুদের সাধারণ পোস্টগুলোতে ট্যাগ করতে পারবেন এবং টুইটারে এটি ব্যবহার করে তাদের সাথে সর্বজনীন কথোপকথন শুরু করতে পারবেন। লোকেরা তাদের জন সংযোগগুলো এইভাবে প্রদর্শন করে কারণ তারা চায় যে লোকেরা জানুক তাদের কতজন বন্ধু আছে এবং তারা কারা। জনসমক্ষে সংযোগের প্রদর্শন মূলত আপনার বন্ধুদের সম্পর্কে নয় বরং সর্বদা আপনি কে সেই ধারণাটিকে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করে।

গণতান্ত্রিক কিন্তু গণতন্ত্রীকরণ নয়

[সম্পাদনা]

ডিজিটাল মিডিয়ার বৈশিষ্ট্য, যা ব্যক্তিগত ও জনপরিসরের মধ্যে নতুন সম্পর্ক গঠন করে, গণতন্ত্র এবং নাগরিকত্বের ধারণাকেও স্পর্শ করে। প্রকৃতপক্ষে, মোবাইল ব্যক্তিগতকরণ, স্থানবিহীন যুগপত ব্যবহারের মাধ্যমে সক্ষম একটি ব্যক্তিগত পরিসর এবং যা আত্ম-প্রকাশ, নিয়ন্ত্রণ এবং স্বায়ত্তশাসনের মূল্যবোধগুলোকে একীভূত করে, তা অনিবার্যভাবে জনসাধারণের উদ্বেগের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে। ডিজিটাল মিডিয়া যেভাবে নাগরিক জীবনকে প্রভাবিত করে এবং একই সাথে তার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তার মধ্যে আমরা দুটি প্রধান গতিপথ চিহ্নিত করতে পারি। প্রথমটি বিবেচনা করে যে কীভাবে ইন্টারনেট একটি যোগাযোগের হাতিয়ার যা দল এবং প্রার্থীদের প্রচারণায় ব্যবহার করা যেতে পারে এবং এইভাবে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক এজেন্ডা পূরণ করতে পারে । দ্বিতীয়টি, পরিবর্তে, একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত পরিসরে এবং জনসাধারণের পরিসরে অংশগ্রহণের উপর নতুন মাধ্যমের ভূমিকা এবং প্রভাব বোঝার চেষ্টা করে, অর্থাৎ একটি গণতান্ত্রিক সমাজের মধ্যে একজনের ব্যক্তিগত নাগরিক এবং রাজনৈতিক আচরণ। এই উপাদানগুলোর মধ্যে সম্পর্ক বোঝা গুরুত্বপূর্ণ এবং বর্তমানে এটি গবেষণার বিষয়।পুটম্যান ব্যাখ্যা করেন যে অফলাইন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, যেমন একটি বোলিং টিমে একজন ব্যক্তির অংশগ্রহণ কেবল আন্তঃব্যক্তিক আস্থা এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করে না বরং এই নেটওয়ার্কের অংশ ব্যক্তিদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক মতামত এবং বিশ্বাস নিয়ে আলোচনা এবং বিনিময় করার সুযোগ দেয় যা শেষ পর্যন্ত, বৃহত্তর পরিসরে, বাস্তব জগতে সম্প্রদায় এবং গণতন্ত্রের মূল্যবোধ পরিবেশন করে। এখানে, আমরা সহজেই অফলাইন এবং অনলাইন সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে তুলনা দেখতে পারি এবং লক্ষ্য করতে পারি যে এই কার্যকলাপগুলো অনলাইন জগতে পরিবাহিত হয়। তবে এই স্থানান্তর আসলে যেভাবে ঘটে তা বিতর্কিত। উদাহরণস্বরূপ, বিম্বার যুক্তি দেন যে, নতুন গণমাধ্যম রাজনৈতিক তথ্যের সহজলভ্যতা এবং প্রকাশের খরচ কমিয়ে আনে, যার ফলে সম্ভাব্যভাবে আরও বেশি লোককে নাগরিক বিতর্কে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়, ইন্টারনেটে বাস্তব জগতের একই বৈষম্য প্রায়ই প্রতিলিপি করা হয়: সম্পৃক্ততা তাদের কাছ থেকে আসে যাদের ইতিমধ্যেই ইন্টারনেট উৎসগুলোতে প্রবেশাধিকার এবং রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক বিতর্কে জড়িত থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান উভয়ই রয়েছে। এই অর্থে ইন্টারনেটের সাধারণতার বিষয়ে ইয়ুর্গেন হ্যাবারমাসের ব্যাখ্যা উল্লেখ করা মূল্যবান। প্রাথমিকভাবে, "দ্য স্ট্রাকচারাল ট্রান্সফর্মেশন অফ দ্য জন স্ফিয়ার" বইটিতে হ্যাবারমাসও এই ফাঁদে পড়েন যে ইন্টারনেট বাস্তব বিশ্বের বৈষম্য থেকে মুক্ত। প্রকৃতপক্ষে, তিনি ১৮শ ও ১৯শ শতাব্দীর বুর্জোয়াদের জনপরিসরের সাথে ইন্টারনেটের একটি ঐতিহাসিক তুলনা করার চেষ্টা করেন। যদিও তিনি ব্যাখ্যা করেন যে বুর্জোয়াদের মধ্যে পরবর্তীকালে আধিপত্যের সুসংহতকরণ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতিকে বদলে দিয়েছে, তিনি ইন্টারনেটের সাথে তার সাদৃশ্যটি বুর্জোয়াদের জনসমাগমের সকলের জন্য উন্মুক্ততা এবং জোরপূর্বক যুক্তির পরিবর্তে উন্নত যুক্তির কারণে প্রচলিত যুক্তির নামে শ্রেণী শ্রেণীবিন্যাসকে উপেক্ষা করার আনুষ্ঠানিক নীতির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সল্টার এই তুলনাটি খারিজ করে দেন। প্রথমত, এটি কেবল ইন্টারনেট এবং বুর্জোয়া উভয়ের বৈষম্যের গ্রহণযোগ্যতার কথাই উল্লেখ করে: প্রকৃতপক্ষে, বুর্জোয়াদের জনপরিসরটি কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল, উদাহরণস্বরূপ, যেখানে নারীদের অংশগ্রহণ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। এটি অবশ্যই ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই যে বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, বয়েড এবং হারগিটাই ব্যাখ্যা করেছেন যে ফেসবুকের মতো সামাজিক নেটওয়ার্কগুলো, যদিও প্রায় সকলের কাছে অ্যাক্সেসযোগ্য, তবুও তাদের একটি অন্তর্নিহিত জনসংখ্যাগত পক্ষপাত রয়েছে, কারণ ইন্টারনেট অ্যাক্সেস এবং সাক্ষরতা উভয়ই এর অংশ হতে হবে এবং কারণ, শুরু থেকেই, ফেসবুকের ব্যবহারকারী-ভিত্তি সুবিধাপ্রাপ্ত আমেরিকান প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদদের দ্বারা গঠিত ছিল এবং তাই এতে একটি মৌলিক আমেরিকান-বুর্জোয়া উপাদান রয়েছে। দ্বিতীয়ত, বুর্জোয়াদের জনপরিসরের উদ্দেশ্য ছিল একটি রাজনৈতিক সাধারণ ইচ্ছা খুঁজে বের করা, কিন্তু ইন্টারনেট সার্বজনীনতা এবং সাধারণ স্বার্থের ধারণাটিকে খণ্ডিত বা প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মনে হচ্ছে, যার ফলে ঠিক বিপরীতটি সহজতর হচ্ছে: ইচ্ছার বহুত্ববাদ। পাপাচারিসিও এই ব্যাখ্যার পক্ষে যুক্তি দেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও জনসাধারণের আন্তঃসম্পর্ক আমাদের সামাজিক-নেটওয়ার্ক আচরণ নির্ধারণের জন্য স্বায়ত্তশাসন, নিয়ন্ত্রণ এবং অভিব্যক্তির মূল্যবোধকে অনুমোদন করে এবং আমাদের জনসাধারণের সাথে মিশে যেতে দেয়। তবে এই মূল্যবোধগুলো গণতন্ত্রের জন্য কতটা কার্যকর তা প্রশ্নবিদ্ধ। প্রকৃতপক্ষে, যেহেতু তারা অহং-কেন্দ্রিক চাহিদা পূরণ করে এবং ব্যক্তিগত মতামত এবং বিশ্বাসের প্রকাশ হিসেবে কাজ করে, তাই তারা সম্ভাব্যভাবে এবং সর্বদা আরও সহজে (১৮শ বুর্জোয়া শ্রেণীর মধ্যে ভিন্ন) সকলের দ্বারা সবকিছুর জন্য প্রযোজ্য। অতএব, তারা ক্রমশ একটি 'সাধারণ ইচ্ছা' থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নিচ্ছে। অর্থাৎ, যদিও তারা সামর্থ্যের দিক থেকে গণতান্ত্রিক হতে পারে, তারা স্বভাবতই সমাজকে উন্নত করতে পারে না যদি না স্বার্থপর ব্যক্তিগত পরিসরগুলোর বহুত্ববাদ, যারা নিজেদেরকে জনপরিসরে প্রচার করে, প্রকৃতপক্ষে নিঃস্বার্থভাবে জনপরিসরে সেবা করার জন্য একত্রিত হয়।

রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ব্যক্তিগত ও জনপরিসর

[সম্পাদনা]

মিডিয়া চ্যানেলগুলোতে ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ এবং নেটওয়ার্কগুলোতে প্রভাব ফেলতে থাকা আইনগুলো এর রাজনৈতিক বৈধতা এবং ক্ষমতা ব্যবহারের বিচার নিয়ে আলোচনা তৈরি করেছে। এই ধরনের আলোচনার মধ্যে রয়েছে একটি মুক্তমনা নেটওয়ার্ক পরিবেশের নিয়ন্ত্রণ এবং রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি বা এজেন্ডাকে সমুন্নত রাখার জন্য মিডিয়া কাঠামোর মধ্যে ব্যবহৃত কৌশলগুলো সম্পর্কে যুক্তি।

রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং জনক্ষেত্র: গণমাধ্যম

[সম্পাদনা]

মধ্যস্থতার তিনটি স্বতন্ত্র ধারণা রয়েছে যা সরকারগুলো কায়েমি স্বার্থ পরিবেশন করতে বা রাজনৈতিক শক্তি দ্বারা নির্ধারিত অনুভূত মান বজায় রাখতে ব্যবহার করে। এই ধারণাগুলো হল:* কর্তৃত্ববাদী ধারণা । এই ধারণাটি গুটেনবার্গের ছাপাখানা আবিষ্কারের সময় থেকে শুরু এবং এটি সবচেয়ে প্রাচীন মিডিয়া ধারণা। এই ধারণার অধীনে সংবাদপত্রগুলো রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ বা অন্তর্নিহিত নিয়ন্ত্রণের অধীন। বৈচিত্র্যের ধরণগুলো একটি দেশের উন্নয়নের জন্য ক্ষতিকারক এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন, এবং সংগৃহীত কোনও সংবাদ কোনওভাবেই নেতৃত্বের সমালোচনা বা চ্যালেঞ্জ করা উচিত নয়।

  • কমিউনিস্ট ধারণা । এই ধারণার নিয়ন্ত্রণে, প্রকাশিত সংবাদকে জাতি গঠন এবং নেতৃত্ব দ্বারা নির্ধারিত সমাজের লক্ষ্য ও নীতির উপর মনোনিবেশ করতে হবে। এই ধারণার বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে ছিল সংবাদমাধ্যম একদলীয়, আগত এবং বহির্গামী সংবাদ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত, সংবাদ অবশ্যই ইতিবাচক হতে হবে এবং জনগণের স্বার্থকে প্রতিফলিত না করে দলীয় লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিতে হবে এবং এটি গোপন পুলিশের সহায়তায় জনগণের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগের একটি মাধ্যম।
  • উন্নয়নমূলক ধারণা । ঐতিহ্যগতভাবে অনুন্নত এবং দরিদ্র দেশগুলোতে ব্যবহৃত হয়। উন্নয়নমূলক ধারণায় বলা হয়েছে যে গণযোগাযোগ জাতি গঠন এবং নিরক্ষরতা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করবে, গণমাধ্যমের উচিত সরকারকে চ্যালেঞ্জ করার পরিবর্তে অনুসরণ করা, প্রতিটি দেশ সীমান্তের মধ্যে সংবাদ প্রবাহ সীমিত করতে পারে যাতে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে আগত তথ্য সীমিত করা যা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে এবং নিজেদের সম্পর্কে বিষয়বস্তুর উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।

রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং ব্যক্তিগত পরিসর: নেটওয়ার্ক

[সম্পাদনা]

১৯৭০ সাল থেকে সরকার অপরাধমূলক কার্যকলাপ বন্ধ করার প্রয়াসে অনলাইন কার্যকলাপের উপর কঠোর নজরদারি চালিয়ে আসছে। তবে গত দুই দশকের মধ্যে অপরাধমূলক কার্যকলাপের বস্তুনিষ্ঠতা ঝাপসা হয়ে গেছে এবং কিছু সমাজে নেতৃত্বের সংজ্ঞার বিষয়নিষ্ঠতা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। ইন্টারনেটের অন্যতম জনক ডঃ ভিন্ট সার্ফের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা যখন বলেছেন যে ইন্টারনেটের উপর ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণ ব্যর্থ হবে, তখনও ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী কীভাবে নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারে, বিশেষ করে চীনা সরকার, সে সম্পর্কে তাদের নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ন থেকে সরকারগুলোকে বাধা দেয়নি। ১৯৯৩ সালে চীন সরকার চীনের মূল ভূখণ্ডের মধ্যে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস আইন প্রণয়ন এবং নিয়ন্ত্রণের প্রয়াসে গোল্ডেন শিল্ড প্রকল্প শুরু করে। ইন্টারনেট সেন্সর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল যার মধ্যে ছিল: * আইপি ঠিকানা ব্লক কিছু নির্দিষ্ট IP ঠিকানা বাতিল করা হবে এবং HTTP, FTP এবং POP এর মতো প্রোটোকলগুলোকে প্রভাবিত করবে।

  • DNS এর ফিল্টারিং এবং পুনঃনির্দেশনা । কিছু ডোমেইন নাম ব্লক করা হয় অথবা DNS হাইজ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ভুল IP ঠিকানা ফেরত পাঠানো হয়।
  • পোর্টাল সেন্সরশিপ এবং অনুসন্ধান ফলাফল অপসারণ । সার্চ ইঞ্জিনের মতো প্রধান পোর্টালগুলো কার্যকরভাবে ব্লক করা হয়েছে। চীনা সরকার গুগলে প্রবেশাধিকার সেন্সর করেছে। ২০০৬ সালে গুগল চীনের অভ্যন্তরে উপস্থিতি বজায় রাখার জন্য Google.cn চালু করে, তবে সেন্সরশিপের ক্রমবর্ধমান দাবি এবং চীনা সরকারের হ্যাকিংয়ের শিকার হওয়ার কারণে, গুগল ২০১০ সালে তার Google.cn পরিষেবা বন্ধ করে দেয়।চীন যদিও সেন্সরশিপের চরম ব্যবস্থা গ্রহণ করে, অন্যান্য দেশগুলো আরও পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০১১ সালে মিশর মুবারক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের শক্তি হ্রাস করার প্রয়াসে নেটওয়ার্ক থেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তিউনিসিয়ায় একটি বিদ্রোহের পর, যাকে টুইটার বিপ্লব বলা হয়, এই পদক্ষেপটি প্রয়োজনীয় বলে মনে করা হয়েছিল। চীনা ও মিশরীয় সরকার কর্তৃক প্রদর্শিত সেন্সরশিপ এবং সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পদক্ষেপগুলো হলো রাজনৈতিক কৌশল যা অসম ক্ষমতা বজায় রাখে কারণ উপরে উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো সমগ্র সমাজের জন্য উপকারী নয়, এবং কেবল প্রমাণ করে যে রাজনৈতিক বাগাড়ম্বর সত্ত্বেও, সরকারগুলো ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করার এবং সমাজের সেই ক্ষেত্রগুলোতে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা রাখে যেখানে ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয়।চীনা ও মিশরীয় সরকারের জনপরিসরে অনুপ্রবেশ কার্যকরভাবে জনসাধারণের নাগালের প্রসারকে প্রসারিত করেছে, যার ফলে উৎপাদিত এবং দেখা বিষয়বস্তুর উপর নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের নিয়ন্ত্রণ নিরস্ত্র করা হয়েছে। এর একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো চীনা সরকার কর্তৃক ফেসবুক এবং ইউটিউব নিষিদ্ধ করা। উভয় সাইটই ব্যক্তিগত পরিসরের মধ্যে কাজ করে কারণ তারা বাইরের সংস্থাগুলোর দ্বারা উৎপাদিত সামগ্রীর উপর কার্যত নিরবচ্ছিন্ন নিয়ন্ত্রণের সুযোগ দেয়। পরবর্তীকালে এগুলো এখন জনসাধারণের আওতাধীন; এতটাই নিয়ন্ত্রিত যে এগুলো সম্পূর্ণরূপে অ্যাক্সেসযোগ্য নয়। আরও আরোপের মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট ক্যাফে নিয়ন্ত্রণ, কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বয়সের সীমাবদ্ধতা প্রয়োগ করে। ব্যবহারকারীদের বয়স ২১ বছরের বেশি হতে হবে এবং প্রতিটি ব্যবহারকারীর স্বাক্ষরিত একটি লগ বই থাকা আবশ্যক। একবার অনলাইনে আসার পর, কার্যকলাপ কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এই ধরনের বিধিনিষেধের ফলে ভূগর্ভস্থ ইন্টারনেট ক্যাফের ধারণা তৈরি হয়েছে, যেখানে অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীরা অবাধে নেটওয়ার্ক অ্যাক্সেস করতে পারবেন। তবে নেটওয়ার্কে অ্যাক্সেসই ব্যবহারকারীদের দ্বারা পরিচালিত নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপাদান, এমনকি একটি ভূগর্ভস্থ প্রতিষ্ঠানের সীমানার মধ্যেও, বিষয়বস্তু এখনও ব্যাপকভাবে মধ্যস্থতা এবং পর্যবেক্ষণ করা হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং রাজনৈতিক এজেন্ডাগুলোতে ব্যক্তিগত ও জনপরিসর

[সম্পাদনা]
রাজনৈতিক এজেন্ডা এবং ডিজিটাল/সোশ্যাল মিডিয়া
[সম্পাদনা]

রাজনীতিতে, ডিজিটাল মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের উত্থানের ফলে রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক এজেন্ডা অনুসরণ, প্রচার এবং প্রচারণা চালাতে সক্ষম হয়েছে। ডিজিটাল এবং সোশ্যাল মিডিয়ার প্রকৃতির কারণে, ব্যক্তিগত ও জনপরিসরে তাদের নিজস্ব অনন্য ধারণা তৈরি করে, রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলো এখন তাদের নির্বাচিত এজেন্ডা (গুলো) অনুসরণ করার জন্য এই ক্ষেত্রগুলো ব্যবহার করে। রাজনৈতিক ওয়েবসাইট, ই-মেইল এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এখন রাজনৈতিক যোগাযোগের সবচেয়ে সাধারণ কিছু পদ্ধতি । ব্যক্তিদের তাদের এজেন্ডা সম্পর্কে অবহিত করার জন্য, উদাহরণস্বরূপ একটি ইশতেহার, দলীয় নীতি বা প্রচারণা, এখন এটি প্রথমেই দলীয় ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয় এবং দলীয় সদস্য, সমর্থক এবং স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে আরও বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এই ধরণের ইন্টারনেট প্রযুক্তি হলো প্রধান উপায় যার মাধ্যমে দল এবং রাজনীতিবিদরা এখন তাদের সদস্য এবং সমর্থকদের মধ্যে তথ্য ছড়িয়ে দেন। রাজনৈতিক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অন্যান্য, আরও ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিগুলো এখনও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, যেমন সংবাদ অনুষ্ঠান, লিফলেট এবং মুখোমুখি যোগাযোগ, এটি করার দ্রুততম উপায় হলো একটি অনলাইন মাধ্যম, অর্থাৎ ইন্টারনেট। এটি বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে করা যেতে পারে;

পদ্ধতি বিবরণ উদাহরণ
পার্টি ওয়েবসাইট একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল, সংগঠন বা রাজনীতিবিদের জন্য একটি নিবেদিতপ্রাণ ওয়েবসাইট ডোমেইন। সাধারণত যেখানে তথ্য প্রথমে পোস্ট করা হয়, যেখানে ব্যক্তিরা কোনও দল/রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক এজেন্ডা, প্রচারণা, বা সমস্যা সম্পর্কে তথ্য জানতে যেতে পারেন। এছাড়াও যেখানে ব্যক্তিরা কোনও দল বা রাজনীতিবিদকে যোগদান বা সমর্থন করার জন্য নিবন্ধন করতে পারেন। [1]
ফেসবুক একটি দল বা রাজনীতিবিদদের জন্য একটি নিবেদিতপ্রাণ জন পেজ যেখানে তারা তাদের নিজেদের বা রাজনৈতিক এজেন্ডা সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করতে পারে এবং যেখানে অন্যান্য ফেসবুক ব্যবহারকারীরা সমর্থন জানাতে পেজটিতে 'লাইক' করতে পারেন এবং পেজ থেকে তাদের টাইমলাইনে তথ্য 'শেয়ার' করতে পারেন। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (SNP) এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ
টুইটার একটি সামাজিক যোগাযোগ সাইট যেখানে দল বা রাজনীতিবিদরা তাদের নিজস্ব টুইটার ফিড ব্যবহার করে তাদের কর্মসূচি প্রচার করতে পারেন এবং ব্যবহারকারীদের অনুসরণ করার জন্য একটি হ্যাশট্যাগ তৈরি করে তাদের কর্মসূচি আরও প্রচার করতে পারেন। অন্যান্য টুইটার ব্যবহারকারীরা পার্টিতে একটি টুইট পাঠিয়ে অথবা সরাসরি বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে জনসমক্ষে অংশগ্রহণ করতে পারেন। ট্রেড ইউনিয়ন ইউনিটের অফিসিয়াল টুইটার
অনলাইন আবেদনপত্র বিভিন্ন ওয়েবসাইট যা রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দল সহ যেকোনো ব্যক্তিকে একটি ইস্যু নিয়ে প্রচারণা চালানো এবং জনসমর্থন সংগ্রহের জন্য একটি পিটিশন শুরু করার অনুমতি দেয়। change.org, একটি ওয়েবসাইট যা ব্যবহারকারীদের অনলাইনে পিটিশন শুরু করতে, স্বাক্ষর করতে এবং শেয়ার করতে দেয়।

যদিও রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলো এই সমস্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে, যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়ার এত বিশাল দর্শক রয়েছে যা কেবল সদস্য এবং সমর্থকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এই পদ্ধতিটি ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অতএব, যেকোনো রাজনৈতিক এজেন্ডার বেশিরভাগ তথ্যই দল বা রাজনীতিবিদ, সদস্য এবং কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন। এটি একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা প্রচারের একটি অত্যন্ত সফল পদ্ধতি হতে পারে। অনলাইনে তথ্য ভাইরাল করা হলো সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর আরেকটি পদ্ধতি, এবং এটি ফেসবুক, টুইটার, টাম্বলার এবং অন্যান্য জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাইটের মতো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করা হয়। এটি স্প্যামিংয়ের একটি পদ্ধতি, যা ধারাবাহিক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে করা যেতে পারে, তা সে অনলাইন সেলিব্রিটিদের দ্বারা অর্থ প্রদান করা হোক বা বিস্তৃত দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ছড়িয়ে দেওয়া হোক। ভাইরাল ছড়িয়ে পড়ার সামাজিক উদাহরণগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউটিউব ভিডিও, যেমন কুখ্যাত 'ভাইরাল ভিডিও নির্মাতা' টম ফ্লেচারের পোস্ট করা যেকোনো কিছু, অথবা 'ভাইরাল' হওয়ার জন্য অনলাইনে পোস্ট করা হত এমন চমকপ্রদ এবং উত্তেজনাপূর্ণ ছবি। মনে হচ্ছে, রাজনৈতিক ঘোষণার সমসাময়িক দর্শকরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অনলাইনে আলোচনা বা তাদের মতামত প্রকাশ করার প্রবণতা পোষণ করে, তাই রাজনৈতিক বার্তাগুলোর এই ভাইরাল বিস্তার এই ধরণের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই সবচেয়ে ভালোভাবে গ্রহণ করা হবে।

ওয়ার্কিং ট্যাক্স ক্রেডিট প্রচারণার জন্য লেবার পার্টির প্রচারণার উপাদান। ক্রেডিট: লেবার পার্টি ইউকে

উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যে ওয়ার্কিং ট্যাক্স ক্রেডিটের কর্তনের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক প্রচারণার কথাই ধরা যাক], যা কনজারভেটিভ পার্টির পরিকল্পনার বিরোধিতা করে লেবার পার্টি আয়োজিত হয়েছিল। এই প্রচারণায় ব্যক্তিদের একত্রিত করা এবং তথ্য যোগাযোগের বেশিরভাগ কাজ ছিল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, ই-মেইল এবং একটি অনলাইন পিটিশনের মাধ্যমে। এর ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই প্রচারণাটি ব্যাপকভাবে পরিচিত এবং সমর্থিত হয়ে ওঠে। এই প্রচারণার ফলাফল ছিল যে রক্ষণশীলদের ওয়ার্কিং ট্যাক্স ক্রেডিট স্কিম কমানোর পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছিল

রাজনৈতিক এজেন্ডার সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিগত ও জনপরিসরসমূহ
[সম্পাদনা]

পিটার ডাহলবার্গ যুক্তি দেন যে আধুনিক রাজনৈতিক যোগাযোগে অবদান রাখে এমন অনেকগুলো ইন্টারনেট ভিত্তিক জনপরিসর রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে;{| align="center" style="background:lightyellow;width:750px;margin:none;border:1px solid lightgrey" | style="text-align: center; padding: 10px 0 0 0" |১. ই-গভর্ন্যান্সের সংস্করণ, সাধারণত উপরে থেকে নীচের দিকের চরিত্র সহ, যেখানে সরকার প্রতিনিধিরা নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং যেখানে ব্যক্তিগত প্রশাসন এবং পরিষেবা সম্পর্কে তথ্য উপলব্ধ করা হয়। যদিও মিথস্ক্রিয়া তুলনামূলকভাবে সংকুচিত হতে পারে, তবুও এটি কখনও কখনও জনপরিসরের একটি ক্ষেত্র হিসাবে কাজ করতে পারে। এই খাতটিকে কখনও কখনও ই-গভর্ন্যান্স থেকে আলাদা করা হয়, যা অনুভূমিক নাগরিক যোগাযোগ এবং ব্যক্তিগত নীতির জন্য ইনপুটকে জোর দেয়।

২. অ্যাডভোকেসি/কর্মী ক্ষেত্র, যেখানে আলোচনা সাধারণত ভাগ করা ধারণা, মূল্যবোধ এবং লক্ষ্য সম্পন্ন সংস্থাগুলো দ্বারা প্রণীত হয় - এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ধরণগুলোর জন্য প্রস্তুত থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী সংসদীয় রাজনীতি, প্রতিষ্ঠিত কর্পোরেট এবং অন্যান্য সংগঠিত স্বার্থ গোষ্ঠীর রাজনীতি (যেমন, ইউনিয়ন), এবং সামাজিক আন্দোলন এবং অন্যান্য কর্মীদের নতুন রাজনীতি।

৩. বিভিন্ন ধরণের নাগরিক ফোরামের বিশাল সমাহার যেখানে নাগরিকদের মধ্যে মতামত বিনিময় এবং আলোচনা করা যেতে পারে। এটিকে সাধারণত ইন্টারনেটে জনপরিসরের দৃষ্টান্তমূলক সংস্করণ হিসেবে বোঝা যায়, কিন্তু অন্যদের অবহেলা করা বেশ ভুল হবে।

৪. প্রাক-রাজনৈতিক বা আধা-রাজনৈতিক ক্ষেত্র, যা সাধারণ স্বার্থ এবং/অথবা সম্মিলিত পরিচয়ের সাথে সম্পর্কিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোকে সম্প্রচার করে। এখানে রাজনীতি স্পষ্ট নয় কিন্তু সর্বদা একটি সম্ভাবনা হিসেবে রয়ে গেছে। স্পষ্টতই, অরাজনৈতিক এবং আধা-রাজনৈতিকের মধ্যে সীমানা টানার কোনও পরম উপায় নেই, কারণ এটি সর্বদা আংশিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয় এবং পরিবর্তনযোগ্য।

৫। সাংবাদিকতা ক্ষেত্র, যার মধ্যে অনলাইনে চলে আসা প্রধান সংবাদ সংস্থা (যেমন, সংবাদপত্র এবং সংবাদ অনুষ্ঠান) থেকে শুরু করে নেট-ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা (সাধারণত খুব বেশি বা কোনও মৌলিক প্রতিবেদন ছাড়াই) যেমন Yahoo! News News, বিকল্প সংবাদ সংস্থা, এবং এক-ব্যক্তি ওয়েবলগ সাইট (যা "ব্লগার" নামেও পরিচিত) সবকিছু অন্তর্ভুক্ত। মজার বিষয় হল, গবেষণা সাহিত্য মূলত অনলাইন জন স্ফিয়ার এবং/অথবা গণমাধ্যম সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত মিথস্ক্রিয়ার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে অনলাইন সাংবাদিকতা খাত ইন্টারনেটে জনপরিসরের একটি মূল উপাদান। |}

এটি হলো কর্মী/পরামর্শের ক্ষেত্র এবং নাগরিক ফোরাম যেখানে রাজনৈতিক এজেন্ডা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যক্তিগত ও জনপরিসরগুলোর ব্যবহার সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে, দল বা রাজনীতিবিদদের দ্বারা পরিচালিত প্রচারণা এবং 'সাধারণ' ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত প্রচারণার মধ্যে পার্থক্য। রাজনৈতিক দল এবং রাজনীতিবিদরা কীভাবে ব্যক্তিগত ও জনপরিসরে তাদের ভাগাভাগি কাজে লাগায় এবং রাজনৈতিক এজেন্ডা প্রচারের উপর এর প্রভাব কী তা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ওয়ার্কিং ট্যাক্স ক্রেডিটস ক্যাম্পেইনটি কেবল হাই প্রোফাইল সোশ্যাল মিডিয়া প্রচারণার কারণেই সফল হয়নি, বরং এটি ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যক্তিগত ও জনপরিসরগুলোকে তার সুবিধার জন্য ব্যবহার করার কারণেও সফল হয়েছিল। সদস্য এবং সমর্থকদের ই-মেইলের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং হাতিয়ার প্রদানের মাধ্যমে, এই প্রচারণার মুখোশ 'সাধারণ মানুষ' হয়ে ওঠে, যারা কেবল একটি দলীয় প্রচারণা নয়, বরং একটি দলের দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত হচ্ছে, এবং এটি 'তৃণমূল প্রচারণা' নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। এই ধরণের প্রচারণা সাধারণত ব্যক্তিদের দ্বারা বেশি সমর্থিত হয়, কারণ এটি একটি চতুর রাজনৈতিক যন্ত্র ধরণের প্রচারণার চেয়ে বেশি খাঁটি এবং বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করা হয়। * জনসমক্ষে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণাটি শেয়ার এবং সমর্থন করার পরিমাণ 'সাধারণ' মানুষের কারণে এবং সমস্ত কার্যক্রম সাধারণ মানুষের দ্বারা পরিচালিত হওয়ায়, এটি বাহ্যিকভাবে একটি তৃণমূল পর্যায়ের প্রচারণা ছিল যা ভোটারদের মন জয় করেছিল।

  • ব্যক্তিগতভাবে, এই প্রচারণাটি অন্যান্য রাজনৈতিক প্রচারণার মতোই লেবার পার্টি দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল, কারণ তারা প্রচারণা সফলভাবে পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকরণ, তথ্য এবং নির্দেশনা কর্মীদের সরবরাহ করেছিল। এই কৌশলটি ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যক্তিগত ও জনপরিসরগুলো কীভাবে রাজনৈতিক এজেন্ডাগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে তার একটি উদাহরণ মাত্র।

রাজনৈতিক এজেন্ডাগুলোকে ব্যক্তিরা কীভাবে উপলব্ধি করে, বিশেষ করে ইন্টারনেট মাধ্যমের মাধ্যমে, এই ব্যবহারটি রাজনৈতিক দল এবং রাজনীতিবিদরা একটি এজেন্ডা প্রচারের জন্য আরও ভয়াবহ পদ্ধতিতে ব্যবহার করে। এই আচরণের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো রাজনৈতিক অপপ্রচার প্রচারণা । এখানেই একটি নির্দিষ্ট দল বা রাজনীতিবিদ একটি ব্যক্তিগত পরিসর থেকে, অর্থাৎ একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবন থেকে তথ্য 'ফাঁস' করবেন, যাতে সেই ব্যক্তিকে, সে অন্য দল বা রাজনীতিবিদই হোক না কেন, অসম্মানিত করা যায় এবং সেই প্রকাশের মধ্যে একটি এজেন্ডা প্রচার করা যায়। এই ফাঁস হওয়া তথ্য প্রায়ই অসত্য অথবা কোনও এজেন্ডা অনুযায়ী প্রেক্ষাপটের বাইরে নেওয়া হয়, এবং সেইজন্যই এটিকে 'কলঙ্ক' বলা হয়। ব্যক্তিবিশেষের দ্বারা একটি ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত অপপ্রচার প্রচারণাও প্রকাশ করা যেতে পারে, আবার প্রচারণার পরিকল্পনাকারী ব্যক্তিকে অসম্মান করার জন্য এবং একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা প্রচার করার জন্য। অপপ্রচার প্রচারণার ব্যবহার এবং অপপ্রচার প্রচারণার উন্মোচন দুটি একই রকম কিন্তু ভিন্ন পদ্ধতি যা দেখায় যে রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে অনলাইনে ব্যক্তিগত ও জনপরিসরগুলোকে কাজে লাগিয়ে একটি এজেন্ডা প্রচার করতে পারে।

জন ম্যাককেইনের 'অবৈধ' সন্তান
[সম্পাদনা]
জন ম্যাককেইন, রিজনান পার্টি। ক্রেডিট: মার্কিন সরকার

২০০০ সালে রিজনান প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন দৌড়ের সময়, জন ম্যাককেইন জর্জ ডব্লিউ বুশের বিরুদ্ধে দক্ষিণ ক্যারোলিনা রাজ্যে জয়লাভ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। তবে বুশের একজন কৌশলবিদ কার্ল রোভ এই প্রচারণা ব্যর্থ করে দেন। তিনি একটি বেনামী অনলাইন জরিপের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে একটি 'ফিসফিসানি' প্রচারণা পরিচালনা করেন। এই জরিপে ভোটারদের জিজ্ঞাসা করা হয়, "আপনি যদি জানতেন যে জন ম্যাককেইন একজন অবৈধ কৃষ্ণাঙ্গ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, তাহলে কি আপনি তাকে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা কমবেশি হবে?" ম্যাককেইন সেই সময় বাংলাদেশ থেকে দত্তক নেওয়া তার কালো-চর্মযুক্ত কন্যা ব্রিজেটকে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এই প্রচারণা এর ফলাফলে একটি বিশাল অবদান রেখেছিল, যার ফলে বুশ প্রকৃতপক্ষে রাজ্যটিতে জয়লাভ করেছিলেন এবং রিজনান মনোনয়ন নিশ্চিত করেছিলেন। [২৮]অনলাইনে জনসাধারণের মধ্যে এই অসত্য তথ্য প্রচার করে, রোভ ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ও জনপরিসরের মধ্যে সীমারেখা সফলভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হন এবং বুশকে তার রাজনৈতিক এজেন্ডা অনুসরণ করতে সাহায্য করতে সক্ষম হন।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ডিজিটাল এবং সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান

[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক যোগাযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উত্থানের কারণে অনলাইনে ব্যক্তিগত ও জনপরিসরগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার এই রাজনৈতিক প্রচারণার কৌশলটি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন কেবল রাজনৈতিক তথ্য বিতরণের অন্যতম প্রধান মাধ্যম নয়, বরং রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার একটি প্রধান হাতিয়ারও হয়ে উঠেছে[২৯] ফেসবুক, টুইটার, এমনকি ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগ সাইটের মাধ্যমে, রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক সংগঠনগুলো ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগের জন্য সৃজনশীল এবং আরও সহজলভ্য পদ্ধতি ব্যবহার করছে।* টেমপ্লেট:ফন্টের রং

ফেসবুকের 'শেয়ার' ফাংশন।

: ফেসবুক হলো ইন্টারনেটের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগ সাইট, [৩০] জানুয়ারী ২০১৬ পর্যন্ত এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১.৫৫ বিলিয়ন । ক্রমবর্ধমানভাবে, ফেসবুক এমন একটি জায়গা হয়ে উঠেছে যেখান থেকে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ তাদের রাজনৈতিক তথ্যের বেশিরভাগই পাচ্ছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি সমীক্ষা অনুসারে, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সংখ্যা যারা এই সাইটটিকে তাদের সংবাদের প্রধান উৎস হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করেছিলেন, ২০১৩ সালে ৪৭% থেকে বেড়ে ২০১৫ সালে ৬৩% হয়েছে। [৩১] অধিকন্তু, প্রায় ৬৬% ফেসবুক ব্যবহারকারী এই চ্যানেলের মাধ্যমে নাগরিক বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন বলে জানা গেছে। [২৯]:* টেমপ্লেট:ফন্টের রং

ফেসবুক রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলিকে অনলাইনে জনসাধারণের সাথে যোগাযোগের সুযোগ করে দেয় এমন অনেক উপায় রয়েছে। খুব সরলভাবে, ফেসবুক পৃষ্ঠাগুলি একজন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট দল এবং রাজনীতিবিদদের সাথে সংযোগ স্থাপনের সুযোগ দেয়, পৃষ্ঠাটি 'লাইক' করার মাধ্যমে এবং সেই পৃষ্ঠাটি তাদের ব্যক্তিগত 'নিউজ ফিডে' পোস্ট করা যেকোনো কিছু দেখার মাধ্যমে রাজনৈতিক তথ্যের সাথে তাদের আপডেট রাখে - ওয়েবসাইটের হোমপেজের মতো। একটি রাজনৈতিক দল বা রাজনীতিবিদ দ্বারা একটি পৃষ্ঠা বা পোস্ট 'লাইক' করার কাজটি একজন ব্যক্তিকে সেই নির্দিষ্ট দল/রাজনীতিবিদ বা এজেন্ডার প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন প্রদর্শন করতে সক্ষম করে। রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার আরও জটিল কাজগুলি যা ফেসবুকের মাধ্যমে তৈরি করা যেতে পারে তার মধ্যে রয়েছে রাজনীতিবিদদের সাথে ফেসবুক প্রশ্নোত্তর সেশন, ফেসবুক পোল যা ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট বিষয়ে জনমত প্রকাশ করতে এবং এই মতামতের মূল পোস্টারকে অবহিত করতে দেয়। "উন্মুক্ত" ফেসবুক গ্রুপ,[৩২] অত্যন্ত কার্যকর মাধ্যম যেখানে যেকোনো ব্যবহারকারী যোগ দিতে, আলোচনা দেখতে এবং তাদের সাথে যুক্ত হতে পারে - এই ধরণের রাজনৈতিক গ্রুপগুলি তথ্য এবং প্রচারণার উপাদান যোগাযোগের জন্য কার্যকর, এবং ব্যক্তিদের জন্য একটি মূল্যবান রাজনৈতিক বিতর্ক/আলোচনার প্ল্যাটফর্মও প্রদান করে।
ব্যক্তিগতভাবে ফেসবুক একটি ব্যক্তিগত বার্তা পরিষেবা, ফেসবুক মেসেঞ্জার, সরবরাহ করে যেখানে ব্যবহারকারীরা সাধারণত একটি জন ফোরামের মাধ্যমে একটি ব্যক্তিগত আলোচনা স্থান তৈরি করতে পারে। এটি বিশেষভাবে উপকারী কারণ এটি রাজনৈতিক দল, রাজনীতিবিদ এবং ব্যক্তিদের রাজনৈতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে আরও বিশদ, ব্যক্তিগত আলোচনা করার সুযোগ প্রদান করে, যেহেতু জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার এবং ঝুঁকি কম থাকে।
ফেসবুক গ্রুপের ধারণার কথা উল্লেখ করে, ফেসবুক 'বন্ধ' এবং 'গোপন' গ্রুপগুলোকেও অনুমতি দেয়। আবার, এই সেটিংস দ্বারা প্রদত্ত অতিরিক্ত গোপনীয়তার স্তর প্রায়ই ব্যক্তিদের রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে আরও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করার সুযোগ দেয়। তদুপরি, এটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোকে সহজেই সংগঠিত করতে, উপকরণ ভাগ করে নিতে এবং একক গতিতে যোগাযোগ করতে সাহায্য করে, যারা তাদের ক্ষতি করতে চায় তাদের 'অনুপ্রবেশের' ভয় ছাড়াই।
Similar to Facebook, Twitter offers a public platform for individuals to engage with political parties and politicians. Any user can send a 'tweet' to another user, including political parties. Twitter is useful as it limits each tweet to 140 characters, and therefore questions can be asked and answered very quickly, and political debates are very fast-paced.
টুইটার 'হ্যাশট্যাগ' নিয়েও অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যা ব্যবহারকারীরা অনুসরণ করতে পারেন। টুইটে '#[insert text]' টাইপ করে, একজন ব্যক্তি একই বিষয়ে ব্যাপক আলোচনায় অবদান রাখতে পারেন। এছাড়াও টুইটারে হ্যাশট্যাগটি অনুসন্ধান করে, ব্যবহারকারীরা সেই বিষয়কে ঘিরে যেকোনো আলোচনা অনুসরণ করতে পারবেন। এটি টুইটারকে রাজনৈতিক যোগাযোগ এবং এজেন্ডা প্রচারের জন্য সবচেয়ে সহজলভ্য এবং দ্রুত বর্ধনশীল সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলির মধ্যে একটি করে তোলে।
উদাহরণ; হংকংয়ের 'ছাতা বিপ্লব' - #UmbrellaRevolution

অনলাইনে রাজনৈতিক যোগাযোগ

[সম্পাদনা]

ম্যালেৎজকের গণযোগাযোগের সংজ্ঞা এবং ল্যাসওয়েলের যোগাযোগের মডেল অনুসরণ করে, রাজনৈতিক যোগাযোগ হলো সেই ধরণের যোগাযোগ, যেখানে রাজনৈতিক খেলোয়াড়রা বার্তা তৈরি করে, যা প্রযুক্তিগতভাবে সহায়ক মাধ্যমের মাধ্যমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দর্শকদের কাছে প্রেরণ করা হয় এবং পরবর্তীরা যা ব্যবহার করে এবং তাদের উপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু রাজনৈতিক যোগাযোগ বিপরীত দিকেও যেতে পারে, অর্থাৎ নাগরিকরা রাজনৈতিক খেলোয়াড়দের সাথে যোগাযোগ করতে পারে, অথবা অনুভূমিকভাবে, খেলোয়াড়দের মধ্যে বা নাগরিকদের মধ্যে।রাজনৈতিক যোগাযোগের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম হলো তথ্য, যার একটি বিশেষ মাধ্যম হলো প্ররোচনা, যা রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। অতএব, রাজনৈতিক তথ্য জনমতকে এবং অবশেষে ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত পরিসরের মতামতকে প্রভাবিত করার জন্য জনপরিসর ব্যবহার করে। তাই এই বিভাগটি অনলাইনে রাজনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে জনমত গঠনের উপর আলোকপাত করে।ইন্টারনেটে উপস্থাপনা পদ্ধতিগুলো অন্যান্য অনেক ধরণের মিডিয়ার তুলনায় বহুমুখী: ইউটিউব-ভিডিও, নিউজলেটার, উইকিপিডিয়া বা অনলাইন জার্নাল নিবন্ধ, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট বা ছবির মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করা হয় - তথ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন ব্যবহারকারীর পছন্দের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া। উদাহরণস্বরূপ, ভিডিওর তুলনায় টেক্সট ধীরে গ্রহণ করা যেতে পারে।সমস্ত অফারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো তাদের ডিজিটাল বৈশিষ্ট্য । এটি কেবল স্থান এবং সময়ের ব্যবধান ছাড়াই তথ্য সংরক্ষণকে সহজ করে না, বরং বার্তাগুলোর পুনরুৎপাদন এবং দর্শকদের দ্বারা তাৎক্ষণিক (আন্তঃব্যক্তিক) প্রতিক্রিয়া সক্ষম করে, অর্থাৎ আলোচনা ফোরামে ( ব্যবহারকারী-উত্পাদিত সামগ্রী দেখুন)। ফলস্বরূপ, জনসাধারণের বিচ্ছিন্ন শ্রোতা এবং এর জনসাধারণের আলোচনা প্রসারিত এবং নেটওয়ার্কযুক্ত হয়: লোকেরা এমন মতামতের সাথে যোগাযোগ করতে পারে যা তারা তাদের শারীরিক জনপরিসরে কখনই জানতে পারবে না এবং তারা তাদের শারীরিক ব্যক্তিগত পরিসর থেকে বেরিয়ে না গিয়েও তা করতে পারে।

দুই ধাপের যোগাযোগ প্রবাহের ধারণা

প্রত্যেকের লেখক হওয়ার সম্ভাবনার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, জনসাধারণের তথ্য ঐতিহ্যবাহী দারোয়ানদের (অর্থাৎ সাংবাদিকদের) দ্বারা ফিল্টার করা হয় না, তবে সাধারণ নাগরিকরা বিষয় সম্পর্কে পোস্ট করতে পারেন। একদিকে তারা মতামতের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি করে, কিন্তু যেহেতু তারা মতামতের নেতা হতে পারে এবং প্রায়ই গণমাধ্যম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে, তাই তারা জনমতের দ্বিগুণ ফিল্টারিং তৈরি করে (" যোগাযোগের দ্বি-পদক্ষেপ-প্রবাহ ")। তাছাড়া, অনলাইনে ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণ তথ্যের অতিরিক্ত চাপকে আরও খারাপ করে তোলে, যার ফলে সার্চ ইঞ্জিনগুলিকে পরিমাণটি ফিল্টার এবং পরিচালনা করতে বলা হয়। তাদের দ্বারা নিবন্ধিত নয় এমন সবকিছুই অদৃশ্য ওয়েবের অন্তর্গত - ফলস্বরূপ সার্চ ইঞ্জিনগুলি জনমত গঠনেও বিশাল প্রভাব ফেলে।উইকিলিকসের ক্ষেত্রে, কেউ ভাবতে পারেন যে, অনলাইনে জনসাধারণের স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পায়, কিন্তু এটি আসলে নীরবতার সর্পিলকে আরও খারাপ করতে পারে: জনসাধারণের পরিমাপের সরঞ্জামগুলোর মাধ্যমে, যেমন "ক্লিক" বা " লাইক ", একটি জনমতকে অত্যন্ত সমর্থিত হিসাবে জোর দেওয়া হয়, যদিও বাস্তবে তা নাও হতে পারে।অধিকন্তু, এই ধরণের রাজনৈতিক যোগাযোগের মান এবং বৈধতা প্রমাণিত নয় (প্রাতিষ্ঠানিক সাংবাদিকতার তুলনায়; অর্থাৎ জার্মানিতে সংবাদপত্রগুলোকে কেবল দুটি পৃথক সংবাদ সংস্থা দ্বারা প্রমাণিত তথ্য প্রকাশ করার অনুমতি দেওয়া হয়)।অবশেষে, ইন্টারনেটের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হল, এটি একটি টান-মাধ্যম। অতএব, যারা ইতিমধ্যেই এমন কোনও বিষয়ে আগ্রহী এবং খুঁজছেন, যার বিষয়ে তারা আগে শুনেছেন, কেবল তাদের সাথেই যোগাযোগ করা সম্ভব। বিপদ হলো, মানুষকে একতরফাভাবে তথ্য প্রদান করা হয় এবং তথ্যের অতিরিক্ত চাপ ফিল্টার করার বিভিন্ন সম্ভাবনার সাথে মিলিত হয়ে, তাদেরকে একটি " রাজনৈতিক বুদবুদে " আটকে রাখা যেতে পারে। জ্ঞানের ব্যবধানের অনুমানটি আরও যোগ করে যে, উচ্চ-শিক্ষিত এবং রাজনৈতিক আগ্রহসম্পন্ন ব্যক্তিরা এই পূর্বশর্তগুলো ছাড়াই মানুষের তুলনায় দ্রুত তথ্য পেতে পারেন। ডিজিটাল বিভাজন এবং ডিজিটাল বিশ্লেষণবাদের সাথে মিলিত হয়ে, যার মাধ্যমে বিশ্বের জনসংখ্যার একটি নির্দিষ্ট অংশ "জনসাধারণের" অনলাইন আলোচনা থেকে বাদ পড়ে, জ্ঞানের ব্যবধান বৃদ্ধি পায়: উচ্চশিক্ষিত এবং রাজনৈতিক আগ্রহী ব্যক্তিরা যাদের (বিতর্কিত) রাজনৈতিক যোগাযোগের সুযোগ এবং দক্ষতা রয়েছে তারা আরও বেশি করে বিকাশ লাভ করে, যেখানে এই ভিত্তি ছাড়াই লোকেরা কম বিরোধী উদ্দীপনা পায় যার ফলে তারা তাদের রাজনৈতিক বুদবুদেই থেকে যায়। অতএব, রাজনৈতিক যোগাযোগ কৌশলগুলো আন্তঃমাধ্যমিকভাবে প্রয়োগ করা উচিত, উদাহরণস্বরূপ, অনলাইন গবেষণার মাধ্যমে যতটা সম্ভব নাগরিকদের নিজেদের আরও অবহিত করতে উৎসাহিত করার জন্য প্রথমে পুশ মিডিয়াতে একটি এজেন্ডা নির্ধারণ করা

নাগরিকদের অনলাইন-সক্রিয়তা

[সম্পাদনা]

অনলাইন-অ্যাক্টিভিজম ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিজম নামেও পরিচিত। এটি সাধারণত এমন একটি অনুশীলন হিসাবে চিহ্নিত করা হয় যেখানে রাজনৈতিকভাবে অনুপ্রাণিত নাগরিকরা নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন অনলাইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে। স্যান্ডর ভেগের ব্যাখ্যা অনুসারে, উল্লিখিত কৌশলগুলো ইন্টারনেট-উন্নত বা ইন্টারনেট-ভিত্তিক হতে পারে। প্রথমটি এমন একটি পরিস্থিতি নির্দেশ করে যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয় প্রতিবাদের ঐতিহ্যবাহী কৌশলগুলোকে উন্নত করার জন্য। যেমন কোনও বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া। change.org এর মতো ওয়েবসাইটে ই-পিটিশন তৈরি করে অনলাইন বা অফলাইনে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো যায়। পরেরটি কেবল অনলাইনে সংঘটিত সক্রিয়তার ধরণকে নির্দেশ করে, যেমন হ্যাকারদের কার্যকলাপ যা হ্যাকটিভিজম হিসাবে চিহ্নিত, লক্ষ্যবস্তু বা ইন্টারনেট-সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।অনলাইন-অ্যাক্টিভিজম সাধারণত তিনটি বিভাগে বিভক্ত, যার প্রতিটিতে কারো বা কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বিভিন্ন দিক, জড়িত ব্যক্তিবর্গ এবং প্রয়োগের পদ্ধতির উপর জোর দেওয়া হয়: * সচেতনতা/প্রচারণা: এই বিভাগটি সেই ধরণের লোকদের চিহ্নিত করে যারা তথ্য তৈরি এবং গ্রহণ করে। এই প্রক্রিয়ার অংশে কর্মীদের লক্ষ্য হলো অনলাইন পিটিশন, ফেসবুক পেজ, ব্লগ বা ইমেল তালিকা দিয়ে তৈরি বিতরণ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করা। এই ক্ষেত্রে, বিষয়বস্তু প্রযোজকরা সম্ভবত ব্যক্তিগত নাগরিক বা স্বাধীন সংস্থা হবেন এবং তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো সেই তথ্য ভাগ করে নেওয়া এবং জনসাধারণের নিন্দার জন্য প্রকাশ করা যা সম্ভবত কম রিপোর্ট করা হয়েছে বা একেবারেই রিপোর্ট করা হয়নি, অগণতান্ত্রিক শাসনের কারণে মূলধারার মিডিয়া দ্বারা গোপন করা হয়েছে, অথবা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অভ্যন্তরীণ ঘটনা। একইভাবে, অনলাইন অ্যাডভোকেসির মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া এবং একটি নির্দিষ্ট কর্মপদ্ধতি প্রচার করা উভয়ই জড়িত। প্রকৃতপক্ষে, এটি একটি একক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ চাওয়ার উপর অথবা জলবায়ু পরিবর্তনের মতো একটি মহান বিষয় সম্পর্কে ভবিষ্যতের এবং দীর্ঘ-দূরবর্তী লক্ষ্যের জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে পারে। লবিংয়ে অ্যাডভোকেসির একটি ধরণ চিহ্নিত করা হয় যা একজন লবিস্টের কর্মের লক্ষ্য অনুসারে ভিন্ন হয়। উদাহরণস্বরূপ, ই-অ্যাডভোকেট হলো কর্মীদের একটি দল যারা এমন সংস্থা এবং ব্যক্তিদের পক্ষে লবিং করে যাদের ইন্টারনেট জ্ঞান এবং অনুশীলনের অভাব রয়েছে যাতে প্রচারণায় সফলভাবে মানুষকে জড়িত করা যায়। এই ধরণের অনলাইন-অ্যাক্টিভিজম এমন লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি করে যাদের সম্ভাব্যভাবে অবহিত করা যেতে পারে এবং ফলস্বরূপ অনলাইন বা অফলাইনে জড়িত করা যেতে পারে। একইভাবে, এটি সময় এবং খরচ সাশ্রয়ী কারণ এটি ইন্টারনেট ব্যবহার করে কার্যত কোনও বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। অধিকন্তু, আলোচনা পৃষ্ঠা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে মানুষ ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও অসিঙ্ক্রোনাসভাবে তথ্য বিনিময় করতে পারে।* Organisation/Mobilisation/সংগঠন: এই বিভাগে কর্মীদের সংগঠিত করার জন্য ইন্টারনেট কীভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে সে সম্পর্কে দুটি ভিন্ন পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রথমত, এটি অফলাইনে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, যার অর্থ হলো কোন স্থানে এবং কোন সময়ে প্রতিবাদ বা বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে সে সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করা হবে। এই ক্ষেত্রে, গতিপথটি অনলাইন → অফলাইন। দ্বিতীয়ত, এটি এমন কিছু কাজকে উৎসাহিত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে যা ঐতিহ্যগতভাবে অফলাইনে ঘটে কিন্তু অনলাইনে করলে এর ফলাফল আরও ভালো হবে, যেমন ইমেল, আবেদন এবং টুইটের মাধ্যমে ব্যাখ্যা চাওয়া এবং দাবি জানানো, যার মাধ্যমে একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা কোম্পানিকে রিসিভার হিসেবে রাখা হয়। এখানে, গতিপথ অফলাইন → অনলাইন হয়ে যায়

অনলাইন-সক্রিয়তার এই সমস্ত রূপ এবং ধাপগুলো, বিশেষ করে যদি একত্রিত করা হয়, তাহলে সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করতে পারে। এই পরিবর্তনগুলোর কার্যকারিতার মাত্রা এবং সময়কাল বিতর্কিত রয়ে গেছে।

গাঢ়==== ফরম ও প্লাটফর্ম ==== নাগরিকদের অনলাইন-সক্রিয়তাবাদে যেমন ব্যাখ্যা করা হয়েছে, দুটি উপায়ে অনলাইন সক্রিয়তা ঘটে: ইন্টারনেট-বর্ধিত এবং ইন্টারনেট ভিত্তিক সক্রিয়তাবাদ।  এই ফর্মগুলির সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরণের প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখানে নাগরিক সক্রিয়তার নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে অংশ নিতে পারে। কিছু প্ল্যাটফর্ম সাধারণ মানুষকে তাদের মতামত প্রকাশের জন্য একটি কণ্ঠ দিতে পারে এবং পরিবর্তনকে উত্সাহিত করতে পারে। অতএব, প্রতিটি প্ল্যাটফর্ম নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য প্রদান করে যা কর্মের ফলাফল এবং উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিতে বা এমনকি শক্তিশালী করতে পারে। এই বিভাগটি বেশ কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম এবং এক ধরণের 'প্রচারক' হিসাবে তাদের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করে, তবে এটি অনলাইন অ্যাক্টিভিজম অনুশীলনের সাথে সম্পর্কিত সর্বাধিক ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্মগুলির একটি ভগ্নাংশকে প্রতিনিধিত্ব করে।

সামাজিক নেটওয়ার্ক শুধুমাত্র সচেতনতা জাগ্রত করার জন্য বা ঐতিহ্যগত, অফ-লাইন প্রতিবাদ ফর্মগুলির সমন্বয় সাধনের জন্য একটি অতিরিক্ত যোগাযোগের সরঞ্জাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে দুটি বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক (৫৯ বিলিয়ন মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী) এবং টুইটার (৩২০ মিলিয়ন মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী) এর ব্যবহার।  ব্যবহারকারী এবং অ্যাক্টিভিস্টরা তাদের প্রোফাইলে টেক্সট বার্তা, ভিডিও বা অডিও ফাইল, ফটো এবং অন্যান্য তথ্য বিনিময় করতে পারেন। শব্দটি অনলাইনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং অনলাইন তহবিল সংগ্রহ খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিস্ময়কর পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করতে পারে যদি পর্যাপ্ত লোক কারণটিকে সমর্থন করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় তথ্য ছড়িয়ে দেয়। উপরন্তু, ফেসবুকের সক্রিয় কর্মীরা সাধারণ আগ্রহের ব্যবহারকারী দলে যোগ দিতে পারে, নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু ছড়িয়ে দিতে পারে এবং অফ-লাইন প্রতিবাদ বা পদক্ষেপের কৌশল সংগঠিত করতে পারে। টুইটার এবং ফেসবুক তথ্য ভাগ করে নেওয়ার সুযোগগুলিতে পৃথক করা হয়েছে কারণ টুইটার একটি মাইক্রো-ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ব্যবহারকারী সর্বাধিক 140 টি অক্ষরের সাথে বার্তা ঘোষণা করতে পারে। ফেসবুক এবং টুইটারের আন্তঃসংযুক্ত প্রকৃতি তথ্য ভাগ করে নেওয়ার একটি সহজ উপায়ের দিকে পরিচালিত করে এবং কম সময় এবং ব্যয়-সাপেক্ষ উপায়ে পাশাপাশি আপ টু ডেট স্ট্যাটাসে প্রচুর পরিমাণে ট্র্যাফিক তৈরি করতে পারে।  সামাজিক নেটওয়ার্কগুলিতে অনলাইন সক্রিয়তা সম্পর্কিত একটি উন্নয়ন এবং সবচেয়ে শক্তিশালী সরঞ্জামগুলির মধ্যে একটি হল তথাকথিত হ্যাশট্যাগ অ্যাক্টিভিজম কারণ তাদের ব্যবহার ট্র্যাফিককে সমন্বয় করতে পারে এবং উপরন্তু, পরিমাপের সরঞ্জাম হিসাবে কাজ করতে পারে। এমিলি ভ্রাগার একটি গবেষণা প্রকাশ করে যে ভিডিওগুলি "ই-মেইল, অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া এবং এমনকি প্রিন্ট মিডিয়া সহ বিভিন্ন অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে সহজে, দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ভাগ করা যায় এবং তারপর দর্শকের অবসর সময়ে দেখা  এটি আরও জোর দিয়েছিল যে কোনও রাজনৈতিক কর্মের সাথে সম্পর্কিত ভিডিওগুলি "সাম্প্রদায়িক সংস্থান, অবহিত, অনুপ্রাণিত এবং সমমনা অন্যদের সংযুক্ত করতে" পরিবেশন করতে পারে পাশাপাশি নতুন শ্রোতাদের সঠিকভাবে লক্ষ্য করতে এবং দর্শকদের বাড়িয়ে তুলতে পারে। ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য সরঞ্জাম সরবরাহ করে কারণ চলমান চিত্রগুলির আরও সংবেদনশীল চালিত প্রভাব রয়েছে। এই জাতীয় সরঞ্জাম এবং প্ল্যাটফর্মগুলি তদবির এবং তহবিল সংগ্রহের মতো কারণ-সম্পর্কিত সক্রিয়তার জন্যও ব্যবহৃত হয়।

অনলাইন-পিটিশন (ই-পিটিশন বা ইন্টারনেট পিটিশন নামেও পরিচিত) ঐতিহ্যবাহী পিটিশনগুলির একটি বর্ধিত সরঞ্জাম কারণ এটি কম সময় এবং ব্যয়কারী এবং এতে মানুষের একটি বৃহত্তর গোষ্ঠীর কাছে পৌঁছানোর এবং অংশগ্রহণের সুযোগ অন্তর্ভুক্ত করে। ইন্টারনেট-ভিত্তিক এই পিটিশনগুলি সরকার বা সংস্থার কাছে পাঠিয়ে যে কোনও বিষয়ে ইতিবাচক নীতি পরিবর্তনের প্রতিবাদ এবং অনুরোধ করার উদ্দেশ্য অনুসরণ করে। এর ফলে ই-পিটিশন দুটি ফর্মের মাধ্যমে প্রয়োগ করা যেতে পারে: ই-মেইল এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব।  প্রাক্তন বৈদ্যুতিন মেইলিং তালিকা সিস্টেম (তথাকথিত লিস্টসার্ভ) এর উপর ভিত্তি করে কোনও ওয়েবসাইট বা প্ল্যাটফর্মের গ্রাহক বা সদস্যদের কাছে পিটিশন বা নির্দিষ্ট তথ্য প্রেরণ করে। পরেরটি change.org বা Moveon.org এর মতো ওয়েবসাইটগুলিকে নির্দেশ করে যেখানে লোকেরা একটি petition.abcd-এর সাথে যোগাযোগ করতে পারে। যখন কোনও ওয়েবসাইট কোনও পিটিশন হোস্ট করে, তখন দর্শকদের ইলেকট্রনিকভাবে সাইন ইন করতে হয় এবং প্রায়ই তাদের নাম এবং ই-মেইলের মতো ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হয়। অধিকন্তু, change.org বা moveon.org- মতো আবেদনগুলি সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলগুলির সাথে একীভূত করা যেতে পারে এবং ফলস্বরূপ উচ্চতর অংশগ্রহণ অর্জন করতে পারে। ২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা তাদের সরকারের নীতির বিরুদ্ধে পিটিশন করতে সক্ষম হয়েছেন, প্রায় ৭,১৯০টি পিটিশন নিবন্ধিত হয়েছে এবং এর মধ্যে ২০টি নিয়ে সংসদে বিতর্ক হয়েছে।  অনেক এনজিও বা দাতব্য সংস্থা greenpeace.com মতো পরিবেশগত ইস্যুতে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য অনলাইন পিটিশন ব্যবহার করে।

উপরন্তু, হ্যাক্টিভিজমের বেশিরভাগ নেতিবাচকভাবে যুক্ত ফর্মটি অনলাইন অ্যাক্টিভিজমের অন্তর্গত। মূলত এই ধরনের সক্রিয়তা "একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একক-ঘটনা অনলাইন কর্মকাণ্ড, বা এর একটি প্রচারণা, অসম্মতি প্রকাশ করার জন্য বা কর্মীদের দ্বারা সমর্থিত কোনও ইস্যুতে দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য অ-রাষ্ট্রীয় অভিনেতাদের দ্বারা নেওয়া হয়।  হ্যাকাররা ব্যক্তিগত বা গোপন সরকারী তথ্যে অ্যাক্সেস পেতে ডিনায়াল-অফ-সার্ভিস আক্রমণ (DoS attack) ব্যবহার করে। যেহেতু সরকারী ও বেসরকারী ক্ষেত্রের প্রায় সমস্ত স্থান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক দ্বারা চালিত প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে, আক্রমণগুলি আরও বেশি হুমকিস্বরূপ হয়ে ওঠে। স্যান্ডর ভেগ সম্পর্কিত, হ্যাকাররা "তারযুক্ত কর্মী" হিসাবে বিভক্ত, কেবল ইন্টারনেটকে তাদের কৌশল এবং "রাজনীতিকরণ হ্যাকারদের" সাথে খাপ খাইয়ে নেয়, তাদের অভিনয়ের ন্যায্যতা হিসাবে রাজনৈতিক কারণগুলি গ্রহণ করে।

প্রভাব

[সম্পাদনা]

কিছু বিশেষজ্ঞ যুক্তি দেখান যে অনলাইনে সক্রিয়তা বৃদ্ধি বাস্তব জীবনে যে পরিমাণ সক্রিয়তা করা হয় তার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই তথাকথিত স্ল্যাক্টিভিজম মানুষকে তাদের সম্প্রদায়ের জন্য কম কাজ করতে বাধ্য করে কারণ তারা 'কম খরচে অনলাইন অ্যাক্টিভিজমে তাদের অংশগ্রহণে সন্তুষ্ট' বোধ করে।  এই কারণে, অনলাইন সম্প্রদায়ের বাইরে পাবলিক স্ফিয়ারে কম সক্রিয়তা রয়েছে কারণ লোকেরা মনে করে যে তারা অনলাইনে তাদের ভাল কাজগুলি করছে। অধিকন্তু, এমন বিশেষজ্ঞরা আছেন যারা যুক্তি দেখান যে এটি বলা অতিসরলীকরণ করা হয়েছে যে প্রযুক্তিটি নির্দিষ্ট কর্মী আন্দোলনের এত কার্যকর হওয়ার কারণ।  একটি অনলাইন বিপ্লব প্রায়ই বাস্তব বিশ্বের একটি বিপ্লবকে সাহায্য করে না; কোনও কারণকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়তা করার জন্য মুখোমুখি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। অনলাইন সম্প্রদায়গুলি খুব নৈর্ব্যক্তিক এবং বিক্ষোভকারী অংশগ্রহণকারীদের ভিড়ের মতো প্রভাব ফেলতে পারে না।

যাইহোক, এটি যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে অনলাইন সক্রিয়তাবাদেরও ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। টুইটার, change.org, টাম্বলারের মতো বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনার ভয়েস ব্যবহার করা সহজ হয়ে উঠেছে এবং ফেসবুকের লোকেরা আগের চেয়ে দ্রুত অ্যাক্টিভিজম সম্পর্কে তথ্য এবং সংবাদ ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। এর প্রভাব হচ্ছে বেশী সংখ্যক শ্রোতাকে কিছু অনলাইন একটিভিস্ট আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত মতামত, বিষয় এবং প্রচারণার সংস্পর্শে আনা হয়। বড় বড় প্রতিবাদ আন্দোলনে, অনলাইনে বিপুল সংখ্যক লোকের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে এবং এই আন্দোলন সম্পর্কে সচেতন করা যেতে পারে, যেমন পরবর্তী উপ-বিভাগের উদাহরণগুলি আলোচনা করা হবে। যদিও আপনার থেকে অনেক দূরের কোন শহরে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া বা ভিন্ন কোন দেশের প্রচারণায় সাহায্য করা কঠিন হতে পারে, অনলাইন-সক্রিয়তা অনেক লোকের জন্য একটি প্লাটফর্ম প্রদান করে, যাতে নির্বিশেষে তারা তাদের কণ্ঠ শোনাতে পারে। এটি একটি বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার এবং সংলাপ তৈরির একটি ব্যয়বহুল উপায়; লোকেরা আলোচনা, ধারণাগুলি বিনিময় করতে এবং এই বিষয়ে বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সরবরাহ করতে সক্ষম হয় এবং এটি রেডিও বা টেলিভিশনের মাধ্যমে ব্যয়বহুল, বিস্তৃত প্রচারণা শুরু না করেই। এটি সংখ্যালঘু কণ্ঠস্বরের জন্য বাধা হ্রাস করতে পারে, আরও বৈচিত্র্যময়, বৃহত্তর গোষ্ঠীর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে পারে।

অনলাইন সক্রিয়তাও বদলে দিয়েছে মানুষের প্রতিবাদের ধরন। উদাহরণস্বরূপ, লোকেরা অবস্থান ধর্মঘট বা বিক্ষোভে যাওয়ার সম্ভাবনা কম, তবে তারা পিটিশন বা টুইট, ই-মেইল বা বার্তা সেলিব্রিটি, সরকারী কর্মকর্তা বা প্রতিষ্ঠান বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের স্বাক্ষর করার সম্ভাবনা বেশি।  জনসাধারণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের অনলাইনে কী পোস্ট করা হয় তা আরও সতর্ক হতে হবে, কারণ তাদের টুইট এবং ফেসবুক পোস্টগুলিতে মন্তব্যের একটি তরঙ্গ অনিবার্য। এই কল-আউট সংস্কৃতি অনলাইন-অ্যাক্টিভিজমের একটি মূল প্রভাব। একজন পাবলিক ফিগার অনলাইনে পোস্ট করতে পারে এমন সমস্ত কিছুই চ্যালেঞ্জ করা হয় বা মুখোমুখি হয় যদি এটি কোনওভাবে সমস্যাযুক্ত হয়, যার ফলে তারা কর্মী আন্দোলন সম্পর্কে আরও সতর্ক এবং আরও সচেতন হয়। দৈনন্দিন জীবনে মানুষের সাথেও এটি ঘটে; রাজনৈতিক আন্দোলন ও সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা। কিছু লোক এটিকে নেতিবাচক বিকাশ হিসাবে বিবেচনা করতে পারে কারণ এটি মন্তব্য না করে অনলাইনে মতামত পোস্ট করা কঠিন, অন্যরা তর্ক করতে পারে যে এইভাবে অনলাইন সমাজ এগিয়ে যেতে পারে এবং ব্যক্তিদের প্রতি আরও বিবেচ্য হতে পারে এবং বিভিন্ন আন্দোলন সম্পর্কে সচেতন হতে পারে।

পরিশেষে, অনলাইন-অ্যাক্টিভিজম মূলধারার মিডিয়া থেকে একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ প্রস্তাব করতে পারে। কর্পোরেট মিডিয়া এমন একটি বিষয় যা কোম্পানিগুলিকে মিডিয়াতে প্রভাব ফেলে তা বিবেচনা করে, নির্দিষ্ট সংবাদ নিবন্ধগুলির লক্ষ্য এবং গল্পগুলি সর্বদা বিশ্বাস করা যায় না। এমন উদাহরণ রয়েছে যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া মূলধারার মিডিয়ার চেয়ে কোনও ইভেন্টের অবিশ্বাস্যভাবে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছিল, উদাহরণস্বরূপ #blacklivesmatter আন্দোলনের সাথে। অনলাইন আন্দোলন তাদের কাছে তথ্য প্রদান করতে পারে যারা মূল সংবাদ চ্যানেলের কাহিনী বিশ্বাস করে না, অথবা অন্ততঃ যারা এই ঘটনা থেকে সরাসরি পোস্ট করছে তাদের থেকে ভিন্ন এক দৃষ্টিকোণ প্রদান করতে পারে। অতএব, অনলাইন অ্যাক্টিভিজম একটি ভিন্ন সংবাদ আউটলেট তৈরি করেছে, এবং অগণিত আন্দোলন এবং সংগঠনের ক্ষেত্রে একটি পৃথক তথ্য উৎস তৈরি করেছে।

অতীত ঘটনাবলী

[সম্পাদনা]
আরব বসন্ত
[সম্পাদনা]

২০১০ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে আরব বিশ্ব এক অভূতপূর্ব সামাজিক আন্দোলন, প্রতিবাদ ও বিপ্লব প্রত্যক্ষ করে, যাকে সামগ্রিকভাবে আরব বসন্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

ব্লগ এবং ফোরাম আরব বিশ্বের পরিবর্তনে ইন্ধন জুগিয়েছে, নতুন প্রচার মাধ্যম আত্মক্ষমতায়নের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। তারপরও বিপ্লব হয়েছে রাজপথে।
—জার্মান নিউজ ম্যাগাজিন "স্পিগেল"

অভ্যুত্থান এবং সামাজিক মিডিয়া নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে তাদের বিস্তার এবং সমন্বয়ের জন্য ভূমিকা এবং সম্পর্ক সম্পর্কে অসংখ্য বিবেচনা এবং অধ্যয়ন করা হয়েছে। যথা, লোকেরা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে একে অপরের এবং বিশ্বের সাথে মিথস্ক্রিয়া করেছিল যা শেষ পর্যন্ত তাদের শাসকদের দ্বারা বার্তাটিকে নিয়ন্ত্রণহীন করে তুলেছিল। যদিও সরকারের প্রতি জনগণের বিরক্তির কারণগুলোর অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ভিত্তি রয়েছে, তারপরও এর পেছনে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে এবং অনলাইনে তা ছড়িয়ে পড়ে: মোহামেদ বোয়াজিজি, একজন রাস্তার বিক্রেতা, ১৭ ডিসেম্বর তারিখে তিউনিশিয়ার সিদি বোউজিদে সরকারী অফিসের সামনে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন কর্মকর্তাদের সহিংসতা, অপমান এবং তার জিনিসপত্র ও ঠেলাগাড়ি জব্দ করার প্রতিবাদে। মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওগুলো দ্রুত ইন্টারনেটে পোস্ট করা হয়, সেখান থেকে তারা ফেসবুক এবং টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রথমে ছোট শহর এবং অবশেষে রাজধানীতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে জড়ো করে। মোহাম্মদের আত্মাহুতির মাত্র কয়েক ঘন্টা পরে স্বতঃস্ফূর্ত গণজাগরণের সাথে এই ভিডিওটি আল জাজিরার মতো স্যাটেলাইট নিউজ চ্যানেলেও পৌঁছেছে।

একই পরিস্থিতিতে, ছয় মাস আগে ব্লগার এবং অ্যাক্টিভিস্ট খালেদ সাঈদকে আলেকজান্দ্রিয়ার একটি সাইবার ক্যাফে থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করেছিল। মর্গে বেড়াতে গিয়ে তার ভাই তার বিকৃত লাশের ছবি তুলেছিলেন এবং অনলাইনে শেয়ার করেছিলেন। তার মৃত্যুর পাঁচ দিন পর একজন অজ্ঞাতনামা একটিভিস্ট ফেসবুকে উই আর অল খালেদ সাঈদ নামে একটি পাতা তৈরি করে এবং ছবিগুলো প্রকাশ করে। ১৫ই জুলাইয়ের মধ্যে ১,৩০,০০০ এর বেশী লোক এই পাতায় যোগদান করে, যা একে মিশরের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ভিন্নমত পাতায় পরিণত করে।  এই ঘটনার পর, ১৮ ডিসেম্বর তারিখে তরুণ একটিভিস্ট আসমা মাহফুজ ইউটিউব ভিডিওতে তার সহনাগরিকদের ২৫ জানুয়ারি তারিখে হোসনি মুবারকের শাসনের বিরুদ্ধে তার সাথে তাহরির স্কোয়ারের প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়ে পোস্ট করেন।

যদিও এই ঘটনাগুলির প্রত্যেকটি যেভাবে ভাগ করা হয়েছিল তার গুরুত্বের পরিমাণকে আলাদা করা কঠিন, তবে এতে কোনও সন্দেহ নেই যে যেভাবে তারা অনলাইনে প্রচারিত হয়েছিল তা সাধারণ, অ-কর্মী লোকদের সরকারের নিপীড়ন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে মানবাধিকারের লড়াইয়ের সাথে সংযোগ স্থাপনের একটি উপায় দিয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, "সোশ্যাল মিডিয়া উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্য প্রাচ্য জুড়ে স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র সম্পর্কে বার্তাগুলির একটি ক্যাসকেড বহন করে এবং রাজনৈতিক অভ্যুত্থানের সাফল্যের জন্য প্রত্যাশা বাড়াতে সহায়তা করে, যখন গণতন্ত্রে আগ্রহী লোকেরা ব্যাপক সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরি করে এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সংগঠিত করে। সোশ্যাল মিডিয়া বৃহত্তর স্বাধীনতার জন্য টুলকিটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।  প্রকৃতপক্ষে, সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি জনগণকে জড়িত করা এবং প্রত্যেকের দেখার এবং আলোচনা করার জন্য সংবাদ বের করা সহজ করে তুলেছে, বিশেষত সংবাদপত্র এবং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পক্ষপাতদুষ্ট এবং পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, ফেসবুকে ডাকা একটি প্রতিবাদ বাদে সবই রাস্তায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল।  বিশেষ করে, আরব অঞ্চলে তথ্য পাওয়া এবং প্রতিবাদকারীদের সংগঠিত করার প্রাথমিক উৎস ছিল ফেসবুক, ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৩০% ব্যবহারকারী বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রায় দ্বিগুণ ব্যবহারকারী বৃদ্ধি পেয়েছে (২০১০ সালের ১৪. ৮ এর বিপরীতে ২৭. ৭ মিলিয়ন)।  এটি প্রতিবাদের পরিমাণ এবং আরব বিশ্বে যে দ্রুততার সাথে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল তা উভয়ই জোরদার করেছিল। উপরন্তু, প্রতিবাদ এবং সমর্থকরা সামাজিক মিডিয়ার কল্যাণে ভৌগলিক সীমানা ভেঙেছে: মুবারকের পদত্যাগের পর, প্রতিবেশী দেশগুলোর নাগরিকদের কাছ থেকে প্রতিদিন গড়ে ২,৪০০ টি টুইট এসেছে মিশর সম্পর্কে। তিউনিসিয়ায় বেন আলীর পদত্যাগের পর তা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ২০০ জন।

বার্তাটি যেভাবে দেশ ও জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে, নিরপেক্ষ তথ্যের আউটপুট এবং পাঠ এবং আরব বসন্তের সময় সরকারের কর্তৃত্বকে বাইপাস করা গণতন্ত্রের পক্ষে জনগণের একত্রিত হওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ উপস্থাপন করে। এটি স্বৈরশাসকদের জন্য একটি নতুন শত্রু সংজ্ঞায়িত করে: "দীর্ঘদিন ধরে যদি তাদের কেবল রাজনৈতিক এবং খণ্ডিত শত্রু থাকে, তবে তারা এখন এমন বিরোধীদের খুঁজে পেয়েছে যারা লক্ষ্য চিহ্নিত করতে, সংহতি গড়ে তুলতে এবং বিক্ষোভ সংগঠিত করতে সামাজিক মিডিয়া ব্যবহার করে।  অর্থাৎ, নাগরিকদের মধ্যে যদি মতবিরোধ এবং ক্ষোভ সর্বদা বিদ্যমান থাকে, তবে সোশ্যাল মিডিয়া একটি প্রতিক্রিয়া সমন্বয় এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সরঞ্জাম সরবরাহ করে।

হংকংয়ের ছাতা বিপ্লব
[সম্পাদনা]

ছাতা বিপ্লব বা ছাতা আন্দোলন বলতে সার্বজনীন ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্রের জন্য হংকংয়ের প্রতিবাদকে বোঝায় যা ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ এর মধ্যে অকুপাই সেন্ট্রাল উইথ লাভ অ্যান্ড পিস নামে একটি গ্রুপকে ধন্যবাদ জানায়।  বেইজিং সরকারের বিরুদ্ধে হংকংয়ে অনুরূপ বিক্ষোভও ২০০৩ সালের জুলাইয়ে প্রায় অর্ধ মিলিয়ন লোককে আগ্রহী করেছিল, তবে যদিও একটি সফল ফলাফল ছিল যা হংকংকে চীনের হস্তক্ষেপ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিল, তাদের একই বৃদ্ধি এবং কভারেজ উভয়ই ছিল না ছাতা বিপ্লব।  প্রকৃতপক্ষে, ২০১৪ সালে সংগঠিত বিক্ষোভগুলি অনলাইন সমর্থনের একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক পেয়েছে এবং বিক্ষোভকারীরা নিজেরাই তাদের প্রকাশের ইভেন্টগুলিতে স্থানীয়তা এবং বিধিনিষেধকে ছাড়িয়ে গেছে।

বিক্ষোভ শুরুর দু'দিন পর অ্যাডমিরালটিতে দাঙ্গা পুলিশ কর্তৃক কাঁদানে গ্যাস এবং পিপার-স্প্রে করার পরে, জোসি তাও কাই-ই অবিলম্বে অনলাইনে তার সাথে কী ঘটেছিল তা ভাগ করে নিয়েছিলেন: "প্রথমবারের মতো আমি আসলে টিয়ার গ্যাস এবং মরিচ স্প্রে প্রত্যক্ষ করেছি। একেবারে ভয়ঙ্কর।  এটি অকুপাই সেন্ট্রাল আন্দোলনের সমর্থনে একটি প্রবাহ টুইট চালিত করে, যার ফলে এটি বিশ্বের নজরে আসে। দাঙ্গায় পুলিশি হস্তক্ষেপের শীর্ষে, হংকং সম্পর্কে প্রতি সেকেন্ডে 12 টি টুইট পোস্ট করা হয়েছিল, বিক্ষোভকারীদের প্রতি পুলিশের সহিংস আচরণের ছবি এবং বার্তা বিশ্বজুড়ে ব্যবহারকারীদের দ্বারা দেখানো এবং ভাগ করা হয়েছিল।  প্রাইসওয়াটারহাউসকুপার্স (পিডব্লিউসি) চীন ও হংকংয়ের অ্যানালিটিক্স কনসাল্টিং লিড স্কট লিকেন্সকে এই ইভেন্টগুলির বিষয়ে মন্তব্য করতে নিয়ে এসেছিল, "আমরা [সোশ্যাল মিডিয়ায়] সংযোগ স্থাপনের প্রগতিশীল নতুন উপায় দেখেছি, রিয়েল টাইমে এই জাতীয় কিছুর চাহিদা পরিবেশন করছি ... এবং নিশ্চিত করা যে আমরা সর্বদা সংযুক্ত আছি, [ঠিক তাই] বার্তাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।  উপরন্তু, ফেসবুক এবং টুইটারে অকুপাই সেন্টারের প্রোফাইল, প্রতিবাদ শুরুর মাত্র দুই দিন পরে যথাক্রমে ১০০,০০০ এবং ২৫,০০০ অনুসারী জড়ো হয়, এরপর অকুপাই বিরোধী শ্রোতাদের কাছে বিক্ষোভকারীদের কারণ ব্যাখ্যা করা এবং তাদের এই আন্দোলনে যোগ দিতে রাজি করানোর লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি পাতা প্রকাশ করা হয়।

লোকজন যেভাবে বিক্ষোভের ছবি, টুইট এবং ভিডিও শেয়ার করতে শুরু করেছে তা বেইজিং সরকারকে বিক্ষোভকারী এবং যারা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছে উভয়কেই সেন্সর করতে প্ররোচিত করেছে, প্রায় এক ডজন লোককে তদন্তের পরে আটক করা হয়েছে।  সেন্সরশিপের মূল ফোকাস ছিল টুইটারের চীনা সংস্করণ ওয়েইবো, বিশ্লেষণ রিপোর্ট করেছে যে শুধুমাত্র ২৮ সেপ্টেম্বর তারিখে সেন্সরশিপের হার তিয়েনআনমেন স্কয়ারের ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত সেন্সরশিপকে ছাড়িয়ে গেছে। যেহেতু লোকেরা ইনস্টাগ্রামে ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করছিল, তাই ফেসবুক এবং ইউটিউবের মতো ওয়েবসাইটগুলির চীনে পূর্বে নির্ধারিত সেন্সরশিপের সাথে একমত হয়ে অ্যাপটিতে অ্যাক্সেস অবরুদ্ধ করা হয়েছিল।

যেমনটি আশা করা হয়েছিল, এটি বিক্ষোভকারীদের থামাতে পারেনি: ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কগুলি ফায়ারওয়ালকে বাইপাস করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল এবং লক্ষ্যবস্তু সেন্সর বটগুলির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভুল বানানযুক্ত শব্দ এবং কোড ব্যবহার করা হয়েছিল। বিশেষত, বিক্ষোভকারীরা হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে একবারে এক জায়গায় বৈঠকের বার্তা সমন্বয় করে। ফায়ারচ্যাট অ্যাপ্লিকেশন, যা ব্যবহারকারীদের কাছাকাছি চ্যাটে জাল নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে ব্লুটুথ এবং সেলফোন রেডিওর মাধ্যমে যোগাযোগ করতে দেয়,[ কর্তৃপক্ষ যখন মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করার এবং ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক কেটে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল তখন ব্যবহার করা হয়েছিল।  এর অর্থ হ'ল যতক্ষণ না ফোনগুলি অন্যের সাথে সীমার মধ্যে ছিল, ততক্ষণ কর্তৃপক্ষের পক্ষে শারীরিকভাবে ফোন জব্দ করা ছাড়া বার্তা প্রবাহ রোধ করার কোনও উপায় ছিল না। শুধুমাত্র ২৯ সেপ্টেম্বর হংকংয়ের ফায়ারচ্যাট ব্যবহারকারীরা ৮০০,০০০ চ্যাট সেশনে জড়িত ছিল এবং এগুলিই কেবল ট্র্যাকযোগ্য ছিল। প্রকৃতপক্ষে ফায়ারচ্যাটের মালিকানাধীন সংস্থাটি কেবল অনলাইনে থাকা ব্যবহারকারীদের সাক্ষী হতে পারে তবে একবার তারা গ্রিড বন্ধ হয়ে গেলে, যোগাযোগকারী লোকের প্রকৃত সংখ্যা অনুমান করা যায় না। প্রথম দিনেই এক লাখেরও বেশি মানুষ অ্যাপটি ডাউনলোড করেছিল, লোকেরা যোগাযোগের জন্য এবং তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য উভয়ই ব্যবহার করেছিল, কারণ প্রাথমিক বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই ছাত্র সম্প্রদায়ের তরুণ ছিল।

২০১৪ সালের হংকং ছাতা বিপ্লবের মতো বিক্ষোভে ইন্টারনেট, অভিসারী প্রযুক্তি এবং সামাজিক মিডিয়া কেবল উদ্যোগ, একত্রীকরণ এবং সমন্বয়কে উৎসাহিত করার জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার সরবরাহ করে না বরং এই ঘটনাগুলির উপর একটি উইন্ডো তৈরি করে: যদি দমন, সেন্সরশিপ, তার নিজের নাগরিকদের বিরুদ্ধে সরকারের সহিংসতা ঘটে তবে পুরো বিশ্ব তাকিয়ে থাকবে।

অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট
[সম্পাদনা]

তথাকথিত অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট (ওডব্লিউএস) প্রতিবাদ আন্দোলন ২০১১ সালের গ্রীষ্মের শেষের দিকে নিউ ইয়র্কের অর্থনৈতিক জেলায় অবস্থিত জুকোটি পার্কে শুরু হয়েছিল এবং এটি মূলত অনলাইন সক্রিয়তা দ্বারা চালিত হয়েছিল। এই আন্দোলন, যা বিশ্বব্যাপী সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের অবসানের আহ্বান জানিয়েছিল এবং সরকারের উপর কর্পোরেট প্রভাবের পরিমাণকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল,[, ফেসবুক এবং ইউটিউবের মতো সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে এর বিশ্বব্যাপী মনোযোগ এবং অংশগ্রহণ বাড়িয়েছে।

প্রায় তিন বছর ধরে চলা আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক সংকট অতীত এবং প্রায় ছয় মাস ধরে চলছে আরব বসন্ত। অন্যদের মধ্যে, এই ঘটনাগুলি প্রতিবাদের উত্থানের প্রভাবক হিসাবে নির্ধারণ করা যেতে পারে। কানাডিয়ান, ভোগবাদবিরোধী, পরিবেশপন্থী ম্যাগাজিন অ্যাডবাস্টার্সের নির্বাহী সম্পাদক কেল লাসন ১৭ সেপ্টেম্বর তারিখে টুইটারের মাধ্যমে ওয়াল স্ট্রিট জেলায় প্রথম বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন। প্রায় ৫০০০ কর্মী উপস্থিত ছিলেন কিন্তু পুলিশ তাদের অর্থ জেলার ওয়াল স্ট্রিটে যাওয়ার ভান করেছিল। তা সত্ত্বেও, বিরোধীরা নিকটবর্তী জুকোটি পার্কে একটি শিবিরের ব্যবস্থা করতে সফল হয়েছিল যা তখন থেকে বিক্ষোভের ভিত্তি হিসাবে কাজ করে।  আরও ন্যায্য কর ব্যবস্থা এবং ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান হ্রাস করার জন্য আন্দোলনের আহ্বানটি "আমরাই 99%" স্লোগান দ্বারা সমর্থিত হয়েছিল। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আয়ের বৈষম্য এবং ধনী 1% এবং বাকি জনসংখ্যার মধ্যে সম্পদ বিতরণকে বোঝায় যা কয়েক মাস আগে বিশ্বব্যাংকের অর্থনীতিবিদ এবং প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ জোসেফ ই স্টিগলিটজ বলেছিলেন।  সেপ্টেম্বরে এই প্রথম পদক্ষেপগুলি একটি বড় মিডিয়া বা জনসাধারণের মনোযোগ পায়নি। ১ অক্টোবর ব্রুকলিন ব্রিজের উপর দিয়ে একটি বিক্ষোভের সময় ট্রাফিক বাধার কারণে পুলিশ ৭০০ জনেরও বেশি কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। এই হস্তক্ষেপ বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া এবং একটি বৃহত মিডিয়া কভারেজ সৃষ্টি করে যা আন্দোলনের সাফল্য হিসাবে দেখা যেতে পারে। এরপরে আন্দোলনটি সারা বিশ্বের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। অক্টোবরে, মাদ্রিদ থেকে ১৫ জন ইউরোপীয় আন্দোলন কর্মী আন্তর্জাতিক ব্যাংক এবং আর্থিক পর্যায়ে আন্দোলনের দাবির সম্প্রসারণের দাবিতে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দেয়। অবশেষে, তারা এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ৮২ টিরও বেশি দেশের জনগণকে অকুপাই আন্দোলনে যোগ দিতে এবং সমর্থন করতে উত্সাহিত করার জন্য এটি অর্জন করেছে। বস্তুনিষ্ঠ কারণগুলো এখন পর্যন্ত সমাধান না হওয়ায় আন্দোলনে লক্ষণীয় পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়নি।

স্যান্ডর ভেগের অর্গানাইজেশন / মোবিলাইজেশনে বর্ণিত হিসাবে,[ আন্দোলনটি আংশিকভাবে তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে সামাজিক নেটওয়ার্কের উপর ভিত্তি করে তার কর্মীদের অফ-লাইন কর্মের জন্য সংগঠিত করার জন্য ছিল। পিটার ডাহলগ্রেন উল্লেখযোগ্য সুবিধা বা মূল সরঞ্জামগুলি উল্লেখ করেছেন কারণ এই প্ল্যাটফর্মগুলি অন্যান্য অবস্থানগুলিতে পৌঁছানোর পরিমাণটি পরিবেশন করে এবং এমন একটি উপাদান হয়ে ওঠে যা অনেক আলোচনা বা বিশ্বব্যাপী সংযোগের সাথে একটি বিস্তৃত ওয়েব-ভিত্তিক ব্যস্ততাকে সহজতর করে।

এর মাধ্যমে, স্বাভাবিক ধরণের সামাজিক মিডিয়া সামগ্রী ভোক্তা একটি "প্রযোজক" এ স্থানান্তরিত হয়,[ কারণ তারা সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের তথ্য গ্রহণ করছে তবে নিজস্ব সামগ্রী ব্যবহারকারী-উত্পন্ন সামগ্রীও তৈরি করে। টুইটার বা ফেসবুকের মাধ্যমে ইউটিউব সামগ্রী ভাগ করে নেওয়া এবং বর্তমান সেল ফোন ফুটেজের পাশাপাশি ঐতিহাসিক সংরক্ষণাগার উপকরণগুলি ভাগ করে নেওয়া উন্নত সামাজিক মিডিয়া অনুশীলনের কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল।  সেপ্টেম্বরের 17 থেকে অক্টোবর 10 পর্যন্ত প্ল্যাটফর্ম টুইটার নিম্নলিখিত ট্র্যাফিক তৈরি করেছে।

অক্টোবরের শেষে "ওডাব্লুএস আন্দোলনের অবদান, পাশাপাশি একটি বিশাল বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক বর্ণালী জুড়ে গোষ্ঠী এবং ব্যক্তি সহ প্রায় 70,000 ফলাফল" ইউটিউবে

তবুও, ডাহলগ্রেন প্রকাশ করেছেন যে সেই রাজনৈতিক উত্পাদকদের ক্রিয়াকলাপগুলি অভিযোজনের ক্রমাগত প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত থাকে যখন ব্যবহারকারী প্রায়শই মূলধারার সংজ্ঞাগুলি 'দ্রুত হিমশীতল' করে। " এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে, অ্যাক্টিভিজম কম কার্যকর হওয়ার সমালোচক এই কারণে উত্থিত হয় যে সক্রিয়তাবাদের বেশিরভাগই "ক্লিকটিভিজম" বা "স্ল্যাকটিভিজম" এ রয়ে গেছে। অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট আন্দোলন প্রত্যাশিত ফলাফল না পাওয়ায় প্রকৃত অ্যাক্টিভিজম আন্দোলনে হারানো সক্রিয়তার এই যুক্তিটি আরও জোরদার হয়েছিল।

সম্মিলিত কর্ম দ্বিধা[

[সম্পাদনা]

সম্পাদনা] উৎস সম্পাদনা] হাওয়ার্ড রাইনগোল্ড, জন্ম ফিনিক্স, অ্যারিজোনা, একজন সমালোচক, লেখক এবং শিক্ষক যিনি ইন্টারনেটের মতো মিডিয়া যোগাযোগের সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রভাবগুলিতে বিশেষজ্ঞ। তিনি উপস্থিত ছিলেন রিড কলেজ যেখানে তিনি মন বৃদ্ধি এবং এর পদ্ধতিগুলির সাথে তাঁর আজীবন মুগ্ধতা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন। তার বইয়ে স্মার্ট মবস, তিনি ইন্টারনেটের উন্নয়ন সম্পর্কে কথা বলেছেন এবং তিনি সম্মিলিত কর্ম দ্বিধাদ্বন্দ্বের ধারণাটি সম্বোধন করেছেন, বিশেষত দ্বিতীয় অধ্যায়: সহযোগিতার প্রযুক্তি।  তিনি বলেছেন যে মিজুকো ইতো তাকে কিশোর গোষ্ঠী এবং মোবাইল ফোনের ব্যবহার সম্পর্কে বিভিন্ন আচরণ বুঝতে সক্ষম করে। তিনি জানতে চেয়েছিলেন যে এই ধরণের ক্রিয়াকলাপ পুরো সমাজের জন্য কীভাবে অর্থ বহন করতে পারে এবং তাই অধ্যায়ের বেশিরভাগ অংশ বন্ধু এবং সহকর্মী মার্ক স্মিথের সাথে তাঁর কথোপকথনের উপর ভিত্তি করে তৈরি। তিনি কালেক্টিভ অ্যাকশন অ্যাকশন দ্বিধাকে স্ব-স্বার্থ এবং জনসাধারণের পণ্যগুলির চিরস্থায়ী ভারসাম্য হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। এটি এমন একটি পরিস্থিতি যা অনেক ব্যক্তিকে উপকৃত করবে তবে ব্যয় এবং স্থানের মতো বিভিন্ন কারণগুলি এটি এক ব্যক্তির ক্ষেত্রে ঘটতে বাধা দেয়। আদর্শ পরিস্থিতিটি হ'ল ব্যয়টি অন্যদের মধ্যে ভাগ করা হয় এবং এটি এবং জনসাধারণের পণ্যগুলির মধ্যে একটি ভারসাম্য তৈরি করে, যা এমন একটি সংস্থান যা থেকে সকলেই উপকৃত হতে পারে, নির্বিশেষে তারা এটি তৈরি করতে সহায়তা করে বা না করে। জনসাধারণের পণ্যগুলির মূল্য তত বেশি লোকেরা তাদের ভাগ করে নেয়।

তিনি আরও বলেছেন যে যে লোকেরা এতে কোনও অবদান না রেখে জনসাধারণের ভাল উপভোগ করে তাদের ফ্রি রাইডার বলা হয়। রেইনগোল্ড স্মিথকে উদ্ধৃত করেছেন যিনি ফ্রি রাইডারদের সম্পর্কে আরও বর্ণনা করেছেন: "যদি প্রত্যেকে, তাদের নিজস্ব স্বার্থে, বিনামূল্যে যাত্রায় অভিনয় করে, তবে জনসাধারণের ভাল কখনই তৈরি হয় না, বা এটি অতিরিক্ত গ্রাস করা হয় এবং চলে যায়। সবাই কষ্ট পায়। আপনার দ্বিধা আছে। আপনার জন্য যা ভাল তা আমাদের জন্য খারাপ হতে পারে।

এলিনর অস্ট্রোম জাপানে এবং সুইডেনের চারণভূমিতে লোকেরা কীভাবে বনভূমি ভাগ করে নিয়েছিল তা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। রাইনগোল্ড স্মার্ট মবস-এ বলেছেন যে তিনি কমন পুল রিসোর্সেস (সিপিআরএস) এর আটটি 'ডিজাইন নীতি' সংজ্ঞায়িত করেছেন

গ্রুপ সীমানা স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত স্থানীয় চাহিদার সাথে মিলিত সমষ্টিগত পণ্য ব্যবহারের নিয়ম নিয়ম দ্বারা প্রভাবিত বেশিরভাগ ব্যক্তি সংশোধনে অংশ নেয় সরকার কর্তৃক গৃহীত নিজস্ব বিধি প্রণয়নে সম্প্রদায়ের অধিকার
নিয়ম মেনে চলা নিশ্চিত করার জন্য সম্প্রদায় পর্যবেক্ষণ করে ব্যবহৃত নিষেধাজ্ঞার স্নাতক সিস্টেম সম্প্রদায়ের কম খরচে দ্বন্দ্ব সমাধানের প্রক্রিয়াগুলিতে অ্যাক্সেস রয়েছে বৃহত্তর সিস্টেম বিধান, পর্যবেক্ষণ এবং দ্বন্দ্ব সমাধানে সিপিআরগুলি নেস্টেড উদ্যোগের একাধিক স্তরে সংগঠিত হয়

এগুলি ফ্রি রাইডিংয়ের সাথে মোকাবিলা করে এবং এর পরে স্ব-সংগঠিত শাসন ব্যবস্থার সাফল্যকে প্রভাবিত করে বলে বিশ্বাস করা বেশ কয়েকটি অতিরিক্ত ভেরিয়েবল অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রসারিত করা হয়েছে।

ডিজিটাল মিডিয়ায় গোপনীয়তা

[সম্পাদনা]

ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বিশ্বে, গোপনীয়তা অতীতের বিষয় হয়ে উঠছে। ঐতিহ্যগত অর্থে, "বাস্তব" বা "শারীরিক" বিশ্বে সত্যিকারের গোপনীয়তা এমন কিছু যা অনেক লোক চেষ্টা করে এবং পূর্বে অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল। যাইহোক, ইন্টারনেটের প্রবর্তনের সাথে সাথে আমাদের গোপনীয়তার বিভ্রম দেওয়া হয় তবে খুব কমই আমরা আসলে এটি পাই।

ইন্টারনেটে আমরা যা কিছু করি তা ট্র্যাক করা হয়, আমাদের সমস্ত তথ্য সংরক্ষণ করা হয় এবং যে কোনও সময়ে ফিরিয়ে আনা যায়। এমনকি ব্যবহারকারী তা মুছে ফেলার চেষ্টা করলেও। আমাদের অবস্থান থেকে শুরু করে আমাদের কেনাকাটার অভ্যাস পর্যন্ত সমস্ত কিছু ট্র্যাক এবং সংরক্ষণ করা হয় এবং সংস্থাগুলি দ্বারা কেনা যায়। যদিও অনেক ব্যবহারকারী মোটেও ব্যক্তিগত হতে পছন্দ করেন না এবং ডিজিটাল মিডিয়াকে তাদের জীবন সম্পর্কে সর্বজনীনভাবে পোস্ট করার জন্য একটি দুর্দান্ত আউটলেট হিসাবে দেখেন, অনেক ব্যবহারকারী যারা মনে করেন যে তাদের কাছে আসলে বিকল্প নেই। গোপনীয়তা অনলাইন একটি অক্সিমোরনের কিছু হয়ে উঠেছে কারণ দুটি একে অপরের সাথে সম্পূর্ণ বেমানান, নিম্নলিখিত বিভাগগুলিতে এই বিষয়টি কীভাবে ব্যবহারকারীরা অনলাইনে কোনও রূপে প্রকৃত গোপনীয়তা অর্জন করতে পারে না তা বর্ণনা করতে যাবে।

গোপনীয়তা অধিকার এবং গোপনীয়তা সেটিংস সম্পর্কে সচেতনতা

[সম্পাদনা]

আপনি যখন অনলাইনে থাকেন, আপনি প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপে নিজের সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করার ঝোঁক রাখেন; এটি আপনার নাম থেকে শুরু করে আপনার ঠিকানা পর্যন্ত হতে পারে। আপনি অনলাইনে যে তথ্য সরবরাহ করেন তা একটি ধাঁধার অনুরূপ যা সম্পূর্ণ চিত্র প্রকাশিত হওয়ার আগে সংযুক্ত হওয়া দরকার, উদাহরণস্বরূপ, Facebook-এ সাইন আপ করার সময় আপনি যে তথ্য প্রদান করতে পারেন তা অনলাইন শপিংয়ের সময় আপনি যে তথ্য দিতে পারেন তার সাথে একত্রিত হতে পারে। যখন এই সমস্ত তথ্য একত্রিত হয় তখন আপনি অবাক হতে পারেন যে একজন ব্যক্তি আপনার সম্পর্কে কতটা জানতে পারে।

বিশ্বব্যাপী নজরদারি প্রকাশগুলি ডিজিটাল যুগে গোপনীয়তার অধিকার সম্পর্কে বিতর্কের সূত্রপাত করেছিল, তাই এটি প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয় যে আমাদের গোপনীয়তার অধিকারগুলি আরও বিস্তারিতভাবে অন্বেষণ করা হয়।

এক উপায়ে বা অন্যভাবে আমরা সকলেই অনলাইনে আমাদের গোপনীয়তা এবং আমাদের গোপনীয়তার অধিকারগুলির সাথে উদ্বিগ্ন, কারণ আমাদের সকলের জীবনের দিকগুলি রয়েছে যা আমরা অন্যদের থেকে রক্ষা করতে চাই। এতটাই যে এটি একটি মৌলিক মানবাধিকারে পরিণত হয়েছে এবং আমাদের অধিকার রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। এই নিবন্ধটি অনলাইনে আমাদের গোপনীয়তা অধিকার সম্পর্কে গভীরভাবে বোঝার দেয়।

অনলাইনে আমাদের গোপনীয়তা অধিকারগুলি বোঝার জন্য, নিম্নলিখিত বিষয়গুলি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ:

সামাজিক নেটওয়ার্কিং- আমরা কীভাবে আমাদের জনসাধারণের সত্ত্বাকে উন্নত বা বিকৃত করার জন্য গোপনীয়তা সেটিংস ব্যবহার করতে পারি

আপনি ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করার সম্ভাবনা রয়েছে এমন তিনটি প্রধান উপায় নিম্নরূপ; একটি আইএসপি, একটি মোবাইল ফোন ক্যারিয়ার বা একটি ওয়াই-ফাই হটস্পট। ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত প্রতিটি কম্পিউটারের একটি অনন্য আইপি ঠিকানা (ইন্টারনেট প্রোটোকল ঠিকানা) থাকে এবং এটি সেই সংখ্যা যা আসলে আপনাকে ইন্টারনেটে তথ্য প্রেরণ এবং গ্রহণ করতে দেয়। আপনি যখন কোনও ওয়েবসাইট পরিদর্শন করেন, সাইটটি আপনার আইপি ঠিকানাটি দেখতে পারে যা সাইটটিকে আপনার ভৌগলিক অঞ্চলটি জানাতে পারে। তাছাড়া, এমন উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি আপনার আইপি ঠিকানাটি ব্লক করতে পারেন যেমন টর প্রকল্প ওয়েবসাইট

তদুপরি, প্রযুক্তির অগ্রগতি অব্যাহত থাকায় আমাদের মধ্যে অনেকেই এখন আমাদের স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করে। এইভাবে আপনি একটি ডেটা প্ল্যান ব্যবহার করে ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করেন, যা আপনার ফোন পরিষেবা (ভোডাফোন, থ্রি, টি-মোবাইল) এর সাথে আবদ্ধ। আপনার ফোন সরবরাহকারী আপনার ব্যবহার সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করে। ওয়াই-ফাই হটস্পটগুলি গুরুতর সুরক্ষা সমস্যা উপস্থাপন করে এবং আপনি কোনও Wi-Fi হটস্পট সেট আপ করার আগে বিধি ও শর্তাবলী পড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে

গুগল এবং ইয়াহুর মতো অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলিতে আপনার প্রতিটি অনুসন্ধান ট্র্যাক করার ক্ষমতা রয়েছে। তারা আপনার আইপি ঠিকানা, অনুসন্ধানের সময় এবং ব্যবহৃত অনুসন্ধান পদগুলি রেকর্ড করার ক্ষমতা রাখে। প্রধান সার্চ ইঞ্জিনগুলি এই বিতর্কে ওজন করে বলেছে যে আরও ভাল পরিষেবা সরবরাহ করতে এবং দ্রুত এবং কার্যকরভাবে জালিয়াতি মোকাবেলা করার জন্য আইপি ঠিকানাগুলি অ্যাক্সেস করা দরকার। গুগল এবং ইয়াহু এখন এই তথ্য সংরক্ষণের সময় এক বছর থেকে কমিয়ে ৯ মাস করেছে।

DuckDuckGo একটি সার্চ ইঞ্জিন যা "ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ বা ভাগ করে না" তাই আপনি যদি আপনার আইপি ঠিকানা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হন তবে আমাদের কাছে অন্যান্য বিকল্প উপলব্ধ রয়েছে। যদিও এগুলি সম্পর্কে ব্যাপকভাবে কথা বলা হয় না, সুতরাং আপনি যদি তাদের সম্পর্কে না জানেন তবে আপনি সম্ভবত ডাকডাকগোয়ের মতো সাইটগুলির অস্তিত্ব কখনও ভাবেন না।

মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে

মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলি সমস্ত ধরণের ডেটা সংগ্রহ করতে পারে এবং এটি অ্যাপ প্রস্তুতকারক বা তৃতীয় পক্ষের বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছে প্রেরণ করতে পারে, যা পরে ভাগ করা বা এমনকি বিক্রি করা যায়। একটি অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টল করে আপনি এটিকে আপনার ফোনের নির্দিষ্ট ডেটা অ্যাক্সেস করার অনুমতি দিচ্ছেন। স্পষ্টতই, প্রথম প্রশ্ন, যা অনেক লোক জিজ্ঞাসা করে তা হ'ল এটি কী ডেটা সংগ্রহ করে? এই উত্তরগুলি সাধারণত গোপনীয়তার শর্তাদি এবং শর্তাবলীতে থাকবে, তবে অনেক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এই শর্তাদি সরবরাহ করে না। সংগৃহীত ডেটাতে এমন জিনিস অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে যেমন; আপনার ফোন পরিচিতি, কল লগ, ইন্টারনেট ডেটা ইত্যাদি

সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুক টুইটার টাম্বলার

আমাদের অধিকাংশের মধ্যে কী মিল রয়েছে? আপনি যদি সামাজিক নেটওয়ার্কগুলি ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ লোকের মধ্যে একজন হন তবে একটি অনলাইন সম্পর্কের মাধ্যমে আপনি তাদের সাথে যুক্ত হওয়ার একটি শক্তিশালী সম্ভাবনা রয়েছে। আপনি অনলাইনে আপনার পরিচিতিদের সাথে যে তথ্য শেয়ার করেন তা সম্পূর্ণরূপে আপনার উপর নির্ভর করে। যাইহোক, আপনি অনলাইনে পোস্ট করা তথ্য দিয়ে অন্য লোকেরা কী করে তা আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না এবং অনলাইনে পোস্ট করা তথ্যের এই গৌণ ব্যবহার একটি বড় সমস্যা।

এই ওয়েবসাইটটি http://www.pewinternet.org/2013/05/21/teens-social-media-and-privacy/ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের শতাংশ যারা প্রকৃতপক্ষে তাদের গোপনীয়তা সেটিংস ব্যবহার করে এবং তাদের সম্পর্কে কতটা সচেতন সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে যায়।

আপনার সামাজিক মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে গোপনীয়তা সেটিংসকে সর্বোচ্চ স্তরে সামঞ্জস্য করে এটি মাধ্যমিক ব্যবহারকারীদের দ্বারা ফাঁস হওয়া তথ্যের পরিমাণ সীমাবদ্ধ করতে পারে, তবে এটি পুরোপুরি বন্ধ করে না। এটি কীভাবে আমরা নিজের চিত্র উন্নত করতে অনলাইনে আমাদের গোপনীয়তা সেটিংস ব্যবহার করি তা ঘিরে কিছু বিতর্ক নিয়ে আসে। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের অনলাইন পরিচয় বর্ণনামূলক হতে পারে বা এটি বাস্তব হতে পারে, অনলাইন উপস্থিতি আমাদের একটি গল্প নির্মাণ করে বলে মনে হয় তবে অনেক উপায়ে এটি আমাদের একটি বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গিও চিত্রিত করে। আমাদের নিজেদেরকে প্রশ্ন করতে হবে, আমাদের প্রকৃত পরিচয় কি আমাদের অনলাইন পরিচয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ? নাকি আমরা আমাদের জীবনের একটি আখ্যান তৈরি করতে গোপনীয়তা সেটিংস ব্যবহার করি।


ফেসবুক ট্যাগিং ও ফেসিয়াল রিকগনিশন

একটি বিষয় যা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা অজানা থাকতে পারে তা হ'ল ফেসবুকে ফটোগ্রাফগুলিতে লোকদের ট্যাগ করার মাধ্যমে অনেক ব্যবহারকারী অজানা থাকতে পারে যে তারা কেবল ছবিগুলি ক্রমবর্ধমান বিস্তৃত দর্শকদের কাছে দৃশ্যমান করছে না, বরং ফেসবুকের ডাটাবেসে অবদান রাখতে এবং মুখের স্বীকৃতি প্রযুক্তিকে উন্নত করতে সহায়তা করছে। কেবল অনেকের কাছে গোপনীয়তার আক্রমণ নয়, ট্যাগিংয়ের প্রতিক্রিয়াগুলির ক্ষেত্রে মানুষের বোঝার অপব্যবহার, যা ব্যবহারকারীদের কাছে স্পষ্ট করা হয় না। জ্ঞানীয় উদ্বৃত্তের এই প্রয়োগ,[ সামাজিক মিডিয়া ব্যবহারকারীদের উপ-পণ্যগুলি ব্যবহার করে আপাতদৃষ্টিতে নিরীহ ট্যাগিং, বিশ্বব্যাপী মানুষের গোপনীয়তা এবং ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের আক্রমণে বৃহত্তর স্কেলে অবদান রাখছে। ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি উন্নত করতে ফেসবুককে এইভাবে সহায়তা করার মাধ্যমে (বেশিরভাগ অংশে) ফেসবুককে এইভাবে সহায়তা করে, এটি ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনা হয়ে ওঠে যে ব্যক্তিদের অনলাইন ক্রিয়াকলাপ তাদের জ্ঞান বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে আন্তঃসংযুক্ত হতে পারে, যা তাদের ট্যাগ করা হয়। ট্যাগিং স্বয়ংক্রিয় হয়ে উঠতে পারে যা ব্যবহারকারীর চিত্রটি কীভাবে জনসাধারণের ক্ষেত্রে প্রদর্শিত হয় তার উপর নিয়ন্ত্রণের অংশটি সরিয়ে নেবে।


এই ধরনের প্রযুক্তির জন্য একটি একক ছবি থেকে একজন ব্যক্তিকে সনাক্ত করার ক্ষমতা [56] ব্যক্তিদের এলোমেলোভাবে অনলাইনে অনুসন্ধান করতে পারে, উদাহরণস্বরূপ, রাস্তায় তাদের পাশ দিয়ে যেতে পারে এবং একটি ছবি তুলতে পারে। এটি ইন্টারনেটে রাখলে তারা অনলাইনে ভাগ করে নেওয়া যে কোনও পরিমাণ সংযুক্ত ব্যক্তিগত তথ্য আনতে পারে, সুরক্ষা এবং গোপনীয়তার জন্য উদ্বেগ অফলাইনেও নিয়ে আসে। সেটিংস পরিচালনা বা অপ্ট আউট করার ক্ষমতা সর্বদা এই জিনিসগুলি রোধ করতে পারে তবে সরবরাহকারী এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে যোগাযোগের অভাব এখানে প্রধান সমস্যা- অদূর ভবিষ্যতে তাদের কার্যকলাপ কীভাবে নিজেদের এবং তাদের চেনাশোনাকে প্রভাবিত করতে পারে সে সম্পর্কে অনেকেই সম্ভবত অসচেতন, কারণ এই তথ্যটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় না এবং বিশ্বব্যাপী এটি প্রভাবিত করে এমন লোকের সংখ্যা সত্ত্বেও অবশ্যই সাধারণ জ্ঞান নয়।

ফেসিয়াল রিকগনিশনের বাইরেও ফেইসবুকের চুল, পোশাক বা শরীরের আকৃতির মতো অন্যান্য বৈশিষ্ট্য দেখে ট্যাগ শনাক্ত ও পরামর্শ দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ছে।  যে কোনও কারণে তাদের মুখের ছবিগুলিতে ভাগ করে নিতে বা ট্যাগ করতে অস্বীকার করে তাদের শারীরিক পরিচয় গোপন রাখতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা এখন তাদের গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য আরও হুপের মধ্য দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হচ্ছে যখন তারা কেবল অনলাইনে নিজের সম্পূর্ণ চিত্র চিত্রিত করার পরিবর্তে পরিচিতিগুলিতে পৌঁছানোর জন্য নেটওয়ার্কটি ব্যবহার করতে চাইতে পারে।

ডেটা এবং ট্র্যাফিক ট্র্যাকিং

[সম্পাদনা]

একবিংশ শতাব্দীতে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময়, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা অনলাইন ব্যবহারকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৮৯% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তাদের অনলাইন প্রাইভেসি নিয়ে ক্রমশ চিন্তিত হয়ে পড়ছেন।  যাইহোক, বেশিরভাগ ব্যক্তি বুঝতে পারে না যে তাদের বেশিরভাগ অনলাইন কার্যকলাপ বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে ট্র্যাক করা হয় এবং খুব কম অনলাইন কার্যকলাপ ব্যক্তিগত। ডেটা ট্র্যাকিং, অন্যথায় আচরণগত লক্ষ্যবস্তু হিসাবে পরিচিত, এখনও নতুন নয়;

 "Most people have no idea this is going on" - Sharon Goott Nissim, Electronic Privacy Information Center

ওয়েবসাইট, সংস্থাগুলি এবং ওয়েব ব্রাউজারগুলি বিভিন্ন পদ্ধতিতে এবং বিভিন্ন কারণে ব্যক্তিগত তথ্য সঞ্চয় করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, এটি ব্যবহারকারীর অনলাইন অভিজ্ঞতাকে তারা যে জিনিসগুলি দেখতে চায় তার সাথে সামঞ্জস্য করতে ব্যবহৃত হয়। যাইহোক, যেহেতু এই অনলাইন ডেটা ট্র্যাকিং পদ্ধতিগুলির মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যের সুনির্দিষ্টতা খুব কমই সংগ্রাহকের সাথে প্রচার করা হয় তাই আমাদের ব্যক্তিগত ডেটা যে সমস্ত জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে তা জানা মুশকিল।

এনক্রিপশন

[সম্পাদনা]

এনক্রিপশন হ'ল সুরক্ষার একটি ফর্ম যা সংস্থাগুলি তাদের সংগ্রহ করা ব্যক্তিগত ডেটা সুরক্ষিত করার জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এনক্রিপশন "বিশ্রামের সময়" ডেটা সুরক্ষিত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন কম্পিউটার, স্টোরেজ ডিভাইস এবং মোবাইল ফোনে সঞ্চিত তথ্য। অনলাইন স্টোরেজে থাকা ব্যক্তিগত ডেটা এনক্রিপ্ট করা কোনও শারীরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ হলে এটি রক্ষা করতে সহায়তা করে।

এনক্রিপশন ট্রানজিটে ডেটা সুরক্ষিত করতেও ব্যবহৃত হয়, উদাহরণস্বরূপ নেটওয়ার্কগুলির মাধ্যমে ডেটা স্থানান্তরিত হচ্ছে, যেমন ইন্টারনেট, ই-কমার্স, মোবাইল টেলিফোন, ব্লুটুথ ডিভাইস এবং ব্যাংক স্বয়ংক্রিয় টেলার মেশিন।

সুরক্ষার এই পদ্ধতিটি এখন সাধারণত বিভিন্ন ধরণের বেসামরিক সিস্টেমের মধ্যে তথ্য সুরক্ষায় ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, কম্পিউটার সিকিউরিটি ইন্সটিটিউট ২০০৭ সালে রিপোর্ট করে যে ৭১% কোম্পানী ডাটা ট্রানজিটে এনক্রিপশন ব্যবহার করে, এবং ৫৩% ডাটা সংরক্ষণের সময় এনক্রিপশন ব্যবহার করে।

কুকিজ

[সম্পাদনা]

এখন, যখন ব্যক্তিরা প্রথমবারের মতো কোনও ওয়েবসাইটে ক্লিক বা লগ ইন করে, তখন তারা একটি বার্তা পেতে পারে যা 'এই সাইটটি কুকি ব্যবহার করে, আপনি কি এতে সম্মত হন? বেশিরভাগ ব্যবহারকারী স্ক্রিন থেকে বার্তাটি সরাতে কেবল 'হ্যাঁ' ক্লিক করেন যাতে তারা সবেমাত্র কী সম্মত হয়েছেন তা না জেনেই তারা ব্রাউজিং চালিয়ে যেতে পারেন।

কুকিজ হ'ল ডেটা ছোট বিট যা ব্যবহারকারী ব্রাউজ করার সময় ওয়েবসাইট, ওয়েব ব্রাউজার এবং সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলি দ্বারা সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করা হয়। প্রতিবার যখন একজন ব্যবহারকারী একটি অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে বা কোনও ওয়েবসাইটে ক্লিক করে, ব্রাউজার ব্যবহারকারীর পূর্ববর্তী কার্যকলাপকে অবহিত করার জন্য কুকিটিকে সার্ভারে ফেরত পাঠায়।  কুকিজগুলি মূলত ব্যবহারকারীদের অনলাইন অভিজ্ঞতা উপযোগী করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, ওয়েবসাইটগুলিকে তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মনে রাখার অনুমতি দিয়ে। কুকিজ পাসওয়ার্ড এবং ফর্ম সামগ্রী সংরক্ষণ করতে পারে যা ব্যবহারকারী পূর্বে প্রবেশ করেছে, যেমন ক্রেডিট কার্ড নম্বর বা ঠিকানা; উদাহরণস্বরূপ, Google AutoFill এবং অনুরূপ সরঞ্জামগুলি কুকি স্টোরেজ দ্বারা চালিত হয়৷

বিজ্ঞাপন প্রস্তাবনা

[সম্পাদনা]

কুকি স্টোরেজ থেকে বিজ্ঞাপন ট্র্যাকিং এবং বিজ্ঞাপন সুপারিশগুলির বিকাশ এসেছিল। ব্যক্তিরা অনলাইনে কোন ওয়েবসাইটগুলি দেখেন, অ্যামাজনে তাদের শপিং বাস্কেটে কী রাখেন ইত্যাদি এবং ফেসবুকে তারা কী পৃষ্ঠাগুলি পছন্দ করেন তার সঞ্চিত ডেটা বিশ্লেষণ করে, সার্চ ইঞ্জিন এবং ফেসবুকের মতো সাইটগুলি নির্দিষ্ট পণ্যগুলি প্রচার করতে সক্ষম হয় যা তারা মনে করে যে ব্যবহারকারী কিনবে / উপভোগ করবে, এই পূর্ববর্তী কার্যকলাপের উপর ভিত্তি করে।

এই সমস্ত পদ্ধতি অনলাইনে সরকারী এবং বেসরকারী ক্ষেত্রের মধ্যে পার্থক্যকে অস্পষ্ট করে দেয়। ব্যক্তিরা যাকে 'প্রাইভেট ব্রাউজিং' বলে মনে করেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা সত্যিকার অর্থে ব্যক্তিগত নয়। ব্যক্তিরা ব্যক্তিগত ব্রাউজিং ইতিহাস, তারপরে ফেসবুক নিউজ ফিড এবং 'প্রস্তাবিত' ইউটিউব ভিডিওগুলির মতো পাবলিক ডোমেন হিসাবে বিবেচিত হয় বলে মনে হয়। যদিও এটি কেবলমাত্র ব্যক্তি যিনি বিজ্ঞাপনের সুপারিশগুলির মতো জিনিসগুলি দেখতে পারেন, তবে এটি বাহ্যিকভাবে সর্বজনীন বলে মনে হয় কারণ এটি একটি পাবলিক মাধ্যম। শুধু তাই নয়, ব্যক্তিরা ব্রাউজিং ক্রিয়াকলাপ ইতিমধ্যে প্রথম স্থানে সংস্থাগুলি দ্বারা সংরক্ষণ এবং ভাগ করে নেওয়ার বিষয়টি এই তথ্যটিকে কিছুটা সর্বজনীন করে তোলে।

ট্যাগ & গোপনীয়তা: তারা কীভাবে অনলাইন পারফরম্যান্সকে আকার দেয়

[সম্পাদনা]

ইন্টারনেটে, ট্যাগিংয়ের অর্থ বিভিন্ন জিনিস হতে পারে তবে সাধারণত নির্দিষ্ট বিষয় বা নির্দিষ্ট লোকের সাথে বিভিন্ন তথ্যের টুকরো লিঙ্ক করার উপায় হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ট্যাগিংয়ের সর্বাধিক বিখ্যাত ব্যবহার হ'ল টুইটার থেকে হ্যাশট্যাগগুলি ভাইরাল হচ্ছে, তবে দৃশ্যমানতা অর্জনের জন্য ট্যাগিং ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তাই কোনও ব্যক্তি বা তাদের সামগ্রী কতটা "সর্বজনীন" তা বাড়িয়ে তুলছে। ট্যাগিং এবং গোপনীয়তা সেটিংস প্রায়শই একে অপরের সাথে দ্বন্দ্ব করে, কারণ একটি মনোযোগ আকর্ষণ করতে ব্যবহৃত হয় এবং অন্যটি কম মনোযোগ পেতে ব্যবহৃত হয়, বিশেষত জনসাধারণের কাছ থেকে।

ট্যাগিং মানুষের মধ্যে একটি অনলাইন সংযোগ প্রতিনিধিত্ব করে এবং একটি ডিজিটাল সম্পর্ক বা অ্যাকোয়ান্টেন্স তৈরি হয়। এটি একাধিক সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য এবং ব্যবহারকারীদের একত্রিত করার এবং মিথস্ক্রিয়া সরবরাহ করার উপায় হিসাবে কাজ করে। তবে, গোপনীয়তা এই মিথস্ক্রিয়াটির জন্য বাধা হতে পারে, পৃষ্ঠাগুলিতে অনুমোদিত সামগ্রী এবং এটি অ্যাক্সেস করা লোকদের ধরণের সীমাবদ্ধ করে।

ফেসবুক

[সম্পাদনা]

ট্যাগিং সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যবহৃত মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি। ফেসবুক বৈশিষ্ট্য এবং অন্যান্য ব্যবহারকারীদের সাথে মিথস্ক্রিয়া উন্নত করতে এই ট্যাগিং উপাদান ব্যবহার করে। ফেসবুকের এই সাধারণভাবে ব্যবহৃত বৈশিষ্ট্যটি ব্যবহারকারীদের একমাত্র ব্যবহারকারীর পরিবর্তে কোনও কিছুর অংশ বোধ করতে সহায়তা করে। সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের একটি ভিন্ন পরিচয় তৈরি করতে পারে এবং "সামাজিক সীমানা নিয়ে আলোচনা" করতে পারে।

ট্যাগিং ব্যবহারকারীদের মধ্যে একটি অনলাইন সংযোগের প্রতিনিধিত্ব করে এবং সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতে দেখা যায়। ট্যাগগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে জড়িত

অন্যান্য ব্যক্তি এবং তাই এই ফটো / ভিডিও / স্ট্যাটাস সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে প্রদর্শিত হয়। তবে এখানেই ট্যাগিং খুব সমস্যাযুক্ত হতে পারে। একজন ব্যবহারকারীর প্রদর্শিত সামগ্রীর উপর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং ট্যাগ করা ব্যবহারকারীদের নির্বাচন করার ক্ষমতা রয়েছে এবং সামগ্রীর সাথে যেতে ক্যাপশন রয়েছে। প্রযুক্তির কাঠামো (তাদের কার্যকারিতা এবং প্রাপ্যতা) আমাদের নিজস্ব চিত্র এবং আমরা যে বিশ্বে বাস করি তার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে লোকেরা একাধিক অন্যান্য ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে অনলাইনে একটি ব্যক্তিত্ব তৈরি করতে পারে এবং এটি প্রায়শই তারা নিজেরাই অনলাইনে তৈরি করার চেষ্টা করছে এমন ব্যক্তিত্ব এবং চিত্রের সাথে দ্বন্দ্ব এবং বিরোধিতা করতে পারে।

ফেসবুকের এই ফ্যাক্টরটি ব্যবহারকারীদের ট্যাগ করা চিত্রটি নিয়ন্ত্রণ করার কোনও ক্ষমতা অস্বীকার করে, উদাহরণস্বরূপ পোস্ট করা হয়েছে। যাইহোক, ফেসবুকের একটি সেটিংস রয়েছে যা ব্যবহারকারীরা তাদের পৃষ্ঠায় পোস্ট করা সামগ্রী অনুমোদন করতে পারে, তবে ফেসবুক এই সেটিংটি প্রচার করে না কারণ এটি অ্যাপ্লিকেশনটির ব্যবহারকে প্রায় অস্বীকার করে।

স্রেফ কোনো ছবিতে ট্যাগ লাগিয়ে তা ভাইরাল হওয়ার সুযোগ তৈরি করে। বন্ধু হোক বা সেলিব্রিটি, এই ছবি বৃহত্তর পরিসরের মানুষের দেখার সুযোগ রয়েছে। এখানেই প্রচার এবং গোপনীয়তার বিষয়টি চালু করা হয়। যদিও একটি প্রোফাইল ব্যক্তিগত, একটি ছবি প্ল্যাটফর্ম জুড়ে দেখা এবং উপলব্ধ হতে পারে। এটি প্রশ্ন নিয়ে আসে - আমরা কি ব্যক্তিগত যদিও একটি ট্যাগের কারণে আমাদের বিভিন্ন পৃষ্ঠায় দেখা যায়?

একটি ট্যাগও প্রতিনিধিত্ব করে - কোনও ব্যবহারকারী অন্য কারও দ্বারা ট্যাগ করা হচ্ছে - একটি মধ্যস্থতাহীন স্ব। যেহেতু চিত্রটি একটি কেন্দ্রীয় ব্যবহারকারী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাই ফটোতে ট্যাগ করা অন্য সকলেই নিজের একটি অ নির্বাচনী সংস্করণ প্রদর্শন করে; যা নিজেদের দেখানো চিত্র থেকে ভিন্ন হতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ডিজিটাল ফটোগ্রাফ অতীত অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করতে পারে, পুনরায় বলা যেতে পারে এবং আমাদের নিজস্ব পরিচয়ের অভিব্যক্তি হতে পারে।  এটি অনলাইনে কোনও ব্যক্তির একটি বিকল্প এবং সম্ভবত আরও বাস্তবসম্মত চিত্র তৈরি করে, তাদের এত 'নিখুঁত' এবং 'আদর্শবাদী' হওয়ার বাধা ভেঙে দেয়। এটি সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে আরও রায় তৈরি করতে শুরু করে এবং শেরি টার্কল যেমন বলেছেন: "ঝুঁকি যে আমরা অন্যকে অ্যাক্সেস করার বস্তু হিসাবে দেখতে আসি"।

অনলাইন পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে, এটি বিভিন্ন উপায়ে প্রভাবিত হয়।

ট্যাগিং অনলাইন পারফরম্যান্সে ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে। ব্যবহারকারীর এই প্রতিক্রিয়া ব্যবহারকারীদের নৈতিকতা কিন্তু পরিচয় বুঝতে আকর্ষণীয়।

ব্যক্তির ব্যক্তিগত প্রোফাইলগুলি মধ্যস্থতা করা হয় এবং সাবধানে তাদের দ্বারা নির্বাচিত হয়, যাতে একটি পছন্দসই স্ব তৈরি করা যায়। যে কোনও একটি 'ট্যাগ' ব্যক্তি অনলাইনে যে চিত্র এবং ব্যক্তিত্ব তৈরি করার চেষ্টা করছে তা পরিবর্তন করতে পারে। যেহেতু ট্যাগগুলি অন্যদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাই এটি অনলাইন পারফরম্যান্সের আকার পরিবর্তন করে, কারণ এটি এমন কিছু জিনিস সেন্সর করতে পারে না যা ব্যক্তি অনলাইনে প্রদর্শিত হতে চায় না।

এই অনলাইন পারফরম্যান্সটি দুটি দিক নেয়:

  • কাঙ্ক্ষিত চিত্র - অন্যের দ্বারা পছন্দসই একটি দিক এবং আমাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি 'ইতিবাচক' চিত্র।
  • 'বাস্তব জীবন' চিত্র - অন্যদের দ্বারা ট্যাগ এবং পোস্ট যা আরও বাস্তবসম্মত, ভিন্ন দিক উপস্থাপন করে।

গোপনীয়তা একটি নিষ্ক্রিয় কর্মক্ষমতা তৈরি করতে পারে। এটি অ্যাপ্লিকেশনটির বৈশিষ্ট্যগুলি সীমাবদ্ধ করতে পারে এবং তাই ব্যবহারকারীদের সামগ্রিক অনলাইন ক্রিয়াকলাপ এবং কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কনভেনশনগুলি গ্রহণযোগ্য সামগ্রীর সীমানা তৈরি করে।

ট্যাগিং লিঙ্গ হিসাবেও দেখা যেতে পারে কারণ কলেজ শিক্ষার্থীদের ট্যাগিংয়ের একটি পরীক্ষায় দেখা গেছে যে ছবি পোস্ট / ট্যাগ করা এবং মন্তব্যের জন্য পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি ছিলেন।

অনলাইন পারফরম্যান্স কার্যকলাপের চারপাশে কাঠামোগত হয় যা মূলত ট্যাগিংয়ের সাথে জড়িত। ব্যক্তিগত হওয়া ফেসবুকের ফাংশনের চারপাশে সীমানা তৈরি করে এবং তাই যখন ট্যাগিং সীমাবদ্ধ থাকে; প্রোফাইলটি কম বিশ্বাসযোগ্য এবং প্রশংসিত।

টুইটার

[সম্পাদনা]

বেশিরভাগ টুইটার ব্যবহারকারীর বয়স 18-34 বছরের মধ্যে এবং স্নাতক ডিগ্রী সহ  এই ফর্ম মিডিয়া ব্যবহার করে এমন একটি নির্দিষ্ট কুলুঙ্গি রয়েছে বলে মনে হয়।

টুইটারে ট্রেন্ডিং অন্যান্য ব্যবহারকারীদের সেই বর্তমান সময়ে সবচেয়ে বেশি আলোচিত কী তা দেখার উপায় হিসাবে ব্যবহৃত হয়। হ্যাশ ট্যাগগুলি ব্যবহারকারীদের দ্বারা ব্যবহৃত হয় এবং যদি জনসাধারণের যথেষ্ট পরিমাণে নির্দিষ্ট হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহার করে তবে এটি এমন একটি বিষয় তৈরি করে যা ট্রেন্ডিং হয়। প্রায়শই এই প্রবণতাগুলি এমন লোকদের প্রাসঙ্গিক জীবন সম্পর্কিত বিষয় হতে থাকে যাদের টুইটার অ্যাকাউন্ট রয়েছে যেমন ভাগ করা অভিজ্ঞতা এবং ইভেন্টগুলি তারা বর্তমানে সম্মুখীন হচ্ছে। কখনও কখনও হ্যাশ-ট্যাগের মাধ্যমে নতুন শব্দ বা বাক্যাংশ আনা যেতে পারে যদি কোনও হ্যাশ-ট্যাগ বিশেষত সফল হয়, যেমন থ্রোব্যাক বৃহস্পতিবার, যেখানে ব্যবহারকারীরা অতীতের স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়, তবে এই হ্যাশ ট্যাগটি সমাজে একটি সুপরিচিত বাক্যাংশ হয়ে উঠেছে। এমনকি কয়েক বছর আগেও কেউ এই বাক্যাংশটি মোটেই জানত না, এটিকে হ্যাশ ট্যাগ হিসাবে ব্যবহার করা তো দূরের কথা। রাজনীতি কম আলোচনা করা হয় যেখানে দৈনন্দিন ঘটনা, সাধারণ পরিস্থিতি, খেলাধুলা বা সংগীত গভীর রাজনীতির চেয়ে লোকেরা বেশি আলোচনা করছে যেখানে মতামত বিভক্ত হতে পারে। টুইটার ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়া সাধারণ আগ্রহের চারপাশে মনোনিবেশ করে বিনোদন এবং তাদের নির্দিষ্ট কুলুঙ্গির জন্য অভিজ্ঞতার পরিবর্তে বিশ্বব্যাপী মানুষকে প্রভাবিত করে এমন প্রধান বিষয়গুলির আলোচনার পরিবর্তে বর্তমান বিষয় এবং রাজনীতি। ব্যবহারকারীরা টুইটারকে গভীর আলোচনার পরিবর্তে বিনোদন এবং অবসর যাপনের জায়গা হিসাবে তৈরি করেছে যা একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর লোকদের লক্ষ্য করে।


বিজ্ঞাপনদাতারাও তাদের সুবিধার জন্য এই হ্যাশ ট্যাগ সিস্টেম ব্যবহার করে। যখন টুইটার প্রথম বিজ্ঞাপন শুরু করেছিল তখন সাইটের মাধ্যমে অস্তিত্ব ছিল না, আজ, এটি ব্যবহারকারীর পোস্টগুলির মধ্যে লাইভ ফিডের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়। বিজ্ঞাপনদাতারা সাইটে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কী প্রবণতা রয়েছে সে সম্পর্কে সচেতন এবং লোকেরা কী সম্পর্কে কথা বলছে এবং বর্তমান বিষয়গুলিতে লোকেরা আগ্রহী এবং আলোচনা করছে সে সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি পাওয়ার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত উপায়। তারপরে তারা এই তথ্যটি তাদের বিজ্ঞাপনগুলি লক্ষ্য করতে ব্যবহার করতে পারে যারা এটি দেখতে পাবে এবং তাদের আগ্রহের সাথে এটি নির্দিষ্ট করে দেখবে। টুইটার তার শীর্ষ টুইটগুলি তার বিজ্ঞাপন ক্লায়েন্টদের পছন্দ করে এমন টুইটগুলির পরিবর্তে সংগঠিত করে যা প্রকৃতপক্ষে ট্রেন্ডিং হতে পারে । ট্রেন্ডিং কি জন্য এই অনুসন্ধান আসলে সত্য নয় এবং যে টুইটার হার সেলিব্রিটি এবং সুপরিচিত মানুষ মিডিয়াতে পরিচিত নয় এবং সাধারণত স্বাভাবিক জীবনযাপন যারা অগ্রাধিকার পায় যে হারে হেরফের করা হয়। অতএব, অর্থনৈতিক ক্ষমতার সাথে লোকেরা সর্বাধিক জনপ্রিয় হিসাবে শীর্ষে আসবে তবে প্রবণতার সত্যিকারের পরিসংখ্যান দ্বারা সর্বাধিক জনপ্রিয় নাও হতে পারে।

টাম্বলার

[সম্পাদনা]

টাম্বলারে ট্যাগ করা মূলত প্ল্যাটফর্মে তৈরি এবং পোস্ট করা সামগ্রীকে শ্রেণিবদ্ধ করার একটি উপায়। টাম্বলার পোস্টগুলিতে পাঠ্য, ফটো, অডিও এবং ভিডিওগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে যা সমস্তই ট্যাগ করা যায়। ব্যবহারকারীরা যখন স্কটল্যান্ডের ছবিগুলির মতো নির্দিষ্ট সামগ্রী অনুসন্ধান করছেন তখন এই ট্যাগগুলিও ব্যবহৃত হয়, তাই যখন তারা "স্কটল্যান্ড" অনুসন্ধান করেন, তখন তারা #Scotland সাথে ট্যাগ করা সমস্ত পোস্ট দেখতে পাবেন। তারা তাদের অনুসন্ধানটি পরিমার্জন করতে পারে যাতে তারা হয় সবচেয়ে সাম্প্রতিক বা সর্বাধিক জনপ্রিয় পোস্টটি দেখতে পারে এবং কেবল এক ধরণের পোস্ট দেখতে পারে। ট্যাগগুলি একটি পোস্টের নীচে পাওয়া যায়, পোস্টের বাকী পাঠ্য থেকে একটি ছোট ধূসর ফন্টে, প্রতিটি ট্যাগের সামনে একটি হ্যাশট্যাগ প্রতীক (#) সহ।

টাম্বলারে অনুসন্ধানযোগ্য করার জন্য ব্যবহারকারীরা তাদের নিজস্ব পোস্টগুলি ট্যাগ করতে পারেন। যদি তারা কোনও ট্যাগ অন্তর্ভুক্ত না করে তবে পোস্টটি দেখতে পাওয়া লোকেরা হ'ল তাদের অনুগামী বা তাদের ব্লগের ইউআরএল জানেন এমন যে কেউ, যা খুব বেশি নাও হতে পারে। অতএব, যদি কোনও ব্যবহারকারী চান যে তারা কী পোস্ট করে তা আরও বেশি লোক দেখুক, জনপ্রিয় ট্যাগগুলিতে তাদের সামগ্রী ট্যাগ করা তাদের দৃশ্যমানতা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

যদি কোনও ব্যবহারকারী একই ট্যাগ সহ আরও সামগ্রী দেখতে চান তবে তারা এটি "ট্র্যাক" করতে পারেন। কোনও ট্যাগ ট্র্যাক করা ব্যবহারকারীর ড্যাশবোর্ডে একটি লিঙ্ক তৈরি করে যাতে ট্যাগে নতুন কী রয়েছে তা দেখতে তারা যে কোনও সময় সেই ট্যাগটি ক্লিক করতে পারে। এটি কোনও ব্যক্তি বা ব্লগের পরিবর্তে কোনও ট্যাগ সাবস্ক্রাইব বা অনুসরণ করার অনুরূপ। এটি প্রায়শই ব্যবহারকারীর নিজস্ব ব্যবহারকারীর নামের জন্য ব্যবহৃত হয় যে কেউ কোনও পোস্টে তাদের উল্লেখ করেছে কিনা বা কোনও ব্যবহারকারী বিশেষত কোনও ফ্যানডমে বিনিয়োগ করেছেন এবং সেই ফ্যানডম সম্পর্কে পোস্ট করা সমস্ত কিছু দেখতে চান। যদি কেউ কোনও ট্যাগে বিশেষভাবে সক্রিয় থাকে তবে তারা কেবল মনোযোগ না পেলে অনুসরণকারী অর্জন করতে পারে, যার ফলস্বরূপ তাদের আরও সর্বজনীন করে তোলে।

লোকেরা যদি কেবল নির্দিষ্ট জিনিসগুলি দেখতে চায় বা পোস্টগুলির একটি সিরিজ একসাথে গোষ্ঠীভুক্ত করার উপায় থাকে তবে তারা একটি অস্বাভাবিক ট্যাগও তৈরি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি ব্যবহারকারীদের একটি গ্রুপ কোনও কিছু সম্পর্কে প্রচুর পোস্ট তৈরি করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সপ্তাহ তৈরি করে, যেমন একটি অবমূল্যায়ন করা চলচ্চিত্র, তারা এমন একটি ট্যাগ তৈরি করবে যা অন্য কেউ ব্যবহার করেনি, যেমন #underapreciatedcharacterweek, এবং প্রত্যেকে সেই ট্যাগটি ব্যবহার করে তাদের সামগ্রী পোস্ট করবে। এইভাবে, সেই সমস্ত পোস্টগুলি সহজ অ্যাক্সেস এবং বর্ধিত দৃশ্যমানতার জন্য এক জায়গায় রয়েছে।

ট্যাগগুলি কোনও ব্যবহারকারীর ব্লগে পোস্টগুলি একসাথে সংগঠিত করতেও ব্যবহৃত হয় যাতে তারা পরে তাদের সহজেই অ্যাক্সেস পেতে পারে, যেমন #selfies এবং #personal পোস্ট, বা আরও সুনির্দিষ্ট, যেমন ডিজনি-থিমযুক্ত ব্লগে বিভিন্ন চলচ্চিত্র এবং চরিত্রগুলির জন্য সমস্ত ট্যাগের লিঙ্ক সহ একটি পৃষ্ঠা থাকবে।

ব্যক্তিগত, পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত ব্লগযুক্ত ব্যবহারকারীরা তাদের পোস্টগুলিও ট্যাগ করতে পারেন যাতে তারা সহজেই তাদের নিজস্ব ব্লগের মাধ্যমে অনুসন্ধান করতে পারেন তবে তাদের পোস্টগুলি কারও ড্যাশবোর্ডে বা টাম্বলার ট্যাগ অনুসন্ধানে প্রদর্শিত হবে না। একটি সর্বজনীন ব্লগ সহ কোনও ব্যবহারকারী তবে একটি ব্যক্তিগত পোস্ট তৈরি করে এটি তাদের নিজস্ব রেফারেন্সের জন্যও ট্যাগ করতে পারে তবে অন্য কোনও ব্যবহারকারী এটি তাদের ড্যাশবোর্ডে দেখতে পাবে না, যখন তারা সেই ট্যাগটি অনুসন্ধান করে বা যখন তারা সেই ব্যবহারকারীর পাবলিক ব্লগে যায়।

ট্যাগগুলি নির্দিষ্ট ধরণের পোস্টকে কালো তালিকাভুক্ত করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। এর জন্য একটি সফ্টওয়্যার এক্সটেনশন প্রয়োজন যেহেতু টাম্বলার নির্দিষ্ট ট্যাগগুলিকে কালো তালিকাভুক্ত করার ক্ষমতা সরবরাহ করে না। একটি ব্ল্যাকলিস্ট তৈরি করা এই ট্যাগযুক্ত পোস্টগুলিকে তাদের ড্যাশবোর্ডে প্রদর্শিত হতে বাধা দেয়, তবে অন্য ব্যক্তির ব্লগে নয়। এটি প্রায়শই নির্দিষ্ট ভয় বা ট্রমাযুক্ত লোকদের জন্য সম্ভাব্য "ট্রিগার" এর জন্য ব্যবহৃত হয়, তবে স্পয়লার বা নেতিবাচক মতামতের মতো জিনিসের জন্যও ব্যবহৃত হয়। যদিও, যেমনটি বলা হয়েছে, টাম্বলারের নিজের এমন কোনও বৈশিষ্ট্য নেই যা ব্যবহারকারীদের নির্দিষ্ট ট্যাগগুলিকে কালো তালিকাভুক্ত করতে দেয়, এটি নিরাপদ অনুসন্ধান বিকল্পে কী প্রদর্শিত হবে তা ফিল্টার করার জন্য এটি #NSFW (নিরাপদ / কাজের জন্য উপযুক্ত নয়) ট্যাগ ব্যবহার করে। উপরন্তু, যদি কোনও ব্যবহারকারী #depression এর মতো নেতিবাচক ট্যাগগুলি অনুসন্ধান করে তবে ব্যবহারকারীরা তাদের নেতিবাচক পোস্টগুলির একটি বিশাল অ্যারে দেখার অনুমতি দেওয়ার পরিবর্তে তাদের পরামর্শ এবং সহায়তা প্রদান করে এমন একটি বার্তা দেখতে পাবেন যা সম্ভাব্যভাবে তাদের সুস্থতা আরও খারাপ করতে পারে।

2014 সালে, টাম্বলার পোস্টগুলিতে অন্যান্য ব্যবহারকারীদের "ট্যাগ" করার জন্য একটি নতুন উপায় প্রবর্তন করেছিল, তাদের "উল্লেখ" বলে। এখন, তাদের ব্লগে একটি হাইপারলিঙ্ক যুক্ত করার পরিবর্তে এবং পোস্টের নীচে তাদের ট্যাগ করার পরিবর্তে এবং আশা করা যায় যে তারা এটি দেখতে ট্যাগটি পরীক্ষা করে (বা এটি সম্পর্কে তাদের একটি ব্যক্তিগত বার্তা প্রেরণ করে), ব্যবহারকারীরা সামনে একটি @ দিয়ে একটি ব্যবহারকারীর নাম টাইপ করতে পারেন এবং তারা একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি পাবেন যে তারা একটি পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে। ব্যবহারকারীরা প্রায়শই পোস্টের লিঙ্কটি প্রেরণের পরিবর্তে বা তারা "চিৎকার" দিচ্ছেন বা তাদের অনুগামীদের নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীদের প্রচার করছেন কিনা তা তাদের বন্ধুদের মজার বা গুরুত্বপূর্ণ পোস্টগুলি দেখানোর জন্য এটি ব্যবহার করেন।

ইনস্টাগ্রাম

[সম্পাদনা]

ইনস্টাগ্রাম[57] একটি মোবাইল সামাজিক নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্ম যা প্রধানত ফটো এবং ভিডিওগুলির অনলাইন ভাগ করে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়। ব্যবহারকারীরা তাদের সামগ্রীগুলি সর্বজনীনভাবে এবং ব্যক্তিগতভাবে ভাগ করতে সক্ষম, অ্যাপ্লিকেশনটিতে সুরক্ষা সেটিংস পরিবর্তন করে। ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারীর সাথে,[ প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে সামগ্রী উত্পন্ন হয় এবং কোনওভাবে পরিচালনা করা আবশ্যক।

ইনস্টাগ্রামে ট্যাগিং তিনটি উপায়ে ব্যবহার করা যেতে পারে: অনেকটা ফেসবুকের মতো, ব্যবহারকারীরা তাদের নিজস্ব ফটোগ্রাফে অন্যান্য ব্যবহারকারীদের ট্যাগ করতে পারেন এবং পোস্টের মন্তব্যগুলিতে তাদের উল্লেখ করতে পারেন যাতে অন্যান্য ব্যবহারকারীরা একটি বিজ্ঞপ্তি পান এবং একই পোস্ট দেখতে পারেন: এবং অনেকটা টাম্বলারের মতো, কোনও ব্যবহারকারী কোনও পোস্টকে তারা কী পোস্ট করছেন সে সম্পর্কিত একটি বিভাগে বরাদ্দ করে ট্যাগ করতে পারেন, হ্যাশট্যাগ ('#', তাই 'ট্যাগ') চিহ্ন ব্যবহার করে।

উল্লিখিত ট্যাগিংয়ের প্রথম দুটি উপায় ইনস্টাগ্রামের অনলাইন সামাজিক যোগাযোগের দিকটির সাথে আরও বেশি কিছু করার আছে। ছবিতে প্রদর্শিত কাউকে ট্যাগ করা তাদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে প্রদর্শিত হবে, ('[ব্যবহারকারীর নাম] এর ছবি' বিভাগের অধীনে)। এটি খুব বিতর্কিত হতে পারে, কারণ এর ফলে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয় প্রভাব পড়তে পারে।

কোনও ব্যবহারকারীর অনলাইন পারফরম্যান্স তাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর খুব প্রভাবশালী হতে পারে এবং যেহেতু ইনস্টাগ্রামটি বিশেষত একটি অনলাইন ফটো-ভাগ করে নেওয়ার পরিষেবা, এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত চিত্রের চারপাশে মূলত ফোকাস করে। কোনও নেতিবাচক চিত্র এবং স্ব-উপস্থাপনা তৈরি না করার জন্য অনলাইন পারফরম্যান্সের একটি নির্দিষ্ট স্ব-ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালনা রয়েছে। এ কারণে, অনেক ব্যবহারকারী নিজের চিত্রগুলি ডিজিটালি সংশোধন এবং ম্যানিপুলেট করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন। যাইহোক, যখন কেউ অন্য ব্যবহারকারীর একটি ছবি আপলোড করে (সাধারণত তাদের স্পষ্ট অনুমতি ছাড়াই) এবং তাতে তাদের ট্যাগ করে, তখন তারা তাদের চেহারা সম্পাদনা করার এবং অন্যদের দ্বারা কীভাবে অনুভূত হতে চায় তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে তাদের নিজস্ব অনলাইন পরিচয় গঠনের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।

যেহেতু ফটোগ্রাফগুলি সর্বদা শারীরিক স্ব-এর বাস্তবসম্মত উপস্থাপনা নয়, তাই কিছু ফটোগ্রাফ ব্যবহারকারীর পছন্দসই পাবলিক ইমেজ এবং অনলাইন পরিচয় থেকে মূলত বিচ্যুত হতে পারে। এটি সাধারণত ব্যবহারকারীদের জন্য অনেক সমস্যা তৈরি করতে পারে; উদ্বেগ, হতাশা বা স্ব-ঘৃণার মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যাগুলি যা পরোক্ষভাবে কারও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে, যেমন সাইবার বুলিং (দেখুন 1.7.4)।

বিপরীতে, কারও ছবিতে ট্যাগ করা বা অন্য ব্যবহারকারীকে নিজেরাই ট্যাগ করা কোনও ব্যক্তির সামাজিক বৃত্তকে প্রশস্ত করতে পারে এবং এই অ্যাপ্লিকেশনটির সাথে ফটো-ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

ইনস্টাগ্রামে ট্যাগের অপব্যবহার
[সম্পাদনা]

ইনস্টাগ্রামে ট্যাগগুলির জন্য অনুসন্ধান ফাংশনটি একই আগ্রহের লোকদের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি নির্দিষ্ট উপায়ে ব্যবহার করা বোঝানো হয়েছিল।  উদাহরণস্বরূপ, #sunset দিয়ে কোনও ফটোগ্রাফ ট্যাগ করা ট্যাগের নিজস্ব ফিডে উপস্থিত হবে এবং তাই একই ট্যাগ অনুসন্ধানকারী লোকদের দেখানো হবে। সাধারণত, এইভাবে ব্যবহারকারীরা সূর্যাস্তের একই আগ্রহ ভাগ করে নেওয়া লোকদের আবিষ্কার এবং 'অনুসরণ' করতে পারেন। তবে, ইনস্টাগ্রামের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা, প্রতিদিনের সামগ্রীর প্রাচুর্য এবং প্ল্যাটফর্মের মধ্যে জনপ্রিয় হওয়ার সাংস্কৃতিক আকাঙ্ক্ষা (যা সাধারণত 'পছন্দ' এবং 'অনুসরণকারীদের' ক্ষেত্রে পরিমাপ করা হয়), ব্যবহারকারীরা অন্যান্য ব্যবহারকারীর ফিডগুলিতে পাওয়ার এবং আরও জনপ্রিয়তা অর্জনের সুযোগ তৈরির নতুন উপায় তৈরি করেছে।

এটি সাধারণত ট্যাগিংয়ের অপব্যবহারের মাধ্যমে হয়। তাদের পোস্টে যতটা সম্ভব দৃশ্যমানতা পেতে, ব্যবহারকারীরা ভুলভাবে তাদের ফটোগ্রাফগুলিকে ট্যাগ করে ট্যাগ করেছেন যা তারা পোস্ট করা সামগ্রীর সাথে সম্পর্কিত নয়। এই ট্যাগগুলি সাধারণত "ট্রেন্ডিং" হয়, অর্থাৎ, ইনস্টাগ্রাম সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেক ব্যবহারকারী সম্প্রতি এটি ব্যবহার করেছেন এবং ফলস্বরূপ ট্যাগের জন্য পৃষ্ঠায় একটি বৃহত্তর দেখার শ্রোতা রয়েছে, (উদাহরণস্বরূপ, একাডেমি পুরষ্কারের সময় '#oscars' ট্যাগ দিয়ে কোনও ফটোগ্রাফ বা 'সেলফি' ট্যাগ করা ব্যবহারকারীদের জন্য একটি ছবি দেখতে এবং 'পছন্দ' করার এবং সম্ভবত ব্যবহারকারীকে 'অনুসরণ' করার উচ্চতর সুযোগ তৈরি করবে, বরং এটিকে আরও অস্বাভাবিক, কম পরিদর্শন করা ট্যাগ দিয়ে ট্যাগ করা)। ব্যবহারকারীরা কোনও নির্দিষ্ট ট্যাগ অনুসন্ধান করে কোন ট্যাগগুলি ট্রেন্ডিং তা খুঁজে পেতে পারেন এবং ইনস্টাগ্রাম এটির সাথে ট্যাগ করা ফটোগ্রাফগুলির সঠিক পরিমাণ দেখায় বা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনগুলির মাধ্যমে (ইনস্ট্যাগের মতো) যা ট্রেন্ডিং ট্যাগগুলি তালিকাভুক্ত করে। এই অপব্যবহার অ্যাপ্লিকেশনটির ট্যাগিং পরিষেবাতে বরং একটি জনাকীর্ণ পরিবেশ তৈরি করেছে এবং একটি 'তথ্য ওভারলোড',[ যা ফলস্বরূপ অনুসন্ধান করার সময় প্রতিটি ট্যাগের মধ্যে পছন্দসই সামগ্রীকে পাতলা করে দেয়,[ এবং অ্যাপ্লিকেশনটির অনুসন্ধান ফাংশনে একটি অসুবিধাজনক ফটো-ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতা তৈরি করে। টাম্বলার এবং টুইটারের মতো উল্লিখিত অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতেও এটি একটি সমস্যা।

Nothing Created or Destroyed

[সম্পাদনা]

[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

ইন্টারনেট পেন্সিলে লেখা নয়, মার্ক, এটা কালিতে লেখা আছে।
— এরিকা অলব্রাইট, দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

ইন্টারনেট একটি বিশাল এবং সদা পরিবর্তনশীল। এত তথ্য ওয়েবে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং কখনও কখনও এটি চাওয়া হয় না। কখনও কখনও এটি অনুমতি ছাড়াই নেওয়া হয় বা প্রসঙ্গের বাইরে ব্যবহার করা হয়। এত বিপুল পরিমাণ তথ্য দিয়ে, এটি চেষ্টা করা এবং নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব, বিশেষত ব্যক্তিগত স্তরে। অনলাইন তথ্য ধারণ, অপসারণ বা সেন্সর করার চেষ্টা করার জন্য পুরো সরকারকে লাগে এবং তারপরেও এটি পুরোপুরি কাজ করে না। ইন্টারনেটে যা ঘটে তা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হওয়ার একটি উদাহরণ হ'ল বারবারা স্ট্রিস্যান্ড। তিনি ইন্টারনেট থেকে তার বাড়ির একটি ছবি সরিয়ে নেওয়ার জন্য একজন ফটোগ্রাফারের বিরুদ্ধে মামলা করার চেষ্টা করেছিলেন এবং ফলাফলটি ছিল সেই ছবির অনুলিপি, পুনরায় পোস্ট এবং আয়নাগুলির একটি বিস্ফোরণ যা পুরো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছিল, কার্যকরভাবে এটি পরিত্রাণ পাওয়া অসম্ভব করে তুলেছিল। এটি স্ট্রিস্যান্ড এফেক্ট হিসাবে পরিচিতি লাভ করে এবং ওয়েবের অস্থির এবং অনিয়ন্ত্রিত প্রকৃতির একটি উদাহরণ।

একজন তরুণ ব্যক্তি প্রতি সপ্তাহে গড়ে ২৭ ঘণ্টা ইন্টারনেটে ব্যয় করে ইন্টারনেটে ব্যয় করা এই বিশাল পরিমাণ সময়ের ফলাফল হ'ল সমানভাবে বড় ডিজিটাল পদচিহ্ন, যার অর্থ আজকাল বেশিরভাগ লোক ইন্টারনেটে তাদের চিহ্ন রেখে পালাতে পারে না। গড় ব্যক্তি ফেসবুক এবং টুইটারের মতো সামাজিক মিডিয়া সাইটগুলিতে ইন্টারনেটে তাদের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করে। এই সাইটগুলি প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি টুইট পোস্ট করে তথ্যের বিশাল কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। অনেকে এই ওয়েবসাইটগুলিকে বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে যোগাযোগের একটি নিরীহ উপায় হিসাবে দেখেন, তবে এই ওয়েবসাইটগুলিতে খুব বেশি তথ্য পোস্ট করা বিপজ্জনক হতে পারে। যেহেতু তারা আপনাকে আপনার ইচ্ছামতো পোস্টগুলি মুছে ফেলার বিকল্প দিতে পারে বলে মনে হতে পারে, ইন্টারনেটে কোনও কিছুই কখনও পুরোপুরি সরানো হয় না এবং আমরা যে ডিজিটাল পদচিহ্নগুলি রেখে যাই তা চিরকাল সেখানে থাকে।

এই বিষয়টি মাথায় রেখে, একজনকে এর মধ্যে পার্থক্য করতে হবে:

১. সাথে দুই ধরনের তথ্য আদান-প্রদান

  • সংস্থাগুলি, একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে এবং প্ল্যাটফর্ম এবং সংযুক্ত পরিষেবাগুলি ব্যবহার করতে সক্ষম হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা সরবরাহ করে - প্রায়শই যোগাযোগের বিবরণ বাধ্যতামূলক এবং এটি আমাদের স্বার্থে।
  • পরিচিতদের বৃত্ত, উদাঃ ফেসবুকে, যেখানে কেউ সক্রিয়ভাবে অনলাইন পরিচয় তৈরি করতে পারে,[ বা আন্তঃব্যক্তিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে সংযুক্ত থাকার জন্য মেসেজিং পরিষেবাদির মাধ্যমে।

2. এবং ভাগ করা তথ্য দুই ধরনের

  • আমাদের সম্মতির সাথে, যার অর্থ আমরা সক্রিয়ভাবে উদাহরণস্বরূপ একটি ফর্মে টাইপ করে তথ্য ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই, অথবা
  • আমি যে প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যবহার করি সেগুলি সরবরাহকারী সংস্থাগুলির ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে আমাদের জ্ঞান ছাড়াই - এতে ব্যক্তি-সম্পর্কিত সার্ফিং অভ্যাস, লেনদেন এবং সংযোগ ডেটা রয়েছে। তাই তারা আমাদের সম্পর্কে একটি অনলাইন প্রোফাইল তৈরি করতে পারে যেমন আমাদের "অনলাইন ফিঙ্গারপ্রিন্ট" এর মাধ্যমে আমাদের পছন্দ সম্পর্কে।

শেরি টার্কল  ব্রাউজ করার সময় আমরা কতটা পদচিহ্ন রেখে যাই তা ভুলে যাওয়া লোকদের সম্পর্কে বলেছেন: "কম্পিউটার বা সেল ফোনে থাকার অভিজ্ঞতা এতটাই ব্যক্তিগত মনে হয় যে আমরা সহজেই আমাদের নিজস্ব পরিস্থিতি ভুলে যেতে পারি: প্রতিটি সংযোগের সাথে আমরা একটি বৈদ্যুতিন চিহ্ন রেখে যাই"। আমাদের বেশিরভাগই সাইন আপ করার সময় ফেসবুক এবং টুইটারের মতো ওয়েবসাইটগুলিতে আনন্দের সাথে তথ্য প্রদান করে, তবে আমরা যা বুঝতে পারি না তা হ'ল আমরা ইন্টারনেটে ঘুরে বেড়ানোর সাথে সাথে আমাদের কাছ থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করা হয় তা আমাদের উপলব্ধি না করেই। আমাদের তথ্য প্রায়ই আমাদের সম্মতি ছাড়াই বা এমনকি আমাদের সম্পর্কে না জেনেই বড় সংস্থাগুলির কাছে বিক্রি করা হয়, এই কারণেই উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি কোনও অনলাইন শপ ব্রাউজ করে থাকেন তবে আপনি ব্রাউজ করার সাথে সাথে সেই দোকানের বিজ্ঞাপনগুলি পুরো ইন্টারনেটে পপ আপ করতে পারবেন। ফেসবুক প্রায়শই এটি করে এবং বিশেষত তার পৃষ্ঠায় বিজ্ঞাপনগুলি আপনার জন্য তৈরি করে এবং আপনি যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তখন আপনি কী দেখেন।

এই সমস্ত তথ্য সংরক্ষণ করা হয়, আংশিকভাবে বাণিজ্যিক এবং বাজার গবেষণার উদ্দেশ্যে, তবে আংশিকভাবে ডেটা ধরে রাখার আইনের কারণেও এবং এগুলি ডিএসএল সরবরাহকারী (যেমন ভোডাফোন), অ্যাপ্লিকেশন (যেমন গুগল ক্রোম ব্রাউজার), ডিভাইস এবং অপারেটিং সিস্টেম (যেমন অ্যাপলের আইফোন এবং আইওএস) এর মতো অনেক পক্ষের দ্বারা সংরক্ষণ করা হয়) এবং অবশেষে ওয়েবসাইট (যেমন ফেসবুক)। এন প্লাস ডেটা ধরে রাখার আইনের মাধ্যমে সরকার বহু বছর ধরে এই তথ্যের পরিমাণের অংশে অ্যাক্সেস পেয়েছে; এর ফলে অপরাধ সমাধানের পদ্ধতি বৃদ্ধি পাবে, কিন্তু একই সাথে প্রত্যেকেই যে কোন সময় অপরাধ সংঘটনের সাধারণ সন্দেহের মধ্যে থাকবে।

এমনকি ব্যক্তিগত তথ্য মুছে ফেলার বিষয়েও আইন থাকলেও, উপরের উদাহরণটি দেখায়, অনলাইন তথ্য কখনই সত্যিকার অর্থে মুছে ফেলা যায় না। এটি মাথায় রেখে এটি প্রশ্ন উত্থাপন করে যে ডিজিটাল বিশ্বে গোপনীয়তা বলে সত্যিই কিছু আছে কিনা। এমনকি যে ব্যবহারকারীরা বেনামী থাকতে পছন্দ করেন এবং তাদের আইপি ঠিকানা ব্যবহার করে ফিরে সনাক্ত করা যেতে পারে, যার অর্থ হ'ল যখন ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল সবকিছুর কথা আসে তখন গোপনীয়তার ঐতিহ্যগত ধারণাগুলি অস্তিত্বহীন।

এর একটি উদাহরণ অ্যাশলে ম্যাডিসন ডেটা ব্রিচ, অ্যাশলে ম্যাডিসন এমন একটি সাইট ছিল যেখানে ব্যবহারকারীরা বিষয়গুলি পরিচালনা এবং সংগঠিত করতে সক্ষম হয়েছিল। ওয়েবসাইটটি প্রতিটি ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ধরে রাখে, যার মধ্যে ব্যবহারকারীরা জাল নাম ব্যবহার করায় তাদের সমস্ত আসল নাম এবং বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করে। এই ওয়েবসাইটটি হ্যাক করা হয়েছিল এবং ব্যবহারকারীদের সমস্ত ব্যক্তিগত বিবরণ প্রকাশ করা হয়েছিল এবং জনসাধারণের জন্য উপলব্ধ করা হয়েছিল। সাইটের ব্যবহারকারীরা সত্যই বিশ্বাস করে যে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত ছিল এবং তাদের গোপনীয়তাও ছিল, তবে এর সাথে এবং ইন্টারনেটে অন্যান্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত তথ্য সত্যই ব্যক্তিগত নয় এবং খুব সহজেই প্রাপ্ত এবং প্রকাশ করা যায়।

ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে অজ্ঞাতনামা

[সম্পাদনা]

ইন্টারনেটে অনলাইন যোগাযোগকে সাধারণত 'বেনামী' হিসাবে বর্ণনা করা হয় যখন ব্যবহারকারীরা কোনও ব্যক্তিগত বিবরণ পোস্ট করেন না এবং প্রায়শই পরিবর্তে একটি ব্যবহারকারীর নাম ব্যবহার করেন। নামহীনতার বিভিন্ন স্তর রয়েছে (সনাক্তকরণের অভাব, চাক্ষুষ নামহীনতা এবং অনলাইন এবং বাস্তব পরিচয়ের বিচ্ছিন্নতা), যা আন্তঃব্যক্তিক প্রেরণার বিভিন্ন উপাদান রয়েছে বলে মনে করা হয়, যা স্ব-ধারণাকে প্রভাবিত করতে সক্ষম। মরিও এবং বুচহোলজ (২০০৯)  পরামর্শ দিয়েছেন যে কেউ মূলত একটি নতুন অনলাইন পরিচয় তৈরি করে একটি ভিন্ন ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারে, বিভিন্ন মূল্যবোধ এবং ব্যক্তিত্ব তৈরি এবং গ্রহণ করার সুযোগ দেয় এবং এমনকি কিছু ক্ষেত্রে, একটি নতুন বয়স, লিঙ্গ বা জাতি। লুপ্পিচিনি এবং লিন (২০১২) যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি কারণ "অনলাইন নামহীনতা বাস্তব এবং অনলাইন পরিচয়গুলির (বিভিন্ন ডিগ্রিতে) বিচ্ছিন্নতা থাকতে দেয় যেখানে কারও অনলাইন আচরণগুলি সরাসরি সেই ব্যক্তির শারীরিক স্ব-এর সাথে আবদ্ধ হয় না"।  এই ধরণের বিচ্ছিন্নতার কারণে, ব্যবহারকারীরা তাদের 'বাস্তব' জীবনে কীভাবে আচরণ করে তার তুলনায় অনলাইনে কীভাবে আচরণ করে তার জন্য সাধারণত কম জবাবদিহিতা থাকে।

টাম্বলার, ইউটিউব, টুইটার এবং ইয়িক ইয়াকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ডিজিটাল মিডিয়ার ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের অন্তর্গত বলে বলা যেতে পারে, কারণ এই ওয়েবসাইটগুলি মূলত একটি ব্যবহারকারীর নাম ব্যবহার করে কাজ করে এবং তাই কোনও ব্যবহারকারীকে তাদের ব্যক্তিগত বিবরণ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। এই ওয়েবসাইটগুলি তার শ্রোতাদের মধ্যে মূলত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কারণ ব্যবহারকারীরা ব্যবহারকারীর নামের পিছনে লুকিয়ে তাদের 'আসল' পরিচয় গোপন রাখার বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট ধরণের আশ্বাস খুঁজে পান।

অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিতে নামহীনতার ব্যবহার পরবর্তীকালে বর্তমান দিনের ইন্টারনেটের সামাজিক ব্যবহারে বৃহত্তম (এবং চলমান) সমস্যাযুক্ত ধাঁধা তৈরি করেছে, যার ফলে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়। একটি বেনামী অনলাইন পরিচয় একজন ব্যবহারকারীর জন্য ক্ষমতায়ন হতে পারে কারণ এটি তাদের নিজস্ব পরিচয়ের গভীরতা এবং বিভিন্ন দিকগুলি অন্বেষণ করতে, বিভিন্ন সামাজিক ভূমিকা এবং অবস্থানগুলি দখল করতে এবং তাদের নিজস্ব বৈচিত্র্যকে এমনভাবে আলিঙ্গন করতে দেয় যা বাস্তব জীবনে উপলব্ধি করা অসম্ভব হতে পারে। অন্যদিকে, অনলাইন পরিচয়হীনতা সাইবার বুলিং, তথ্য এবং পরিচয় চুরি, 'ক্যাটফিশিং' এবং মানহানির মতো অনেক সমস্যাযুক্ত বিষয়ও হতে পারে। নিম্নলিখিত বিভাগগুলি আরও বিস্তারিতভাবে অনলাইন নামহীনতার ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিকগুলি অন্বেষণ করবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের

[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতাউৎস সম্পাদনা] উপরে উল্লিখিত হিসাবে, কিছু সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের অন্তর্গত কারণ ব্যবহারকারীরা বেনামে থাকতে বেছে নিতে পারে এবং ব্যবহারকারীর নাম ব্যবহার করার সময় ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পরিচালনা করতে পারে। এটি সম্ভবত ব্যবহারকারীদের 'তাদের মনের কথা বলতে' এবং প্রকাশ্যে (বেনামে থাকার সময়) তাদের আবেগ এবং আগ্রহ এবং পছন্দের নির্দিষ্ট বিষয়ে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ করতে অনুপ্রাণিত করতে পারে। যদিও কিছু ব্যক্তি জনসাধারণের ক্ষেত্রে (ফেসবুকের মতো) এটি করতে নিরুৎসাহিত হতে পারে কারণ তারা এক ধরণের তথ্য ওভারলোডে অবদান রাখতে ভয় পেতে পারে, যেখানে তারা তাদের দীর্ঘ পোস্টগুলির সাথে অন্য ব্যবহারকারীর ফিডকে প্লাবিত করতে পারে, বা কারণ তারা ভয় পেতে পারে যদি তাদের জনসাধারণের পরিচয় এবং চিত্র ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে যদি নির্দিষ্ট মতামত দেওয়া হয়, বেসরকারী সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির নামহীনতা ব্যবহারকারীদের পিছনে না রেখে লিখতে উত্সাহিত করতে পারে।

উভয় ধরনের প্ল্যাটফর্ম (পাবলিক এবং প্রাইভেট) কীভাবে একজন ব্যক্তির অভিব্যক্তিকে অনুপ্রাণিত বা নিঃশব্দ করতে পারে তা তুলনা করা বেশ আকর্ষণীয়। এটিও জানা যায় যে কিছু শিল্পী সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা টাম্বলার বা ডিভিয়ান্টার্টের মতো ওয়েবসাইটগুলিতে তাদের শিল্পকর্ম পোস্ট করতে আরও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন কারণ তাদের অবদান সম্পূর্ণ বেনামে থাকবে। শৈল্পিক দক্ষতার ক্ষেত্রে, কোনও ব্যক্তি সমালোচনামূলক মূল্যায়ন এবং এক্সপোজারের প্রতি বিশেষত সংবেদনশীল হতে পারে, বিশেষত যদি তারা এখনও তাদের নিজস্ব দক্ষতার পূর্ববর্তী এখনও বিকাশমান শৈল্পিক পর্যায়ে থাকে। এই কারণে, ব্যবহারকারীরা ফেসবুকের মতো সর্বজনীন সামাজিক নেটওয়ার্কগুলিতে এই ধরণের খুব ব্যক্তিগত সামগ্রী আপলোড করতে খুব লজ্জা বা অনিরাপদ বোধ করতে পারে, যেখানে তারা মনে করতে পারে যে তাদের সমস্ত বন্ধুদের কাছে উন্মুক্ত দৃশ্যমানতা খুব বেশি এক্সপোজার হতে পারে।

পাবলিক নেটওয়ার্কগুলিতে এই ধরণের সামগ্রী আপলোড করা 'পছন্দ' ধারণার কারণে কোনও ব্যক্তির উদ্বেগে অবদান রাখতে পারে; যেখানে তারা একটি সংখ্যার প্রতি আচ্ছন্ন হয়ে উঠতে পারে এবং এই চিন্তায় যে 'পছন্দ' একজন ব্যক্তির মূল্যের সমতুল্য। অন্যদিকে, এটি টাম্বলারের মতো ব্যক্তিগত সামাজিক নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মগুলিতেও প্রয়োগ করা যেতে পারে, কারণ আজকাল বেশিরভাগ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি 'পছন্দ', 'অনুসরণকারী' এবং 'ভাগ / রিব্লগ' ব্যবহার করে কাজ করে। তবে, এটিও যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে কোনও বেনামী ব্যবহারকারী (ব্যবহারকারীর নামের মাধ্যমে) কোনও ব্যক্তির পোস্টে পছন্দ বা মন্তব্য করা অবশ্যই কোনও ব্যক্তির ব্যক্তিগত প্রোফাইলের চেয়ে কম প্রভাবশালী এবং কম ব্যক্তিগত। যেহেতু কেউ অগত্যা তাদের ব্যবহারকারীর নাম থেকে কোনও ব্যবহারকারীর কিছু জানে না, এটি কোনও ব্যক্তির সৃজনশীল কাজের মূল্যায়ন করার মতো কম মনে হয়।

এটাকে ডেভিড গান্টলেটের ওয়েব ২.০ এর কাজের সাথে যুক্ত করাও বেশ কৌতূহলোদ্দীপক, যেখানে তিনি বলেছেন যে ওয়েব ২.০ 'একটি অনলাইন নেটওয়ার্কের সদস্যদের সম্মিলিত ক্ষমতাকে কাজে লাগাচ্ছে, যাতে একটি বিশেষ করে শক্তিশালী সম্পদ বা সেবা তৈরি করা যায়। কিন্তু ওয়েবের বাইরে চিন্তা করলে, ওয়েব ২.০ কে রূপক হিসাবে বিবেচনা করাও মূল্যবান হতে পারে, যে কোনও সম্মিলিত ক্রিয়াকলাপের জন্য যা মানুষের আবেগ দ্বারা সক্ষম হয় এবং এর অংশগুলির যোগফলের চেয়ে বড় কিছু হয়ে ওঠে।  এইভাবে আমরা ব্যবহারকারীদের তাদের নিজস্ব স্বার্থের বিষয়ে সামাজিক মিডিয়ার ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে অবদান রাখার আকাঙ্ক্ষার পিছনে ধারণাটি বুঝতে পারি; একটি বৃহত্তর সম্প্রদায়ের অংশ অনুভব করা যা তাদের পরিচয়ের একটি অংশ গঠন করতে পারে।

আত্মার পরিবর্তিত আখ্যান

[সম্পাদনা]

কোনও ব্যক্তির অনলাইন আচরণগত নিদর্শন এবং অনলাইন পারফরম্যান্স জনসাধারণের বিপরীতে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে মূলত বিচ্যুত হয়। ওয়েবসাইট বা সামাজিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে, একটি মিডিয়া গ্রাহক প্ল্যাটফর্মের সমাজের মধ্যে কীভাবে দেখতে চান তার সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য একটি ভিন্ন আখ্যান বা পরিচয় তৈরি এবং পরিচালনা করবেন। এই কারণে, কেউ যুক্তি দিতে পারে যে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি বিভিন্ন সামাজিক নিয়ম দিয়ে তৈরি এবং একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য দর্শকদের কাছে একটি নির্দিষ্ট আবেদন রয়েছে; অতএব, প্রতিটি ব্যবহারকারীর কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট ধরনের আচরণগত প্যাটার্ন আশা করা হয়। এটি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের মধ্যে প্রতিটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করে এমন গোপনীয়তা দ্বারাও বাড়ানো হয়েছে। টাম্বলার[60] এবং ইউটিউব[61] এর মতো সামাজিক মিডিয়া নেটওয়ার্কগুলি ব্যবহারকারীর নামগুলির সাথে কাজ করে (ফেসবুকের বিপরীতে[62]), ব্যবহারকারীদের কোনও ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত বিবরণ দেওয়ার পরিবর্তে কেবল একটি ব্যবহারকারীর নাম (বা টাম্বলারের ক্ষেত্রে, একটি ইউআরএল) ব্যবহার করে সম্পূর্ণরূপে বেনামে থাকার বিকল্প সরবরাহ করে। এটি লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ যে, ব্যবহারকারীরা যদি এটি করতে চান তবে তাদের ব্যক্তিগত বিবরণ দেওয়ার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে, তবে এটি একটি অজনপ্রিয় পদ্ধতি কারণ বেশিরভাগ ব্যবহারকারী একটি বৃহত্তর আবেদন এবং একটি নির্দিষ্ট ধরণের আশ্বাস খুঁজে পান একটি ব্যবহারকারীর নাম ব্যবহারের সাথে সম্পূর্ণ বেনামে থাকা।

স্ব-ব্যবস্থাপনা এবং অনলাইন সনাক্তকরণ এবং প্রকাশের ক্ষেত্রে এই ধরণের স্বাধীনতা থাকার ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেনামী আখ্যানের বিভিন্ন ব্যবহারের দিকে পরিচালিত হয়েছে।

আত্ম-সনাক্তকরণের জন্য একটি ক্ষমতায়নের সরঞ্জাম হিসাবে ব্যক্তিগত ক্ষেত্র।

[সম্পাদনা]

[সম্পাদনা | উৎস সম্পাদনা]

আমরা বিচার করি কেউ দেখতে কেমন; গায়ের রং, আমরা তাদের সুন্দর মনে করি বা না করি। ইন্টারনেটে সেই স্থানটি আপনাকে এমন কারও সাথে কথোপকথনের অনুমতি দেয় যার সাথে এই বিষয়গুলির কোনওটিই জড়িত নয়।
- বেল হুকস

একটি বেনামী অনলাইন পরিচয় স্ব-অন্বেষণ এবং স্ব-সনাক্তকরণের ক্ষেত্রে খুব উপকারী হতে পারে। এটি ব্যক্তিদের তাদের বৈচিত্র্যকে আলিঙ্গন করার এবং যে পরিচয়টি তারা সবচেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে তা অন্বেষণ করার জন্য একটি ক্ষমতায়নের সরঞ্জাম হতে পারে, বা গিজ (২০০৮) লিখেছেন, "বেনামী অনলাইন সেটিংস ক্ষমতায়ন করছে কারণ তারা পরিচয় অন্বেষণকে সহজতর করে, বা পরিচয় অবস্থানগুলি দখল করে যা বাস্তব জীবনে দখল করা কঠিন হতে পারে "।

যেহেতু সনাক্তকরণের অভাব রয়েছে, ব্যবহারকারীরা তাদের নিজস্ব ব্যক্তিগত পরিচয় (যেমন যৌন দৃষ্টিভঙ্গি এবং লিঙ্গ) এবং আগ্রহগুলি অন্বেষণ করতে নির্দ্বিধায় বোধ করতে পারেন যা সাধারণত ডিজিটাল মিডিয়ার জনসাধারণের ক্ষেত্রের সাথে আসে এবং জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত এক্সপোজারের সাথে একটি সর্বজনীন চিত্র বজায় রাখে। মার্টিন হাইডেগার যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি কেবলমাত্র ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে যে কেউ তার খাঁটি স্ব হতে পারে, জনসাধারণের রাজ্যের নৈর্ব্যক্তিক এবং সনাক্তকরণের বিপরীতে।  এটি বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ যে বিভিন্ন ধরণের সোশ্যাল মিডিয়া শ্রোতা কোনও ব্যক্তির অনলাইন পরিচয়কে আকার দেয়। উদাহরণস্বরূপ, ফেসবুকের মতো পাবলিক সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও ব্যক্তির শ্রোতা তাদের 'বন্ধু' হতে থাকে (যা প্রকৃত বন্ধু, পরিবার এবং পরিচিতদের দ্বারা তৈরি করা যেতে পারে), টাম্বলারের মতো ব্যক্তিগত সামাজিক মিডিয়াতে শ্রোতা মূলত অপরিচিতদের সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে। জনসাধারণের ক্ষেত্রের এক্সপোজারের ন্যূনতম তীব্রতার কারণে এটি আরও আরামদায়ক ভাগ করে নেওয়ার পরিবেশ তৈরি করে। যদিও কেউ একটি ব্যক্তিগত, বেনামী প্ল্যাটফর্মে তাদের যৌন দৃষ্টিভঙ্গি অন্বেষণ করতে আরও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারে, তবে এটি অত্যন্ত অসম্ভাব্য যে তারা উদাহরণস্বরূপ, পরিবারের সদস্যদের কাছে প্রকাশ্যে এটি করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। ডিজিটাল মিডিয়ার ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তির ব্যবহারকারীর নাম বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের কাছে প্রকাশ না করাও খুব সাধারণ। যদিও কিছু লোক এটি ভাগ করে নেয়, এটি সম্ভবত এমন শ্রোতাদের কাছে ভাগ করা হয় যা তারা গভীরভাবে বিশ্বাস করে, যেমন ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব, উদাহরণস্বরূপ, পিতামাতার পরিবর্তে।

অন্যদিকে, টার্কল [63] (1996) উল্লেখ করেছেন যে ইন্টারনেট ব্যক্তিদের তাদের পরিচয়ের অংশগুলি লুকানোর অনুমতি দেয় যা বৈষম্যের দিকে পরিচালিত করতে পারে (উদাহরণস্বরূপ, জাতি বা লিঙ্গ)।  ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া তার ব্যবহারকারীদের যে ভিজ্যুয়াল নামহীনতা সরবরাহ করে তার কারণে, কারও ব্যক্তিগত পরিচয়ের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি সর্বদা দৃশ্যমান হয় না, বা বরং, অগত্যা নয় (যদি না ব্যবহারকারী নির্দিষ্টভাবে সেগুলি ভাগ করে নেওয়ার জন্য বেছে না নেয়)। এটি ব্যবহারকারীদের জন্য আরও গ্রহণযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে পারে, বিশেষত নির্দিষ্ট পরিচয়ের সাথে সম্পর্কিত স্টেরিওটাইপগুলি দ্বারা পিছনে টানা না হয়ে কারও পরিচয় অন্বেষণের ক্ষেত্রে, সম্ভবত লিঙ্গ, জাতি বা যৌন দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সম্পর্কিত। যাইহোক, এটিও যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে এটি তাদের নিজস্ব পরিচয় সম্পর্কিত কোনও ব্যক্তির মনের অবস্থার উপর নেতিবাচক মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলতে পারে; কোনও পরিচয়ের বিভিন্ন দিক দেখানোর সময় বিভিন্ন জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া থাকার সময় কোনওটিই বৈষম্যমূলক ধারণা থাকতে পারে এবং কোনও ব্যক্তিকে তাদের পরিচয় সম্পর্কে লজ্জা বোধ করতে অনুপ্রাণিত করতে পারে।

ব্যক্তিগত গোলকের স্ব এবং অল্টার ইগোসের আদর্শ সংস্করণ

[সম্পাদনা]

যদিও জনসাধারণের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট অনলাইন পরিচয় বজায় রাখার চাপ বেশি দেখা যায় (উদাহরণস্বরূপ, কারও সামাজিক জীবন 'প্রমাণ' করার চাপ[ এবং সামাজিক বৃত্তের মধ্যে একজনের ভূমিকা নিশ্চিত করা,[ এবং একজন ব্যক্তির শারীরিক পরিচয়ের গ্রহণযোগ্য এবং নান্দনিকভাবে আনন্দদায়ক ছাপ তৈরি করার চাপ), একটি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের সামাজিক মিডিয়া ব্যবহারকারী নিজেদের আদর্শ সংস্করণও তৈরি করতে পারে। যেহেতু প্রতিটি ব্যবহারকারীর সম্পর্কে শ্রোতাদের অগত্যা যা জানা দরকার তা হ'ল একটি ব্যবহারকারীর নাম, তারা যে কেউ হতে পারে যা তারা সর্বদা হতে চেয়েছিল।

একটি বেনামী অনলাইন পরিচয় গ্রহণ করার সময়, কোনও ব্যক্তির আসল এবং অনলাইন পরিচয়ের এক ধরণের বিচ্ছিন্নতা রয়েছে। এইভাবে, তাদের একটি পরিচয় তৈরি করার এবং তারা যেভাবে দেখতে চায় সেভাবে অনলাইনে নিজেকে 'সঞ্চালন' করার নিরঙ্কুশ স্বাধীনতা রয়েছে, এই পরিচয়টি তাদের শারীরিক সত্তার সাথে যুক্ত না হয়ে।

এই বিচ্ছিন্নতার একটি আকর্ষণীয় দিক হ'ল সোশ্যাল মিডিয়ায় অল্টার ইগোর ব্যবহার। যদিও প্রথম নজরে একটি পাবলিক প্রোফাইলের মতো মনে হতে পারে যা জনসাধারণের ক্ষেত্রের অন্তর্গত, মূল ব্যবহারকারী (এবং তাই, আসল পরিচয়) বেনামে থাকে এবং প্রায়শই এটি থেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন থাকে। এইভাবে, এটি যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে অল্টার ইগোগুলি পাবলিক এবং প্রাইভেট গোলকের মধ্যে সীমানাকে অস্পষ্ট করে দেয়, যেহেতু কোনও ব্যক্তি কখনই নিশ্চিতভাবে জানতে পারে না যে অনলাইনে উপস্থাপিত পরিচয়টি কোনও ব্যক্তির 'আসল' পরিচয় নয় বরং পরিবর্তিত অহং।

সরকারী এবং বেসরকারী ক্ষেত্রের মধ্যে লাইনগুলি অস্পষ্ট করার জন্য অল্টার ইগো ব্যবহারের সবচেয়ে সাম্প্রতিক এবং প্রাসঙ্গিক উদাহরণটি ইনস্টাগ্রাম তারকা আমালিয়া উলমানের ক্ষেত্রে হবে। উলমান একটি মঞ্চস্থ সোশ্যাল মিডিয়া পরীক্ষায় তৈরি করেছিলেন এবং অভিনয় করেছিলেন, যেখানে তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসে 'ইট গার্ল' হওয়ার স্বপ্ন দেখে একটি মেয়ের অল্টার ইগো তৈরি করেছিলেন। তার সঞ্চালিত স্ব স্বর্ণকেশী চুল এবং একটি আড়ম্বরপূর্ণ পোশাক রঞ্জিত ছিল, স্তন-বৃদ্ধি অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল এবং স্ব-গ্রাসিত এবং নারকিসিস্টিক ছিল। কয়েক মাস ধরে ক্রমাগত পোস্ট এবং অনুগামীদের অর্জনের পরে, উলমান 'দ্য এন্ড' শিরোনামে একটি শেষ ছবি আপলোড করে তার অভিনয়ের বাস্তবতা ঘোষণা করেছিলেন। যখন তার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন, তখন তিনি বলেন:

"Everything was scripted. I spent a month researching the whole thing. There was a beginning, a climax and an end. I dyed my hair. I changed my wardrobe. I was acting: it wasn’t me.”

নিজের একটি আদর্শ সংস্করণ তৈরির আরেকটি উদাহরণ হ'ল ভার্চুয়াল বাস্তবতার মাধ্যমে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ওয়েবসাইট বা অনলাইন সামাজিক প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীদের প্রায়শই এমন একটি চরিত্র তৈরি করতে হয় যা তাদের অবতার হিসাবে পরিচিত তাদের ব্যক্তিগত সত্তাকে প্রতিলিপি করে এবং অনুকরণ করার চেষ্টা করে। নান্দনিক পরিপূর্ণতার জন্য কোনও ব্যক্তির প্রাকৃতিক আকাঙ্ক্ষার কারণে, তারা এই অবতারগুলিকে নিজের আদর্শ বা নিখুঁত সংস্করণ হিসাবে ডিজাইন করার ঝোঁক রাখে। এই অবতারগুলি পরে অন্যান্য ব্যবহারকারীর অবতারগুলির সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করে এবং লোকেরা সাধারণত উল্লিখিত অবতারগুলির ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনাগুলি ব্যক্তির শারীরিক স্ব কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ হতে পারে তার খুব বাস্তবসম্মত উপস্থাপনা হিসাবে গ্রহণ করে। এটি অনেকগুলি সমস্যাযুক্ত সমস্যা তৈরি করতে পারে, যেমন বাস্তব জীবনের সৌন্দর্যের ব্যবহারকারীর প্রত্যাশাকে প্রভাবিত করা, তাদের অবাস্তব করে তোলা (যা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং লিঙ্গবাদের সাথে সম্পর্কিত সমস্যার কারণ হতে পারে) এবং ক্যাটফিশিং।

ক্যাটফিশিং

[সম্পাদনা]

ক্যাটফিশিং হ'ল যখন কোনও ব্যক্তি আলাদা পরিচয় গ্রহণ করার জন্য প্রতারণামূলক কৌশল ব্যবহার করে (পরিচয় চুরির মাধ্যমে, সাধারণত অন্য ব্যক্তির ছবি নিজের হিসাবে পোস্ট করে এবং শারীরিকভাবে সেভাবে দেখার ভান করে)। আধুনিক শব্দটি ২০১০ সালের আমেরিকান ডকুমেন্টারি ক্যাটফিশ থেকে উদ্ভূত হয়েছে।  এর জন্য স্বাভাবিক উদ্দেশ্য হ'ল ইন্টারনেট জুড়ে অন্য কারও সাথে অনলাইন রোমান্টিক সম্পর্কে জড়িত হওয়া। এর পিছনে যুক্তিগুলির মধ্যে রয়েছে কারও শারীরিক উপস্থিতির প্রতি স্ব-ঘৃণা, শারীরিক নান্দনিক আবেদন বাড়িয়ে সম্ভাব্য প্রেমের প্রার্থীদের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা এবং এটিকে তাদের নিজস্ব পরিচয় এবং / অথবা অন্যান্য মনস্তাত্ত্বিক কারণ হিসাবে উপস্থাপন করা।

যেহেতু পাবলিক সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলি এত জনপ্রিয় এবং প্রায়শই তারা কারও সত্যিকারের স্ব-এর বাস্তবসম্মত উপস্থাপনা সরবরাহ করে না, তাই বেশিরভাগ লোক নিম্নলিখিত প্রত্যাশাগুলি পূরণ করলে পাবলিক প্রোফাইলের বাস্তবতার মূল্যকে বিশ্বাস করতে এবং বিশ্বাস করতে পারে;

  1. একই ব্যক্তির অসংখ্য বা গ্রহণযোগ্য ছবি
  2. এই ছবিগুলির একটি বড় সংখ্যা যা ব্যক্তিগত বলে মনে হয় বা নিজেরাই তোলা হয়েছে (উদাহরণস্বরূপ, 'সেলফি') এবং অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া ব্যবহারকারীদের সাথে
  3. বন্ধুদের একটি বৃহত সামাজিক বৃত্ত (যা সকলেই উপরের সাথে মিলিত বলে মনে হয়)

তবে, অনলাইনে উপলব্ধ বিভিন্ন ব্যক্তির অসংখ্য ব্যক্তিগত ছবিগুলির কারণে (যা একটি সাধারণ গুগল চিত্র অনুসন্ধানের সাথে পাওয়া যায়), একটি জাল অনলাইন সামাজিক নেটওয়ার্ক প্রোফাইল তৈরি করা অত্যন্ত সহজ হতে পারে। এইভাবে এটি যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে সোশ্যাল মিডিয়ার জনসাধারণের ক্ষেত্রে সর্বদা নামহীনতা থাকতে পারে, যেহেতু কারও অনলাইন পরিচয় তাদের 'আসল' পরিচয় হওয়ার সত্যিকারের প্রমাণ বা সত্যিকারের আশ্বাস কখনই হতে পারে না।

সহায়তা ফোরামে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

[সম্পাদনা]

অনলাইনে যে কোনও মাধ্যম ব্যবহার করার সময়, কেবল সামাজিক বা ডিজিটাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নয়, এটি স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে যে কোনও গোষ্ঠী বা কোনও ব্যক্তির পরিচয় গোপন রাখার যে কোনও ডিগ্রি তাদের আচরণ পরিবর্তন করতে পারে, যার ফলে তারা তাদের আসল নাম বা ব্যক্তিগত বিবরণ বহন করার সময় কীভাবে নিজেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করতে পারে এবং এটি ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয়ই হতে পারে। সহায়তা ফোরামের একটি প্রকাশ যেখানে নামহীনতা একটি মূল উপাদান হ'ল বেশ কয়েকটি মানসিক স্বাস্থ্য চ্যাট ফোরামের মধ্যে একটি, যেখানে ব্যক্তিরা বেনামে এবং গোপনীয়ভাবে সাহায্য, পরামর্শ চাইতে পারেন বা কেবল অনুভব করতে পারেন যে তাদের কাছে এমন কেউ আছেন যিনি তাদের কথা শুনবেন এবং তাদের সহায়তা করার জন্য প্রাপ্তির প্রান্তে প্রশিক্ষিত পেশাদার থাকতে পারেন। এই উদাহরণে নামহীনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই সাইটগুলিতে দর্শনার্থীরা তাদের সমস্যাগুলি সম্পর্কে লজ্জিত, বিব্রত বা অনিরাপদ বোধ করতে পারে যে তারা তাদের চারপাশের লোকদের সাথে যোগাযোগ করতে বা তাদের কাছ থেকে সহায়তা চাইতে পারে না, বা স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে কথা বলতে পারে না ভয়ে ভয়ে পরিবারের সদস্যরা জড়িত হয়ে পড়ে। তারা সময় বা অর্থের সীমাবদ্ধতার কারণে অন্য কোথাও এটি চাইতে পারে না এমন কাউকে সহায়তা প্রদানের জন্য রয়েছে, বা যদি তারা সম্ভবত এমন কোনও সংস্কৃতির অংশ হয় যা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলির পক্ষে খুব সহায়ক নয়। নামহীনতা ব্যবহারকারীদের আরও উন্মুক্ত এবং সৎ হতে উত্সাহ দেয় এবং তাদের প্রয়োজনীয় নির্দিষ্ট সহায়তা পেতে সহায়তা করে।

ইয়াহু অ্যানসারসের মতো ঐতিহ্যবাহী সহায়তা এবং পরামর্শ ফোরামগুলি বিশ্বজুড়ে ব্যবহারকারীদের দ্বারা কেবল কাজ করে, ব্যবহারকারীর নাম বা ছদ্মনাম এবং কার্টুন অবতারগুলি তাদের আইকন হিসাবে, প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে এবং অন্যকে সহায়তা করে। এই মডেলটি সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েবসাইট YikYak-এও দেখা যায়, যেখানে নামহীনতা ব্যবহারকারীদের জন্য ঐচ্ছিক নয় এবং উপস্থাপিত ডিফল্ট ফিডটি একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক ব্যাসার্ধের মধ্যে ব্যবহারকারীদের দ্বারা পোস্ট করা সামগ্রীর। ব্যবহারকারীদের কাছে বিশ্বের অন্যান্য স্থানে 'উঁকি' দেওয়ার বিকল্প রয়েছে তবে পোস্ট করা এবং উত্তর দেওয়া স্থানীয় অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। এটি আমেরিকার কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জন্য স্থানীয় ইভেন্ট বা সংবাদ সম্পর্কে সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগের একটি বেনামী উপায় হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল, তবে পরবর্তীকালে বুলিংয়ের কারণে অল্প বয়স্ক শিক্ষার্থীদের সাথে স্কুল ক্যাম্পাস থেকে নিষিদ্ধ এবং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

যদিও এটি অগত্যা উদ্দেশ্যযুক্ত ফাংশন বা ইয়িকিয়াকের প্রাথমিক ব্যবহার নাও হতে পারে, তবুও পরামর্শ চাওয়া এবং বিধান সাইটে উপস্থিত রয়েছে। হাস্যরসাত্মক পর্যবেক্ষণ, কৌতুক এবং অন্যান্য সম্পর্কিত সামগ্রীর মধ্যে, ব্যবহারকারীরা তাদের চারপাশের লোকদের মতামত, জ্ঞান বা সমর্থন চাইতে সুযোগ নিতে পারেন, কাউকে প্রবেশ করতে না দিয়ে তাদের অনলাইন সামাজিক ক্ষেত্রকে প্রশস্ত করতে পারেন। ইয়িকইয়াক দ্বারা প্রদত্ত নামহীনতা ব্যবহারকারীদের এক ধরণের আত্মবিশ্বাসের সাথে ক্ষমতায়ন করতে পারে যা তাদের অন্যথায় অনলাইনে নাও থাকতে পারে এবং তাদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার বা চিন্তাভাবনা বা অনুভূতি প্রকাশ করার জায়গা দেয় যা তারা এমন একটি প্ল্যাটফর্মে ভয় পেতে পারে বা বিব্রত হতে পারে যেখানে তারা অফলাইনে তাদের সহকর্মীদের সাথে সংযুক্ত এবং পরিচিত। স্বাস্থ্য, যৌনতা, রোম্যান্স, মানসিক অসুস্থতা এবং অন্যান্য বিষয়গুলির প্রশ্নগুলি যা ব্যক্তি অনলাইনে অন্য কোথাও খোলাখুলিভাবে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারে না তা নিয়ে অবাধে আলোচনা করা হয় এবং প্রশ্নগুলি উত্থাপনকারীদের মতো, উত্তরযুক্ত ব্যবহারকারীরাও এগুলি ভাগ করে নেওয়ার জন্য আরও মুক্ত, এক ধরণের সহায়তা নেটওয়ার্ক তৈরি করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নামহীনতার এই ইতিবাচক ব্যবহার ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যক্তিগত ক্ষেত্রটি এমন লোকদের কাছে প্রসারিত করার একটি উদাহরণ যা তারা কিছু অর্জন বা ভাগ করে নেওয়ার জন্য, জনসাধারণের ক্ষেত্রের মধ্যে কারণ এটি স্থানীয় এলাকার অনেকের কাছে দৃশ্যমান এবং অনলাইনে ভাগ করে নেওয়া এবং সংরক্ষণ করা হয়। ইয়িকইয়াকের ব্যবহারকারীদের দ্বারা অভিজ্ঞ ডিসইনহিবিশন[ যদিও চির-সম্ভাব্য ধারণার দ্বারা বাধাগ্রস্ত হতে পারে যে আপনি এমন কারও সাথে কথোপকথন করছেন যার সাথে আপনি বাস্তব জীবনে জানেন এবং এই জাতীয় বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করার স্বপ্ন কখনও দেখেন না।

সাহায্যের জন্য সত্যিকারের অনুরোধ এবং উপযুক্ত উত্তর এবং আলোচনার পাশাপাশি, অনিবার্যভাবে এমন লোক রয়েছে যারা অনুকূল কারণ এবং আচরণের চেয়ে কম জন্য তাদের নামহীনতা ব্যবহার করে। যদিও তারা ঠিক কাকে টার্গেট করছে তা তারা জানে না, ব্যক্তিরা মূলত কী পোস্ট করেছে তা নির্বিশেষে লোককে সরাসরি অপমান বা অপমান করতে পারে, এটি সম্পূর্ণ সম্পর্কহীন এবং অযৌক্তিক হতে পারে। কোনও নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীর কাছ থেকে সমস্ত সামগ্রী লুকানোর বিকল্পটি এই জাতীয় আচরণের ক্ষেত্রে উপলব্ধ তবে নামহীনতার কারণে এবং যেভাবে মন্তব্যকারীদের থ্রেডগুলির মধ্যে সনাক্ত করা যায় না, এটি স্পষ্ট নয় যে একসাথে কতজন ব্যবহারকারী এইভাবে কাজ করতে পারে; একজন ব্যক্তি অনেকগুলি বা তদ্বিপরীত ভঙ্গি করতে পারে। ট্রোলিংয়ের উদ্দেশ্যে একাধিক ব্যবহারকারীর নাম তৈরি করা সহায়তা ফোরামে একই রকম ঘটনা, যেখানে নামহীনতা, যদিও কারও কারও পক্ষে উপকারী, ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা রক্ষা করার সময় জনসাধারণের ক্ষেত্রে নেতিবাচক উপায়ে ব্যবহৃত হয়।

সাইবার বুলিং

[সম্পাদনা]

ধর্ষণ একটি গুরুতর সামাজিক সমস্যা। এটি কর্মক্ষেত্র থেকে আপনার শয়নকক্ষ পর্যন্ত যে কোনও সময় যে কোনও জায়গায় ঘটতে পারে, তবে এর সর্বব্যাপী নাগাল কেবল সাম্প্রতিক উন্নয়ন। স্পিটজবার্গ এবং হুবলার বলেছেন যে ডিজিটাল এবং তথ্য বিপ্লব যোগাযোগ বিপ্লবে একীভূত হয়েছে: ফলে বার্তা এখন যেকোনো জায়গায় পৌঁছাতে পারে। অতএব, যোগাযোগ এবং প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে বৈদ্যুতিন যোগাযোগের মাধ্যমে উৎপীড়নের সম্ভাবনা বেড়েছে।

সাইবার উৎপীড়ন উৎপীড়নের একটি আধুনিক রূপ যা সাধারণত ইলেকট্রনিক বা অনলাইন যোগাযোগের ফর্ম যেমন এসএমএস, সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউবের মাধ্যমে অনুশীলন করা হয়। সাইবার বুলিং ভুক্তভোগীর পরিণতির প্রসঙ্গে বেশ কয়েকটি কারণে প্রচলিত উৎপীড়নের চেয়ে খারাপ বলে মনে করা হয়েছে।  পরিণতিগুলি আরও খারাপ হিসাবে দেখা যেতে পারে কারণ বৃহত্তর শ্রোতা যা অনলাইনে আপত্তিজনক সামগ্রীর সাথে গোপনীয় হতে পারে, উদাহরণস্বরূপ একটি ইউটিউব ভিডিওতে একটি মন্তব্য রেখে যাওয়া প্রত্যেকের দেখার জন্য উপলব্ধ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, অনলাইনে বেনামে উৎপীড়নের বর্ধিত সম্ভাবনাও রয়েছে।

একটি আক্রমণাত্মক, ইচ্ছাকৃত কাজ, যোগাযোগের বৈদ্যুতিন ফর্ম ব্যবহার করে, বারবার এবং সময়ের সাথে সাথে এমন কোনও শিকারের বিরুদ্ধে যিনি সহজেই তাকে বা নিজেকে রক্ষা করতে পারেন না।
- পিটার কে স্মিথ, মনোবিজ্ঞানের ইমেরিটাস অধ্যাপক গোল্ডস্মিথস কলেজ, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়

ফেসবুকের মতো সামাজিক মিডিয়া ওয়েবসাইটগুলিতে জাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করার সম্ভাবনা রয়েছে যেখানে উৎপীড়ক বেনামে তাদের শিকারদের হয়রানি করতে পারে। হয়রানির বেনামী প্রকৃতি নির্যাতনের প্রতারণামূলক প্রকৃতির কারণে প্রাপকের উপর নিয়মিত উৎপীড়নের চেয়ে আলাদা মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব ফেলতে পারে। সাইবার বুলিংয়ের অজানা পরিচয় ভুক্তভোগীদের জন্য ভয় এবং বিভ্রান্তির কারণ হতে পারে  এবং আমাদের অনলাইন গোপনীয়তা তাই সাইবার বুলিংয়ের বেনামী প্রকৃতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়, অনলাইনে যে সুরক্ষা অনুভূতি অনুভব করতে পারে তা দূর করে।

একটি অনলাইন ইউআরএল বা ব্যবহারকারীর নামের পিছনে লুকানোর সুরক্ষাও হুমকিকে উত্সাহিত করে। আরিকের গবেষণায় দেখা গেছে যে পরিচয় গোপন রাখার সাথে সম্পর্কিত বৈদ্যুতিন যোগাযোগগুলি সাইবার বুলিং আচরণকে প্রচার করতে দেখা গেছে।  টাম্বলার, যার ওয়েবসাইটে অন্তর্নির্মিত একটি বেনামী মেসেজিং পরিষেবা রয়েছে, বেনামে মেসেজিং পরিষেবাটির মাধ্যমে অনলাইন "ঘৃণা মেল" ব্যবহারকারীদের প্রাপ্ত অনেকগুলি উদাহরণের কারণে এই গবেষণাগুলি নিশ্চিত করে। এটি ওয়েবসাইটে সাধারণত "আনন ঘৃণা" হিসাবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

সাইবার বুলিং মুখোমুখি যোগাযোগ / অভিজ্ঞতা না থাকার সমস্ত বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে - মুখের অভিব্যক্তি, অঙ্গভঙ্গি, কণ্ঠস্বর এবং প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি - যা বুলির সাধারণত যে মানসিক দায়বদ্ধতা এবং সামাজিক জবাবদিহিতা অনুভব করে তা হ্রাস করতে পারে, ফলস্বরূপ প্রতিহিংসাপরায়ণ বা প্রতিকূল যোগাযোগে অংশ নেওয়ার সময় তারা কম দোষী বোধ করে।  অতিরিক্তভাবে, বেসরকারী এবং সরকারী ক্ষেত্রে অনলাইনে নামহীনতার সম্ভাবনা বুলি তৈরি করতে পারে যারা সাধারণত ঐতিহ্যবাহী মুখোমুখি হুমকিতে অংশ নেয় না - তাদের বেনামী প্রোফাইল দ্বারা ক্ষমতায়িত বোধ করে।

সাইবার বুলিং তাই ইন্টারনেট দ্বারা তৈরি নামহীনতার সম্ভাবনার পাশাপাশি আরও সংযুক্ত যুগে প্রযুক্তির অব্যাহত বিবর্তনকে সমৃদ্ধ করে। যদিও সাইবারনেটিক বিশ্বের মাধ্যমে উৎপীড়ন করা কম ক্ষতিকারক বলে মনে হতে পারে, বাস্তবে এটি আমাদের ব্যক্তিগত এবং সরকারী উভয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে আক্রমণকারী ঐতিহ্যগত উৎপীড়নের চেয়ে অনেক বেশি ধ্বংসাত্মক হতে পারে।

ডিজিটাল সেলফ-হার্ম

[সম্পাদনা]

ডিজিটাল স্ব-ক্ষতি হ'ল অনলাইনে বেনামে নিজেকে অপব্যবহার করার কাজ। ২০১০ সালে ডাঃ ডানাহ বয়েড "ডিজিটাল স্ব-ক্ষতি" সম্পর্কে একটি অনলাইন নিবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন "কিশোর-কিশোরীরা যারা 'বেনামে' নিজের কাছে অর্থ প্রশ্ন লিখে এবং প্রকাশ্যে তাদের উত্তর দিয়ে স্ব-হয়রানি করছে তাদের বর্ণনা করে" এই ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে একটি ওয়েবসাইটের কর্মীরা উন্মোচন করেছিলেন, ফর্মস্প্রিং (বর্তমানে Spring.me নামে পরিচিত) যা কিছু সাইবার বুলিং তদন্ত করে দেখেছে যে অভিযুক্ত ভুক্তভোগীরা আসলে নিজেদের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর মন্তব্য পোস্ট করেছিল।

ম্যাসাচুসেটস অ্যাগ্রেশন রিডাকশন সেন্টারের এলিজাবেথ ইংল্যান্ডারের একটি গবেষণায় এই ঘটনাটিকে "ডিজিটাল মুনচাউসেন" হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে কারণ এই কিশোরদের দ্বারা পরিচালিত প্রক্রিয়াটি প্রক্সি দ্বারা মানসিক ব্যাধি মুনচাউসেন সিনড্রোম এবং মুনচাউসেন সিনড্রোমের কিছু লক্ষণকে প্রতিফলিত করে। সিন্ড্রোমগুলির প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য হ'ল সহানুভূতি, মনোযোগ এবং প্রশংসার সন্ধানে রোগীদের স্ব-ক্ষতি করা কারণ তারা তাদের শিকারের সাথে মোকাবিলা করার চেষ্টা করে। ২০১১ সালে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল যা আবিষ্কার করেছিল যে ৯% কিশোর-কিশোরী ডিজিটাল স্ব-ক্ষতিতে অংশ নিয়েছিল - নিজের বিরুদ্ধে বেনামে একটি নিষ্ঠুর মন্তব্য করে বা নিজেরাই সাইবার উৎপীড়ন করে: ছেলেদের একটি উচ্চ অনুপাত (১৩%) মেয়েদের (৮%) তুলনায় এটি স্বীকার করে। এই "ডিজিটাল স্ব-ক্ষতিকারকদের" প্রায় অর্ধেক কেবল একবার বা খুব কমই এটি করেছিলেন; অন্য অর্ধেক রিপোর্ট করেছেন যে তারা নিজেদেরকে আরও নিয়মিতভাবে সাইবার বুলিং করেছেন বা একটি চলমান পর্ব ছিল যা কমপক্ষে কয়েক মাস স্থায়ী হয়েছিল।

ফর্মস্প্রিংয়ের মতো বেনামী প্রশ্ন ফোরাম দ্বারা প্রদত্ত সম্ভাব্যতা, পাশাপাশি প্রায় কোনও ডিজিটাল বা সোশ্যাল মিডিয়ায় নামহীনতার সম্ভাবনা স্পষ্টতই বিভিন্ন উদ্দেশ্যে নিজেকে "ক্ষতি" এবং "ক্ষতিগ্রস্থ" করার সরঞ্জাম হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। ডানাহ বয়েড অনুমান করেছেন যে কিশোর-কিশোরীরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করা, শীতল প্রদর্শিত হওয়ার জন্য বা প্রশংসা ট্রিগার করার চেষ্টা করার জন্য নিজের ক্ষতি করার জন্য অনলাইন নামহীনতা ব্যবহার করে। এলিজাবেথ ইংল্যান্ডারের গবেষণায় দেখা গেছে যে তারা কোনও সহকর্মীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বা অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে তারা "এটি নিতে পারে" তা প্রমাণ করার জন্য ডিজিটাল স্ব-ক্ষতিতে অংশ নিয়েছিল। ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই, প্রায় ৩৫% বলেছেন যে স্ব-সাইবার উৎপীড়ন কৌশলটি তাদের জন্য সফল ছিল, এতে তারা যা চেয়েছিল তা অর্জনে সহায়তা করেছিল এবং তাদের বেনামে স্ব-নির্যাতনের পরে আরও ভাল বোধ করেছিল।  সুতরাং ইন্টারনেটে বেনামী স্ব-ক্ষতির সম্ভাবনা বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ, যা কেবল অনলাইন, ব্যক্তিগত এবং সরকারী উভয় ক্ষেত্রেই নামহীনতার সম্ভাবনার কারণে সম্ভব হয়েছে।

সাইবারস্টকিং

[সম্পাদনা]

বর্তমান সময়ে, ফেসবুকের মতো সামাজিক মিডিয়া সাইটগুলিতে কারও ব্যক্তিগত অনলাইন প্রোফাইলে যাওয়ার ধারণাটি করা খুব সাধারণ এবং সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য জিনিস বলে মনে হয় এবং 'স্টকিং' শব্দটি হালকাভাবে এবং কৌতুকপূর্ণভাবে এটি সংজ্ঞায়িত করতে ব্যবহৃত হতে পারে। একজন ব্যবহারকারী অপরিচিত ব্যক্তির ব্যক্তিগত প্রোফাইল স্ক্রোল করতে ঘন্টা ব্যয় করতে পারেন এবং সেই ব্যক্তির অনেক ব্যক্তিগত বিবরণ আবিষ্কার এবং শিখতে পারেন। যাইহোক, এই ধরনের আপাতদৃষ্টিতে নির্দোষ কাজ খুব সহজেই এবং দ্রুত হাতের বাইরে চলে যেতে পারে, যা খুব গুরুতর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

সর্বাধিক সাধারণ (এবং আবার, মূলত সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য) ধরণের সাইবারস্ট্যাকিং সাধারণত সেলিব্রিটিদের দিকে পরিচালিত হয়, বিশেষত তাদের সামাজিক মিডিয়া প্রোফাইলগুলি। ব্যবহারকারী এই জাতীয় ধারণাটি আপলোড করতে বেছে নিয়েছেন এবং এটি সর্বজনীনভাবে উপলব্ধ করেছেন তা হ'ল অন্যান্য ব্যবহারকারীদের এটি 'স্টকিং' করার জন্য ঘন্টা ব্যয় করতে অনুপ্রাণিত করে, যার কারণে কেউ এই আইনটিকে আসলে সাইবারস্ট্যাকিং হিসাবে বিবেচনা করে না। তবে, সমস্ত ব্যবহারকারী কেবল এখানেই থামেন না, এ কারণেই সাইবারস্ট্যাকিং আসলে সাইবার বুলিংয়ের একটি রূপ।

অ্যালেক্সিস মুর সাইবারস্ট্যাকিংকে এমন এক ব্যক্তির উপর প্রযুক্তি-ভিত্তিক "আক্রমণ" হিসাবে বর্ণনা করেছেন যাকে রাগ, প্রতিশোধ বা নিয়ন্ত্রণের কারণে সেই আক্রমণের জন্য বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। সাইবারস্ট্যাকিং অনেকগুলি রূপ নিতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  1. ভিকটিমকে হয়রানি, বিব্রত ও অপমান
  2. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করা বা অন্যান্য অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ যেমন ভুক্তভোগীর ক্রেডিট স্কোর নষ্ট করা
  3. ভুক্তভোগীকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং নিয়োগকর্তাদের হয়রানি করা
  4. ভয় দেখানোর কৌশল এবং আরও অনেক কিছু

সাইবার বুলিং এবং সাইবার স্টকিংয়ের মধ্যে পার্থক্যগুলি একটি ট্রোলিং ম্যাগনিটিউড (টিএম) স্কেলে দেখা হয়েছে, যা দেখায় যে, সাইবার বুলিং আরও কৌশলগত, সাইবার স্টকিং আধিপত্য সম্পর্কে আরও বেশি। ৬৬]

টি.এম. মোটিফ পরিমণ্ডল মাধ্যাকর্ষণ বর্ণনা
1 খেলার সময় সাইবার কৌতুক সাইবার-ট্রোলিং মুহূর্তে এবং দ্রুত অনুশোচনা
2 কৌশলগত সাইবার প্রতারণা সাইবার-ট্রোলিং এই মুহুর্তে তবে আফসোস করবেন না এবং চালিয়ে যান
3 কৌশলগত সাইবার বুলিং সাইবার-স্টকিং সমস্যা সৃষ্টির পথে যান, তবে একটি টেকসই এবং পরিকল্পিত দীর্ঘমেয়াদী প্রচারণা ছাড়াই
4 আধিপত্য বিস্তার সাইবার-হিকারি সাইবার-স্টকিং এক বা একাধিক নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে সমৃদ্ধ মিডিয়া তৈরি করার পথে চলে যায়
… ইন্টারনেট, ই-মেইল বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ডিভাইস[গুলি] এক বা একাধিক শিকারের মধ্যে ভয় দেখানো, হয়রানি এবং ভয়ের অপরাধমূলক স্তর তৈরি করতে
—এম এল পিত্তারো

সাইবারস্ট্যাকিং তিনটি প্রধান বিভাগে পড়ে: সরাসরি যোগাযোগ, পরোক্ষ যোগাযোগ, যা অনলাইনে প্রচারিত বা পোস্ট করা হয় এবং অনলাইনে ভুল উপস্থাপনা।  পাশাপাশি চারটি প্রধান ধরণের সাইবারস্ট্যাকার রয়েছে: প্রতিহিংসাপরায়ণ সাইবারস্ট্যাকার, রচিত সাইবারস্ট্যাকার, অন্তরঙ্গ সাইবারস্ট্যাকার এবং সম্মিলিত সাইবারস্ট্যাকার। প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রকারটি অন্য কোনও গোষ্ঠীর তুলনায় তাদের শিকারকে হুমকি দেওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি এবং কখনও কখনও অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও তাদের অনুসরণ করতে পারে। এই ক্ষেত্রে স্টকিং সাধারণত একটি তুচ্ছ আলোচনা বা যুক্তি দিয়ে শুরু হয় এবং অপরাধী বিরক্ত হয়ে ভুক্তভোগীর ক্ষতি করার মিশনে যাত্রা করে। এই ধরণের শিকারের বিরুদ্ধে স্প্যাম, ভাইরাস এবং পরিচয় চুরি ব্যবহার করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি ছিল। রচিত সাইবারস্টকার ভুক্তভোগীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় না, বরং কেবল হয়রানি করতে চায়, হুমকি দেয়, এবং ভুক্তভোগীকে বিরক্ত করে। অন্তরঙ্গ সাইবারস্টকার ভুক্তভোগীর সাথে সম্পর্ক রাখতে চায়। এই ধরনের দুটি উপশ্রেণীতে বিভক্ত করা যেতে পারে: প্রাক্তন অন্তরঙ্গ এবং মোহগ্রস্ত। প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ অতীতের সম্পর্কটি মেরামত করার ইচ্ছা করতে পারে তবে তিনি ভুক্তভোগীকেও হুমকি দিতে পারেন। হয়রানি শুরু হয় ইন্টারনেটে এই ধরনে, অফলাইনে নয়। মোহ ভুক্তভোগীকে একটি অন্তরঙ্গ বার্তা প্রেরণ করে শুরু হয় এবং শিকারের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলার ইচ্ছা পোষণ করে। যখন মোহ প্রত্যাখ্যান করা হয়, তখন সে শিকারকে হুমকি দেওয়া শুরু করবে। শেষ অবধি, সম্মিলিত সাইবারস্ট্যাকাররা ভুক্তভোগীকে অনেকগুলি ইমেল প্রেরণ করতে এবং স্প্যাম, হুমকি এবং শিকারের পরিচয় চুরি করতে একসাথে কাজ করে।  গবেষণা আরও দেখায় যে সাইবারস্ট্যাকিংয়ের শিকাররা বাস্তব জীবনে অনুসরণ করা লোকদের মতোই ভয় এবং অসহায়ত্ব বোধ করার সম্ভাবনা রয়েছে কারণ সাইবারস্ট্যাকাররা প্রায়শই বেনামে লুকিয়ে থাকে যা তাদের প্রতিরোধ করা বা ধরা আরও কঠিন করে তোলে কারণ তারা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব দ্বারা প্রদত্ত গোপনীয়তা থেকে ডাঁটা নিতে পারে।  এই ইঙ্গিতটি সাইবারস্ট্যাকারদের আরও হুমকিস্বরূপ, ভয়ঙ্কর এবং ভীতিজনক করে তুলতে পারে।

তবে, প্রতিহিংসাপরায়ণ ধরণের ক্ষেত্রে, সাইবারস্ট্যাকিং প্রায়শই গুরুতর ক্ষেত্রে অফলাইন বা 'রিয়েলটাইম' স্টকিংয়ের সাথে একসাথে আসতে পারে। এর কারণ হ'ল যদি নির্দিষ্ট মনস্তাত্ত্বিক সমস্যাযুক্ত কোনও ব্যক্তি সাইবারস্ট্যাকিং হয় তবে তারা প্রায়শই মনে করে যে এটি তাদের পক্ষে আর যথেষ্ট নয় (নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পরে) এবং এটিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়; অফলাইনে স্টকিং। অফলাইন এবং অনলাইন স্টকিংয়ে আইনের পরিণতি রয়েছে এবং সাইবারস্ট্যাকারদের কারাগারে রাখা যেতে পারে।  [67]। তবে, সাইবারস্ট্যাকিংয়ের ফলে যে মানসিক ক্ষতি হয় তার জন্য এটি প্রায়শই যথেষ্ট নয়।

সামাজিক মনোবিজ্ঞানী রবিন এম কোয়ালস্কির মতে, সাইবার বুলিং এবং সাইবারস্ট্যাকিং সাধারণ উৎপীড়নের চেয়ে ভুক্তভোগীদের জন্য উচ্চ স্তরের উদ্বেগ এবং হতাশার কারণ হিসাবে দেখা গেছে। কোওয়ালকি বলেছেন যে এর বেশিরভাগই অপরাধীদের পরিচয় গোপন রাখা থেকে উদ্ভূত হয়, যা সাইবারস্ট্যাকিংয়ের একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্যও।  তার গবেষণায় দেখা গেছে, মধ্য বিদ্যালয়ের ৩ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থীর এক চতুর্থাংশ অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েছে।

হ্যাকার এবং হ্যাক্টিভিজম

[সম্পাদনা]

হ্যাক্টিভিজম একটি বিতর্কিত শব্দ যা এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে আলগাভাবে এবং সবচেয়ে প্রাসঙ্গিকভাবে, সামাজিক পরিবর্তনকে প্রভাবিত করার জন্য প্রযুক্তিগত হ্যাকিংয়ের ধারণাকে বোঝায়। অনেক গোষ্ঠী এবং ব্যক্তি তাদের কাজের প্রকৃতির কারণে তাদের পরিচয় গোপন করার জন্য প্রচুর পরিমাণে যায়, তারা নৈতিক বা অনৈতিক হোক না কেন, এবং কেউ কেউ ছদ্মনাম অ্যানোনিমাস ব্যবহার করে, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপগুলির মধ্যে একটি যা 4chan এর ফোরামে উদ্ভূত হয়েছিল এবং বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হ্যাকিং কার্যক্রমের জন্য দায়ী।

ধারণাটি হ'ল হ্যাক্টিভিস্ট হিসাবে চিহ্নিত গোষ্ঠী এবং ব্যক্তিরা তাদের পরিচয় এবং অবস্থানের মতো বিবরণ সম্পূর্ণরূপে গোপন রেখে তাদের বিশ্বাস এবং ক্রিয়াকলাপগুলি ব্যাপকভাবে পরিচিত এবং স্বীকৃত হতে চায়। এটি জনসাধারণের ক্ষেত্রে একটি উচ্চ প্রোফাইল রাখার একটি অস্বাভাবিক উদাহরণ যখন সম্পূর্ণ পরিচয় গোপন রাখা এবং তাদের ব্যক্তিগত ক্ষেত্র থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে, যখন অন্যান্য ব্যক্তি বা সংস্থার গোপনীয়তা লঙ্ঘন করার জন্য তাদের দক্ষতা ব্যবহার করে। এর দ্বারা ব্যক্তিগতভাবে লাভ করার কিছু নেই, যেমন স্বীকৃতি, তবে এটি প্রায়শই রাজনৈতিক বা সামাজিক বিশ্বাস বা ন্যায়বিচারের নামে সক্রিয়তা যা এই ধরণের হ্যাকারদের সনাক্ত করার প্রতিক্রিয়া ছাড়াই অনুপ্রাণিত করে। এটি সাইবার সন্ত্রাসবাদের চরম দিকে পরিচালিত করতে পারে, যা কখনও কখনও হ্যাক্টিভিজমের বিভাগে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।

হ্যাক্টিভিজম এবং রাজনৈতিক হ্যাকিংয়ের বিবর্তন

[সম্পাদনা]

কম্পিউটারাইজড অ্যাক্টিভিজমের উত্স প্রাক-ওয়েব ইতিহাসে 1980 এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রসারিত। উদাহরণস্বরূপ, পিসনেটের প্রথম সংস্করণটি 1986 সালের প্রথম দিকে হাজির হয়েছিল। পিসনেট প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক কর্মীদের আন্তর্জাতিক সীমানা পেরিয়ে আপেক্ষিক স্বাচ্ছন্দ্য এবং দ্রুততার সাথে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম করেছে।  অতীতের কম্পিউটারাইজড অ্যাক্টিভিজম নির্দিষ্ট পর্যায়ে বিকশিত হয়েছে: বৈদ্যুতিন নাগরিক অবাধ্যতা সক্রিয়তা যা অহিংস প্রত্যক্ষ কর্ম এবং নাগরিক অবাধ্যতার ঐতিহ্যে কাজ করে সাধারণ নাগরিক অবাধ্যতা কৌশল যেমন সিট ইন / শারীরিক অবরোধ, এবং তাদের আধুনিক সংস্কৃতিতে অনুবাদ করা: ভার্চুয়াল অবরোধ তৈরি করা। বৈদ্যুতিন নাগরিক অবাধ্যতার ঐতিহ্যবাহী অবস্থানের বিপরীতে, কর্মীরা বাড়ি, কর্মক্ষেত্র বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে - ওয়েবের সাথে সংযুক্ত যে কোনও জায়গায় ভার্চুয়াল অবরোধে অংশ নিতে পারে।  ইসিডি কর্মীদের উল্লেখ করা প্রয়োজন কারণ তারা এমন একটি প্রক্রিয়ার অংশ যা রাজনৈতিকীকরণ হ্যাকারভিজমের দিকে পরিচালিত করেছে।

বেশিরভাগ রাজনৈতিকায়িত হ্যাকিং এবং সবেমাত্র উল্লিখিত বৈদ্যুতিন নাগরিক অবাধ্যতার ধরণের মধ্যে একটি প্রধান পার্থক্য হ'ল ইসিডি অভিনেতারা তাদের নাম গোপন করেন না, রাজনৈতিক হ্যাকগুলি সাধারণত এমন লোকদের দ্বারা করা হয় যারা বেনামী নাম দিতে চান কারণ তারা যা করে তার বেশিরভাগই বোর্ডের উপরে নয়। এই হ্যাকগুলি প্রায়শই বৃহত্তর গোষ্ঠীর পরিবর্তে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। হ্যাকটিভজমে নামহীনতার মূল কারণ হ'ল ঝুঁকিগুলি অনেক বেশি, কিছু হ্যাক নিঃসন্দেহে অবৈধ: 24 নভেম্বর 2014 এর সনি পিকচার্স হ্যাকের মতো।  যাইহোক, অনলাইন ওয়েবের প্রকৃতি রাজনৈতিক সীমানা অতিক্রম করার সময় বেনামে থাকার সুযোগ দেয়। কারও ব্যক্তিগত কম্পিউটারে প্রবেশ করা এবং এইচটিএমএল কোডিং যুক্ত বা পরিবর্তন করার বৈধতা নিয়ে খুব কম লোকই প্রশ্ন তুলবে। অতএব হ্যাক্টিভিস্টদের নামহীনতা একটি প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম।

এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে হ্যাক্টিভিজম তার শৈশবকালে খুব বেশি। হ্যাক্টিভিজম কোন দিকে মোড় নেবে সে সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট বিবৃতি দেওয়ার সময় এখনও আসেনি। সম্ভবত হ্যাক্টিভিজমের পুরো ধারণাটি ওয়েবে নামহীনতার সম্ভাবনার অপব্যবহার করে মূল্যবোধ এবং নৈতিক এবং নৈতিক কোডগুলির সেটগুলিকে বিকৃত করে এবং চ্যালেঞ্জ করে। স্টিভেন লেভি দুঃখ প্রকাশ করেছেন যে "আধুনিক দিনের" হ্যাকাররা নামের যোগ্য নয় কারণ তারা মূল হ্যাকার নীতিশাস্ত্রের নীতিগুলি বজায় রাখে না এবং অনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে কেবল "কম্পিউটার সন্ত্রাসী" বা "কিশোর" বলা উচিত।  ভবিষ্যতে হ্যাকারভিজমের সাথে জড়িত কিছু পুনর্বিবেচনা হবে এবং আমরা হ্যাকিংয়ের জন্য নৈতিক কোডগুলির একটি নতুন সেট বিকশিত হতে শুরু করতে পারি।

নাম প্রকাশে

[সম্পাদনা]

অনিচ্ছুক অ্যানোনিমাস হ্যাকটিভিস্টদের একটি অস্পষ্টভাবে সংযুক্ত আন্তর্জাতিক গ্রুপ। গ্রুপটি ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে মনে করা হয় যেখানে ২০০৬ সালে হাব্বোর মতো অন্যান্য সামাজিক মিডিয়া ওয়েবসাইটে অভিযানের সময় ৪চ্যানে তাদের প্রথম পরিচিত কার্যক্রম প্রকাশিত হয়েছিল।  বেনামী সদস্যদের স্টাইলাইজড গাই ফকস মুখোশ দ্বারা জনসমক্ষে চিহ্নিত করা যেতে পারে যা তারা পরিধান করে যা ভি ফর ভেন্ডেটার মতো ছবিতে বিদ্রোহের প্রতীক হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং এখন অ্যানোনিমাসের সাথে এর সংযোগের মাধ্যমে।

যে কেউ এর অংশ হতে পারে। এটি মানুষের ভিড়, মানুষের একটি অস্পষ্ট ভিড়, একসাথে কাজ করা এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্যে একসাথে কাজ করা।

গ্রুপের কোন নেতা নেই বরং নির্দেশের পরিবর্তে আইডিয়া নিয়ে কাজ করে, এইভাবে, কোনও একক ব্যক্তি বা ফিগারহেড তাদের হ্যাকের দোষের সাথে যুক্ত হতে পারে না। সাধারণভাবে বলতে গেলে, অ্যানোন ইন্টারনেট সেন্সরশিপ এবং নিয়ন্ত্রণের সাথে একমত নন, মূলত সরকার, কোম্পানি এবং সংস্থাগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করে যা তারা মনে করে যে সেন্সরশিপ সরবরাহ করছে, অ্যানোনিমাস আরব বসন্তের প্রাথমিক সমর্থক ছিল (বিভাগ 1.5.4.3.1 দেখুন)।  দলটির তুলনামূলকভাবে কম নিয়ম রয়েছে তবে তাদের মধ্যে রয়েছে তাদের পরিচয় প্রকাশ না করা, মিডিয়াকে আক্রমণ না করা এবং সামগ্রিকভাবে গোষ্ঠী সম্পর্কে কথা না বলা।

"আমরা [অ্যানোনিমাস] ইন্টারনেটে এমন একদল লোক যাদের প্রয়োজন - আমরা যা চাই তা করার জন্য কেবল এক ধরণের আউটলেট, যা আমরা নিয়মিত সমাজে করতে সক্ষম হব না। ... মোটামুটি এটাই আসল কথা। তোমার যা ইচ্ছে তাই করো। ... একটি প্রচলিত বাক্যাংশ আছে: 'আমরা এটি লুলজের জন্য করছি।

অ্যানোনিমাসের হ্যাক্টিভিস্ট কর্মকাণ্ডের একটি উদাহরণ হতে পারে নিরস্ত্র আফ্রিকান-আমেরিকান মাইকেল ব্রাউনকে মারাত্মক পুলিশ গুলি করার পরে সাইবার প্রতিবাদ। অ্যানোনিমাসের সাথে যুক্ত বলে দাবি করা একটি হ্যাক্টিভিস্ট সংস্থা পুলিশের বিরুদ্ধে সাইবার প্রতিবাদের আয়োজন করেছিল, এটি করার জন্য একটি ওয়েবসাইট এবং একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট স্থাপন করেছিল।  হ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং হুমকি দিয়েছিল যে যদি কোনও মুহুর্তে কোনও বিক্ষোভকারীকে হয়রানি বা ক্ষতি করা হয় তবে তারা শহরের সার্ভারগুলিতে আক্রমণ করে তাদের অফলাইনে নিয়ে যাবে। শহরের কর্মকর্তারা সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন যে ই-মেইল সিস্টেমগুলি লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল এবং ফোনগুলি মারা গিয়েছিল, যখন ইন্টারনেট সিটি হলে ক্র্যাশ করেছিল।  পরে, অ্যানোনিমাসের সদস্যরা বলেছিলেন যে তারা ব্রাউনকে গুলি করা অজ্ঞাত পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছেন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তার নাম প্রকাশ করবেন।  এরপর অ্যানোনিমাস তাদের টুইটার ফিডে মাইকেল ব্রাউনকে গুলি করা ওই কর্মকর্তার নাম বলে দাবি করে।  তবে পুলিশ বলেছে যে অ্যানোনিমাস দ্বারা প্রকাশিত পরিচয়টি আসলে ভুল ছিল।  এরপরই অ্যানোনিমাস অ্যাকাউন্টটি তাদের সেবা থেকে সাসপেন্ড করে দেয় টুইটার।  ১৯ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে জানা গেছে যে ফার্গুসন দাঙ্গার পরে কেকেকে মৃত্যুর হুমকি দেওয়ার পরে কু ক্লাক্স ক্লান (কেকেকে) এর বিরুদ্ধে সাইবার যুদ্ধ ঘোষণা করে অ্যানোনিমাস প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। তারা কেকেকে-র টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে, কেকেকে সাইটের সার্ভারে হামলা চালায় এবং সদস্যদের ব্যক্তিগত বিবরণ প্রকাশ করতে শুরু করে।

অনলাইন পাইরেসি এবং এস.ও.পি.এ

[সম্পাদনা]

যদিও জলদস্যুতা সবসময়ই একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, ডিজিটাল যুগ এটিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রশস্ত করেছে। ডিজিটাল মিডিয়া বিশিষ্টতা আসার আগে, চলচ্চিত্র বা সঙ্গীতের মতো পণ্যগুলি পাইরেটিং করা আরও কঠিন ছিল এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার একটি নির্দিষ্ট ডিগ্রী প্রয়োজন ছিল। এগুলি ছাড়াও, জলদস্যুতা একটি নিষিদ্ধ হিসাবে বেশি দেখা হত এবং পাইরেটেড পণ্যগুলির গুণমান সাধারণত খারাপ ছিল। ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে, মিডিয়ার একটি অংশের একটি অনুরূপ মানের অনুলিপি তৈরি করা যেতে পারে এবং গণ শ্রোতাদের কাছে স্বল্প ব্যয়ে বিতরণ করা যেতে পারে।

বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রথম বড় ফাইল শেয়ারিং প্রোগ্রামটি ছিল নেপস্টার, যা পিয়ার-টু-পিয়ার (পি 2 পি) ফাইল শেয়ারিংয়ের সবচেয়ে বিশিষ্ট উদাহরণ ছিল, যা ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পরিচালিত হয়েছিল, ২৫ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী এবং ৮০ মিলিয়ন গান সংগ্রহ করেছিল। ব্যবহারকারীরা এখন যে কোনও মিউজিক ফাইল বিনামূল্যে ডাউনলোড এবং ভাগ করতে পারবেন। কপিরাইটযুক্ত উপাদান সরাবে না বলে সাইটটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন শিল্পী মামলা দায়ের করেছিলেন। যাইহোক, নেপস্টার এই মামলাগুলির প্রতিটি নিষ্পত্তি করতে দ্রুত ছিল। ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট অ্যাক্ট দ্বারা প্রবর্তিত আইনের কারণে সাইটটি শেষ পর্যন্ত সমাপ্ত হয়েছিল। এটি মিডিয়া শিল্পের ডিজিটাল পাইরেসির বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রথম উল্লেখযোগ্য লক্ষণ চিহ্নিত করেছে।

ইন্টারনেট পাইরেসি হ'ল যখন অননুমোদিত অনুলিপিগুলি ইন্টারনেটে ডাউনলোড করা হয়। এটি সাধারণত পিয়ার-টু-পিয়ার ফাইল শেয়ারিং সিস্টেমের মাধ্যমে করা হয়, যার কিছু উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল Pirate Bay এবং LimeWire। বর্তমানে কয়েক হাজার ওয়্যারেজ সাইট রয়েছে যা ব্যবহারকারীদের জন্য ডাউনলোডগুলিতে সীমাহীন অ্যাক্সেস সরবরাহ করে। কমপ্যাক্ট ডিস্ক ফর্ম্যাটে কেনা অন-লাইন সফ্টওয়্যার ক্রয়ের ক্ষেত্রে একই ক্রয়ের নিয়ম প্রযোজ্য।


সাধারণ ইন্টারনেট পাইরেসি কৌশলগুলি হ'ল:

  • যে ওয়েবসাইটগুলি বিনামূল্যে ডাউনলোডের জন্য বা অন্যের বিনিময়ে সফ্টওয়্যার উপলব্ধ করে।
  • অনলাইন নিলাম সাইট যা নকল বা আউট-অফ-চ্যানেল সফ্টওয়্যার সরবরাহ করে।
  • পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্কগুলি যা কপিরাইটযুক্ত প্রোগ্রামগুলির অননুমোদিত স্থানান্তর সক্ষম করে।


একবার ডাউনলোড হয়ে গেলে, এই পাইরেটেড ফাইলগুলি একটি বিটটরেন্ট ক্লায়েন্টে হোস্ট করা হয়। এই জাতীয় ক্লায়েন্টদের মধ্যে রয়েছে μTorrent, Xunlei, Transmission, QBittorrent, Vuze, Deluge, এবং BitComet।

এই ধরণের ফাইল ভাগ করে নেওয়া ব্যক্তিগত ডিজিটাল গোলকের সাথে ছেদ করা পাবলিক ডিজিটাল গোলকের ইঙ্গিত দেয়। ডেটা অধিগ্রহণ, আপলোড, টরেন্টিং এবং বীজ বপনের প্রক্রিয়াগুলির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সম্প্রদায়ের সহযোগিতা যার ফলস্বরূপ ব্যক্তি এমন মিডিয়া অ্যাক্সেস করতে সক্ষম হয় যা অন্যথায় অ্যাক্সেসযোগ্য হতে পারে।

ফাইল-শেয়ারিংয়ের এই পদ্ধতিটি আরও বিশিষ্ট হয়ে ওঠার সাথে সাথে এটি একটি অপরাধ এই ধারণাটি সমষ্টিগত চেতনায় কম বদ্ধমূল হয়ে যায় এবং ফাইল ভাগ করে নেওয়া কম বিচ্যুত আচরণ হিসাবে বিবেচিত হওয়ার সাথে সাথে এটি ব্যবহারকারীদের মধ্যেও দৈনন্দিন হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ম্যাকলুহানের প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদের মডেল অনুসরণ করে আমরা দেখেছি সামাজিক মনোভাব প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে ঝুঁকছে। যাইহোক, অজানা সফ্টওয়্যার ডাউনলোডের প্রতি এই শিথিল মনোভাবের ফলে কম্পিউটার সুরক্ষায় আরও বেশি সংখ্যক লঙ্ঘন ঘটেছে। ডাউনলোডের উত্স এবং গুণমান যাচাই করার দক্ষতার এই অভাব ফাইল-ভাগ করে নেওয়ার মূল সমস্যা কারণ এটি অন্যান্য অসংখ্য ঝুঁকিকে আরও বিশিষ্ট হতে দেয়, যেমন ব্যক্তিগত তথ্যের প্রকাশ বা ভবিষ্যতে আক্রমণগুলির সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি।

অনলাইন পাইরেসি অ্যাক্ট বন্ধ করুন

স্টপ অনলাইন পাইরেসি অ্যাক্ট (এস.ও.পি.এ) (এস.ও.পি.এ) নামে অধিক পরিচিত এই আইনটি ২০১১ সালে মার্কিন সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত একটি বিতর্কিত বিল, যা অনলাইন পাইরেসি বন্ধ করার প্রচেষ্টায়। বিলটি বিষয়বস্তু নির্মাতাদের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল এবং মূলত কপিরাইটধারীদের পাইরেসি নির্মূল করার দক্ষতায় নিযুক্ত করেছিল। এটি করতে গিয়ে, এটি কপিরাইটধারীদের (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রেকর্ড লেবেল এবং চলচ্চিত্র বিতরণকারীদের) কেবল সামগ্রীই নয়, সরবরাহকারী নিজেই বন্ধ করার এবং অন্যান্য সমস্ত অনলাইন পরিষেবাদিকে একই কাজ করতে বাধ্য করার ক্ষমতা দিয়েছে; তবে শর্ত থাকে যে তাদের একটি আইনী কপিরাইট দাবি রয়েছে। তবে, বিলের "ডেপুটিসিং" প্রভাবের অর্থ হ'ল কপিরাইটধারীরা দাবির বিষয়ে কোনও বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে বাধ্য হবেন না। এর মানে হল যে কর্পোরেশনগুলি তাত্ক্ষণিকভাবে একক ব্যক্তির (বা পুরো সংস্থার) অনলাইন পদচিহ্ন বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে - PayPal এবং সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলির মতো অন্যান্য ইন্টারনেট পরিষেবাগুলিকে দাবি মেনে চলতে বাধ্য করে, পাশাপাশি অপরাধীকে আবার পরিষেবাগুলি ব্যবহার করা থেকে কালো তালিকাভুক্ত করে। বিলটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে লঙ্ঘনের দাবির নীতিগুলির জন্য প্রশংসিত হয়েছিল, বিদেশী ওয়েবসাইটগুলি থেকে অবৈধ সামগ্রী বন্ধ করার ক্ষেত্রে দাবিদারকে আরও ক্ষমতা দিয়েছিল। বিলে অবৈধ স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রেও কঠোর নীতি রয়েছে, সেই সামগ্রী সরবরাহকারী এবং যারা এটি ব্যবহার করে তাদের উভয়ের জন্য - অবৈধ সামগ্রী দেখা বা শোনার জন্য সর্বোচ্চ 5 বছরের কারাদণ্ড সহ।

সিনেট এবং হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস উভয় ক্ষেত্রেই অন্যান্য সংস্থা এবং ইউনিয়নগুলির মধ্যে দৃঢ় সমর্থন পাওয়া সত্ত্বেও বিলটি মার্কিন নাগরিকদের দ্বারা প্রচণ্ড বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিল। অনেকে অনুভব করেছিলেন যে বিলটি বৌদ্ধিক সম্পত্তি আইনের লঙ্ঘন ছিল এবং দাবি করেছিলেন যে বিলের নির্দেশিকাগুলি এত বিস্তৃত এবং অস্পষ্ট ছিল যে একক ব্যক্তির দ্বারা একটি ছোট লঙ্ঘন বিপর্যয়কর পরিণতি হতে পারে। অন্যরা আরও দাবি করেছেন যে ইন্টারনেট অনুসন্ধান ফলাফলগুলি ব্লক করার এবং পরিষেবা এবং তথ্য থেকে ব্যবহারকারীদের কালো তালিকাভুক্ত করার বিলের প্রস্তাবটি প্রথম সংশোধনীর লঙ্ঘন ছিল। বিলটি বিভিন্ন অনলাইন সম্প্রদায়ের দ্বারা যথেষ্ট বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছিল - যার সদস্যরা বিলটির ভবিষ্যতকে রূপ দিয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত এটি প্রত্যাহারে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

অনলাইন-অ্যাক্টিভিজম একচেটিয়াভাবে বাস্তব জগতে অভিজ্ঞ বিষয়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে না, গোষ্ঠীগুলি অনলাইন স্বাধীনতা এবং নেট নিরপেক্ষতা সম্পর্কিত বিষয়গুলি প্রচারের জন্য একত্রিত হতে পারে। অনলাইন কমিউনিটি সাইট রেডডিট সক্রিয়ভাবে এস.ও.পি.এ এবং এর নীতিগুলির বিরোধিতা করেছিল এবং অন্যান্য সরবরাহকারী এবং সামগ্রী নির্মাতাদের প্রতিবাদে দাঁড়াতে উত্সাহিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একটি সাবরেডিট (একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে বক্তৃতার জন্য উত্সর্গীকৃত সাইটের বিভাগ) বিল এবং এর প্রতিবাদ করার উপায় উভয়ই নিয়ে আলোচনা করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। অনেক ব্যবহারকারী লক্ষ্য করেছেন যে ডোমেইন হোস্টিং সাইট গোড্যাডি সক্রিয়ভাবে এস.ও.পি.এ-কে সমর্থন করে, যা বিশ্বব্যাপী তার পরিষেবাগুলি বয়কট করতে প্ররোচিত করেছিল। রেডডিট ব্যবহারকারীরা সম্মিলিতভাবে তাদের সাবস্ক্রিপশনগুলি টেনে নিয়েছিল, 82000 ডোমেনের একটি সিঙ্ক্রোনাস ঘাটতি তৈরি করেছিল এবং গোড্যাডিকে এস.ও.পি.এ. সিইও ওয়ারেন অ্যাডেলম্যানের একটি বিবৃতি ২৯ ডিসেম্বর ২০১১ এ এটি নিশ্চিত করেছে:

"আমরা ডোমেইন নাম স্থানান্তরের ক্ষেত্রে একটি স্পাইক লক্ষ্য করেছি, যা স্বাভাবিক হারের চেয়ে বেশি চলছে এবং যা আমরা সোপা-র জন্য গোড্যাডির পূর্বের সমর্থনকে দায়ী করি, যা বিপরীত হয়েছিল। GoDaddy SOPA-এর বিরোধিতা করে কারণ আইনটি প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট সম্প্রদায়ের অংশীদারদের মধ্যে একটি ঐকমত্য গড়ে তোলার মৌলিক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করেনি। আমাদের কোম্পানি আমাদের গ্রাহকদের হারানোর জন্য দুঃখিত, যারা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসাবে রয়ে গেছে, এবং আমরা এই সম্পর্কগুলি মেরামত করার এবং সময়ের সাথে তাদের ব্যবসা ফিরে পাওয়ার আশা করি।

তাত্ত্বিক হাওয়ার্ড রেইনগোল্ড পরামর্শ দিয়েছেন যে প্রতিবাদের এই কাজগুলি তিনি "স্মার্ট মব" হিসাবে বর্ণনা করেছেন তার পণ্য।  রেইনগোল্ডের মতে, যদিও এস.ও.পি.এ-তে রেডডিটের মতো প্রতিবাদগুলি প্রাথমিকভাবে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত এবং সমন্বিত হয়, পুরানো সামাজিক অনুশীলনগুলি আমরা যেভাবে এটি করি তা পরিবর্তন করে। মূলত, সমাজ আমরা যেভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করি তা প্রভাবিত করে, যা শেষ পর্যন্ত অনলাইনে একজনের আচরণকে নির্দেশ করে। বিশ্বাস, সম্প্রদায় এবং সহযোগিতার ধারণাগুলি এখনও একটি অনলাইন পরিবেশে প্রচলিত; এভাবে মানুষের মিথস্ক্রিয়া এবং তথ্যে প্রবেশাধিকার এবং ব্যাপক যোগাযোগের মধ্যে একটি মিথোজীবী সম্পর্ক তৈরি করে। এস.ও.পি.এ. এর সাথে সম্পর্কিত, এটি এমন কিছুর ইঙ্গিত দেয় যা রাইনগোল্ড "স্ব-সংগঠিত পারস্পরিক সহায়তা" হিসাবে বর্ণনা করে - যার অর্থ আমরা আজ যে প্রযুক্তি ব্যবহার করি (স্মার্টফোন এবং অন্যান্য ওয়্যারলেস ডিভাইস) আমাদের কেবল যোগাযোগের ক্ষমতা দেয় না, তবে নিজের এবং অন্যদের উভয়ের পারস্পরিক সুবিধার জন্য এটি করার ক্ষমতা দেয়। অনলাইন এনভারিয়নমেন্টে আমরা যে সামাজিক কাঠামো তৈরি করেছি তা আমাদের সেই সময়ে আমাদের প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে একই সাথে আমাদের আশেপাশে এবং বিশ্বের অন্য প্রান্তে যারা রয়েছে তাদের সাথে সংগঠিত এবং সমন্বয় করার অনুমতি দেয়। রেডডিট ব্যবহারকারীরা একটি বৃহত্তর স্কেলে সহযোগিতা করেছিল এবং প্রতিবাদ এবং বয়কটের মতো সাধারণ সামাজিক অনুশীলনগুলি ব্যবহারের মাধ্যমে - প্রযুক্তির শক্তিগুলির সাথে মিলিত - ব্যবহারকারীরা স্বতন্ত্রভাবে এটি করার চেয়ে অনেক বড় স্কেলে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছিল।

এস.ও.পি.এ-র প্রতিবাদে ওয়েবসাইট ব্ল্যাকআউট

রেডডিট এবং অন্যান্য অনলাইন সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রতিবাদ প্রচেষ্টার সময়, এস.ও.পি.এর বিরোধিতাকারী ওয়েবসাইটগুলি অনলাইন সেন্সরশিপের প্রভাবগুলি দেখানোর জন্য তাদের পরিষেবাগুলির একটি সিঙ্ক্রোনাস "ব্ল্যাকআউট" তৈরি করেছিল। কিছু সাইট সম্পূর্ণরূপে অ্যাক্সেস বন্ধ করে দেয়, অন্য সাইটগুলি বিলের বিরোধিতা করে এমন পিটিশন বা প্রতিবাদ প্রচার করার সময় নির্দিষ্ট সামগ্রী "সেন্সর" করে। এই ব্ল্যাকআউটের আয়োজনকারী ওয়েবসাইটগুলির মধ্যে রেডিট, উইকিপিডিয়া, গুগল এবং ওয়্যার্ড ছিল।  ইংরেজি উইকিপিডিয়া জানুয়ারির ১৮-১৯ তারিখে ২৪ ঘন্টার জন্য সম্পূর্ণরূপে তার সাইটে প্রবেশ বন্ধ করে দেয় এবং যারা এই ব্ল্যাকআউটের মুখোমুখি হয়েছিল তাদের "মুক্ত জ্ঞান ছাড়া একটি বিশ্বের কল্পনা করুন" বলে অনুরোধ করে। একইভাবে, গুগল সুপরিচিত গুগল লোগোর উপরে একটি কালো ব্যানার প্লাস্টার করেছে, যা ক্লিক করা হলে এস.ও.পি.এ. ইলেক্ট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশন একটি ডিজিটাল অধিকার গ্রুপ যারা ডিজিটাল অধিকার মামলায় আইনি সহায়তা দিয়ে সহায়তা করে এবং যারা নতুন প্রযুক্তিকে রক্ষা করে এবং নেট নিরপেক্ষতা এবং অনলাইন অধিকার লঙ্ঘনের বিরোধিতা করে। সক্রিয়ভাবে এস.ও.পি.এর বিরোধিতা করার পাশাপাশি তারাও ১৯ জানুয়ারির ব্ল্যাকআউটে অংশ নিয়েছিল। এই ওয়েবসাইটগুলির পাশাপাশি, এটি রিপোর্ট করা হয়েছিল যে 7000 এরও বেশি সাইট ছিল যারা কোনও উপায়ে ব্ল্যাকআউটে অবদান রেখেছিল।

ব্ল্যাকআউট থেকে প্রতিক্রিয়া বিলটির প্রত্যাহার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সর্বোত্তম ছিল এবং শীঘ্রই অনেক ওয়েবসাইট, সিনেটর এবং গোষ্ঠী যারা মূলত এটি সমর্থন করেছিল তারা তাদের বিবৃতি প্রত্যাহার করতে এবং তাদের মতামত পরিবর্তন করতে শুরু করে। ব্ল্যাকআউট এবং মিডিয়া প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তৃত জ্ঞান যা এটি সৃষ্টি করেছিল তা বাস্তব জীবনের প্রতিবাদের সমানুপাতিক ছিল - বাস্তব জীবনের প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া সহ। ইন্টারনেট সংযোগ মিডিয়ার মনোযোগের ঝড় তুলেছে, একই সাথে শিক্ষা এবং তথ্যের স্বাধীনতার গুরুত্বের (এই ক্ষেত্রে ইন্টারনেটে) পক্ষে এক জোরালো যুক্তি উস্কে দিয়েছে। ব্ল্যাকআউটের বিশাল সামাজিক প্রভাব এবং সমন্বিত ব্ল্যাকআউট এবং প্রতিবাদের সাম্প্রদায়িক এবং সহযোগিতামূলক দিকগুলি তাত্ত্বিক ডানাহ বয়েডের কাজকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। সর্বদা অন সংস্কৃতির ধারণায় তার কাজ এবং এই যুগে বাস্তব এবং ভার্চুয়াল জীবনের মধ্যে পার্থক্য করার অসুবিধা এস.ও.পি.এ এবং ব্ল্যাকআউটগুলির বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়ার উদ্দীপক।  বাস্তব এবং ভার্চুয়াল জীবন এতটাই সমার্থক যে অনলাইনে তথ্যে প্রবেশাধিকার অক্ষম করার সামাজিক প্রভাব বাস্তব জগতে অভূতপূর্ব ক্ষতি করতে পারে। একটি স্কুলে শিক্ষকদের প্রতিবাদ বা বাজেট কাটছাঁটে একটি গ্রন্থাগার বন্ধ করে দেওয়ার মতো নয় - প্রভাব লক্ষ্য করা যায় এবং লোকেরা পরিবর্তন করতে শুরু করে। ডানাহ বয়েডের তত্ত্বগুলিকে আরও সমর্থন করে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে প্রযুক্তিগত কাঠামোগুলি প্রায়শই সামাজিক গঠন এবং যোগাযোগের নিদর্শনগুলি অনুকরণ করে - তাই আমরা বাস্তব বিশ্বে কীভাবে অনলাইনে কাজ করি এবং "আচরণ" করি। উইকিপিডিয়ার মতো সাইটগুলি একটি গ্রন্থাগার বা এনসাইক্লোপিডিয়ার একটি সিরিজের মতো একইভাবে দেখা এবং অ্যাক্সেস করা হয় - শব্দকোষ, সূচী এবং পৃষ্ঠাগুলির মাধ্যমে। একইভাবে, সংবাদপত্রের মতো নিউজ ওয়েবসাইটগুলিতে অ্যাক্সেস করা হয় - পৃষ্ঠাগুলিতে বিভিন্ন গল্পের মাধ্যমে। বাস্তব এবং ভার্চুয়াল জগৎ একে অপরের সাথে এত গভীরভাবে সংযুক্ত, যে একটির মধ্যে একটি বিপর্যয় বা পরিবর্তন অন্যটির অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

ডিপ ওয়েব

[সম্পাদনা]

ডিপ ওয়েব এমন ওয়েবসাইটগুলিকে বোঝায় যা প্রচলিত উপায়ে পাওয়া যায় না, উদাহরণস্বরূপ গুগলের মতো সাধারণ অনুসন্ধান ইঞ্জিনগুলির মাধ্যমে। বলা হয় যে ডিপ ওয়েব সারফেস ওয়েবের চেয়ে অনেক বড় এবং প্রায়শই "আইসবার্গের নীচে" হিসাবে বর্ণনা করা হয়, তবে এটির অত্যন্ত ব্যক্তিগত এবং একচেটিয়া প্রকৃতির কারণে নিশ্চিত হওয়ার কোনও উপায় নেই।  সারফেস ওয়েবে "লাইভ" হওয়ার আগে লোকেরা ওয়েবসাইটগুলি পরীক্ষা করার জন্য ডিপ ওয়েব ব্যবহার করে এবং ব্যবসায়গুলি কেবল কর্মীদের তথ্যের জন্য ডিপ ওয়েব ব্যবহার করতে পারে তবে ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে কথা বলার সময় ডিপ ওয়েবের কথা প্রায়শই বলা হয়।

ডার্ক ওয়েব ডিপ ওয়েবের একটি অংশ, এবং এর মধ্যে ঘটে যাওয়া সমস্ত অবৈধ কার্যকলাপকে বোঝায়, যেমন গণ মাদক ও অস্ত্র পাচার, হিটম্যান পরিষেবা, হ্যাকিং সফ্টওয়্যার, সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক এবং অন্যান্য অনেক উদাহরণের মধ্যে। এই ওয়েবসাইটগুলির প্রকৃতির কারণে, ওয়েবের এই অংশটি ঘন অনেকে টরের মতো সফ্টওয়্যার ব্যবহার করেন যা ব্যবহারকারীর অবস্থান এবং ইতিহাস গোপন করে, তাই ডার্ক ওয়েবে কোনও অপরাধীকে ট্র্যাক করা যে কারও পক্ষে অত্যন্ত কঠিন। ডার্ক ওয়েবে অনেকগুলি ওয়েবসাইট কেবল পিয়ার-টু-পিয়ার বা আমন্ত্রণ, যা অ-অপরাধীদের পক্ষে এই ধরণের সাইটগুলিতে অনুপ্রবেশ করা এবং নামানো শক্ত করে তোলে। ডার্ক ওয়েবের একটি বড় অপারেশন সফলভাবে বন্ধ করার সবচেয়ে সুপরিচিত উদাহরণ হল সিল্ক রোড, যা মাদকের জন্য একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস ছিল এবং ২০১৩ সালে এফবিআই এটি বন্ধ করে দিয়েছিল।  যাইহোক, অন্যান্য অনুরূপ অনেক মার্কেটপ্লেস প্রায় অবিলম্বে ডার্ক ওয়েবে পপ আপ করে। যেহেতু ডার্ক ওয়েব এবং ডিপ ওয়েব উভয়ই এত ব্যক্তিগত এবং সম্পূর্ণ অজানা এবং পরিমাপযোগ্য আকারের, এটি অধ্যয়ন করা এবং সেখানে পাওয়া অত্যন্ত অবৈধ এবং প্রকাশ্যে বিপজ্জনক পরিষেবা এবং তথ্য সরিয়ে ফেলা খুব কঠিন।

নিরাপত্তা এবং গোলক আক্রমণ

[সম্পাদনা]

ব্যক্তিগত গোলক আক্রমণ

[সম্পাদনা]

এটি নিঃসন্দেহে যে ডিজিটাল মিডিয়ার একবিংশ শতাব্দী এমন পরিমাণে অগ্রসর হয়েছে যে আমরা কিছুটা আমাদের সামাজিক এবং ব্যক্তিগত জীবনকে ডিজিটালভাবে বাস করি এবং পরিচালনা করি। মজার বিষয় হল, মনে হচ্ছে যে নতুন প্রযুক্তির এই চলমান উদ্ভাবনের কারণে, আমরা ঐতিহ্যগত ম্যানুয়াল ফাইলিংয়ের বিপরীতে বিভিন্ন অনলাইন / ডিজিটাল ফর্মগুলিতে আমাদের ব্যক্তিগত এবং ব্যক্তিগত তথ্য পরিচালনা এবং সংরক্ষণ করতে আরও বেশি ইচ্ছুক। ডিজিটালে এই স্যুইচটি দ্রুততা, সুবিধার্থে এবং পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে সুবিধাগুলি নিয়ে আসে, তবে বিশেষত সুরক্ষা এবং এই তথ্যটি ব্যক্তিগত রাখার সুরক্ষা সম্পর্কিত অসুবিধাও রয়েছে। যদিও এই নতুন প্রযুক্তির প্রবর্তন বিশেষভাবে আমাদের 'প্রয়োজনে' বা সাধারণ সুবিধার জন্য উদ্ভাবিত হয়েছিল, তবে এটি আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য এখন আক্রমণের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে দিয়েছে। আজকের ডিজিটালি ভিত্তিক বিশ্বে, এটি অবশ্যই মনে হবে যে আমাদের ব্যক্তিগত ক্ষেত্রগুলি এবং তারা কতটা 'ব্যক্তিগত' তার উপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ সঙ্কুচিত হচ্ছে এবং কিছুই আসলে ততটা ব্যক্তিগত নয় যতটা আমরা চাই এটি আর হতে চাই।

এখানে যে প্রশ্নটি করা দরকার তা হল, কেন আমরা এই প্রযুক্তিগুলির মাধ্যমে আমাদের ব্যক্তিগত এবং ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন ব্যাংকিং এবং যোগাযোগের বিবরণ পরিচালনা করি যখন এটি আক্রমণ হওয়ার এত ঝুঁকি রয়েছে?

সম্ভবত এটি ডিজিটাল-জীবনযাত্রার সাথে সাধারণ জনগণের সামঞ্জস্যের ফলস্বরূপ যা একবিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে খুব দ্রুত অগ্রগতি হয়েছে। ব্র্যানস্টন এবং স্টাফোর্ড  বলেছেন যে ডিজিটালে এই স্যুইচের অন্যতম প্রধান সুবিধা হ'ল ডিজিটাল অনুলিপি বা তথ্যের সদৃশ তৈরি করার ক্ষমতা যা একবার ম্যানুয়ালি সংরক্ষণ করা হয়েছিল, কম শারীরিক স্থান ব্যবহারের অনুমতি দেয় এবং তারপরে ন্যূনতম প্রচেষ্টার সাথে ব্যাকআপের জন্য আরও সদৃশ তৈরি করার ক্ষমতা। আমরা এখন এমন একটি বিশ্বে বাস করি যেখানে প্রায় সবকিছুই ডিজিটালভাবে করা হয়, তাই দৈনন্দিন কাজগুলি এবং ব্যক্তিগত এবং সামাজিক তথ্যের ব্যবস্থাপনা আরও সহজ এবং সুবিধাজনক করা হয়, তাই এটি বোধগম্য যে কেন আমরা একটি অ-ডিজিটাল, ম্যানুয়ালি সংগঠিত জীবনযাত্রায় ফিরে যাওয়ার এত সম্ভাবনা নেই। সুতরাং, ওভারভিউতে, মনে হচ্ছে যে আজকের প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত সমাজ একটি দ্রুত এবং সহজ সংগঠিত ডিজিটাল জীবনের জন্য সংগ্রাম করে যা সমস্ত আক্রমণ হওয়ার ঝুঁকির উদ্বেগকে অতিক্রম করে।

নীচে ডিজিটাল মিডিয়া আবিষ্কারের দুটি কেস স্টাডি উদাহরণ রয়েছে যা তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য ব্যক্তিগত গোলক আক্রমণের অনেক ঝুঁকি নিয়ে এসেছে।

অনলাইন ব্যাংকিং এবং যোগাযোগহীন ব্যাংক কার্ড

[সম্পাদনা]

আমরা যে উপায়ে ব্যক্তিগত তথ্য 'ডিজিটালি সংরক্ষণ' করতে পারি তার একটি উদাহরণ হ'ল অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। অনলাইন ব্যাংকিংয়ের প্রক্রিয়াটি নিজেই খুব সুরক্ষিত হিসাবে পরিচিত, উদাহরণস্বরূপ, আরবিএস ব্যবহারকারীদের এটি হ্যাক করা হচ্ছে না বা বহিরাগত বা জালিয়াতিদের দ্বারা আক্রমণ করা হচ্ছে না তা নিশ্চিত করার জন্য একটি দ্বি-পৃষ্ঠার লগ ইন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এই তথ্যটি অ্যাক্সেস করা খুব সুরক্ষিত করা হয়েছে, তবে নতুন যোগাযোগহীন ব্যাংক কার্ড প্রবর্তনের সাথে সাথে আমাদের ব্যক্তিগত অনলাইন ব্যাংকিং বা সাধারণভাবে ব্যাংকিং আক্রমণের আরও ঝুঁকির মধ্যে থাকতে পারে?

এই কার্ডগুলি প্রাথমিকভাবে ২০০৫ সালে আমেরিকাতে উদ্ভাবিত হয়েছিল এবং ২০১২ সালে যুক্তরাজ্যে আনা হয়েছিল, যেখানে এটি একটি সাফল্য হিসাবে প্রমাণিত হয়েছিল, ২০১৫ সালের গ্রীষ্মের মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৫৮ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহৃত হয়েছিল। আমাদের পেমেন্ট এবং ব্যয় পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য এই নতুন পেমেন্ট পদ্ধতিটি চালু করা হয়েছিল। 'কন্ট্যাক্টলেস' বলতে কার্ডের ফিজিক্যাল ইউজকে বোঝায়, কারণ কার্ড এবং পিন মেশিনের মধ্যে কোনও শারীরিক যোগাযোগ ছাড়াই এবং কার্ডের পিন কোডের কোনও নিশ্চিতকরণের প্রয়োজন ছাড়াই কোনও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ প্রদান করা যায়। ডিজিটাল মিডিয়ার এই বর্ধন অবশ্যই যুক্তরাজ্যে প্রকাশের অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় প্রমাণিত হয়েছিল, তবে প্রায় ঠিক তত তাড়াতাড়ি, অর্থ প্রদানের এই নতুন 'সুবিধাজনক' উপায়টি সত্যিই সুরক্ষিত ছিল কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। পণ্যগুলির জন্য অর্থ প্রদানের এমন একটি নতুন এবং সহজ উপায়ের সাথে, যোগাযোগহীন ব্যাংক কার্ড আবিষ্কার ব্যবহারকারীর ব্যাঙ্কের বিশদ সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগ জাগাতে বাধ্য ছিল।

এই নতুন কার্ডগুলি ব্যবহারের অন্যতম প্রধান উদ্বেগ হ'ল প্রচলিত, পিন কোডেড ব্যাংক কার্ডগুলির চেয়ে অনেক সহজে অর্থ চুরি হওয়ার ঝুঁকি। দ্য গার্ডিয়ানে লিসা ব্যাচেলরের লেখা একটি নিবন্ধ অনুসারে, দেখা গেছে, 'ভুয়া' স্ক্যানিং সিদ্ধান্তে যোগাযোগহীন কার্ডের বিভিন্ন পরীক্ষার পরে দেখা গেছে যে লুকানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ডেটা পড়া সম্ভব, এই জাতীয় ডিভাইস ব্যবহার করে জালিয়াতদের আক্রমণের ঝুঁকি উন্মুক্ত করে। এই উদ্বেগ সত্ত্বেও, মনে হচ্ছে যে সামাজিক সামঞ্জস্য এবং এই নতুন আবিষ্কারের সমাজের মধ্যে সাধারণ উত্তেজনার কারণে কার্ডটি এখনও ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়। এর উপরে, অনেক ব্যবহারকারী স্ক্যানারের সংস্পর্শে আসার সময় কার্ডের অতিরিক্ত সংবেদনশীলতার কারণে দ্বিগুণ অর্থ প্রদানের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে এটি যে অর্থ প্রদানের দ্রুততা নিয়ে এসেছিল তা এই উদ্বেগকে ছাপিয়ে গেছে, বিশেষত লন্ডন ট্রেন স্টেশনগুলির মতো ব্যস্ত পরিবেশে। এটিও গুজব রয়েছে যে এই 'যোগাযোগহীন' গতিটি সরকারকে তার নাগরিকদের বিবরণ এবং অবস্থান ট্র্যাক করতে কার্ডের ফাংশনটি ব্যবহার করতে দেয়।

এই উদ্বেগগুলি চরম বলে মনে হতে পারে এবং এটি পরামর্শ দেয় যে মিডিয়া গুণক প্রভাব, যেমন আতিক বর্ণনা করেছেন,[ সম্ভবত যোগাযোগহীন ব্যাংক কার্ডের ব্যবহার নিয়ে উত্থাপিত ক্রমবর্ধমান উদ্বেগে একটি ভূমিকা পালন করে। এ থেকে বোঝা যায় যে গণমাধ্যম ব্যবহারকারীদের মধ্যে উদ্বেগের ক্রমবর্ধমান আলোচনা এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে সমাজের মধ্যে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি উদ্বেগ রয়েছে যে এই ঘটনাগুলি ঘটার সম্ভাবনা কতটা কম। এই প্রতিক্রিয়াটি এই নতুন আবিষ্কারের অপ্রতিরোধ্য প্রচারের কারণে এবং একটি খুব 'ভবিষ্যতবাদী' সরঞ্জামের উত্তেজনা যা এখন আমাদের হাতে এত সহজেই পাওয়া যায়।

সম্ভবত আজকের ডিজিটাল বিশ্ব আমাদের দৈনন্দিন কাজগুলিকে 'খুব সহজ' করে তুলেছে যে আমরা ঝুঁকি সম্পর্কে উদাসীন, বা সম্ভবত এই স্বাচ্ছন্দ্যই সমাজের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে দিচ্ছে।

আইফোন ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যান

[সম্পাদনা]

অ্যাপল তাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য কুখ্যাতভাবে পরিচিত, বিশেষত তাদের সর্বদা পরিবর্তিত এবং কখনও উন্নত আইফোন ডিভাইসের সাথে। ২013 সালে, অ্যাপল তাদের আইফোন 5 ডিভাইসগুলিতে নতুন ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানিং বৈশিষ্ট্যটি চালু করেছিল যা ব্যবহারকারীদের তাদের ফোন আনলক করার জন্য একটি নতুন 'নিরাপদ' উপায় বলে মনে করা হয়েছিল। এটি অবশ্য দ্রুত উদ্বেগ ছড়িয়েছে এবং এর ব্যবহারকারীদের মধ্যে ঝড় তুলেছে।

এই নতুন এবং প্রস্থান আইফোন বৈশিষ্ট্য নিয়ে উত্থাপিত প্রধান উদ্বেগ হ'ল এটি হ্যাক করা কতটা সহজ বলে প্রমাণিত হয়েছে। অ্যানোনিমাসের মতো অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ এবং এমনকি আমাদের নিজের সরকারকেও আক্রমণের জন্য এই সরঞ্জামটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বাধিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে বলা হয়েছে। এই আক্রমণগুলি কেবল ডিভাইসগুলিতে সঞ্চিত ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করতে পারে না, এটি ব্যবহারকারীর অবস্থান প্রকাশ করতে পারে এবং অবশ্যই তাদের আঙুলের ছাপের একটি ডিজিটাল প্রিন্ট দিতে পারে। এই ধরনের তথ্য জালিয়াতি এবং পরিচয় চুরির মতো অনেক সমস্যার দিকে পরিচালিত করতে পারে, তবে সমাজের মধ্যে প্রধান উদ্বেগ সরকারকে তার নাগরিকদের অবস্থান ট্র্যাক করার অনুমতি দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

সম্ভবত প্রযুক্তির অগ্রগতির উত্তেজনার কারণে সমাজ এই নতুন অ্যাপল বৈশিষ্ট্যটি ব্যবহার করতে সম্মত হয়েছিল, কারণ এটি আগে জনসাধারণের কাছে সহজেই উপলব্ধ যে কোনও কিছুর চেয়ে আলাদা। ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানিং এমন একটি বিষয় যা সমাজ স্পাই-গোয়েন্দা টাইপ চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হতে অভ্যস্ত, বা সাধারণভাবে কেবল পুলিশিং এবং তদন্ত, এবং এটি মিডিয়ার  উপস্থাপনাগুলির সাথে এটির ধারণার কারণে। এই মিডিয়া প্রভাবটি মাথায় রেখে, কেন এই বৈশিষ্ট্যটি এত ভালভাবে গ্রহণ করা হয়েছিল তা স্পষ্ট।

পাবলিক স্ফিয়ার আক্রমণ

[সম্পাদনা]

যদিও অনেকে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের আক্রমণ এবং ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকিংয়ের হুমকি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে জনসাধারণের ক্ষেত্রের আক্রমণগুলি উপেক্ষা করা উচিত নয়। ফিল্টার বুদবুদ, ইকো চেম্বার এবং ট্রলিংয়ের মতো পাবলিক স্ফিয়ারের মাধ্যমে সংস্থাগুলি এবং ব্যবহারকারীরা নেতিবাচক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি করছে। উদাহরণস্বরূপ, ফেসবুক ব্যাখ্যা করে যে তারা কীভাবে অনলাইনে আপনার সর্বজনীন অভিজ্ঞতা নিয়ন্ত্রণ করে:

আপনার নিউজ ফিডে প্রদর্শিত গল্পগুলি Facebook-এ আপনার সংযোগ এবং কার্যকলাপ দ্বারা প্রভাবিত হয়। এটি আপনাকে এমন আরও গল্প দেখতে সহায়তা করে যা আপনার আগ্রহের বন্ধুদের কাছ থেকে আপনি সবচেয়ে বেশি ইন্টারঅ্যাক্ট করেন। কোনও পোস্ট প্রাপ্ত মন্তব্য এবং পছন্দের সংখ্যা এবং এটি কী ধরণের গল্প (উদাঃ ফটো, ভিডিও, স্ট্যাটাস আপডেট) এটি আপনার নিউজ ফিডে প্রদর্শিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

ফিল্টারিং এবং ব্যক্তিগতকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা অর্জন করে, ব্যক্তিগত এবং পাবলিক ক্ষেত্রের মধ্যে লাইনটি কোথায় শেষ হয়? আমরা সবার জন্য ওয়েবের পরিবর্তে নিজেদের জন্য একটি ওয়েব তৈরি করছি।

ফিল্টার বুদবুদ এবং অ্যালগরিদমিক দ্বাররক্ষী

[সম্পাদনা]

এলি পারিসার "অর্থপূর্ণ" ভাইরাল সামগ্রীর জন্য একটি ওয়েবসাইট আপওয়ার্দির প্রধান নির্বাহী এবং একজন ইন্টারনেট কর্মী। তিনি তার প্রকাশনা দ্য ফিল্টার বাবল: হোয়াট দ্য ইন্টারনেট ইজ হাইডিং ফ্রম ইউ এবং তার টেড টক-এ ফিল্টার বুদবুদ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

আপনার ফিল্টার বুদ্বুদ আপনার নিজস্ব ব্যক্তিগত, তথ্যের অনন্য মহাবিশ্ব যা আপনি অনলাইনে থাকেন। আপনার ফিল্টার বুদ্বুদে কী রয়েছে তা আপনি কে তার উপর নির্ভর করে এবং এটি আপনি কী করেন তার উপর নির্ভর করে। কিন্তু ব্যাপারটা হলো, কী ঢুকবে সেটা আপনি ঠিক করবেন না। এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ, আপনি আসলে কী সম্পাদনা করা হয় তা দেখতে পাচ্ছেন না।
—এলি পারিসার

উদাহরণস্বরূপ, গুগলের ফলাফলগুলি এখন আপনার অবস্থান, ব্যবহৃত ডিভাইস এবং ব্রাউজারের উপর নির্ভর করে যার অর্থ আর কোনও স্ট্যান্ডার্ড গুগল নেই। এটি ওয়েবের একটি অদৃশ্য ফিল্টারিং হিসাবে কাজ করে, প্ল্যাটফর্মগুলি আপনার সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করে আপনার অনলাইন অভিজ্ঞতাটি বিশেষভাবে মেলে ডিজাইন করে। প্যারিস ওয়েবের এই অদৃশ্য অ্যালগরিদমিক সম্পাদনাকে 'অ্যালগরিদমিক গেটকিপারস' এর কাজ হিসাবে উল্লেখ করেছেন। আমরা অনলাইনে বিশ্বকে কীভাবে দেখি তার এই নিয়ন্ত্রণকারী কিউরেশনটি প্রাসঙ্গিকতার উপর খুব বেশি মনোনিবেশ করার কারণে ভুগছে। প্যারিসের মতে, জনসাধারণের ক্ষেত্রে বিতরণ করা উচিত এমন অন্যান্য তথ্য গুরুত্বপূর্ণ, অস্বস্তিকর, চ্যালেঞ্জিং এবং অন্যান্য দৃষ্টিকোণ থেকে হওয়া উচিত। এই দ্বাররক্ষীরা অবশ্যই জনজীবন এবং নাগরিক দায়বদ্ধতার একটি অনুভূতি এনকোড করেছে, যা আমাদের ফিল্টারগুলিতে প্রবেশ করে তার উপর আমাদের আরও নিয়ন্ত্রণ সরবরাহ করে।

যাইহোক, ওয়েবে ব্যক্তিগতকরণের ফলে পূর্বে পরিদর্শন করা শপিং ওয়েবসাইটগুলির উপর ভিত্তি করে ফলাফল তৈরি করা হয়েছে এবং ব্যবহারকারীরা তাদের নিজস্ব পছন্দ অনুসারে অনলাইনে বিভিন্ন ফলাফলের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। ফিল্টারিংয়ের এই কাজটি ব্যবহারকারীর কাছ থেকে আসে এবং জনসাধারণের ক্ষেত্রে বিস্তৃত প্রভাব ফেলে। যদিও সুবিধাগুলি লক্ষ্যযুক্ত বিজ্ঞাপনগুলির মতো ফিল্টারিংয়ের এই কাজটির সাথে আসে, যা একটি 'অনুস্মারক' কাজ করে যে আপনি একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট পরিদর্শন করেছেন যেখানে আপনি ফিরে আসতে চান এবং ফলাফলগুলি সবচেয়ে উপযুক্ত এবং প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়, ব্যবহারকারীদের এই ব্যক্তিগতকরণটি ম্যানিপুলেট করার ক্ষমতা রয়েছে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। ব্যবহারকারীদের নিজস্ব মতামতকে সমর্থন করে এমন তথ্য গ্রহণের প্রবণতা অনলাইনে একটি সীমাবদ্ধ এবং পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির দিকে পরিচালিত করে - সর্বজনীন স্থানে তথ্য গ্রহণ করে যা তাদের আগ্রহের সাথে মেলে। অতএব, ফিল্টার বুদবুদের কারণে অনলাইনে কিছু তথ্য ব্যবহারকারীদের দ্বারা উপেক্ষা করা যেতে পারে, যার অর্থ যদি তথ্য ব্যবহারকারীর কাছে প্রাসঙ্গিক বলে মনে না করা হয় তবে এটি বরখাস্ত করা হবে। এটি অনলাইনে তথ্য ওভারলোডের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে কারণ অনলাইনে উপলব্ধ তথ্যের পরিমাণ অপ্রতিরোধ্য, অপ্রাসঙ্গিক এবং বিভ্রান্তিকর বলে মনে হতে পারে - তবে একটি ভারসাম্য পূরণ করা দরকার।

ইকো চেম্বারস

[সম্পাদনা]

একটি প্রতিধ্বনি চেম্বার এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে তথ্য, ধারণা বা বিশ্বাসগুলি একটি "আবদ্ধ" সিস্টেমের অভ্যন্তরে সংক্রমণ এবং পুনরাবৃত্তি দ্বারা প্রশস্ত বা শক্তিশালী হয়, যেখানে বিভিন্ন বা প্রতিযোগিতামূলক মতামতগুলি সেন্সর, নিষিদ্ধ বা অন্যথায় উপস্থাপিত হয়। ফিল্টার বুদবুদের ফলস্বরূপ, ইকো চেম্বারগুলি তৈরি করা হয় যেখানে মূলধারার এবং জনপ্রিয় বিশ্বাসগুলি জনসাধারণের ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার করে। সমমনা ব্যক্তিদের দ্বারা বৈধতা পাওয়ার জন্য মূল চিন্তাভাবনা এবং মতামতের অত্যধিক পুনরাবৃত্তি হ্রাস পেয়েছে।

আপনি যদি নিজেকে এমন কণ্ঠস্বর দিয়ে ঘিরে রাখেন যা আপনি যাদের খাওয়াচ্ছেন তাদের অনুরূপ মতামতকে প্রতিধ্বনিত করে, তবে তারা আপনার মনে মূলধারার হিসাবে আরও শক্তিশালী হবে, এটি সাধারণ ঐকমত্য কী তা সম্পর্কে আপনার উপলব্ধিকে বিকৃত করতে পারে। মার্টিন, ২০১৩।

জ্ঞানীয় অসঙ্গতি সম্পর্কে লিওন ফেস্টিংগারের গবেষণা দেখায় যে লোকেরা তাদের বিশ্বাসকে নিশ্চিত করতে এবং তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্য সক্রিয়ভাবে আশ্বাসজনক কণ্ঠস্বর সন্ধান করবে।  এটি পাবলিক স্ফিয়ারকে দূষিত করে কারণ অনলাইন স্পেসটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং অনুমানযোগ্য থাকে, ব্যবহারকারী যা দেখতে চান তা কেবল সরবরাহ করে। এমন সমস্যাও রয়েছে যে সমস্ত জনসাধারণের মিথস্ক্রিয়া আপনার ব্যক্তিগত পরিচয়ের সাথে যুক্ত নয়, কারণ জনসাধারণের ক্ষেত্রের আক্রমণগুলি দেখার সময় অনলাইন পরিচয় এবং নামহীনতা অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, বিরোধী মন্তব্য এবং বিপরীত মতামত, এমনকি "ট্রলিং" হিসাবে ভুল হতে পারে।

ট্রলিং

[সম্পাদনা]

ট্রোলিং হ'ল যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বিঘ্ন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নেতিবাচক বা চরম সামগ্রী পোস্ট করে।  জনগণের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করার জন্য তারা এটি করে। কিছু ক্ষেত্রে তারা সচেতন যে অন্যদের কাছে তাদের কোনও পরিচয় নেই এবং বেনামে উপস্থিত হয় তাই মনে করে যে এটি তাদের বা বাস্তব জগতে তাদের ব্যক্তিগত পরিচয়ের সন্ধান করা যায় না। এই পরিচয় লুকিয়ে থাকার সাথে সাথে তারা নৈতিকতা এবং যুক্তির অনুভূতি হারিয়ে ফেলে কারণ তারা একের সাথে যোগাযোগের সমস্ত বোধ হারিয়ে ফেলেছে এবং যাদের সাথে তারা তর্ক করছে তাদের আর মানুষ হিসাবে নয় বরং পর্দার শব্দ হিসাবে দেখে। এটি খুব বিপজ্জনক হতে পারে কারণ ব্যবহারকারী বেনামে থাকলে কোনও সীমানা থাকে না তবে তারা যা খুশি তা করতে পারে। কেউ কেউ মনে করতে পারেন যে তারা বাস্তব জগতে স্পষ্টভাষী  এবং শারীরিকভাবে স্টেরিওটাইপড যেখানে অনলাইন তাদের এটি পরিবর্তন করার সুযোগ দেয় কারণ তারা বেনামী, কেউ ব্যক্তিগতভাবে তাদের আক্রমণ করতে পারে না কারণ তারা তাদের জানে না। তারা প্রায়শই একটি যুক্তি তৈরি করতে চায় বা ঝামেলা সৃষ্টি করে যা কখনও কখনও অন্যরা যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে তার সাথেও প্রাসঙ্গিক হয় না।  পোস্টগুলি এমন জায়গায় আপলোড করা যেতে পারে যেখানে তারা অন্য ব্যবহারকারীর মতামত জানে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা এবং বিঘ্নিত বা বিরোধী সমস্যা সৃষ্টি করতে তাদের বিরোধী মতামত পোস্ট করে। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে শান্তি বিঘ্নিত করছে শুধুমাত্র একটি যুক্তি তৈরি করার জন্য। এই ধরণের লোকদের দ্বারা পোস্ট করা বেশিরভাগ সামগ্রী এমন জিনিস যা তারা কোনও ব্যক্তিকে বলার কথা ভাববে না যদি তারা বাস্তব জগতে ইন্টারঅ্যাক্ট করে থাকে কারণ লোকেরা সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য কী তা সম্পর্কে সচেতন তবে অনলাইনে পরিচয় এবং ব্যক্তিগত দিকটি কেড়ে নেওয়ার সাথে সাথে মিথস্ক্রিয়া আরও নৈর্ব্যক্তিক হয়ে যায়। এটি ট্রোলারদের খুব প্রতিকূল করে তোলে যা অন্য কারও জন্য সামান্য অনুশোচনা দেখায়। প্রায়শই তারা বাস্তব জগতে উৎপীড়নের মতো এই ধরণের ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে ক্ষমতায়িত হয়, বিশেষত যখন তারা একটি বড় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। পাবলিক স্ফিয়ারের এই আক্রমণ ডিজিটাল স্পেস থেকে বাস্তব জগতে রূপান্তরিত গুরুতর হুমকিতে বাড়তে পারে। জনসাধারণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার পরিমাণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে কারণ যদিও আমাদের অ্যালগরিদমিক দ্বাররক্ষীদের আইনগুলিতে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়, আমাদের নিজস্ব ফিল্টার বুদবুদ তৈরি করার এবং ট্রোলিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে নামহীনতার সুযোগ নেওয়ার স্বাধীনতা অবশ্যই বিবেচনা করা উচিত।

তাত্ত্বিক

[সম্পাদনা]

এখানে কিছু তাত্ত্বিক রয়েছে যা এই বিষয়টিকে একত্রিত করতে সহায়তা করে

জিজি পাপাচারিসি[

[সম্পাদনা]

সম্পাদনা] উৎস সম্পাদনা] ডঃ জিজি পাপাচারিসি গ্রিসের থেসালোনিকিতে জন্মগ্রহণ করেন এবং বেড়ে ওঠেন। তিনি মাউন্ট হলিওক কলেজ থেকে অর্থনীতি ও মিডিয়া স্টাডিজে বিএ (১৯৯৫), কেন্ট স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগাযোগ স্টাডিজে এমএ (১৯৯৭) এবং অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় পিএইচডি (২০০০) অর্জন করেন। তিনি সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে ইলিনয়-শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রধান সম্পাদক এবং জার্নাল অফ ব্রডকাস্টিং অ্যান্ড ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধান সম্পাদক। তার গবেষণা নতুন মিডিয়া প্রযুক্তি এবং সামাজিক-রাজনৈতিক স্তরে তাদের মধ্যে যে পরিণতি বহন করে তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। তার বই, একটি ব্যক্তিগত গোলক: ডিজিটাল যুগে গণতন্ত্র (পলিটি প্রেস, ২০১০), ডিজিটাল যুগে আমরা কীভাবে রাজনীতি অনুশীলন করি তা নিয়ে আলোচনা করে। তিনি সম্পাদনা করেছেন একটি নেটওয়ার্কযুক্ত স্ব: সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইটগুলিতে পরিচয়, সম্প্রদায় এবং সংস্কৃতি (রাউটলেজ, ২০১০), এবং সাংবাদিকতা এবং নাগরিকত্ব: নতুন এজেন্ডা (টেলর এবং ফ্রান্সিস, ২০০৯)। তিনি ব্লগ, অনলাইন সাংবাদিকতা, সামাজিক নেটওয়ার্ক সাইট, গোপনীয়তা, সভ্যতা, ডিজিটাল পরিবেশে স্ব-উপস্থাপনা এবং অনলাইনে সামাজিকতা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদগুলিতে সন্ত্রাসবাদকে কীভাবে চিত্রিত করা হয় এবং রিয়েলিটি টিভির ব্যবহার এবং পরিণতি নিয়েও গবেষণা করেছেন। [68]

পাপাচারিসি তার বই এ প্রাইভেট স্ফিয়ার (২০১০) এ সাম্প্রতিক এবং অতীত সমাজে সরকারী ও বেসরকারী ক্ষেত্রের সম্পর্কের মধ্যে একটি পরিবর্তনের উপর জোর দিয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী গণতান্ত্রিক কাঠামোতে, জনসাধারণের পরিসরের মাধ্যমে জনগণকে সক্ষম করা হয়েছিল কারণ ব্যক্তিগতের বোধটি কেবল 'বাড়ির' আবদ্ধ এবং ভঙ্গুর স্থানগুলির সাথে যুক্ত ছিল। যদিও সমসাময়িক গণতন্ত্রে তিনি আলোচনা করেন, 'নাগরিক ব্যক্তিগত পরিমণ্ডলের মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে মুক্তি পায়'।  অনলাইন বিক্ষোভে অংশগ্রহণ, ব্লগে রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ, ইউটিউবের সাথে সক্রিয় বা নিষ্ক্রিয়ভাবে যুক্ত হওয়া, একটি অনলাইন রাজনৈতিক আলোচনায় মন্তব্য পোস্ট করা "মূলধারার মিডিয়া এবং রাজনৈতিক অভিনেতাদের দ্বারা নির্ধারিত জনসাধারণের এজেন্ডার সাথে ভিন্নমতের প্রতিনিধিত্ব করে"।

এই ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের মধ্যে, নাগরিক একা, তবে নিঃসঙ্গ বা বিচ্ছিন্ন নয়। <<
—জিজি পাপাচারিসি

এটি নতুন মিডিয়ার ফলাফল কারণ তারা সরকারী ও বেসরকারী ক্ষেত্রের মধ্যে সাময়িক এবং স্থানিক সম্পর্কের সংকোচন বা সম্প্রসারণের উপর নাটকীয় প্রভাব ফেলে। রূপান্তরিত প্রযুক্তির সুবিধার কারণে আজ আগের চেয়ে আরও বেশি লোক নিজের ব্যক্তিগত অঞ্চলের স্বাচ্ছন্দ্য থেকে পাবলিক ইভেন্টগুলিতে অংশ নিতে পারে। এই আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলি 'বাড়ির ব্যক্তিগত ক্ষেত্রকে এমন একটি জায়গায় রূপান্তরিত করার ক্ষমতা রাখে যা পাবলিক এবং প্রাইভেট উভয়ই'।  তার যুক্তি সুসংহত করার জন্য পাপাচারিসি রেমন্ড উইলিয়ামস এবং তার মোবাইল বেসরকারীকরণের ধারণাকে আহ্বান জানান, মিডিয়ার ব্রেকিং এবং বাড়ির স্থানিক এবং অস্থায়ী সীমানা অতিক্রম করার ক্ষমতা এবং শারীরিকভাবে মানুষকে একত্রিত না করে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করা। এটিকেই তিনি 'নেটওয়ার্কযুক্ত প্রাইভেট স্ফিয়ার' হিসাবে বর্ণনা করেছেন, এমন একটি গোলক যা কেবল গত 10-15 বছরে অ্যাক্সেসযোগ্য, কারণ আপনার সুপরিচিত স্থানের স্বাচ্ছন্দ্যে থাকার এই ক্ষমতা একই সাথে অন্য বা অজানার মুখোমুখি হতে সক্ষম হওয়া কেবল অনলাইন রূপান্তরিত প্রযুক্তির অনন্য সংকরতা দ্বারা সরবরাহ করা হয়।

"ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের মডেলটি এমন একজন নাগরিকের অগ্রগতির সন্ধান করে যিনি চূড়ান্ত স্বায়ত্তশাসন এবং অভিব্যক্তির সন্ধানে চিন্তাভাবনা, অভিব্যক্তি এবং প্রতিক্রিয়ার প্রযুক্তিগতভাবে সক্ষম মোবাইল ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের দিকে ফিরে এসেছেন।  - জিজি পাপাচারিসি "

তিনি যুক্তি দেখান যে এই 'স্ব-এর পারফরমেটিভ স্টোরিটেলিং'-এর মাধ্যমে, এই পরিচিত পরিবেশে রাজনৈতিক ডিসকোর্সটি উন্নত হয় কারণ সাময়িক এবং ভৌগলিকভাবে তরল পরিবেশ চূড়ান্ত স্বায়ত্তশাসন, নিয়ন্ত্রণ এবং প্রকাশের বিভ্রমের পরামর্শ দেয়। তিনি "মোবাইল প্রাইভেট স্ফিয়ার" হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যা 'ঘন ঘন পর্যবেক্ষণকারী নাগরিককে পরস্পরবিরোধী এবং সম্ভাব্য অপ্রতিরোধ্য নাগরিক দাবিগুলিকে দক্ষতার সাথে ভারসাম্য বজায় রাখতে সক্ষম করে"।  একটি ব্যক্তিগত ক্ষেত্র: ডিজিটাল যুগে গণতন্ত্র (২০১০) সুতরাং, স্ব-চালিত, ডিজিটালভাবে সক্ষম ব্যক্তিগত কাজগুলি কীভাবে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক সংবেদন সৃষ্টি করতে পারে তা ধারণা করার চেষ্টা করে। (অনলাইন রিসোর্স)

ইয়ুর্গেন হাবারমাস

[সম্পাদনা]
[পাবলিক স্ফিয়ার একটি] [...] আমাদের সমাজ জীবনের পরিধি জনমত গঠন করা যেতে পারে [...] [এবং যেখানে] সমস্ত নাগরিকের অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা হয় [...] [.]<<
—ইয়ুর্গেন

ইয়ুর্গেন হাবারমাস একজন জার্মান সমাজবিজ্ঞানী এবং দার্শনিক যিনি দ্য স্ট্রাকচারাল ট্রান্সফরমেশন অব দ্য পাবলিক স্ফিয়ার (অনলাইন রিসোর্স) গ্রন্থে জনসাধারণের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে লিখেছিলেন।  হাবারমাস যুক্তি দিয়েছিলেন যে "মধ্যযুগে ইউরোপীয় সমাজ ব্যক্তিগত ক্ষেত্র থেকে পৃথক একটি 'অনন্য' ক্ষেত্র হিসাবে জনসাধারণের ক্ষেত্রের কোনও ইঙ্গিত দেখায়নি" তবে আজকাল ইউরোপীয় সংস্কৃতি একটি "প্রতিনিধিত্বমূলক" সংস্কৃতি থেকে ওফেন্টলিচকিটে (পাবলিক স্ফিয়ার) রূপান্তরিত হয়েছে। মার্কসবাদী তত্ত্বকে একটি টেমপ্লেট হিসাবে ব্যবহার করে, হ্যাবারমাস তাত্ত্বিক বলেছিলেন যে প্রতিনিধিত্বমূলক সংস্কৃতি বিকাশের সামন্ততান্ত্রিক পর্যায়ের সাথে মিলে যায় যে বিকাশের পুঁজিবাদী পর্যায়ের আগমন ঘটবে যা ওফেন্টলিচকিটের উপস্থিতি চিহ্নিত করে।

যেখানে "প্রতিনিধিত্বমূলক" সংস্কৃতি প্রাথমিকভাবে ওফেন্টলিচকিটের এই রূপান্তরের সাথে সম্পর্কিত, এটি একটি পাবলিক স্পেসের উত্থান দ্বারা চিহ্নিত করা হয় যেখানে ব্যক্তিরা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ধারণা এবং জ্ঞানের বিনিময়ে জড়িত হতে পারে। সংবাদপত্র, রিডিং ক্লাব, কফিহাউস এবং ম্যাসোনিক লজগুলির মতো সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলি আলোচনার জন্য জনপ্রিয় সভার জায়গা ছিল এবং চিঠি, বই এবং থিয়েটারের মতো মিডিয়া আউটলেটগুলি জনসাধারণের বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হত। কিন্তু মিডিয়া যত বেশি বিজ্ঞাপন-তহবিলের উপর নির্ভর করে, তত বেশি তারা জনসাধারণের মধ্যে সুবিধাভোগী ব্যক্তিগত স্বার্থের প্রবেশদ্বার হয়।

ইন্টারনেটভিত্তিক পাবলিক স্ফিয়ারের কথা বলতে গেলে, যারা একটি সমালোচনামূলক বিতর্কে অংশ নিতে চায় তাদের জন্য একটি ফোরাম সরবরাহ করে, হ্যাবারমাস পাবলিক স্ফিয়ার সম্পর্কে চিন্তাভাবনা বোঝায় না, এটি জনসাধারণের প্রতিটি সদস্য বা সমস্ত ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অর্থবহ আলোচনায় জড়িত হতে পারে না। এরপরই উবায়াসিরি যুক্তি দেখান যে, "[...] পাবলিক স্ফিয়ার তৈরিতে ইন্টারনেটের সম্ভাবনা 'পাবলিক বুদ্ধিজীবীদের' দ্বারা ব্যবহার করা যেতে পারে এবং করতে হবে যদি সাইবারস্পেসটি জনসাধারণের ক্ষেত্রের ফোরাম হিসাবে তার সম্ভাবনা পূরণ করতে চায়।

হ্যাবারমাস মিডিয়া অভ্যর্থনা এবং ব্যবহার সম্পর্কেও গবেষণা করেছিলেন, তার বিখ্যাত থিওরি অফ কমিউনিকেটিভ অ্যাকশন বিকাশ করেছিলেন। এর মধ্যে তিনি ভাবেন কমিউনিকেটিভ মেধাবী মানুষের সামাজিক কর্মের সমন্বয়ের কথা, অর্থাৎ পরিণত মানুষের যোগাযোগমুখী কর্মকাণ্ডের কথা। তিনি জীবন্ত পরিবেশের দৃষ্টিভঙ্গি (সামাজিক ইন্টিগ্রেশন) এবং পদ্ধতিগত দৃষ্টিভঙ্গি (সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন) সংযুক্ত করেন। সেই ভিত্তিতে তিনি গণমাধ্যমের ব্যবহারকে মানুষের সামাজিক কর্মকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করেন।

হামিদ ভ্যান কোটেন

[সম্পাদনা]

হামিদ ভ্যান কোটেন ইকো-আর্কিটেকচারের ক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ এবং অনুশীলনকারী। তাঁর কাজ প্লাইমাউথ কলেজ অফ আর্টের স্নাতকোত্তর স্টাডিজের প্রধান হিসাবে সৃজনশীল এন্টারপ্রাইজ দক্ষতা শেখানোর পাশাপাশি এর আগে ডান্ডি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাইন ইতিহাস, তত্ত্ব এবং অনুশীলনের পরিচালক হিসাবে কাজ করে। তিনি স্কটল্যান্ডের ফাইন্ডহর্ন ফাউন্ডেশনে ফাইন্ডহর্ন ইকোভিলেজেও অবদান রেখেছিলেন এবং তিনি একজন যোগ্য ট্রানজিশন টাউনস প্রশিক্ষক। হামিদ ও তার পরিবার টোটনেসের কাছে একটি অভিপ্রায় সম্প্রদায়ে বাস করে। দ্য ডিজিটাল ইমেজ অ্যান্ড দ্য প্লেজার প্রিন্সিপাল: দ্য কনজাম্পশন অব রিয়ালিজম ইন দ্য এজ অব সিমুলেশন-এ  ম্যাকলুহানের (মার্শাল ম্যাকলুহান) টেকনোক্র্যাটিক ডিটারমিনিজম নিয়ে কথা বলেছেন। [69] তাঁর প্রধান গবেষণার প্রশ্নগুলি হ'ল: ডিজিটাল উপস্থাপনাগুলির উত্পাদন এবং ব্যবহারে কী কী বাহিনী কাজ করছে

গরম এবং শীতল মিডিয়া ম্যাকলুহান মিডিয়ার বিভিন্ন পদ্ধতিকে তাপমাত্রা স্কেল নামে পরিচিত কিছুর মাধ্যমে শ্রেণিবদ্ধ করেন যার মধ্যে গরম এবং শীতল ভর মিডিয়া থাকে। একটি মিডিয়া টাইপ গরম পরিমাপ করা হয় যদি এটি ভারী হয় এবং বিশেষত একটি যুক্তি নিমজ্জিত করে।

গরম মিডিয়া কুল মিডিয়া
উপন্যাস কবিতা
ফটো কমিক
লিখিত শব্দ কথ্য শব্দ
কম অংশগ্রহণ উচ্চ অংশগ্রহণ
রেডিও টেলিফোন
চলচ্চিত্র টেলিভিশন

উপরে একটি টেবিল রয়েছে যা তাদের সমকক্ষদের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি গরম এবং শীতল মিডিয়া দেখায়। উদাহরণস্বরূপ: একটি ফটো আরও স্পষ্টভাবে ভিজ্যুয়াল তথ্য সরবরাহ করে, যেখানে একই জিনিসের একটি অঙ্কন আকার এবং রঙের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন হতে পারে এবং সম্ভবত এর পিছনে একটি অর্থ থাকতে পারে।  এগুলি হ'ল ডিজিটাল উপস্থাপনাগুলির প্রভাবশালী রূপ এবং ভ্যান কোটেন যে প্রধান তত্ত্বগুলির সাথে কাজ করতে চান। "প্রভাবশালী ড্রাইভ হিসাবে বাস্তব থেকে কাল্পনিক দিকে স্থানান্তর"। গবেষণা

ম্যাকলুহানের হট অ্যান্ড কুল মিডিয়ার ধারণার সাথে তুলনা করা যায় 'লাইট অন', 'লাইট থ্রু' মিডিয়ার ধারণা। 'লাইট অন' মিডিয়া হ'ল যখন আলোর উত্স দর্শকদের চোখে আঘাত করার আগে কোনও পৃষ্ঠ বা বস্তু থেকে বাউন্স করে। লাইট অনকে 'হট' হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হবে কারণ এটি 'সমস্ত প্রকাশিত'। অতএব, আলো একটি পর্দায় প্রজেক্ট করা হয়। 'লাইট থ্রু' মিডিয়া হল আলোর উৎস যা দর্শকদের সামনে স্থাপন করা হয়, দর্শকদের উপর আলো প্রক্ষেপণ করে পর্দা তৈরি করে। 'লাইট থ্রু' কম প্রকাশক, আরও "রহস্যময়" তাই শীতল।

মাইক এস শেফার

[সম্পাদনা]

মাইক এস শেফার একজন জার্মান সমাজবিজ্ঞানী, বিজ্ঞান যোগাযোগের অধ্যাপক এবং জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞান স্টাডিজ কেন্দ্রের (চেস) পরিচালক। বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটির সমাজবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের ম্যাক্রোসোসিওলজির অধ্যাপক ইয়ুর্গেন গেরহার্ডসের সাথে একত্রে শেফার বৃহত্তর সমাজে প্রভাবের বাহক হিসাবে ইন্টারনেট এবং ঐতিহ্যবাহী গণমাধ্যমের তুলনামূলক পার্থক্য নিয়ে গবেষণা করেছিলেন।

শেফার তাত্ত্বিক করেছেন যে ইয়ুর্গেন হাবারমাসের মতো জনসাধারণের ক্ষেত্রের আদর্শিক তাত্ত্বিকরা 'পুরানো' গণমাধ্যমের খুব সমালোচনা করেছেন, যা মুক্ত এবং বহুবচন সামাজিক যোগাযোগের প্রচারে অক্ষম হিসাবে দেখা হয়েছিল। বিপরীতে, ইন্টারনেটের আবির্ভাব আশা জাগিয়েছিল যে এটি পূর্বে প্রান্তিক অভিনেতা এবং যুক্তিগুলিকে বৃহত্তর জনসাধারণের কাছে আরও দৃশ্যমান করে তুলবে। এই দাবিগুলি মূল্যায়ন করার জন্য, শেফার ইন্টারনেট এবং গণমাধ্যম যোগাযোগের তুলনা করেছেন।

ঐতিহ্যবাহী এবং ইন্টারনেট ভিত্তিক পাবলিক স্ফিয়ারের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রভাব
ঐতিহ্যবাহী পাবলিক স্ফিয়ার ইন্টারনেট ভিত্তিক পাবলিক স্ফিয়ার সাংগঠনিক পূর্বশর্ত অংশগ্রহণের জন্য উন্মুক্ততা সমাজের উপর প্রভাব
এনকাউন্টার ইমেইল, মেসেজিং, ইত্যাদি। নিম্ন উচ্চ নিম্ন
পাবলিক ইভেন্ট আলোচনা বোর্ড, ব্লগ, ইত্যাদি। মধ্য মধ্য মধ্য
গণমাধ্যম সার্চ ইঞ্জিন উচ্চ নিম্ন উচ্চ

এটি অফলাইন এবং অনলাইন পাবলিক স্ফিয়ার উভয়ের তিনটি স্তরকে পৃথক করে, যা তাদের কাঠামোগত পূর্বশর্তগুলিতে, অংশগ্রহণের জন্য তাদের উন্মুক্ততা এবং বৃহত্তর সমাজে তাদের প্রভাবের মধ্যে পৃথক। এই মডেলটি ব্যবহার করে, শেফার এমন স্তরগুলির তুলনা করে যা বৃহত্তর সমাজের জন্য সবচেয়ে দৃঢ়ভাবে কাঠামোগত এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী: সার্চ ইঞ্জিন দ্বারা সংগঠিত গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ।

তাদের গবেষণায়, শেফার এবং গেরহার্ডস এই ধারণাটিকে সমর্থন করার জন্য কেবলমাত্র ন্যূনতম প্রমাণ পেয়েছিলেন যে প্রিন্ট মিডিয়ার তুলনায় ইন্টারনেট একটি ভাল যোগাযোগের জায়গা। ইন্টারনেট কম প্রবেশের বাধা সহ একটি সহজেই অ্যাক্সেসযোগ্য মাধ্যম হওয়া সত্ত্বেও, উভয় জনসাধারণের ক্ষেত্রেই বক্তৃতাটি বৈজ্ঞানিক অভিনেতাদের দ্বারা আধিপত্য বিস্তার করেছিল অন্যদের জন্য অন্তর্ভুক্তি ছাড়াই।

ব্রায়ান লোডার

[সম্পাদনা]

ব্রায়ান ১৯৫৮ সালে জিম্বাবুয়েতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে সাউদাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করার আগে যুক্তরাজ্যে বেড়ে ওঠেন এবং ১৯৮১ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যান যেখানে তিনি রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞানে অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন, তিনি ১৯৮৯ সালে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক পলিসিতে স্নাতকোত্তর অর্জনের আগে সাউদাম্পটনে শিক্ষকতা করেছিলেন। এরপরে তিনি টিসাইড বিশ্ববিদ্যালয়ে তার অধ্যাপনা চালিয়ে যান এবং সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক জার্নাল অফ ইনফরমেশন, কমিউনিকেশন অ্যান্ড সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হন। তিনি এখন সিনিয়র লেকচারার হিসাবে ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ এবং তিনি নিউ মিডিয়ার আগ্রহগুলি অনুসরণ করেন।

সাইবার স্পেস বিভাজন

এতে ব্রায়ান লোডার একটি তথ্য সমাজের সম্ভাবনা এবং এটি কীভাবে সাইবারস্পেস বিভাজনের কারণ হবে তা পরিচয় করিয়ে দেয়। এখানে লোডার দেখেছেন কিভাবে ইন্টারনেট ব্যক্তিগত এবং জনসাধারণের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে, তিনি বলেছেন যে

"জীবনের কোনও ক্ষেত্র তথ্য বিপ্লব দ্বারা প্রভাবিত হবে না"।

এই কারণে লোডার সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামোর উপর প্রভাবগুলি দেখায়, কারণ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইটিসি) জীবনের একটি আপাত অংশ হবে। লোডার সাইবারস্পেসের ধারণার দিকে তাকিয়ে বিশ্বকে কীভাবে প্রভাবিত করবে তা অব্যাহত রেখেছেন এবং এটি কীভাবে এটি ব্যবহার করে তাদের কেবল "তথ্য সমৃদ্ধ" হওয়ার অনুমতি দেবে না বরং সাইবারস্পেস "'সাধারণ' লোকদের নতুন পরিচয় নির্মাণের মুক্ত সম্ভাবনা সরবরাহ করবে যা তাদের শ্রেণি, বর্ণের আরোপিত শ্রেণিবিন্যাস থেকে মুক্ত করবে, উপাদান স্থানের সাথে যুক্ত লিঙ্গ বা অক্ষমতা"।

এটি লোডারদের অনলাইনে একটি ব্যক্তিত্ব থাকার ধারণা যেখানে তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে থাকতে পারে এমন সীমাবদ্ধতা থেকে মুক্ত। তিনি এই ধারণাটিও যোগ করেছেন যে নামহীনতা তাদের একটি বিকল্প সংস্করণ আবিষ্কারে বিশাল ভূমিকা পালন করবে এবং এটি কেবল "ভার্চুয়াল স্পেস" এর মাধ্যমে অর্জন করা হবে।  লোডার স্পষ্টতই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে তথ্য সমাজটি সামাজিক শক্তিগুলির দ্বারা আরও বিকশিত হবে যারা এটিকে ব্যক্তিগত এবং জনসাধারণের ক্ষেত্রের লোকদের জন্য একটি স্থান হয়ে উঠবে।

ডিজিটাল যুগে তরুণ নাগরিক এখানে লোডার তার ধারণা অব্যাহত রেখেছেন তবে তরুণ নাগরিক এবং রাজনীতির সাথে আইটিসিতে তাদের জড়িত থাকার দিকে তাকিয়ে। তিনি তরুণ নাগরিকদের সাথে সাংস্কৃতিক স্থানচ্যুতির ধারণা এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন এবং তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির (আইটিসি) কারণে এটি কীভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তোলে।

প্রথমত, লোডার আমাদের সাংস্কৃতিক স্থানচ্যুতির একটি ব্যাখ্যা সরবরাহ করে। লোডার রাজনৈতিক ব্যবস্থার সাথে যুবকদের সংযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণ হিসাবে দেখেন রাজনীতিবিদরা "দূরবর্তী এবং আত্ম-শোষিত এবং নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিশ্বের তরুণদের অভিজ্ঞতার সাথে সহানুভূতি জানাতে অক্ষম"  তিনি বিশ্বাস করেন যে এই সংযোগ বিচ্ছিন্নতা যুব সংস্কৃতির কারণে এবং কীভাবে এটি নতুন আইটিসিগুলির কারণে পুরানো রাজনৈতিক ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত নয় এবং এর কারণে এটি যুব "যোগাযোগের স্থান" এর সাথে বৈপরীত্য সৃষ্টি করে  এটি মাথায় রেখে, লোডারও নিশ্চিত করে চলেছেন যে এটি একটি "ডিজিটাল বিভাজন" সরবরাহ করে এই ধারণাটি যে এই চ্যানেলগুলির মাধ্যমে যুবকরা বর্তমান রাজনীতি থেকে বিভক্ত এবং সেলিব্রিটি সংস্কৃতি দ্বারা আরও মোহিত হয়।

লোডার যুব সংস্কৃতি এবং নতুন মিডিয়াতে ব্যক্তিগতকরণের ধারণা সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন। ব্রায়ান ব্যক্তিগতকরণকে সংজ্ঞায়িত করে "বিভিন্ন জীবনধারা এবং ফ্যাশন বিবৃতির মধ্যে বেছে নেওয়ার চলমান ক্রিয়াকলাপ দ্বারা চিহ্নিত স্বতন্ত্র এজেন্ডাগুলি একজনের ব্যক্তিত্বকে আকার দেওয়া এবং প্রকাশ করা, দেহের ফর্ম এবং শৈল্পিকতা উদযাপন করা এবং বন্ধু, পরিবার এবং সহযোগীদের সামাজিক নেটওয়ার্কগুলি বিকাশ ও পরিচালনা করা"  লোডার এখানে বলছেন যে নতুন মিডিয়া প্রবর্তনের সাথে যুব সংস্কৃতি যুবকদের আরও চাপযুক্ত ব্যক্তিগত এজেন্ডা থাকার কারণে রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবক্ষয়ের দিকে পরিচালিত করেছে এতে অংশ নেওয়ার জন্য, তিনি ভোটারদের পরিমাণ হ্রাসের দিকে তাকিয়ে এই ধারণাটিকে সমর্থন করেন (২০০৫ সালে আনুমানিক ৩৭% ভোট দিয়েছিলেন) থেকে ২৫ বছর বয়সী কারণ তারা "অসন্তুষ্ট নাগরিক"

লোডার অবশ্য নতুন মিডিয়া এবং রাজনীতির গুরুত্ব নির্দেশ করেছেন যেখানে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে যুব সংস্কৃতি রাজনীতি বোঝার জন্য আরও সুযোগ দেবে। এটি এই কারণে যে নতুন মিডিয়া এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে এর সম্পৃক্ততা "রাজনৈতিক আলোচনায় জড়িত থাকবে এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাবে"[ পরিবর্তে, ব্রায়ান লোডার বিশ্বাস করেন যে নতুন মিডিয়া নতুন মিডিয়ার সহায়তায় আজকের রাজনীতিতে যুব ক্রিয়াকলাপে সামগ্রিক জড়িত থাকতে সহায়তা করবে।

নিকোলাস গার্নহ্যাম

[সম্পাদনা]

নিকোলাস গার্নহ্যাম একজন ব্রিটিশ গবেষক এবং ওয়েস্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক। তিনি ব্রিটিশ মিডিয়া এবং যোগাযোগ স্টাডিজ এবং যোগাযোগের রাজনৈতিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর রচনাগুলি পুঁজিবাদ এবং যোগাযোগ, সাংস্কৃতিক শিল্প, পাবলিক সার্ভিস মিডিয়া, পাবলিক স্ফিয়ার এবং সংস্কৃতির তত্ত্ব এবং সমাজবিজ্ঞানের মতো বিশেষ বিষয়গুলিকে আচ্ছাদিত করেছে।

তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি প্রথমবারের মতো "সাংস্কৃতিক শিল্প" শব্দটি ব্যবহার করেন, যার সাথে তিনি গণসংস্কৃতির সাথে সংযুক্ত সাংস্কৃতিক শিল্পের স্বীকৃত অর্থ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেন। তার পুঁজিবাদ ও যোগাযোগ (অনলাইন সম্পদ) (-এ তিনি যুক্তি দেন যে "সাংস্কৃতিক শিল্প" এমন প্রতিষ্ঠান যেখানে গণসংস্কৃতির উত্পাদন ও বিস্তার পুঁজিবাদ দ্বারা প্রভাবিত হয়। সুতরাং, গার্নহ্যামের মতে, প্রকাশনা শিল্প, রেকর্ড কোম্পানি এবং ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি আরও মুনাফা অর্জনের জন্য পুঁজিবাদকে ব্যবহার করে। 1977 এর পরে, "সাংস্কৃতিক শিল্প" শব্দটি "সৃজনশীল শিল্পে" পরিণত হয়। গার্নহ্যাম যুক্তি দিয়েছিলেন যে এই পরিবর্তনের কারণটি কেবল সাংস্কৃতিক শিল্পকে অর্থনৈতিক গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই ঘটেনি, বরং - এবং বিশেষত - সাংস্কৃতিক শিল্পগুলিকে তথ্য সমাজ এবং জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতির সাথে যোগাযোগ করা।

গার্নহ্যাম মিডিয়া বিতর্কে "পাবলিক স্ফিয়ার" ধারণাটি প্রবর্তনের জন্যও সবচেয়ে দায়বদ্ধ, যুক্তি দিয়েছিলেন যে, বিশেষত টেলিভিশনের ক্ষেত্রে, জনসেবা বেসরকারীকৃত বাজার দ্বারা প্রতিস্থাপিত হচ্ছে। টেলিভিশন দর্শকদের কয়েকটি বিকল্প সরবরাহ করে যা থেকে তারা বেছে নিতে পারে এবং এটি বাজার নিয়ন্ত্রণের অধীনে ক্রমবর্ধমান নিয়ন্ত্রণহীনতা এবং বেসরকারীকরণের শিকার হয়েছে। বিপরীতে, তার মতে, পাবলিক সার্ভিস কেবল মুনাফা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এমন স্বাদগুলি সন্তুষ্ট করার পরিবর্তে তারা যা পছন্দ করে তার উপর ভিত্তি করে আরও বেশি লোককে সন্তুষ্ট করতে পরিচালিত করে। সাংস্কৃতিক সম্পদের বাজার বরাদ্দ, জনসেবা মাধ্যমের ধ্বংসের সাথে মিলিত, 'জনসাধারণের যোগাযোগ'কে হুমকির মুখে ফেলেছে, যা তার মতে, গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

লিংকন ডাহলবার্গ

[সম্পাদনা]

লিংকন ডাহলবার্গ মিডিয়া রাজনীতি এবং পাবলিক স্ফিয়ার তত্ত্বের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন।  তার শেষ কাজগুলির একটিতে তিনি মিনেসোটা ই-গণতন্ত্র প্রকল্পের একটি কেস স্টাডি বিবেচনা করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে জনসাধারণের ক্ষেত্র বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সুতরাং এটি দেখানো যে কিছু উল্লেখযোগ্য সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও, ইন্টারনেট জনসাধারণের ক্ষেত্রকে উন্নত এবং প্রসারিত করতে পারে তবে এটি করার জন্য এটি ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড পূরণ করতে হবে।

ডাহলবার্গ (২০০১) যুক্তি দেন যে ইন্টারনেটকে জনসাধারণের ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচনা করার জন্য ছয়টি মৌলিক মানদণ্ড পূরণ করা দরকার - রাষ্ট্র ও অর্থনৈতিক শক্তি থেকে স্বায়ত্তশাসন; সমালোচিত নৈতিক-ব্যবহারিক বৈধতা দাবির বিনিময় এবং সমালোচনা; রিফ্লেক্সিভিটি; আদর্শ ভূমিকা গ্রহণ; আন্তরিকতা; এবং বিতর্কমূলক অন্তর্ভুক্তি এবং সমতা।

- কাসুন উবায়াসিরি "

  • - রাষ্ট্র এবং অর্থনৈতিক শক্তি থেকে স্বায়ত্তশাসন: ডাহলবার্গের মতে নাগরিকদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া রাষ্ট্রের প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়া উচিত, যার অর্থ জনগণকে রাষ্ট্র সম্পর্কে জনসাধারণের মতামত দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় (এবং থাকা উচিত) এবং তাদের সরকারের উপর ক্ষমতা থাকা উচিত। তবুও, এটি অন্যভাবে হওয়া উচিত নয়: সাইবারস্পেসে রাষ্ট্রীয় এবং কর্পোরেট উপনিবেশকরণ অনলাইন পাবলিক স্পেসগুলিকে হুমকি বা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত নয়। তবে ডাহলবার্গের মতে, ইন্টারনেট কঠোরভাবে সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সাথে সংযুক্ত থাকায় রাষ্ট্রীয় প্রভাব এড়ানো পুরোপুরি সম্ভব নয়।
  • সমালোচিত নৈতিক-ব্যবহারিক বৈধতা দাবির বিনিময় এবং সমালোচনা: "যুক্তিগুলি কেবল কথোপকথনে উপস্থিত ব্যক্তিদের কাছে নয়, বিবেচনাধীন দাবিগুলির দ্বারা সম্ভাব্য প্রভাবিত অন্য সকলকে, আলোচকদের 'বৃহত্তর' বা 'আদর্শ' বা 'ভার্চুয়াল' সম্প্রদায়ের কাছে সম্বোধন করা উচিত।
  • রিফ্লেক্সিভিটি: যোগাযোগটি প্রাসঙ্গিক যুক্তিগুলির উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত, অংশগ্রহণকারীদের তাদের মূল্যবোধ এবং বিশ্বাস সম্পর্কে তাদের নিজস্ব অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করতে সক্ষম হওয়া উচিত এবং বৈধতার দাবিগুলি দেওয়া হলে তাদের অন্য কারও অবস্থান নিতে সক্ষম হওয়া উচিত।
  • আদর্শ ভূমিকা গ্রহণ: অংশগ্রহণকারীরা পার্থক্যগুলি বোঝার এবং বাইপাস না করার চেষ্টা করবে এবং তারা অন্য লোকেদের দৃষ্টিকোণ থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বিবেচনা করবে, এটি অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে চলমান যোগাযোগ এবং সততা বোঝায়। এই মানদণ্ডটি বিবেচনায় নেওয়ার জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকের দিকে পরিচালিত করে: আন্তরিকতা।
  • আন্তরিকতা: যোগাযোগ সততা এবং উন্মুক্ততার উপর ভিত্তি করে। অনলাইন পাবলিক স্ফিয়ারের অস্তিত্বের জন্য আন্তরিকতা প্রয়োজন, তথ্য সঠিক হওয়া দরকার এবং লোকেরা ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলা উচিত নয়। এটি যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে সততা সম্পর্কে ডাহলবার্গের ধারণা অনুসারে, পারসোনার পুরো ধারণাটি বিদ্যমান থাকা উচিত নয়, কারণ লোকেরা একটি অনলাইন পরিচয় তৈরি করার চেষ্টা করে যা সর্বদা আসল পরিচয়ের সৎ চিত্র হয় না। তাছাড়া, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা সবসময় তাদের আসল চিন্তাভাবনা ভাগ করে না এবং সবকিছু সম্পর্কে সৎ হওয়া প্রায় অসম্ভব তাই সততার শর্তটি অর্জন করা কঠিন, তাই ডাহলবার্গের মানদণ্ডের বড় অংশটি পূরণ করা যায় না কারণ তারা সবাই একটি আদর্শ সমাজকে বিবেচনা করে।
  • বিতর্কমূলক অন্তর্ভুক্তি এবং সমতা: প্রত্যেকেরই একটি বক্তৃতায় অংশ নেওয়ার একই সম্ভাবনা থাকা উচিত, লোকদের কেবল আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত নয় তবে তাদের ধারণাগুলি একই স্তরে বিবেচনা করা উচিত। এই মানদণ্ডটি, অন্যান্য মানদণ্ডের মতো, অনুমান করে যে সামাজিক বৈষম্য অংশগ্রহণকে প্রভাবিত করে না। যাইহোক, ডাহলবার্গ নিজেই উল্লেখ করেছেন যে মিনেসোটা ই-ডেমোক্র্যাসির কেস স্টাডিতে সামাজিক ও লিঙ্গ সম্পর্কিত বৈষম্যগুলি এখনও সাধারণ আগ্রহের লোকদের চেয়ে মহিলা এবং নির্দিষ্ট জ্ঞানের লোকদের চেয়ে পুরুষদের পক্ষে থাকে। যেমন, এটি মিনেসোটা ই-গণতন্ত্র প্রকল্পের সাথে ঘটেছে, আমরা যখন কোনও বক্তৃতায় প্রবেশ করছি তখন আমরা বর্জনের মুখোমুখি হতে পারি, কেবল কারণ অন্যদের আরও প্রধান ব্যক্তিত্ব থাকতে পারে, সুতরাং আদর্শিক অবস্থা অর্জন করা কঠিন যেখানে সবাই একটি বক্তৃতায় সমান গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য, আমাদের এর মধ্যে একটা বিশেষ প্রচেষ্টা করা দরকার, যাতে কথা বলার বিভিন্ন শৈলীকে একই সম্মানের সাথে বিবেচনা করা যায় এবং একই গুরুত্ব থাকতে পারে।

জন থম্পসন

[সম্পাদনা]

জন থম্পসন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং জেসাস কলেজের এলিট সদস্য। তাঁর জীবনে, তিনি আধুনিক সমাজের বিকাশে গণমাধ্যমের প্রভাব এবং সাময়িক এবং স্থানিক কাঠামোর বাইরে ক্রিয়া এবং মিথস্ক্রিয়ার নতুন রূপ তৈরির বিষয়ে অধ্যয়ন করেছেন। তাঁর কাজ "দ্য মিডিয়া অ্যান্ড মডার্নিটি: এ সোশ্যাল থিওরি অফ দ্য মিডিয়া" মধ্যযুগীয় শিল্প এবং অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং জবরদস্তিমূলক শক্তির মধ্যে জটিল সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে গণমাধ্যম সম্পর্কে একটি সামাজিক তত্ত্ব প্রণয়নের প্রচেষ্টা। থম্পসন এমন একটি তত্ত্ব যুক্তি দেন যা আধুনিক সমাজে গণমাধ্যমের ভূমিকার কথা মনে রাখে, যারা পূর্ববর্তী যুগের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি হিসাবে গণমাধ্যমকে বিবেচনা করে তাদের বিরোধিতা করে। থম্পসন হান্স-জর্জি গাদামার এবং হার্মেনিউটিক্স দ্বারা দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত হন, যা পাঠ্য ব্যাখ্যার দর্শন এবং পদ্ধতি অধ্যয়ন করেছিল। "দ্য মিডিয়া অ্যান্ড দ্য মডার্নিটি: এ সোশ্যাল থিওরি অফ দ্য মিডিয়া" তে থম্পসন "ভর" শব্দটি বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত করেছেন যে বেশিরভাগ গণমাধ্যম জনসাধারণের জন্য নয়, কুলুঙ্গি বাজারের জন্য উত্পাদিত হয়। যেহেতু "ভর" শব্দটি একটি বিশাল জনসাধারণের (লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি) চিত্রকে উদ্দীপিত করে, থম্পসন এটি নিয়ে আলোচনা করেছেন, "গণযোগাযোগ" ধারণার বিপরীতে (তার মতে খুব অপব্যবহারযোগ্য) মুখোমুখি মিথস্ক্রিয়া এবং দ্বিমুখী প্রক্রিয়া যা লোকেরা একে অপরের সাথে কথা বলার সময় ঘটে। তিনি বিশ্বাস করেন যে যখন আমরা "মধ্যস্থতা যোগাযোগ বা, আরও সহজভাবে, 'মিডিয়া' নিয়ে কাজ করি যা বিভ্রান্তিকর অনুমানের সাথে কম বোঝাই হয় তখন আরও উপযুক্ত শর্তাদি রয়েছে।

থম্পসন হ্যাবারমাসের 'পাবলিক স্ফিয়ার' ধারণার সমালোচনা করে যুক্তি দিয়েছিলেন যে আধুনিক সমাজে "মধ্যস্থতা প্রচার" এর একটি নতুন রূপ রয়েছে। এই মধ্যস্থতা প্রচারের কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা হ'ল:

  • ডেস্প্যাটিয়ালাইজড (আরও জিনিস দেখার জন্য লোকদের একই অবস্থান ভাগ করার দরকার নেই, তবে এই বর্ধিত দৃষ্টির কোণের নিয়ন্ত্রণ তাদের নেই);
  • অ-ডায়ালজিকাল (উদাহরণস্বরূপ, টিভিতে উপস্থাপকরা শ্রোতাদের কাছে দৃশ্যমান, তবে অন্যভাবে নয়, এর অর্থ তারা জনসাধারণের প্রতিক্রিয়াগুলির সাথে তাদের বক্তৃতাটি খাপ খাইয়ে নিতে পারে না)
  • বৃহত্তর এবং আরও বৈচিত্র্যময় শ্রোতা (বিভিন্ন শিক্ষা, বিভিন্ন সামাজিক শ্রেণি, বিভিন্ন মূল্যবোধ এবং বিশ্বাসের লোকেরা একই বার্তা পেতে পারে)।

এখন, এই মধ্যস্থতামূলক প্রচারের জন্য ধন্যবাদ, অনেকগুলি অল্প কয়েকজনের কাছে দৃশ্যমান এবং অল্প কয়েকজনও অনেকগুলি দেখতে পারে:

"যেখানে প্যানোপটিকন বহু লোককে কয়েকজনের কাছে দৃশ্যমান করে তোলে এবং তাদের স্থায়ী দৃশ্যমানতার অবস্থার অধীন করে অনেকের উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করতে সক্ষম করে, যোগাযোগ মাধ্যমের বিকাশ এমন একটি উপায় সরবরাহ করে যার মাধ্যমে অনেক লোক কয়েকজনের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে এবং একই সময়ে, কয়েকজন অনেকের সামনে উপস্থিত হতে পারে; মিডিয়াকে ধন্যবাদ, এটি প্রাথমিকভাবে যারা ক্ষমতা প্রয়োগ করে, যাদের উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয় তাদের পরিবর্তে, যারা একটি নির্দিষ্ট ধরণের দৃশ্যমানতার শিকার হয়।

থিম একীভূতকরণ

[সম্পাদনা]

এই অধ্যায়ের শেষ বিভাগে, আমরা এই উইকিবই জুড়ে ঘটে যাওয়া সাধারণ থিমগুলি নিয়ে আলোচনা করব এবং আবিষ্কার করব। এই বিভাগে, আমরা ডিজিটাল যুগে সরকারী এবং বেসরকারী ক্ষেত্রের দিকে নজর দিয়েছি। যাইহোক, প্রযুক্তিগত এবং সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ এই বিভাগের সাথে দৃঢ়ভাবে যুক্ত করা যেতে পারে, পাশাপাশি কিছু পয়েন্ট যা থেকে নেওয়া হয়েছে জ্ঞান এবং ডেটা দৈনন্দিন জীবনে অ্যাক্সেস। আমরা সবশেষে নজরদারি এবং সৌসভিল্যান্স বিভাগটি নিয়ে আলোচনা করব।

সাংস্কৃতিক নির্ধারণবাদ, যেমন ইতিমধ্যে এই বইয়ের আগে বর্ণিত হয়েছে, চূড়ান্তভাবে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন দ্বারা সমাজকে প্রভাবিত করার উপায় হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে; কীভাবে এই পরিবর্তন আমাদের চরিত্র, আমাদের বিশ্বাস এবং একে অপরের সাথে আমাদের মিথস্ক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। প্রযুক্তিগত নির্ধারণবাদ তাই প্রযুক্তি কীভাবে আমাদের সংস্কৃতি এবং বৃহত্তর সমাজকে প্রভাবিত করে। মার্শাল ম্যাকলুহান (১৯৬৪) যুক্তি দিয়েছিলেন যে মিডিয়া প্রযুক্তির উদ্ভাবনের কারণে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটে। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে আজকের সমাজে এটি বেশ প্রকট। যেমনটি আগে আলোচনা করা হয়েছে, ডিজিটাল যুগে প্রাইভেট স্ফিয়ারের আক্রমণ আমাদের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে আমাদের চলার পদ্ধতি পরিবর্তন করেছে। ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তৈরির আগে, বাড়িটি আমাদের ব্যক্তিগত স্থান ছিল, যদি না কেউ আপনাকে আপনার ল্যান্ডলাইনে কল না করে তবে আপনি অনুপলব্ধ ছিলেন। এখন টেক্সট মেসেজ বা ডিজিটাল যোগাযোগের অন্যান্য ফর্মগুলির মাধ্যমে ক্রমাগত উপলব্ধ হওয়ার চাপ রয়েছে।

প্রযুক্তির প্রসার যে আমাদের জীবনযাত্রাকে বদলে দিয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এটি অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, এটি মানুষকে একত্রিত করতে সহায়তা করেছে এবং নাগরিককে গণতন্ত্রে জড়িত করতেও সহায়তা করেছে। আরও আকর্ষণীয় যুক্তিগুলির মধ্যে একটি হ'ল গ্লোবাল ভিলেজ;  ম্যাকলুচান (১৯৬৪) এই ধারণা নিয়ে আসেন যে, ইলেকট্রনিক প্রযুক্তির কারণে তথ্য ছড়ানো যায় এবং তাৎক্ষণিকভাবে পাঠানো যায়। আজকের সমাজে এর চেয়ে বেশি সত্য হতে পারে না। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মতো অ্যাপ্লিকেশনগুলির জন্য ধন্যবাদ, আপনি শত শত মাইল দূরে অবস্থিত কারও সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, যেন তারা রাস্তায় রয়েছে। যা আমাদের অনলাইন পরিচয় কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা নিয়ে আলোচনা করতে পরিচালিত করে। অনলাইন পরিচয়ও জনসাধারণের ক্ষেত্রের অংশ। পাবলিক স্ফিয়ার হ'ল আমরা কীভাবে নিজেকে পাবলিক ডোমেনে উপস্থাপন করি, এটি ব্যক্তিগতভাবে বা অনলাইনেই হোক না কেন, এমন একটি উপায় রয়েছে যা আমরা নিজেদেরকে চিত্রিত করতে চাই। গ্লোবাল ভিলেজের উত্থানের সাথে সাথে আরও বেশি লোক আমাদের সামাজিক মিডিয়া কার্যকলাপ দেখতে পারে। এই কারণে, এখন একটি চাপ রয়েছে, বিশেষত তরুণদের মধ্যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভূমিকা পালন করা এবং "সর্বদা চালু" থাকার।

এই উইকিবইয়ের দৈনন্দিন জীবনে জ্ঞান এবং উপাত্তে প্রবেশাধিকার অধ্যায়ে "সর্বদা চালু" থাকার চাপ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত, এর অর্থ হ'ল সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করার জন্য আমাদের দিনে চব্বিশ ঘন্টা, সপ্তাহে সাত দিন উপলব্ধ থাকার জন্য চাপ দেওয়া হয়। চমৎকার নিঃসঙ্গতার দিন চলে গেছে অনেক আগেই। গ্লোবাল ভিলেজ এফেক্টের কারণে, আমাদের ব্যক্তিগত ক্ষেত্রটি আক্রমণ করা হয়েছে কারণ "সর্বদা চালু" থাকার জন্য ক্রমাগত চাপ রয়েছে। তবে এর ফলে তথ্যের আধিক্য দেখা দিয়েছে। এই উইকিবইয়ে পরে যেমন আলোচনা করা হয়েছে, কেউ কেউ যুক্তি দেখান যে যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া মানুষের -সামাজিক চাহিদাকে প্রশান্ত করে, তাই আমরা নিজেদেরকে ঘরের ভিতরে বন্ধ করে রাখছি এবং বৈদ্যুতিনভাবে মিথস্ক্রিয়া করছি। দ্বারা একটি নিবন্ধ জন বিংহাম (2016) শিরোনাম "সোশ্যাল মিডিয়ার জন্মের পরে কিশোর গর্ভাবস্থা কীভাবে ধসে পড়েছিল" একটি যুক্তি প্রদর্শন করে যে সোশ্যাল মিডিয়ার জন্মের পর থেকে যুক্তরাজ্যে কিশোরী গর্ভধারণের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে এবং জিজ্ঞাসা করে যে কোনও সম্পর্ক আছে কিনা। এটাও যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে আমাদের সরকারী এবং বেসরকারী ক্ষেত্রের মধ্যে সীমানা অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই অনেক লোক তাদের সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে ব্যক্তিগত তথ্য রাখে; এর কারণ এই নয় যে তারা চায় যে সবাই তাদের ব্যবসা জানুক, বরং এটি নিজেকে প্রকাশ করার একটি উপায়, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী পাবলিক প্ল্যাটফর্মে হোক।

আমি আগেও বলেছি, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যক্তিকে ক্ষমতায়িত করেছে, গণতন্ত্রকে আলোকিত করেছে। নজরদারি এবং সৌসভিল্যান্সে যেমন আলোচনা করা হয়েছে, এটি সিটিজেন জার্নালিস্টের জন্যও পথ তৈরি করেছে। এখন নিজের ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের মানুষ সংবাদ সৃষ্টিতে অংশ নিতে পারে। এটিও "সৌসভিল্যান্স" এর একটি উদাহরণ। আরব বসন্ত ব্যাপক নাগরিক সাংবাদিকতা দেখেছে, সাধারণ মানুষ ঘটনাবলী প্রত্যক্ষ করেছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তা নথিভুক্ত করেছে। এছাড়াও, সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন ব্লগ সাইটের উত্থানকে ধন্যবাদ, আমাদের যে নিউজ আউটলেটগুলি থেকে বেছে নিতে হবে তার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। আরেকটি অ্যাংরি ভয়েস (এএভি) এবং উইংস ওভার স্কটল্যান্ডের মতো ওয়েবসাইটগুলি তৈরি করা হয়েছে এবং বিভিন্ন নাগরিককে অবহিত করা হয়েছে। এই উইকিবইয়ে পরে যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, জিসিএইচকিউ 1950 এবং 1960 এর দশকে গঠিত হয়েছিল এবং অনেকগুলি বিভিন্ন সুরক্ষা অপারেশনে অংশ নিয়েছে। সংস্থাগুলির আচরণ সম্প্রতি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এবং যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের মাধ্যমে খসড়া যোগাযোগ ডেটা বিল (2015) চলছে; এবং প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে বিভিন্ন উদ্বেগ, একটি যুক্তি রয়েছে যে এই বিলটি যদি আইনে পরিণত হয় তবে এটি ইতিমধ্যে হ্রাস পাওয়া ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে আরও অনুপ্রবেশ করতে পারে। তবে বর্তমান নিরাপত্তা হুমকির কারণে অনেকে যুক্তি দেখাবেন যে প্রস্তাবগুলি প্রয়োজনীয়।

উপসংহারে, এই অধ্যায়ে যে বিভিন্ন তত্ত্ব এবং ধারণাগুলি সম্পর্কে কথা বলা হয়েছে সেগুলি এই উইকিবইয়ের অন্যান্য অধ্যায়গুলিতেও টানা যেতে পারে। এই বইটি পড়ার সময় এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে সমস্ত তাত্ত্বিক এবং ধারণাগুলি কোনও আকার বা আকারে একত্রে সংযুক্ত হয়।

সমালোচনামূলক পর্যালোচনা

[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠিত হিসাবে, সামাজিক বিশ্ব দুটি গোলকে বিভক্ত হয়েছে; সরকারি ও বেসরকারি। মার্টিন হাইডেগার যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি ব্যক্তিগত ক্ষেত্রের মাধ্যমে যেখানে একজন সত্যিকার অর্থে নিজেকে প্রকাশ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতে, আপনি নিজের প্রোফাইলটিকে নিজের পছন্দ মতো ব্যক্তিগত রাখার অনুমতি দিতে পারেন, লোকেদের কাছে নির্দিষ্ট তথ্য দেখানো অক্ষম করার বিকল্পগুলি সহ। কেউ ধরে নেবে যে তাদের তথ্য সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত হবে এবং তাই এই ক্ষেত্রে, হাইডেগারের যুক্তি বৈধ। কিন্তু আসলেই কি আমরা ধরে নিতে পারি যে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ? তিনি যুক্তি দেন যে লোকেরা কেবল তখনই নিজেকে সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করবে যদি তারা এই ধারণার অধীনে থাকে যে তাদের তথ্য ব্যক্তিগত। উদাহরণস্বরূপ, ফেসবুক ব্রাউজারের ইতিহাস ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছে  হাইডেগারের যুক্তিকে সম্পূর্ণরূপে দুর্বল করে দেয়। ব্যবহারকারীরা যদি সচেতন হন যে তাদের তথ্য ততটা নিরাপদ নয় যতটা তারা বিশ্বাস করেন ততটা নিরাপদ নয়।

জিজি পাপাচারিসি যুক্তি দেন যে সমাজে সরকারী ও বেসরকারী ক্ষেত্রের মধ্যে সম্পর্কের পরিবর্তন হয়েছে। ব্যক্তিগত পরিসর সবসময় পরিবার বা বাড়ির সাথে যুক্ত হয়েছে। পাপাচারিসি যুক্তি দিয়েছিলেন যে আজকাল, প্রচুর পরিমাণে পোর্টেবল প্রযুক্তি উপলব্ধ থাকায়, সমাজের সদস্যরা এখন তাদের নিজের বাড়ির স্বাচ্ছন্দ্য থেকে আগের চেয়ে আরও বেশি জনসাধারণের ক্ষেত্রে বাস করতে এবং অংশ নিতে পারে।  এটি তখন সরকারী এবং বেসরকারী ক্ষেত্রগুলিকে একত্রিত করার অনুমতি দেয়, যার ফলে লোকেরা উভয় বিশ্বের সেরা হতে পারে। এটি যুক্তিযুক্ত হতে পারে যে, হাইডেগারের পয়েন্টের সাথে এটি আজকাল অগত্যা বোঝায় না যে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রটি বাড়ি থেকে বৈধ এবং এটি আপনি নিজের সম্পর্কে কতটা তথ্য প্রকাশ করতে চান তার ধারণার সাথে আরও বেশি সম্পর্কিত, যার ফলস্বরূপ পাপাচারিসির যুক্তিটি অবৈধ হয়ে যাবে। তবে এটি অন্যথায় একটি শক্তিশালী যুক্তি এবং এই ধারণাটি নির্ধারণ করে যে সরকারী এবং বেসরকারী ক্ষেত্রগুলি আগের মতো মেরু নয়।

ব্রায়ান লোডার যুক্তি দেন যে একটি তথ্য সমাজ সাইবারস্পেস বিভাজন সৃষ্টি করবে। তিনি বলেছেন যে যেহেতু লোকেরা অনলাইনে নকল এবং ভার্চুয়াল কেউ হওয়ার সুযোগ পেয়েছে, তাই তারা দৈনন্দিন জীবনে যে কলঙ্কের মুখোমুখি হতে পারে তা থেকে বাঁচতে সক্ষম হয়। এখানেই প্রাইভেট এবং পাবলিক স্ফিয়ারের মধ্যে পরিবর্তনের বিষয়ে পাপাচারিসির যুক্তিটি সত্যই প্রাসঙ্গিক।  যদি কেউ তাদের অনলাইন কার্যকলাপের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে থাকতে চায় তবে এখনও জনসাধারণের ক্ষেত্রের অফার করা জিনিসগুলিতে অংশ নিতে চায়, তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে একটি জাল ব্যক্তিত্ব তৈরি করতে সক্ষম হয় যা তাদের ব্যক্তি হিসাবে নির্ধারণ করে না, তবে তবুও এই তথ্যটি অন্যদের সাথে ভাগ করে নিতে পারে। লোডার তখন বিশ্বাস করেন যে এটি করার মাধ্যমে, বিশেষত সমাজের যুবকদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে পারে, উদাহরণস্বরূপ, রাজনীতি সম্পর্কিত অনলাইন পোল যা একটি তরুণ সমাজকে বিশ্বের সাথে আরও জড়িত হতে সহায়তা করে।

শব্দকোষ

[সম্পাদনা]

অলওয়েজ-অন
ডানাহ লয়েডেরর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, অলওয়েজ-অন সংস্কৃতি হলো প্রযুক্তির সঙ্গে স্থায়ী সংযুক্তি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অনলাইন কনটেন্টে সব সময় সক্রিয় থাকার প্রয়োজনীয়তা।

অ্যানোনিমিটি
অ্যানোনিমিটি বা নামহীনতা বলতে বোঝায় যখন একজন ব্যক্তি শনাক্তযোগ্য, নাগালযোগ্য বা অনুসরণযোগ্য নয়। অনলাইনে নামহীনতা বলতে সাধারণত ব্যক্তিগত পরিচয় গোপন রেখে ব্যবহারকারীর নামের মাধ্যমে যোগাযোগ করাকে বোঝায়।

অ্যানোনিমাস (গোষ্ঠী)
অ্যানোনিমাস হলো একটি আন্তর্জাতিকভাবে সংযুক্ত কিন্তু শিথিলভাবে সংগঠিত অ্যাক্টিভিস্ট ও হ্যাকটিভিস্টদের নেটওয়ার্ক। (দেখুন অধ্যায় ১.৭.৫.২)

আত্মসংযম
সেনেটের মতে, আত্ম-উপলব্ধির উদ্দেশ্যে সমাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে অন্তর্মুখিতা চাওয়াকে বোঝায়, যা শেষ পর্যন্ত জনপরিসরের ঐক্যতা বাড়ায়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ ও স্বায়ত্তশাসনের মতো মূল্যবোধ অর্জন সম্ভব হয়, যা একজন সক্রিয় নাগরিকের জন্য অপরিহার্য।

অ্যাভাটার (কম্পিউটিং)

ভার্চুয়াল রিয়ালিটি সাইটে অ্যাভাটার হলো ব্যবহারকারীর বা তাঁর বিকল্প চরিত্রের গ্রাফিকাল উপস্থাপনা।

ক্যাটফিশিং

অনলাইনে মিথ্যা পরিচয় (যা মনগড়া বা চুরি করা হতে পারে) ব্যবহার করে অন্য কাউকে প্রতারিত করার কাজ। (দেখুন অধ্যায় ১.৭.২.৩)

সাইবার বুলিং

অনলাইনে হয়রানি বা বুলিং করার কাজ। (দেখুন অধ্যায় ১.৭.৪)

কুকি

সাধারণভাবে, HTTP কুকি হলো ছোট ছোট তথ্যখণ্ড, যা কোনো ব্যবহারকারী একটি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে তার ব্রাউজারে পাঠানো হয় এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে সংরক্ষিত থাকে। ব্যবহারকারী যখন আবার সেই ওয়েবসাইটে যায়, তখন কুকিগুলো আবার সার্ভারে পাঠানো হয়, ফলে তার সাম্প্রতিক কার্যকলাপ সম্পর্কিত তথ্য ফিরে আসে।

সাইবারস্টকিং

অনলাইনে কাউকে অনুসরণ বা তাড়া করার কাজ। (দেখুন অধ্যায় ১.৭.৪.২)

ডার্ক ওয়েব

"ডিপ ওয়েব"-এর একটি ছোট অংশ, যেখানে সাধারণত আমন্ত্রণমূলক ছোট নেটওয়ার্ক থাকে এবং এটি অবৈধ কার্যকলাপের কেন্দ্র হিসেবে কুখ্যাত। দেখুন অধ্যায় ১.৭.৭

ডিপ ওয়েব

"হিডেন" বা "অদৃশ্য" ওয়েব নামেও পরিচিত, এটি ইন্টারনেটের সেই অংশ যা সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন দ্বারা খুঁজে পাওয়া যায় না। দেখুন অধ্যায় ১.৭.৭

ডিজিটাল যুগ

২০শ শতকের শেষ ভাগ থেকে শুরু হওয়া চলমান সময়কালকে ডিজিটাল যুগ বলা হয়। এই যুগের বৈশিষ্ট্য হলো, তথ্য সংরক্ষণ ও আদান-প্রদান ডিজিটালি করার সুযোগ, যা সমাজকে পারস্পরিকভাবে প্রভাবিত করেছে। বিস্তারিত দেখুন ভেদ নির্ধারণ

ডিজিটাল মিডিয়া

ডিজিটাল মিডিয়া বলতে সব ধরনের মাধ্যমকে বোঝানো হয়, যা ডিজিটাল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (যেমন: ইন্টারনেট) উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং ডিজিটালাইজেশন, রেকর্ডিং, প্রক্রিয়াজাতকরণ, হিসাব, সংরক্ষণ, উপস্থাপন ও বিতরণের জন্য প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমে তৈরি চূড়ান্ত পণ্য হতে পারে ডিজিটাল শিল্প বা সঙ্গীত। বিস্তারিত দেখুন ডিজিটাল মিডিয়ার বৈশিষ্ট্য

ডিজিটাল আত্ম-নির্যাতন / ডিজিটাল মিউনচাউসেন

ব্যবহারকারীর নিজেরই অনলাইনে নিজেকে হয়রানি বা গালিগালাজ করা। বিস্তারিত দেখুন অধ্যায় ১.৭.৪.১

বিচ্ছিন্নতা

মানসিকভাবে শারীরিক ও আবেগগত অভিজ্ঞতা থেকে দূরে সরে যাওয়াকে বোঝায়। অনলাইনে, এটি বাস্তব জীবন থেকে শারীরিক ও মানসিক বিচ্ছিন্নতাকে বোঝায়, যেটি একজন ব্যক্তি তার অনলাইন পরিচয় উপস্থাপন করার সময় অনুভব করে।

এনক্রিপশন

বার্তা বা তথ্যকে এমনভাবে সাংকেতিক করা যাতে অনুমোদনহীন পক্ষ তা বুঝতে না পারে। শুধুমাত্র ডিক্রিপশন কী যাদের কাছে আছে, তারাই তথ্যটি বুঝতে পারে।

হ্যাকার

একজন ব্যক্তি যে কম্পিউটার, সার্ভার বা নেটওয়ার্কের দুর্বলতা খুঁজে বের করে এবং সেগুলোতে প্রবেশ করে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে জ্ঞান বা তথ্য সংগ্রহ করে।

হ্যাকটিভিজম

হ্যাকারদের এমন কার্যক্রম, যা রাজনৈতিক বা সামাজিক উদ্দেশ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে, যেমন দুর্নীতি প্রকাশ, মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তথ্যের স্বাধীনতা।

পরিচয়

পরিচয় হলো আমাদের চরিত্র ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সমন্বয়, যা আমাদের অনলাইন উপস্থিতিকে প্রভাবিত করে।

মিডিয়া মাল্টিপ্লায়ার এফেক্ট

আদ্রিয়ান এথিক তাঁর বই Digital Media and Society: An Introduction-এ যেভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, মিডিয়া মাল্টিপ্লায়ার এফেক্ট হলো গণমাধ্যমের মাধ্যমে সমাজে ভয়ের আলোচনার বহুগুণ বৃদ্ধি, যার ফলে বাস্তবে যতটা ঝুঁকি নেই, তা অতিরঞ্জিতভাবে মনে হয়।\

মোবাইল প্রাইভেটাইজেশন মোবাইল ডিভাইসের মাধ্যমে ব্যক্তিকে যে কোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা, তবে ডিভাইসের সংযুক্তির কারণে এখনো 'বাড়ির' অনুভূতি থাকা। দেখুন অধ্যায় ১.৯.১

নারসিসিজম

যদিও প্রায়ই একে একটি মানসিক ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, Lasch এবং Sennett -এর মতে এটি হলো নিজের অস্তিত্ব নিয়ে অতিমাত্রায় চিন্তিত থাকা। এ ধরনের আচরণ স্ব-কেন্দ্রিক হলেও তা সম্পূর্ণ স্বার্থপর নয়, এবং সাধারণত আত্মনিয়ন্ত্রণমূলক হলেও আত্মপ্রণোদিত নয়।

অনলাইন ফুটপ্রিন্ট

ব্যবহারকারীর ইন্টারনেটে রেখে যাওয়া তথ্যের পরিমাণ, যা হয় অজান্তে (প্যাসিভ ফুটপ্রিন্ট) বা সম্মতিসহ (অ্যাক্টিভ ফুটপ্রিন্ট) শেয়ার করা হয়।

অনলাইন পারফরম্যান্স

Mendelson ও Papacharissi 2001-এর মতে, অনলাইন পারফরম্যান্স হলো আমাদের আচরণের নির্বাচিত রূপ অনলাইনে উপস্থাপন, যা সামাজিক জীবনে ও অনলাইন উপস্থিতিতে (যেমন সোশ্যাল মিডিয়া) প্রভাব ফেলে। এটি একধরনের মঞ্চায়ন, যা বাস্তব জীবনের প্রতিফলন নাও হতে পারে।

ব্যক্তিগত পরিসর

মানুষের জীবনের এমন অংশ, যেটির ওপর তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে এবং সরকার বা অন্য প্রতিষ্ঠানের প্রভাব থাকে না। উদাহরণ: বাড়ি। বিস্তারিত দেখুন ভেদ নির্ধারণ

সংযোগের প্রকাশ্য প্রদর্শনী

এটি বোঝায়, আমরা কীভাবে আমাদের আশপাশের মানুষদের দেখাই—কে আমাদের বন্ধু, পরিবার বা সহকর্মী। danah boyd ও Judith Donath এ ধারণাটি ব্যাখ্যা করেছেন। এই প্রবন্ধে, এটি অনলাইনে আমাদের সংযোগ কাদের সঙ্গে এবং কেন তা প্রদর্শনের উপায় বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। দেখুন (দেখুন অধ্যায় ১.৫.১)

জনমত

জনমত হলো "কোনো বিষয়, সমস্যা ইত্যাদি সম্পর্কে বহু মানুষের সম্মিলিত মত, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দিকনির্দেশনা হতে পারে।"[১] Dichtionary.com. (2016). Public Opinion. Retrieved 03/10, 2016 from http://www.dictionary.com/browse/public-opinion এটি একধরনের প্রচার এবং জনযোগাযোগের মাধ্যমে কার্যকর হয়। প্রকাশ্য মতের (published opinion) সঙ্গে এটি ভিন্ন; প্রকাশ্য মত হলো এমন একটি মত, যা জনসমক্ষে প্রকাশ পায়। বিস্তারিত দেখুন Publicity Online

জনপরিসর

একটি "ভার্চুয়াল বা কাল্পনিক সম্প্রদায়, যার কোনো নির্দিষ্ট স্থানিক অস্তিত্ব নাও থাকতে পারে। আদর্শভাবে, জনপরিসর হলো এমন একটি জায়গা, যেখানে ব্যক্তিরা একত্রিত হয়ে সমাজের প্রয়োজনগুলো রাষ্ট্রের কাছে তুলে ধরে।" বিস্তারিত দেখুন ভেদ নির্ধারণ

ইউজারনেম

সিস্টেমে একজন ব্যক্তি নিজেকে যেভাবে উপস্থাপন করেন, সেই 'ডাকনাম' বা চিহ্ন।

ভার্চুয়াল রিয়ালিটি

ভার্চুয়াল রিয়ালিটি এমন একটি পরিবেশ তৈরি করে, যা বাস্তব বা কল্পিত জগতের শারীরিক উপস্থিতির অনুকরণ করে এবং ব্যবহারকারীকে সেই জগতের সঙ্গে পারস্পরিকভাবে যোগাযোগের সুযোগ দেয়।

ওয়েব ২.০

অনলাইন নেটওয়ার্কের সদস্যদের সম্মিলিত সক্ষমতার পুনঃসংগ্রহ। ওয়েব ২.০ সাইটে ব্যবহারকারীরা নিজেদের তৈরি কনটেন্ট দিয়ে ভার্চুয়াল সম্প্রদায়ে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা করতে পারেন, যা প্রচলিত ওয়েবসাইটের 'প্যাসিভ দর্শক' ভূমিকার বিপরীত। এই অনুবাদটি সরল, প্রাঞ্জল এবং সহজবোধ্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যাতে সবাই বুঝতে পারেন, এবং এটি যান্ত্রিক অনুবাদের মতো না লাগে। যদি আপনি আরও অংশ অনুবাদ করতে চান, জানাতে পারেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Private Sphere, Papacharissi, Chapter 5
  2. Lemke, C., Brenner, W. (2015). Einführung in die Wirtschaftsinformatik, Band 1: Verstehen des digitalen Zeitalters, pp. 11-51. Berlin, Heidelberg: Springer Verlag. Retrieved 03/08, 2016 from http://www.springer.com/cda/content/document/cda_downloaddocument/9783662440643-c1.pdf?SGWID=0-0-45-1486970-p176975505
  3. Lemke, C., Brenner, W. (2015). Einführung in die Wirtschaftsinformatik, Band 1: Verstehen des digitalen Zeitalters, pp. 11-51. Berlin, Heidelberg: Springer Verlag. Retrieved 03/08, 2016 from http://www.springer.com/cda/content/document/cda_downloaddocument/9783662440643-c1.pdf?SGWID=0-0-45-1486970-p176975505
  4. [1] Bush, V. (1945). As We May Think. Atlantic Monthly. Retrieved 02/28, 2016 from http://www.theatlantic.com/magazine/archive/1945/07/as-we-may-think/303881/
  5. [25], Computer History Museum. (2016). Personal Computer. Retrieved 03/08, 2016, from http://www.computerhistory.org/revolution/personal-computers/17/297
  6. Vermesan, O., Friess, P. (2013). Internet of Things: Converging Technologies for Smart Environments and Integrated Ecosystems. Aalborg: River Publishers. Retrieved 03/08, 2016, from http://www.internet-of-things-research.eu/pdf/Converging_Technologies_for_Smart_Environments_and_Integrated_Ecosystems_IERC_Book_Open_Access_2013.pdf
  7. http://www.encyclopedia.com/topic/Public_sphere.aspx#3-1O88:pblcsphrvrssprvtsphrdstnc-full
  8. Tasstudent.com (n.d.) Purpose and Characteristics of Digital Media. Retrieved: 03/02, 2016, from http://www.tasstudent.com/characteristics-of-digital-media/
  9. Bleicher, J.-K.(2010). Internet. Konstanz: UVK Verlagsgesellschaft.
  10. Giddens, A. (1990). The consequences of modernity. Cambridge: Polity Press.
  11. Papacharissi, Z. A., (2013). Private Sphere: Democracy in A Digital Age. Cambridge, Malden, MA: Polity Press.
  12. Bleicher, J.-K.(2010). Internet. Konstanz: UVK Verlagsgesellschaft.
  13. Bleicher, J.-K.(2010). Internet. Konstanz: UVK Verlagsgesellschaft.
  14. Papacharissi, Z. A., (2013). Private Sphere: Democracy in A Digital Age. Cambridge, Malden, MA: Polity Press.
  15. Thompson, J. B. (1995). The media and modernity: A social theory of the media. Cambridge: Polity.
  16. Castells, Fernandez-Ardevol, Linchuan Chiu & Sey 2006
  17. [5] Lasén, A., & Gómez-Cruz, E. (2009). Digital Photography and Picture Sharing: Redefining the Public/Private Divide. Knowledge, Technology & Policy, 22(3), 205-215. http://dx.doi.org/10.1007/s12130-009-9086-8
  18. ১৮.০ ১৮.১ Chua, T.; Juanzi, L.; Moens, M. (2014). Mining user generated content. Chapman and Hall/CRC. p. 7. আইএসবিএন 9781466557406.
  19. ১৯.০ ১৯.১ উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Elsner 2012 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  20. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Chua, Juanzi, Moens 2007 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  21. [9] Harvey, P. (2006). Top Ten Video Sharing Websites. Retrieved from
  22. McNair, B.; Heinrich, A.; Volkmer, I; Firdaus, A.; Graham, T. (2013). “Part 2: Participatory forms of Journalism”, In Peters, C.; Broersma, M. (eds.) Rethinking Journalism, pp. 73-128. Routledge, Oxon. আইএসবিএন 978-0-203-10268-8.
  23. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Lothian, 2009 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  24. ২৪.০ ২৪.১ ২৪.২ উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Sennett 1977 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  25. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Lanier 2010 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  26. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Vovolis,Zamboulakis 2007 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  27. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Schulz 2008 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  28. Banks, Ann (২০০৮-০১-১৪)। " Dirty Tricks, South Carolina and John McCain"The Nation। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-১০ 
  29. ২৯.০ ২৯.১ Rainie, Lee (২০১২-১০-১৯)। "'Social Media and Political Engagement'"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-০৯ 
  30. Bennett, Shea (২০১৪-১২-২৪)। "'The 10 Biggest Social networks Worldwide'"Social Times। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-০৬ 
  31. Barthel, Michael (২০১৫-০৭-১৪)। "'The Evolving Role of News on Twitter and Facebook'"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-১০ 
  32. "'What are the Facebook Group Privacy Settings?'"