বিষয়বস্তুতে চলুন

তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ/অতিবেগুনি রশ্মি

উইকিবই থেকে

তড়িৎচৌম্বকীয় বিকিরণ: ৯। অতিবেগুনি (UV)

১৮০১ সালে জার্মান বিজ্ঞানী জোহান উইলহেল্ম রিটার অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ আবিষ্কার করেন।

অতিবেগুনি বিকিরণের কয়েকটি ধরন রয়েছে:

  • নিকট অতিবেগুনি (Near ultraviolet): ৪০০ থেকে ৩০০ ন্যানোমিটার পর্যন্ত।
  • মধ্য অতিবেগুনি (Middle ultraviolet): ৩০০ থেকে ২০০ ন্যানোমিটার পর্যন্ত।
  • দূর বা চরম অতিবেগুনি (Far or extreme ultraviolet): ২০০ থেকে ১০০ ন্যানোমিটার পর্যন্ত।
  • ভ্যাকুয়াম অতিবেগুনি (Vacuum ultraviolet): এই রশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১৫০ থেকে ২০০ ন্যানোমিটারের নিচে হয়। বাতাস, বিশেষ করে অক্সিজেন, এই রশ্মি খুব সহজেই শোষণ করে, তাই এটি সাধারণত ভ্যাকুয়ামে ব্যবহার করা হয়। তবে এর পরিবর্তে বিশুদ্ধ নাইট্রোজেন গ্যাসও ব্যবহার করা যায়।

মানব ত্বকের ওপর অতিবেগুনি বিকিরণের প্রভাব বোঝাতে সাধারণত UVA, UVB, UVC শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়:

  • UVA (৩২০–৪০০ ন্যানোমিটার): এটি ওজোন স্তর দিয়ে শোষিত হয় না এবং তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিকর।
  • UVB (২৮০–৩২০ ন্যানোমিটার): এটি আংশিকভাবে ওজোন স্তর দ্বারা শোষিত হয়। এটি বেশি ক্ষতিকর, বিশেষ করে যেখানে ওজোন স্তর পাতলা বা ক্ষতিগ্রস্ত।
  • UVC (১০০–২৮০ ন্যানোমিটার): এটি ওজোন ও বায়ুমণ্ডলীয় অক্সিজেন দ্বারা সম্পূর্ণভাবে শোষিত হয়। এটি সবচেয়ে ক্ষতিকর, তবে সাধারণভাবে পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছাতে পারে না।

ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অতিবেগুনি রশ্মি, এক্স-রে ও গামা রশ্মিকে প্রায়ই আয়নায়িতকারী বিকিরণ বলা হয়। কারণ, এই রশ্মিগুলোর ফোটন এত শক্তিশালী হয় যে এগুলো পরমাণু থেকে ইলেকট্রন বের করে দিতে পারে, ফলে পরমাণু আয়নিত হয়। এই ধরণের বিকিরণ জীবের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি কোষের রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং ক্যানসারের মতো রোগের কারণ হতে পারে। এছাড়াও, আলফা ও বিটা কণাকেও আয়নায়িতকারী বিকিরণ হিসেবে ধরা হয়।