বিষয়বস্তুতে চলুন

জাপানের ইতিহাস: পুরাণ থেকে জাতিসত্ত্বা/জোমন যুগ

উইকিবই থেকে

জোমন যুগের একটি সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

[সম্পাদনা]

প্রায় ১৪,০০০ বছর দীর্ঘ এই জোমন যুগ সাধারণত কয়েকটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়: শুরুর (১৬,৫০০–১০,০০০ বছর আগে), প্রাথমিক (১০,০০০–৭,০০০), প্রারম্ভিক (৭,০০০–৫,৪৫০), মধ্য (৫,৪৫০–৪,৪২০), শেষ (৪,৪২০–৩,২২০) এবং চূড়ান্ত (৩,২২০–২,৩৫০)। প্রতিটি ধাপ আগের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ছোট ছিল। প্রত্নতত্ত্ববিদরা পুরো সময়কালকেই "জোমন" নামে ডাকলেও এতে যেন কেউ মনে না করেন যে এই সময়ে অঞ্চলভেদে বা সময়ভেদে কোনো বৈচিত্র্য ছিল না। প্রকৃতপক্ষে জোমন যুগের শুরুর দিকের মৃৎপাত্র এবং মধ্য জোমন যুগের বিখ্যাত মৃৎপাত্রের মধ্যে সময়ের ব্যবধান এতটাই বড়, যা গিজার মহা পিরামিড নির্মাণ এবং একবিংশ শতাব্দীর মধ্যকার ব্যবধানের দ্বিগুণেরও বেশি।

বিপুল বরফযুগের অন্তর্গত প্লেইস্টোসিন কালের শেষভাগে জাপানে আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্স বসবাস করত। সে সময়ে জাপান একাধিকবার মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল দক্ষিণ কোরিয়া এবং সাইবেরিয়ার দিক দিয়ে। প্রাণী, উদ্ভিদ ও মানুষের আবাস সেই সময়ে জাপানের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মতোই ছিল। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বর্তমান যুগের তুলনায় অনেক নিচু ছিল (শত শত ফুট নিচে) ফলে ধারণা করা হয় যে এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানবজাতির দেহাবশেষ এখন গভীর পানির নিচে রয়ে গেছে।

যখন দ্বীপপুঞ্জ চূড়ান্তভাবে এশিয়া মহাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তখন পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যে বড় পরিবর্তন ঘটে। বৃহদাকার প্রাণীরা (হাতি, বাঘ, বিশাল হরিণ) নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় উদ্ভিদ জগতের গঠনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ দ্রুত বেড়ে যায়। দ্বীপে আটকে পড়া মানুষদের জীবনের ধরণ পরিবর্তন করতে হয়। এমন রূপান্তর পৃথিবীর প্রায় সব উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে ঘটেছে। ইউরোপে এই পরিবর্তনকে প্রায়ই প্যালিওলিথিক যুগ থেকে মেসোলিথিক যুগে রূপান্তর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অর্থাৎ খোলা মাঠে পাল নিয়ে ঘুরে বেড়ানো বড় পশু শিকারের জীবন থেকে গা ঘন জঙ্গলে বিচ্ছিন্নভাবে থাকা ছোট প্রাণী শিকারের জীবনে রূপান্তর। জাপানে এ পরিবর্তন হলো জোমন যুগে উত্তরণ। ইউরোপে ব্যবহৃত "মেসোলিথিক" শব্দটি এখানে ব্যবহৃত হয় না কারণ ইউরোপে যেসব বিশেষ ধরনের পাথরের সরঞ্জামের সঙ্গে এই নাম যুক্ত সেগুলো জাপানে দেখা যায় না। "জোমন" শব্দটি এসেছে ইংরেজি "cord marked" শব্দের অনুবাদ থেকে। এই নামটি প্রথম একজন মার্কিন আবিষ্কারক জোমন মৃৎপাত্রের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে ব্যবহার করেন।

জোমন সংস্কৃতি

[সম্পাদনা]
প্রারম্ভিক জোমন যুগের মৃৎপাত্র।

জোমন সংস্কৃতি অনেক পুরনো। বর্তমানে যেসব রেডিওকার্বন তারিখ পাওয়া গেছে, তার মধ্যে প্রাচীনতমটি প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ১০,০০০ সালের। এমনকি আরও পুরনো কিন্তু এখনো তারিখ নির্ধারণ না হওয়া স্থানও আছে। ১৯৫০-এর দশকে যখন এই বিষয়টি জানা যায়, তখন বড়সড় উত্তেজনার সৃষ্টি হয় কারণ এমনকি প্রাচীনতম জোমন স্থানগুলোতেও মৃৎপাত্রের ব্যবহার দেখা গেছে। এই আবিষ্কারগুলো পৃথিবীতে প্রাপ্ত প্রাচীনতম মৃৎপাত্র হিসেবেই স্বীকৃত। শুরুতে যেসব নিদর্শন পাওয়া যায় তা তুলনামূলকভাবে পরের ধাপের (খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ সালের) যখন জোমন জনগণ গ্রামে বসবাস করত এবং শিল্পমূল্যসম্পন্ন মৃৎপাত্রের পাশাপাশি দৈনন্দিন ব্যবহারের পাত্র তৈরি করত। ফলে তখনকার পাথরের সরঞ্জাম এবং মৃৎপাত্র দেখে জোমন সংস্কৃতিকে "নিওলিথিক" বলা হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে "নিওলিথিক" শব্দটি সাধারণত কৃষিভিত্তিক সমাজকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। অথচ জোমন জনগণ কৃষিকাজ করত না। তারা সেই অল্প সংখ্যক পূর্ব-কৃষিভিত্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে যারা এতটাই সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক পরিবেশে বাস করত যে চাষাবাদ ছাড়াও তারা স্থায়ীভাবে গ্রামে বসবাস করতে পারত। এজন্য জাপানি প্রত্নতত্ত্ববিদেরা "নিওলিথিক" শব্দটি ব্যবহার না করে "জোমন" শব্দটাই ব্যবহার করে থাকেন।

জোমন সংস্কৃতি দীর্ঘ সময় ধরে জাপানি দ্বীপপুঞ্জে একঘরে হয়ে টিকে ছিল। ইংরেজি ভাষার বইগুলোতে সাধারণত বলা হয় জোমনের পরবর্তী ইয়ায়োই সংস্কৃতিতে রূপান্তর হয় খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ বা ৩০০ সালের দিকে। কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে বর্তমান গবেষণা অনুযায়ী এটি খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ বা ৯০০ সালের ঘটনা (পরবর্তী অংশে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে)। তবে জোমন সংস্কৃতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এটি তেমন বড় পরিবর্তন নয়। কারণ এটি ছিল প্রায় ১০,০০০ বছর স্থায়ী একটি সংস্কৃতি। এই সময়ে জাপানের পরিবেশ বারবার পরিবর্তিত হয়েছে এবং জোমন জনগণ প্রতিটি পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। প্রতিটি সময়ে দেশের কেবল একটি সীমিত অঞ্চলই গ্রামভিত্তিক ঘনবসতি গড়ে তুলতে উপযুক্ত ছিল এবং সময়ভেদে সেই অঞ্চলগুলো পরিবর্তিত হয়েছে। জোমনের এত দীর্ঘ স্থায়িত্ব প্রমাণ করে যে, জাপানে কৃষির স্বতন্ত্র বিকাশের জন্য পরিবেশ খুব একটা সহায়ক ছিল না। বনভূমি ছিল ঘন এবং এমন কোনো দেশীয় খাদ্যশস্য ছিল না যেগুলোর বিপ্লব ঘটাতে পারত। পুরো জোমন যুগ জুড়েই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদজাত খাদ্য ছিল বন থেকে সংগৃহীত বাদাম।

জোমন যুগের সবচেয়ে সমৃদ্ধ পর্যায় ছিল "মধ্য জোমন" আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে। তখন মোট জনসংখ্যা প্রায় ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ জন হিসেবে অনুমান করা হয়েছে (গৃহস্থালির নিদর্শন গণনার ভিত্তিতে)। এদের অধিকাংশই ছিল পূর্ব জাপানে বিশেষ করে আধুনিক টোকিও এবং পাশের পার্বত্য এলাকায়। এই অঞ্চলগুলোয় শিকার প্রচণ্ড সফল ছিল বিশেষ করে জাপানি "শিকা" হরিণ ও বন্য শুকরের। এই সময়ে ঝিনুকের ঢিবি ব্যাপকভাবে দেখা যায়। যা প্রমাণ করে যে মাছ ধরা, এমনকি গভীর সমুদ্রেও মাছ ধরা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।

জোমন যুগের শেষাংশ

[সম্পাদনা]

খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ সালের পর জলবায়ু অনেক পরিবর্তিত হয় (তাপমাত্রা কমে যায়)। এর ফলে বনভূমির গঠনে পরিবর্তন আসে এবং মধ্য জোমন যুগের অবসান ঘটে। জনসংখ্যা হঠাৎ কমে যায় এবং তারা নতুন নতুন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের বাদামের উপর নির্ভরতা দেখা যায়। কিছু বাদাম ছিল সরাসরি খাওয়ার উপযোগী, আবার কিছু বাদামের মধ্যে ট্যানিন থাকায় তা খাওয়ার আগে প্রক্রিয়াজাত করতে হতো। এই বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে জনসংখ্যার ঘনত্বে বড় প্রভাব ফেলেছে। পূর্বাঞ্চলে সহজে খাওয়া যায় এমন অ্যাকর্নের পরিবর্তে কঠিন প্রক্রিয়ার ঘোড়া-চেস্টনাটে রূপান্তর ঘটে। টোকিওর উত্তর-পূর্বে উপকূলীয় একটি অঞ্চলে একটি সংস্কৃতি গড়ে ওঠে যেটি স্পষ্টত মধ্য জোমনের ঐতিহ্য বহন করত। এই সংস্কৃতিই জোমনের সবচেয়ে চমকপ্রদ শিল্পকর্ম "কামেগাওকা শৈলী"র মৃৎপাত্র ও অন্যান্য শিল্পের উৎস যা আজও জাদুঘরে ব্যাপক জনপ্রিয়। অন্যদিকে কিউশু অঞ্চলে একটি ভিন্নধরনের সংস্কৃতি গড়ে ওঠে যাদের মৃৎপাত্র ছিল সাধারণ ও কালো। এই সংস্কৃতিটি অনেক গবেষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, কারণ এখানে প্রাথমিক কৃষির লক্ষণ দেখা যায়। যদিও তাদের প্রধান উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাদ্য তখনও ছিল বনে সংগৃহীত বুনো বাদাম। এই সময়ে মোট জনসংখ্যা ছিল খুবই কম। কিউশুর জন্য জনসংখ্যা ৫,০০০ বা ৬,০০০ জন হিসেবে এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হয়তো তার দ্বিগুণ জনসংখ্যা হিসেবে ধারণা করা হয়েছে। কিউশুর অনেক অঞ্চল আগ্নেয়গিরির পাথরে আবৃত হওয়ায় সেখানে ঘন বনভূমি গড়ে ওঠেনি। এজন্যই এই অঞ্চলে জনসংখ্যার ঘনত্ব কম ছিল।

জোমন থেকে ইয়ায়োই সংস্কৃতিতে রূপান্তর

[সম্পাদনা]

জোমন থেকে ইয়ায়োই সংস্কৃতিতে পরিবর্তন উত্তর কিউশুতে ঘটেছিল। ইয়ায়োই সংস্কৃতি (যার নাম রাখা হয়েছে টোকিওর একটি পাড়ার নামে যেখানে প্রথম এই সংস্কৃতির নিদর্শন পাওয়া যায়) ছিল ধান চাষ নির্ভর একটি সমাজ যারা ইতোমধ্যেই পরিপক্ব সেচপ্রযুক্তি ব্যবহার করত। এই যুগের শেষদিকে তারা ব্রোঞ্জের বস্তু নির্মাণ করত যেগুলোর গুণমান এতটাই ভালো ছিল যে কোনটি জাপানে আর কোনটি চীনে তৈরি তা নিয়ে বিতর্ক সম্ভব। পাশাপাশি তারা লোহার অস্ত্র ও সরঞ্জামও তৈরি করত। এই প্রসঙ্গে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো জোমন মানুষরা কি কোরিয়া থেকে এসব নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ করে ধীরে ধীরে ইয়ায়োই রূপে রূপান্তরিত হয়েছিল নাকি ইয়ায়োইরা ছিল অভিবাসী? আমি এই বিতর্কের বিভিন্ন দিক আলোচনা করব তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায় ইয়ায়োইরা ছিল অভিবাসী। কিউশুতে জোমন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। আর ইয়ায়োইদের শুরু থেকেই ছিল তুলনামূলকভাবে বড় জনসংখ্যা। প্রমাণ রয়েছে যে, ইয়ায়োইদের চর্চাগুলো দ্রুত পূর্বদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। এর বিস্তার হয়েছিল বর্তমান নাগোয়া পর্যন্ত যেখানে কিছুদিন স্থবিরতা দেখা যায়। এরপর সেখান থেকে উত্তর-পূর্বে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মূলত জোমন মানুষদের নতুন জীবনধারায় রূপান্তর ঘটিয়েই এই বিস্তার হয়। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রাপ্ত প্রাথমিক ইয়ায়োই মাটির পাত্রগুলোতে এমন অলংকরণ দেখা যায় যেগুলো কেবল জোমন সংস্কৃতিতেই প্রচলিত ছিল এবং পশ্চিমাঞ্চলে একেবারেই অজানা।

এই প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি বিস্তৃত সংস্কৃতি ছিল যাকে "মুমুন" বলা হয়। এর নামকরণ হয়েছে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ মাটির পাত্রের নামে। এই সংস্কৃতি ইয়ায়োই সংস্কৃতির সঙ্গে এতটাই মিল রাখে যে, প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের আলাদা করা কঠিন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়া প্রত্নতত্ত্বে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে পারায় মুমুন সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য জানা গেছে। এখন মোটামুটি নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে ইয়ায়োইদের আগমন মূলত মুমুন কোরিয়া থেকে মানুষের অভিবাসনের ফল। আগে ধারণা করা হতো যে মুমুন এবং ইয়ায়োই প্রায় সমসাময়িক এবং দুটিই হয়তো চীনের উপকূল থেকে একসঙ্গে এসেছে (যদিও কেউই নির্দিষ্টভাবে বলতে পারেননি কোথা থেকে)। তবে এখন জানা গেছে যে মুমুন ইয়ায়োইর চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রাচীন।

আরও পাঠের জন্য

[সম্পাদনা]

উপরের আলোচনা জোমন সংস্কৃতির পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা বা এর বিভিন্ন পর্যায়ের বিবরণ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়। ইংরেজি ভাষায় একটি ভালো এবং খুব বেশি বড় নয় এমন বই পড়ার জন্য নিম্নোক্তটি সুপারিশ করা যায়:

ইমামুরা কেজি ১৯৯৬, প্রি-হিস্টোরিক জাপান: নিউ পার্সপেক্টিভস অন ইনসুলার ইস্ট এশিয়া (হোনোলুলু: ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই প্রেস)

এই বইয়ে ইয়ায়োই এবং পরবর্তী কোফুন যুগের সূচনাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে এটি লেখা হয়েছিল উপরে উল্লিখিত সাম্প্রতিক তারিখ নির্ধারণ পদ্ধতির বিপ্লবের আগে। এজন্য আপনাকে ইয়ায়োই অধ্যায়েই সেই তথ্য খুঁজে পেতে হবে।


জাপানের ইতিহাস

ভূমিকা
Prehistory through the Jomon Period – The Yayoi Period – The Kofun or Yamato Period – The Asuka Period – The Nara Period – The Spread of Buddhism in Japan – The Early Heian Period – The Middle Heian Period – The Late Heian Period – The Kamakura Period – The Kemmu Restoration – The Nanboku-chō Period – The Muromachi Period (Ashikaga) – The Warring States Period – The Azuchi–Momoyama Period – The Edo Period – The Meiji Restoration – The Meiji Period – The Taisho Period – The Rise of Militarism – World War II – The American Occupation of Japan – Post-War Japan – Japan Today
আরও পড়ুন