চিন্তন ও নির্দেশনা/এনকোডিং ও পুনরুদ্ধার
এই অধ্যায়ে এনকোডিং ও রিট্রিভালের (পুনরুদ্ধার) মতো জ্ঞানীয় প্রক্রিয়াগুলোর ভূমিকা এবং শিক্ষায় এগুলোর প্রভাব আলোচনা করা হবে। এনকোডিং বলতে বোঝানো হয় কর্মক্ষম স্মৃতিতে থাকা তথ্যকে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া। রিট্রিভাল হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত তথ্যকে পুনরুদ্ধার করে সচেতন চিন্তায় বা কর্মক্ষম স্মৃতিতে নিয়ে আসে।[১] এই দুটি জ্ঞানীয় প্রক্রিয়ার কার্যপ্রণালি, সাধারণ উদাহরণ এবং বিভিন্ন উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপটে তথ্য এনকোড, সংরক্ষণ ও রিট্রিভ করার কার্যকর কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এনকোডিং প্রক্রিয়া
[সম্পাদনা]আমরা এনকোডিংয়ের দুটি মূল দিক নিয়ে আলোচনা করব। প্রথমত, তথ্য কীভাবে স্মৃতিতে রূপান্তরিত হয় তা বিশ্লেষণ করব এবং দ্বিতীয়ত, এই প্রক্রিয়াকে সহজতর করার জন্য যেসব কৌশল ব্যবহার করা যায় সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব। আমরা যে তথ্য শিখতে চেষ্টা করি তার একটি অংশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনকোড হয়; বাকি অংশকে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে স্থানান্তরের জন্য সচেতন প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আমরা কীভাবে তথ্য মনে রাখি এবং স্মৃতি থেকে পুনরায় মনে করি, তা মূলত নির্ভর করে সেই তথ্য কীভাবে প্রাথমিকভাবে এনকোড করা হয়েছিল তার উপর।

তথ্য ডিকোড করার আগে সেটিকে আমাদের দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে স্থানান্তর করতে হয়, যেটিকে এনকোডিং বলা হয় [১]। শিক্ষার্থীরা শিখতে থাকা তথ্য সফলভাবে এনকোড করার জন্য বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করতে পারে। সহজ তথ্য এনকোড করার জন্য তিনটি স্বতন্ত্র কৌশল ব্যবহার করা যেতে পারে। এলাবোরেটিভ রিহার্সাল, যার সংজ্ঞা হলো “যেকোনো ধরনের রিহার্সাল যেখানে মনে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যকে অন্যান্য তথ্যের সাথে সম্পর্কিত করা হয়”, এটি মেইনটেইনেন্স রিহার্সাল-এর চেয়ে গভীর এনকোডিং কৌশল, যেখানে কেবল তথ্যের পুনরাবৃত্তি করা হয় [১]। মেডিয়েশন বা মধ্যস্থতা হলো একটি সহজ এলাবোরেটিভ এনকোডিং কৌশল, যেখানে কঠিন তথ্যকে কোনো অর্থবহ জিনিসের সাথে সম্পর্কিত করা হয় [১]। আরেকটি বহুল ব্যবহৃত কৌশল হলো নিমোনিক্স, যেখানে নতুন তথ্যকে পূর্বে শেখা তথ্যের সাথে জোড়া লাগানো হয়। এতে নতুন তথ্যের একটি অর্থ তৈরি হয় এবং তা মনে রাখা সহজ হয় [১]। বেশি জটিল তথ্য এনকোড করার জন্য আরও কিছু কৌশল যেমন পূর্বজ্ঞান সক্রিয় করা, KWL এবং ধারণা মানচিত্র ব্যবহার করা হয়, কারণ এগুলোর মাধ্যমে আরও গভীর অর্থবোধ তৈরি হয় এবং ব্যক্তিগত বোঝাপড়ার সাথে সংযোগ গড়ে ওঠে [১]।
সহজ তথ্য এনকোডিং
[সম্পাদনা]আমরা যেসব তথ্য শিখতে চেষ্টা করি তার জটিলতা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, তথ্যের জটিলতা নির্ধারণ করে একজন ব্যক্তি কীভাবে তা শিখবে। কিছু তথ্য খুব সহজ (যেমন, 'সান্দ্রা ১০ বছর বয়সী'), আবার কিছু তথ্য অনেক বেশি জটিল এবং তা পুরোপুরি বোঝার জন্য বিশ্লেষণমূলক চিন্তা প্রয়োজন (যেমন, রাজনৈতিক ঘটনার উপর একটি সংবাদ প্রতিবেদন)। ভিন্ন ধরনের তথ্য শেখার জন্য ভিন্ন কৌশল দরকার হয়, তাই শিক্ষার্থীর জন্য সঠিক কৌশল বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই অংশে আমরা সহজ তথ্য মনে রাখার জন্য ব্যবহৃত কৌশলগুলো আলোচনা করব।
রিহার্সাল
[সম্পাদনা]সহজ তথ্য এনকোড করার প্রথম কৌশল হলো রিহার্সাল বা মহড়া। একটি উদাহরণ হতে পারে পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করা কোনো শিক্ষার্থীর প্রক্রিয়া। আমরা রিহার্সালের দুটি ধরণ নিয়ে আলোচনা করব: মেইনটেইনেন্স রিহার্সাল বা রক্ষণাবেক্ষণ মহড়া এবং এলাবোরেটিভ রিহার্সাল বা বিস্তারিত মহড়া। মেইনটেইনেন্স রিহার্সাল একটি অগভীর প্রক্রিয়া এবং সাধারণত সহজ কাজের জন্য উপযোগী, যেমন ফোন নম্বর মনে রাখা।[১] মেইনটেইনেন্স রিহার্সাল এ কোনো তথ্যের উপর বারবার মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে তা স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিতে ধরে রাখা হয়। কিন্তু, যদি এই পুনরাবৃত্তি ব্যাহত হয়, তাহলে তথ্য সহজেই ভুলে যাওয়া যায়, তাই এটি দীর্ঘমেয়াদী মনে রাখার জন্য কার্যকর নয়। তুলনামূলকভাবে জটিল তথ্য বা ভবিষ্যতে তথ্য মনে রাখার জন্য এলাবোরেটিভ রিহার্সাল বেশি কার্যকর। এটি নতুন তথ্যকে পূর্বের জ্ঞান বা অভিজ্ঞতার সাথে সম্পর্কিত করে। যখন শিক্ষার্থীরা নতুন তথ্যকে পূর্বের অভিজ্ঞতার সাথে সংযুক্ত করে, তখন তারা তথ্য বেশি দিন মনে রাখতে এবং ভবিষ্যতে তা সহজে পুনরুদ্ধার করতে পারে [১]। গবেষণায় দেখা গেছে যে elaborative এনকোডিং ব্যবহার করে দীর্ঘমেয়াদী তথ্য সংরক্ষণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে [১]।
নিমোনিক্স
[সম্পাদনা]
নিমোনিক্স বা স্মৃতিবিদ্যা হলো অপরিচিত ধারণা শেখার জন্য ব্যবহৃত কৌশল। এগুলো অপরিচিত তথ্য এনকোড করার সম্ভাবনা বাড়ায়। নিমোনিক্সে অপরিচিত ধারণাকে পরিচিত ধারণার সাথে জুড়ে দেওয়া হয়, যাতে তা মনে রাখা সহজ হয়। এটি তথ্যকে সহজবোধ্য বা অর্থবহ রূপে রূপান্তর করে।[২] বার্নিং ও তার সহকর্মীরা নিমোনিক্সকে এমন কৌশল হিসেবে বর্ণনা করেছেন যা নতুন তথ্যের অধিক বিস্তৃত কোডিং তৈরি করে এবং শক্তিশালী স্মৃতি তৈরি করে [১]। নিমোনিক্সে সাধারণত গল্প, ছড়া ও গান ব্যবহার করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সত্যজিৎ রায়ের লেখা ফেলুদা গল্প ঘুর্ঘুটিয়ার ঘটনা গল্পে সেই গল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্লু একটি পাসওয়ার্ড ৩৯০৩৯১২০ বা 39039120 মনে রাখতে "ত্রিনয়ন, ও ত্রিনয়ন, একটু জিরো" ব্যবহার করা হয়েছিল।
গবেষণায় দেখা যায় যে নিমোনিক্স ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। তবুও অনেক তাত্ত্বিক এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। একটি সাধারণ সমালোচনা হলো, এটি মুখস্তবিদ্যার উপর জোর দেয় এবং উচ্চস্তরের দক্ষতা যেমন অনুধাবন বা স্থানান্তর শেখায় না।[২] নিমোনিক্স শুধুমাত্র তথ্য মনে রাখার জন্য তৈরি, তাই উচ্চতর শিক্ষায় এগুলোর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা অনর্থক হতে পারে। নিমোনিক্স মূলত মৌলিক তথ্য শেখায়, যা উচ্চতর চিন্তাভাবনায় সহায়তা করে। অনেকেই যুক্তি দেন, নিমোনিক্স আসলে দীর্ঘমেয়াদী শেখায়ও সহায়ক। যেমন, অনেকেই জীবনের বেশিরভাগ সময় ধরে রঙের ক্রম মনে রাখতে ROYGBIV ব্যবহার করেন। কার্নি ও লেভিন একটি গবেষণায় দেখান যে যারা নিমোনিক্স ব্যবহার করেছেন, তারা বিভিন্ন পরীক্ষায় তাদের নিজস্ব কৌশল ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো ফল করেছেন।[২] নিমোনিক্স শিক্ষার্থীদের শেখায় আরও উৎসাহিত করতে পারে। এক গবেষণায় শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, রিভিউ শিটে অ্যাক্রোনিম থাকলে তাদের মনে রাখা সহজ হয় এবং তারা আগেভাগেই পড়া শুরু করে। অন্য গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের মতে কিছু নিমোনিক্স মুখস্থ রিহার্সালের তুলনায় সহজ, দ্রুত, আরও উপভোগ্য এবং কার্যকরী। এছাড়াও, এগুলো পরীক্ষার উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে [২]। মুখস্থ শেখার বাইরে দীর্ঘমেয়াদী শিক্ষায় এগুলোর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, এর কিছু স্পষ্ট উপকারিতা রয়েছে।
সমালোচনার পরেও, সঠিকভাবে ব্যবহার করলে নিমোনিক্স উপকারী হতে পারে। জটিল তথ্য মনে রাখতে এগুলো কার্যকর, তবে এগুলোর ওপর একমাত্র ভরসা করা উচিত নয়। এগুলোকে প্রাথমিক শেখার কৌশলের বিকল্প হিসেবে নয় বরং সম্পূরক হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। অনেক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে নিমোনিক্স ব্যবহার করে তথ্য মনে রাখার ক্ষমতা দ্বিগুণ বা ত্রিগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং শেখার প্রক্রিয়া আরও আনন্দদায়ক ও সহজ হয় [২]। তথ্য মনে রাখার জন্য নির্দিষ্ট এনকোডিং কৌশল শেখার দক্ষতা এবং অনুধাবনের সফলতাও বাড়াতে পারে। এই অংশে বর্ণিত নিমোনিক্স কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে কিওয়ার্ড মেথড, অ্যাক্রোনিম এবং অ্যাক্রোস্টিকস।
কিওয়ার্ড মেথড
[সম্পাদনা]সবচেয়ে জনপ্রিয় নিমোনিক্স কৌশল সম্ভবত কিওয়ার্ড মেথড। এটি বিশেষ করে বিদেশি ভাষার শব্দ মনে রাখার ক্ষেত্রে খুব কার্যকর। এই কৌশলে শেখার জন্য একটি শব্দের সাথে মিল রেখে একটি পরিচিত শব্দ নির্বাচন করা হয় এবং এর সাথে একটি দৃশ্য বা বাক্য তৈরি করে শেখা হয়। এই পদ্ধতিতে শেখার শব্দটির সঙ্গে ধ্বনিগতভাবে মিলে যাওয়া মাতৃভাষার একটি শব্দ ব্যবহার করা হয়। এরপর সে শব্দটির সঙ্গে শেখার শব্দের অর্থ মিলিয়ে একটি বাক্য বা দৃশ্য তৈরি করা হয় [৩]। উদাহরণস্বরূপ, স্প্যানিশ শব্দ “carta” শেখার জন্য ইংরেজি শব্দ “cart” ব্যবহার করে শেখার প্রক্রিয়া তৈরি করা যায়। কিছু সমালোচনার মতে, কিওয়ার্ড পদ্ধতি তখন সমস্যাজনক হয় যখন শব্দটির জন্য স্পষ্ট কোনো কিওয়ার্ড খুঁজে পাওয়া যায় না [২]। অন্যদিকে, এক গবেষণায় দেখা গেছে মাত্র দুই বা তিন ঘণ্টার keyword method প্রশিক্ষণে জার্মান শব্দ মনে রাখার হার ৭০% পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়, যা এর কার্যকারিতা প্রমাণ করে [২]। উদাহরণস্বরূপ, সত্যজিৎ রায়ের লেখা ফেলুদা সিরিজের একই গল্পে উল্লেখ আছে, ইংরেজরা হিন্দুস্তানি বলার ক্ষেত্রে সামাঞ্জস্যপূর্ণ ইংরেজি বাক্য ব্যহার করতো। যেমন: চাকরকে "দরওয়াজা বন্ধ কর।" বলার বদলে তারা দ্রুত গতিতে "There was a brown crow." বলতো।
অ্যাক্রোনিম
[সম্পাদনা]আদ্যাক্ষরের সংক্ষিপ্ত রূপ বা Acronyms হলো এমন একটি জনপ্রিয় নিমোনিক্স কৌশল যেখানে শব্দগুচ্ছের প্রথম অক্ষরগুলো নিয়ে একটি নতুন শব্দ তৈরি করা হয়। অনেক শিক্ষার্থী নিজের অজান্তেই এই কৌশলটি ব্যবহার করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, গাণিতিক ক্রম মনে রাখতে BEDMAS এবং ৭ রং মনে রাখতে বাংলায় বেনিআসহকলা ও ইংরেজিতে ROYGBIV ব্যবহৃত হয়। আপনি যদি কখনো এমন শব্দ ব্যবহার করে মনে রাখার চেষ্টা করে থাকেন, তাহলে আপনি মূলত একটি নিমোনিক্স কৌশল ব্যবহার করেছেন। অ্যাক্রোনিমের প্রতিটি অক্ষর লক্ষ্য শব্দের একটি রিকল সংকেত হিসেবে কাজ করে।
অ্যাক্রোস্টিকস
[সম্পাদনা]অ্যাক্রোস্টিকস অনেকটা অ্যাক্রোনিমের মতো। তবে এতে একটি বাক্য বা বাক্যাংশ তৈরি করা হয় যাতে প্রতিটি শব্দের প্রথম অক্ষর লক্ষ্য শব্দের অক্ষরগুলোর সাথে মেলে। একটি পরিচিত উদাহরণ হলো “every good boy deserves fudge”, যা ট্রেবল ক্লেফের লাইনগুলো (E, G, B, D, F) মনে রাখতে সাহায্য করে। এই অধ্যায়ে ব্যবহৃত মূল শব্দগুলো দিয়ে তৈরি একটি অ্যাক্রোস্টিকস নিচের চিত্রে দেখানো হয়েছে।

হাইলাইটিং
[সম্পাদনা]
টেক্সটে হাইলাইট করা হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বাধিক প্রচলিত অধ্যয়ন কৌশলগুলোর একটি। হাইলাইটিং বলতে বোঝানো হয়, একটি লেখার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নির্বাচন করে তা চিহ্নিত করা, যেন ভবিষ্যতে পুনরায় পড়ার সময় তা সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। সাধারণভাবে, শিক্ষার্থীরা এটি এমন একটি শেখার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে, যা পরবর্তীতে পাঠ পুনরায় পড়ার সময় কাজে আসে।[৪] হাইলাইটিং করার জন্য পাঁচটি সহজ ধাপ হলো: (১) লেখাটির সাধারণ বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা নেওয়া, (২) প্রতিটি অনুচ্ছেদ ধীরে ও মনোযোগ সহকারে পড়া, (৩) মূল বিষয়গুলো চিহ্নিত করা এবং হাইলাইট করা, (৪) খুঁজে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী লেখার ওপর নিজের বোঝাপড়া পুনর্বিন্যাস করা, এবং (৫) এই তথ্য মেমোরিতে ধারণ করা।[৫] সঠিকভাবে হাইলাইট করা শিখতে হলে উচ্চ মাত্রার পাঠ্যবোধ, সমস্যা সমাধানের কৌশল এবং সমালোচনামূলক চিন্তার প্রয়োজন হয়। শিক্ষার্থীদের শিখতে হবে কীভাবে তারা কোন বিষয়বস্তু গুরুত্বপূর্ণ, প্রাসঙ্গিক এবং উপযুক্ত তা শনাক্ত করবে। হাইলাইটিং প্রক্রিয়াটি শিক্ষার্থীদের জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জিং হওয়া উচিত, কারণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার মধ্য দিয়ে টেক্সটের অর্থ গভীরভাবে অনুধাবন করা যায়।[৪]
হাইলাইটিং এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে পাঠ্যাংশকে অর্থপূর্ণভাবে বিশ্লেষণ করা হয়—যার মধ্যে পড়া, পূর্ববর্তী জ্ঞান সক্রিয় করা, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নির্বাচন করা, আগের পাঠের সঙ্গে এই তথ্যের সংযোগ তৈরি করা, এবং পাঠ্যের অর্থপূর্ণ একটি রূপ গঠন করাও অন্তর্ভুক্ত।[৫] এই প্রতিটি ধাপ এনকোডিং প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে এবং এই তথ্য কাজের স্মৃতিতে আরও গভীরভাবে প্রক্রিয়াজাত হয়। বাক্যাংশ বা নির্দিষ্ট শব্দ চিহ্নিত করাও শিক্ষার্থীদের মনোযোগ গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ওপর কেন্দ্রীভূত রাখে। হাইলাইটিং কেন শিক্ষণকে সহায়তা করতে পারে সে সম্পর্কে বিভিন্ন তত্ত্ব রয়েছে। পাঠ্যাংশে কোন কোন অংশ চিহ্নিত করা হবে তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় যে মানসিক প্রক্রিয়া ঘটে, তা শিক্ষার্থীদেরকে বিষয়বস্তুর ওপর আরও গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য করে, যার ফলে শুধু পড়ার তুলনায় তথ্যের গভীর অর্থবোধ তৈরি হয়।[৪] যখন শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে বেছে নেয় কোন অংশ হাইলাইট করবে এবং কোন অর্থগুলো গুরুত্বপূর্ণ, তখন তাদের পাঠ্য পাঠ এবং পুনরায় পাঠের ধরণও বদলে যায়—এতে করে তথ্য আরও গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণযোগ্য হয়ে ওঠে।[৪]
যদিও হাইলাইটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত মানসিক প্রক্রিয়াগুলো কেন কার্যকর হতে পারে তা নিয়ে অনেক মতবাদ রয়েছে, তবুও কিছু গবেষণায় হাইলাইটিংয়ের ইতিবাচক ফলাফল দেখা গেছে, আবার কিছু গবেষণায় দেখা যায়নি।[৪] এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা হাইলাইটকৃত তথ্য পড়েছে, তারা যারা সাধারণ লেখা পড়েছে তাদের তুলনায় তথ্য আরও ভালোভাবে মনে রাখতে পেরেছে।[৪] অন্যদিকে, যারা হাইলাইটিংয়ের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান, তারা বলে থাকেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী সঠিকভাবে হাইলাইট করতে জানে না, ফলে এর উপকারিতা কমে যায়। শিক্ষার্থীরা যদি যথেষ্ট মনোযোগ না দেয়, তাহলে তারা এমন তথ্য হাইলাইট করতে পারে যা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।[৫] এতে করে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আসল তথ্য থেকে সরে যায় এবং এটি একপ্রকার বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, যা মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয় এবং গভীর অনুধাবন বাধাগ্রস্ত করে।[৪] আরেকটি মত হলো, হাইলাইটিং একটি প্লেসেবো ইফেক্ট সৃষ্টি করে।[৪] অর্থাৎ, শিক্ষার্থীরা মনে করে হাইলাইটার কার্যকর, শুধুমাত্র কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে তা ব্যবহার করছে। এই বিশ্বাস উল্টো ফল দিতে পারে যখন শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে এবং প্রক্রিয়াটি নিয়ে তেমন ভাবনাচিন্তা না করে। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী শিক্ষার্থীরা মনে করতে পারে তারা বিষয়বস্তু আগে থেকেই জানে এবং ফলে তারা তা দ্রুত পড়ে যায় এবং গভীরভাবে প্রক্রিয়া করে না।[৪]
জটিল তথ্য এনকোডিং
[সম্পাদনা]ক্রেইক এবং লকহার্টের জনপ্রিয় গভীর প্রক্রিয়াজাতকরণের স্তরের তত্ত্ব অনুযায়ী, কোনো তথ্য কতটা মানসিকভাবে প্রক্রিয়াকৃত হয়েছে তা তার স্মরণযোগ্যতার উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।[৬] তাঁদের তত্ত্বে বলা হয়েছে, স্মৃতির ছাপ হচ্ছে সেইসব বিশ্লেষণের রেকর্ড যা গ্রহণ এবং অনুধাবনের উদ্দেশ্যে সম্পাদিত হয়, এবং গভীর অর্থবোধক প্রক্রিয়াকরণ অধিক টেকসই স্মৃতিচিহ্ন তৈরি করে।[৭] সেমান্টিক এনকোডিং বলতে বোঝায় কোনো ধারণার অর্থভিত্তিক এনকোডিং, যা গভীরতর বোঝাপড়া এবং আরও সফলভাবে তথ্য সংরক্ষণের পথ তৈরি করে। সাধারণত, যেসব তথ্য অর্থভিত্তিক প্রক্রিয়াকরণে সংরক্ষিত হয়, তা পরবর্তীতে স্মৃতিচর্চায় বেশি ভালোভাবে মনে রাখা যায়, তুলনামূলকভাবে পৃষ্ঠতল প্রক্রিয়াকরণে সংরক্ষিত তথ্যের চেয়ে।[৬] যদি নতুন তথ্যের অর্থ বা ধারণাটি প্রক্রিয়াকরণের মূল ফোকাস হয়, তাহলে সেই তথ্য অর্থভিত্তিক স্মৃতিকোডে সংরক্ষিত হয় এবং তা স্মরণযোগ্য হয়। তবে, যদি কেবল তথ্যের পৃষ্ঠতলের দিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে তথ্যটি গভীরভাবে এনকোড হয় না এবং সহজে মনে থাকে না।[৬] ক্রেইক এবং লকহার্টের ভাষায়, স্মৃতি নির্ভর করে প্রক্রিয়াকরণের গভীরতার ওপর। পরীক্ষামূলক এবং দৈনন্দিন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, যখন আমরা কোনো তথ্য সেমান্টিক এনকোডিংয়ের মাধ্যমে শিখি, তখন স্মৃতি উন্নত হয়, পৃষ্ঠতল বৈশিষ্ট্যগুলোতে মনোযোগ দেওয়ার মতো "শ্যালো" পদ্ধতির তুলনায়।[৬] গভীর প্রক্রিয়াকরণ বলতে বোঝায় অর্থভিত্তিক প্রক্রিয়াকরণ। বাহ্যিক প্রক্রিয়াকরণ বলতে বোঝায় নতুন উপকরণের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যে মনোযোগ দেওয়া। একটি উদাহরণ হতে পারে — কোনো পাঠ্যাংশে শব্দ হাইলাইট করা, যেটি সহজ তথ্য সংরক্ষণের পৃষ্ঠতল প্রক্রিয়াকরণ; অন্যদিকে, পাঠ্যাংশ পড়ে নিজের ভাষায় তা ব্যাখ্যা করা হচ্ছে গভীর প্রক্রিয়াকরণ। নিজের ভাষায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে হলে তার অর্থ বুঝতে হয় এবং মনোযোগ সহকারে বিশ্লেষণ ও অনুধাবন করতে হয়। সাধারণভাবে, তত্ত্ববিদরা একমত যে গভীর এনকোডিং অধিক বিশদ স্মৃতিচিহ্ন সৃষ্টি করে, যা পরবর্তীতে স্মরণযোগ্যতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।[৬]
পূর্বজ্ঞান সক্রিয়করণ
[সম্পাদনা]পূর্বজ্ঞান হলো কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষার্থীর আগেই অর্জিত জ্ঞান। পূর্বজ্ঞান সক্রিয় করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন তথ্যের সঙ্গে পরিচিত তথ্যের সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে, যা তাদের অনুমান করতে এবং সংযোগ গড়ে তুলতে সহায়তা করে। এটি এনকোডিং সহজ করে এবং নতুন তথ্য পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। এছাড়াও, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সঙ্গে নতুন তথ্যের সম্পর্ক তৈরি করা হলে ভবিষ্যতে সেই তথ্য আরও ভালোভাবে মনে রাখা যায়। যেকোনো বয়সের শিক্ষার্থী এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে, যা সব স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য এনকোডিং ও রিকল বাড়াতে সহায়ক। পূর্বজ্ঞান সক্রিয়করণের জন্য বিভিন্ন শিক্ষণ কৌশল ব্যবহৃত হতে পারে, যার উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের পূর্ব সম্পর্কিত জ্ঞানকে উদ্দীপ্ত করা নতুন শেখার প্রস্তুতি হিসেবে।[৮] উদাহরণস্বরূপ, ভ্যান ব্ল্যাঙ্কেনস্টেইন এবং সহকর্মীরা দেখিয়েছেন, যারা স্ব-অধ্যয়নের আগে পূর্বজ্ঞান সক্রিয় করেছে, তারা যারা তা করেনি তাদের তুলনায় অধ্যয়নের পর বেশি তথ্য মনে রাখতে পেরেছে।[৯] আরও দেখা গেছে, যারা প্রাসঙ্গিক পূর্বজ্ঞান সক্রিয় করেছে তারা নতুন তথ্য বেশি এনকোড করতে পেরেছে, তুলনায় যারা অপ্রাসঙ্গিক পূর্বজ্ঞান সক্রিয় করেছে। এটি দেখায়, প্রাসঙ্গিক পূর্বজ্ঞান নির্ধারণে উপযুক্ত কৌশল বেছে নেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ।[৯] পূর্বজ্ঞান সক্রিয়করণ একটি সহজ এবং কার্যকর শিক্ষণ কৌশল, কারণ এটি যেকোনো শিক্ষাদান পদ্ধতির সঙ্গে ব্যবহার করা যায় যা শিক্ষার্থীদের শেখার বিষয়ের সঙ্গে পূর্বজ্ঞানকে সম্পর্কিত করতে সহায়তা করে। উদাহরণস্বরূপ, গ্রুপ আলোচনা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পর্যালোচনা সেশন কিংবা ব্যক্তিগত লেখালেখি রিফ্লেকশন। নিচের অংশে কিছু শিক্ষণ কৌশলের উদাহরণ আরও বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
KWL অনুধাবন কৌশল
[সম্পাদনা]Know-Want-Learn (KWL) কৌশলটি ১৯৮৬ সালে ডোনা ওগল উদ্ভাবন করেন। তিনি এই কৌশলটি তৈরি করেন যাতে শিক্ষকরা আরও শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক পাঠদানের পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন। শুরুতে এটি পাঠ্যবোধ উন্নয়নের জন্য তৈরি হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন শিক্ষাক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হতে থাকে।[১০]
KWL কৌশলটি নির্মাণবাদী (constructivist) তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে, যা তথ্য সক্রিয়করণ এবং স্মরণকে কেন্দ্র করে। এর ধাপগুলো (Know, Want, Learned) শিক্ষার্থীদের পূর্বজ্ঞান সক্রিয় করে, তাদের বর্তমান ধারণাগুলো শনাক্ত করতে সাহায্য করে এবং নতুন শেখা তথ্য পুরোনোর সঙ্গে সংযুক্ত করে, যা এই তথ্যকে আরও শক্তিশালী ও স্থায়ী করে তোলে। KWL-এর উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীরা যেন নিজের জ্ঞান ও নতুন তথ্যকে নিজের মতো করে বুঝে নিতে পারে।[১১] এই কৌশলটি শিক্ষার্থীদের সক্রিয়ভাবে শেখার প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে শেখায় এবং তারা কী জানে না তা উপলব্ধি করতে সহায়তা করে—যা একটি গুরুত্বপূর্ণ মেটাকগনিটিভ দক্ষতা।
Know-Want-Learn কৌশলের ব্যবহার

KWL কৌশলটি সাধারণত একটি তিনধাপের চার্ট আকারে উপস্থাপিত হয়:
১. “আমি কী জানি?” এই ধাপটি হলো “Know” ধাপ। নতুন তথ্য ক্লাসে আনার আগে, শিক্ষার্থীদের বলা হয় তারা কোনো বিষয়ে আগে কী জানে তা মনে করতে। এটি যৌথভাবে করা যেতে পারে—শিক্ষার্থীরা একত্রে মস্তিষ্ক ঝড় (brainstorm) করে এবং তাদের পূর্বজ্ঞান শেয়ার করে, শিক্ষক তা চার্টের প্রথম কলামে লিখে রাখেন।[১১] শিক্ষকের ভূমিকা এখানে আলোচনাকে চালনা ও উদ্দীপ্ত করা, শিক্ষার্থীদের ধারণাগুলো ঠিক আছে কিনা তা শুধরানো নয়। এই ধাপ শিক্ষার্থীদের পূর্বজ্ঞান এবং সংশ্লিষ্ট স্কিমা সক্রিয় করে। ব্রেইনস্টর্মের পরে, শিক্ষার্থীদের বলা হয় তাদের ধারণাগুলো যুক্তিসঙ্গতভাবে সাজাতে, যাতে তথ্য শ্রেণিবদ্ধ করা যায় এবং ধারণাগুলো পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এই দক্ষতা একবার শিখে গেলে, তা অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়, যা তাদের পাঠ্যবোধ এবং স্কিমা গঠনে সহায়তা করে।[১০]
২. “আমি কী জানতে চাই?” দ্বিতীয় ধাপ হলো “Want” ধাপ। পূর্বজ্ঞান সক্রিয় ও নথিভুক্ত করার পর, শিক্ষার্থীদের বলা হয় তারা সেই বিষয় সম্পর্কে কী জানতে চায়। প্রশ্নগুলো চার্টের দ্বিতীয় কলামে লেখা হয়। এই ধাপ শিক্ষার্থীদেরকে গভীরভাবে ভাবতে বাধ্য করে, তারা কী জানে এবং কী জানে না তা বুঝতে শেখে এবং কোন বিষয়গুলো তাদের আগ্রহ জাগায় তা শনাক্ত করে। এই ধাপে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত অংশগ্রহণ বাড়ে, যা শিক্ষার প্রতি তাদের আগ্রহও বাড়াতে পারে।
৩. “আমি কী শিখেছি?” শেষ ধাপ হলো “Learned” ধাপ। বিষয় সম্পর্কে নতুন তথ্য উপস্থাপনের পর, শিক্ষার্থীদের বলা হয় তারা কী শিখেছে তা নিয়ে চিন্তা করতে। এই ধাপ তাদেরকে নতুন তথ্যের সঙ্গে পূর্বজ্ঞান যুক্ত করে এবং কোনো ভুল ধারণা থাকলে তা সংশোধন করতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝাবুঝি চার্টের প্রথম ও শেষ কলাম তুলনা করে সহজেই চিহ্নিত করা যায়। এছাড়া, চার্টে তথ্য দৃশ্যমানভাবে উপস্থাপন করায়, শিক্ষার্থীরা সহজেই নতুন ধারণাকে পূর্বজ্ঞান সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে পারে, যা তাদের শেখা আরও গভীর করে তোলে।
KWL কৌশল নিয়ে গবেষণা এবং প্রশিক্ষকদের মতামত
KWL কৌশলটি বিভিন্ন শ্রেণি ও বিষয়ে কার্যকর এবং উপকারী প্রমাণিত হয়েছে[১০], এটি সহজেই বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে পরিবর্তনযোগ্য এবং পুরোনো তথ্যের সঙ্গে নতুন তথ্য সংযুক্ত করতে কার্যকর। দীর্ঘ ও জটিল পাঠগুলো ছোট ছোট অংশে ভাগ করে চর্চা করা যায়, যাতে মানসিক চাপ এবং শেখার অসুবিধা কমে। যদিও এটি মূলত পাঠ্যবোধের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, গবেষণায় দেখা গেছে এটি পড়া, গণিত, বিজ্ঞান, ভাষা ও মেটাকগনিটিভ দক্ষতা উন্নয়নে সহায়ক।[১১] উদাহরণস্বরূপ, ৬ষ্ঠ শ্রেণির গণিত শিক্ষার্থীদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা KWL কৌশলের মাধ্যমে পাঠ গ্রহণ করেছে তারা জ্ঞান যাচাই পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো করেছে তাদের তুলনায় যারা এই কৌশল ব্যবহার করেনি।[১১]
শিক্ষকেরা তাঁদের পাঠ পরিকল্পনায় KWL কৌশল সংযুক্ত করার পরে ইতিবাচক প্রভাব অনুভব করেন, এবং শিক্ষার্থীরাও এই কৌশলের ব্যবহার নিয়ে ভালো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।[১০] প্রাথমিক গবেষণাগুলো এই কৌশলকে শিক্ষণ কৌশল হিসেবে সমর্থন করে এবং দেখা গেছে এটি অনেক অন্যান্য অনুধাবন কৌশলের তুলনায় ভালো কাজ করে এবং শিক্ষার্থীরা এটিকে বেশি পছন্দ করে।[১১]
ধারণামূলক মানচিত্র (Concept Mapping)
[সম্পাদনা]
ধারণামূলক মানচিত্র বা কনসেপ্ট ম্যাপিং হলো একটি শেখার কৌশল যেখানে নির্দিষ্ট বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত তথ্য চিত্রের মাধ্যমে সাজানো হয় সম্পর্কযুক্ত ধারণাগুলোর ভিত্তিতে। ধারণামূলক মানচিত্রে একটি জ্ঞানের ক্ষেত্রের বিভিন্ন ধারণা ও তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক ও আন্তঃক্রিয়াগুলো দেখানো হয়। এই গ্রাফিক উপস্থাপনাগুলো শিক্ষার্থীদেরকে ধারণাগুলোর অর্থ আরও গভীরভাবে এবং স্পষ্টভাবে অনুধাবনে সহায়তা করে।[১২] ধারণামূলক মানচিত্রের কিছু প্রচলিত রূপ হলো ভেন চিত্র, ট্রি ডায়াগ্রাম, ফ্লো চার্ট এবং প্রসঙ্গ চিত্র। এগুলো বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যবিষয়ে ব্যবহার ও মানিয়ে নেওয়া সম্ভব।
যখন একজন শিক্ষার্থী একটি ধারণামূলক মানচিত্র তৈরি করে, তখন তাকে বিভিন্ন ধারণার মধ্যে সম্ভাব্য সম্পর্ক বিবেচনায় নিতে হয়। এতে তার পূর্বজ্ঞান ও স্কিমা সক্রিয় হয়। ধারণাগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা নতুন তথ্য তাদের বিদ্যমান স্কিমাতে সংযুক্ত করে। শিক্ষার্থীদেরকে সমালোচনামূলকভাবে চিন্তা করতে হয় যাতে তারা ধারণাগুলোর মধ্যে যৌক্তিক সম্পর্ক খুঁজে পায় এবং পুরনো স্কিমার সঙ্গে নতুন ধারণাগুলোর সংযোগ ঘটাতে পারে, ফলে শেখা আরও দৃঢ় হয় এবং নতুন উপকরণ আরও ভালোভাবে সংরক্ষিত হয়।[১২] ধারণামূলক মানচিত্র তৈরির জন্য শিক্ষার্থীদেরকে তাদের শেখা তথ্য গভীরভাবে অনুধাবন করতে হয় যাতে তারা মূল পয়েন্টগুলো নির্ধারণ করতে পারে।[১২] এই মানচিত্র তৈরি করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা শেখে কীভাবে তারা তাদের জ্ঞান উপস্থাপন করবে এবং কীভাবে তথ্যকে একটি যৌক্তিক, অর্থপূর্ণ উপায়ে সংগঠিত করবে।
ধারণামূলক মানচিত্রের ব্যবহার ধারণামূলক মানচিত্র বিভিন্ন একাডেমিক উপায়ে ব্যবহার করা যায়। শিক্ষার্থীরা নিজে নিজে ধারণামূলক মানচিত্র তৈরি করতে পারে শেখার সময়। এটি তাদের শেখার প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে কারণ এতে শিক্ষার্থীরা একটি অধ্যয়নের মূল ধারণাগুলো এবং সেগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক শনাক্ত করতে পারে। এতে শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নের সময়ে বিষয়বস্তুর একটি গভীরতর উপলব্ধি অর্জন করে। ক্লাসে নির্দেশনার পর ধারণামূলক মানচিত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার কৌশল হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন, শিক্ষার্থীরা একটি ফাঁকা ডায়াগ্রাম পূরণ করতে পারে তাদের বোধগম্যতার ফর্মেটিভ মূল্যায়ন হিসেবে। ধারণামূলক মানচিত্রকে স্মরণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পাঠ পুনরাবৃত্তির কৌশল হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশেষে, শিক্ষকরা তাদের পাঠদানের সহায়ক উপকরণ হিসেবেও এই মানচিত্র ব্যবহার করতে পারে। ডায়াগ্রাম এবং চিত্রভিত্তিক উপস্থাপনাগুলো নতুন ধারণা শেখাতে সহায়ক হতে পারে কারণ শিক্ষকরা কী বোঝাতে চাইছেন তা পরিষ্কারভাবে উপস্থাপন করতে পারেন।[১৩]
গবেষণালব্ধ ফলাফল গবেষণায় দেখা গেছে যে, ধারণামূলক মানচিত্র ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কীভাবে তথ্য সংগঠিত করতে হয় তা শিখতে পারে, তাদের একাডেমিক পারফরম্যান্স বৃদ্ধি পায় এবং তথ্য মনে রাখার সক্ষমতা বাড়ে।[১৪] কারণ একটি ধারণামূলক মানচিত্র তৈরি করা এমন একটি প্রক্রিয়া যা গভীর চিন্তা, সংগঠন এবং পুরনো তথ্যের সঙ্গে নতুন তথ্যের সম্পর্ক স্থাপন করার মতো এনকোডিং শক্তিশালী করার কৌশলের উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি গবেষণায় তুলনা করা হয়েছে যে তথ্য প্রত্যাহারের জন্য ধারণামূলক মানচিত্র এবং অনুচ্ছেদ আকারে লেখা কোনটি বেশি কার্যকর। এতে দেখা গেছে যে, দুটি ফরম্যাটই প্রায় সমান কার্যকর। তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, অংশগ্রহণকারীরা অনুচ্ছেদ ফরম্যাটকে ধারণামূলক মানচিত্রের চেয়ে বেশি পছন্দ করেছেন।[১৪]
রিট্রিভাল বা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া
[সম্পাদনা]এই অধ্যায়ের প্রথম অংশে আপনি এনকোডিং প্রক্রিয়া এবং এটি কীভাবে স্মৃতি নির্মাণে ভূমিকা রাখে তা শিখেছেন। এই অংশে আমরা রিট্রিভাল বা পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া এবং এটি কীভাবে পুনর্গঠিত স্মৃতিতে ব্যবহৃত হয় তা নিয়ে আলোচনা করবো। রিট্রিভাল বলতে দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি থেকে তথ্য পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এটি একটি জটিল কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া, যেখানে স্মৃতিগুলোকে সচেতন অভিজ্ঞতায় রূপান্তর করা হয়।[১৫] বিভিন্ন উপাদান রিট্রিভাল প্রক্রিয়ার দক্ষতাকে প্রভাবিত করতে পারে, যেমন রিট্রিভালের সময়ের পরিবেশ এবং শিক্ষার্থীর অধ্যয়ন কৌশল। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষার্থী তথ্যকে চিনে রাখার জন্য অধ্যয়ন করেছে নাকি মনে রাখার জন্য তা রিট্রিভালের মানে অনেকটা নির্ধারণ করে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী রিকলভিত্তিক (প্রবন্ধ নির্ভর) পরীক্ষা প্রত্যাশা করে, তারা তথ্যের সংগঠনের ওপর বেশি মনোযোগ দেয়। অন্যদিকে, যারা মাল্টিপল চয়েস পরীক্ষার প্রত্যাশা করে, তারা ধারণাগুলোকে আলাদা আলাদা করে চিনে রাখে।[১৫] সংরক্ষিত তথ্যের রিট্রিভাল পূর্বজ্ঞান ব্যবহারের একটি অপরিহার্য অংশ এবং মূল্যায়নের মাধ্যমে বোঝাপড়ার প্রকাশ। তবে, রিট্রিভাল সংক্রান্ত সমস্যা, যেমন ভুল তথ্য মনে পড়া, শেখার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে। এই অংশে আমরা স্মৃতি ও তথ্যের পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করবো, নির্দিষ্ট উদাহরণ ও সংজ্ঞা দেবো, এই ক্ষেত্রে গবেষণার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবো এবং স্মৃতি পুনর্গঠনের সময় যে ভুলগুলো হতে পারে তা বিশ্লেষণ করবো।
স্মৃতি এবং তথ্য সংরক্ষণ এবং পুনর্গঠন
[সম্পাদনা]তথ্য যখন এনকোডিং প্রক্রিয়ায় মস্তিষ্কে প্রবেশ করে, তখন কেবল বাছাইকৃত গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোই দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে সংরক্ষিত হয়।[১৫] এই সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে স্কিমাটা নামক মানসিক কাঠামো, যা জ্ঞানকে সংগঠিত করতে সাহায্য করে।[১৫] এই বিষয়টি বোঝাতে একটি কুকুরকে কিভাবে চিনতে পারেন তা চিন্তা করুন। আপনার “কুকুর” বিষয়ক স্কিমাতে থাকতে পারে—চারটি পা, ঘেউ ঘেউ করে, লেজ আছে ইত্যাদি। কেউ কেউ স্কিমায় যোগ করতে পারে যে কুকুর পোষা প্রাণী, আবার কেউ মনে করতে পারে তারা বিপজ্জনক ও কামড় দিতে পারে। স্কিমার বিভিন্ন উপাদান একত্র হয়ে একটি সম্পূর্ণ উপলব্ধি গড়ে তোলে। যখন আমরা কোনো তথ্য মনে করতে চাই, তখন স্কিমা সক্রিয় হয় এবং সংরক্ষিত উপাদানসমূহ সাধারণ জ্ঞানসহ একত্র হয়ে স্মৃতিকে পুনর্গঠিত করে। সুতরাং, পুনর্গঠিত স্মৃতি বলতে বোঝায়—স্মৃতি পুনরুদ্ধারের সময় দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিতে থাকা সীমিত মূল তথ্যের সঙ্গে সাধারণ ও নির্দিষ্ট জ্ঞান যুক্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ স্মৃতি তৈরি করা। স্মৃতির এই পুনর্গঠন আমাদের টুকরো তথ্য নিয়ে কাজ করতে সহায়তা করে, যা একসাথে সব তথ্য মনে রাখার চেয়ে সহজ। তবে, এটি পুরোপুরি নির্ভুল নয়; পুনর্গঠনের সময় ভুল হতে পারে, যা মূল তথ্যকে বিকৃত করতে পারে।
এই ধারণাটি বোঝাতে একটি জিগস পাজলের কথা ভাবুন এবং সেই বাক্স যেখানে টুকরোগুলো রাখা আছে। প্রতিটি টুকরো মিলে একটি পূর্ণ চিত্র তৈরি করে, তবে তারা বাক্সে পৃথকভাবে সংরক্ষিত থাকে। যখন অর্থপূর্ণভাবে একটির সঙ্গে আরেকটি যুক্ত করে চিত্র গঠন করা হয়, তখন পূর্ণ ছবি তৈরি হয়। কিন্তু তৈরি চিত্রটি এখন এত বড় যে আর বাক্সে রাখা যাবে না। ফলে আবার টুকরো টুকরো করে খুলে আগের মতো করে রাখতে হবে। এভাবেই স্মৃতি ও তথ্য সহজ সংরক্ষণের জন্য খণ্ড খণ্ড করে রাখা হয়, কিন্তু প্রাসঙ্গিক জ্ঞান দিয়ে তা আবার গঠিত করে অর্থবোধক একটি একক তথ্যরূপে উপস্থাপন করা যায়।[১৫]
স্মৃতি পুনর্গঠনের উপর বার্টলেটের গবেষণা
[সম্পাদনা]স্মৃতি কীভাবে পুনরুদ্ধার হয়—এই প্রশ্ন নিয়ে বহুদিন ধরে বিতর্ক চলে আসছে: এটি কি মূলত হুবহু পুনঃপ্রতিস্থাপন (রিপ্রোডাক্টিভ) নাকি পুনর্গঠন (রিকন্সট্রাক্টিভ)?[১৫] স্মৃতি পুনর্গঠন নিয়ে বেশ কিছু গবেষণার পর, অধিকাংশ সংজ্ঞাবাদী মনোবিজ্ঞানী একমত যে স্মরণ একটি পুনর্গঠনমূলক প্রক্রিয়া।[১৫] এই বিতর্কে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক বার্টলেটের একটি গবেষণা, যা তার বই Remembering: A Study in Experimental and Social Psychology-এ প্রকাশিত হয়।[১৬] এই গবেষণায়, শিক্ষার্থীদের একটি অন্য সংস্কৃতির ছোট গল্প পড়ানো হয় যাতে তারা আগে থেকে পরিচিত না থাকে। বিভিন্ন সময় পর তাদের সেই গল্পটি যতটুকু মনে আছে তা পুনরায় বলতে বলা হয়। দুই বছর পর একজন শিক্ষার্থীকে আবার গল্পটি বলার জন্য বলা হয়। সে কেবল দুই প্রধান চরিত্র—এগুলাক ও ক্যালামা-র নাম মনে রাখতে পেরেছিল। কিছু সময় চিন্তা করার পর, সে গল্পের অন্যান্য দিক এই নামগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে মনে করতে পেরেছিল। যদিও এগুলো মূল গল্পের হুবহু মিল ছিল না, তবুও বোঝা যাচ্ছিল এগুলো মূল গল্প থেকেই অনুপ্রাণিত। এই পরীক্ষা দেখায় যে স্মরণ একটি সক্রিয় প্রক্রিয়া। মূল স্মৃতি থেকে পাওয়া প্রধান পয়েন্ট এবং পূর্বজ্ঞান মিলে একটি সম্পূর্ণ স্মৃতি তৈরি করা সম্ভব। এই গবেষণা স্মৃতির পুনর্গঠনমূলক প্রকৃতি প্রমাণ করে, কারণ শিক্ষার্থী একটি রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে শুরু করে সংযোগ তৈরি করতে করতে গল্পটি পুনর্গঠিত করে।[১৬]
পুনর্গঠনে ভুল
[সম্পাদনা]বার্টলেটের গবেষণা স্মৃতি পুনর্গঠনের সময় যে ভুলগুলো হতে পারে সেগুলো বিশ্লেষণের সুযোগ করে দেয়। যেমন, তার গবেষণায় শিক্ষার্থী গল্পটি কিছুটা ভিন্নভাবে পুনর্গঠিত করেছিল, যা প্রমাণ করে যে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া ভুলের জন্য স্পর্শকাতর এবং একে পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য তথ্যের উৎস হিসেবে ধরা যায় না। স্মৃতি পুনর্গঠনের দুটি প্রধান ভুলের উৎস হলো কনফ্যাবুলেশন এবং সিলেকটিভ মেমোরি।
প্রথম ভুল, কনফ্যাবুলেশন হলো ভুলে যাওয়া বা তৈরি করে ফেলা ঘটনাকে সত্য স্মৃতি হিসেবে মেনে নেওয়া। এটি সাধারণত মস্তিষ্কে আঘাত বা মানসিক রোগে আক্রান্তদের মধ্যে দেখা যায়। যখন দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হারিয়ে যায়, তখন মস্তিষ্ক সেই ফাঁক পূরণ করতে নতুন তথ্য তৈরি করে, যার ফলে বিভ্রান্তিকর স্মৃতি গড়ে ওঠে। এই সমস্যা ব্যক্তিভেদে এবং তার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে।[১৭]
দ্বিতীয় ভুল, সিলেকটিভ মেমোরি (বাছাইকৃত স্মৃতি) হলো নেতিবাচক স্মৃতিগুলোকে সক্রিয়ভাবে দমন করা। অথবা, এটিকে ইতিবাচক স্মৃতিতে মনোযোগ কেন্দ্রীকরণও বলা যেতে পারে। এই কারণে স্মৃতি পুনর্গঠনে ভুল হয় কারণ রিকল প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নেতিবাচক স্মৃতি ভুলে যেতে চায়, তবে তা পুনঃস্মরণ করা কঠিন হয়ে পড়ে, এমনকি সঠিক সংকেত থাকলেও।
নির্দিষ্ট ঘটনা স্মরণ
[সম্পাদনা]সাধারণ তথ্য বা স্মৃতির পুনর্গঠন যেখানে প্রাসঙ্গিক ধারণা থেকে স্মৃতি তৈরি করে, নির্দিষ্ট ঘটনা যেমন জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত স্মরণ করার প্রক্রিয়া কিছুটা আলাদা।[১৫] এই অংশে আমরা নির্দিষ্ট ঘটনা স্মরণ করার বিষয়টি আলোচনা করবো। আমরা এপিসোডিক মেমোরির ভূমিকা ও কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করবো এবং “ফ্ল্যাশবাল্ব মেমোরি” নামক একটি ঘটনাও বিশ্লেষণ করবো।
এপিসোডিক স্মৃতির ভূমিকা
[সম্পাদনা]এপিসোডিক মেমোরি বলতে বোঝায় "ব্যক্তিগত তারিখযুক্ত, আত্মজৈবনিক অভিজ্ঞতার সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার"।[১৫] এটি মূলত জীবনের ঘটনা সম্পর্কিত স্মৃতি যেমন—শৈশবের ঘটনা, গত গ্রীষ্মের ছুটি কোথায় কাটিয়েছিলেন, কিংবা গত রোববার সকালের নাশতায় কী খেয়েছিলেন তা মনে করা। এই ধরনের স্মৃতিগুলো সময় বা স্থান-সংক্রান্ত সংকেতের মাধ্যমে মনে পড়ে।[১৫] রবিন, উইন এবং মস্কোভিচ ঘটনাভিত্তিক স্মৃতির রিকল প্রক্রিয়ায় স্থানিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেছেন।[১৮] তারা দেখতে চেয়েছেন, ঘটনাস্থলে থাকা কিংবা সেই স্থান সম্পর্কিত শ্রাব্য সংকেত শোনা কি স্মৃতি রিকল করতে সহায়তা করে।[১৮] তারা দেখতে পান, মানুষ বা স্থান—এই দুটি সংকেতের মধ্যে স্থান সংক্রান্ত সংকেত রিকলের জন্য বেশি কার্যকর, যদিও উভয় ক্ষেত্রেই পরিচিততা থাকলে ফলাফল ভালো হয়।[১৮] একটি মজার বিষয় হলো, [১৮] গবেষণায় এমনকি যখন কোনো ঘটনার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করা হয়নি, তখনও অংশগ্রহণকারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্থান নির্ধারণ করে নিয়েছেন। গবেষকরা জানান: "অংশগ্রহণকারীরা যেখানে কোনো স্থান নির্দিষ্ট করা হয়নি, সেখানে নিজেরাই স্থান সংযোজন করেছেন" [১৮]। এছাড়া, যখন স্থানভিত্তিক এবং মানুষভিত্তিক সংকেতগুলোর তুলনা করা হয়, তখন দেখা যায় স্থানিক সংকেত দিয়ে স্মৃতি রিকল অধিক জীবন্ত ও বিস্তারিত হয়।[১৮] ফলে গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, স্থানসংক্রান্ত সংকেত নির্দিষ্ট ঘটনা স্মরণে বেশি কার্যকর।[১৮] এই গবেষণা প্রমাণ করে যে, কোনো ঘটনার সময় ও স্থান স্মৃতির রিকলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
মনোবিজ্ঞানীদের মধ্যে এখনো একটি চলমান বিতর্ক রয়েছে যে পর্বধারিত স্মৃতি এবং অর্থবোধক স্মৃতি, যা "সাধারণ ধারণা, নীতিমালা এবং তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের স্মৃতি" হিসেবে সংজ্ঞায়িত, সেগুলো আলাদা ধরণের স্মৃতি কিনা।[১৯] গবেষকরা অ্যামনেশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করছেন যারা আর পর্বধারিত স্মৃতি ফিরে পেতে সক্ষম নন।[১৯] একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা, যা একটি ডিমেনশিয়া জাতীয় রোগ যা মস্তিষ্কের ক্রমাগত অবক্ষয়ে পরিচিত, তাদের পর্বধারিত স্মৃতির সব ক্ষেত্রেই গুরুতর দুর্বলতা দেখা যায়।[২০]। সবচেয়ে গুরুতর দুর্বলতা দেখা যায় স্মৃতি অর্জন, বিলম্বিত পুনরুদ্ধার এবং পারস্পরিক সংযোগ ভিত্তিক স্মৃতিতে।[২০]
অ্যামনেশিয়া আক্রান্তদের উপর গবেষণা অনেক মনোবিজ্ঞানীকে অপ্রকাশ্য স্মৃতি সম্পর্কিত কার্যকারিতা নিয়ে অনুসন্ধান করতে অনুপ্রাণিত করেছে; এই ধরণের স্মৃতি হলো একটি স্বয়ংক্রিয় এবং অচেতনভাবে স্মৃতি সংরক্ষণের পদ্ধতি।[১৯] লক্ষ্য করার মতো বিষয় হলো, অনেক সময় আমাদের স্মৃতি সচেতন মনের কাছে উপলব্ধ না থাকলেও, আগের কোনো ঘটনার কারণে তা আমাদের আচরণকে প্রভাবিত করতে পারে।[১৯] প্রাথমিক তাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করতেন যে "[স্বল্পমেয়াদি স্মৃতি] থেকে [দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি] তে মৌখিক উপকরণ স্থানান্তর করতে না পারাই অ্যামনেশিয়ার মূল কারণ ছিল।"[১৯] তবে, এই মতবাদ পর্যাপ্ত ছিল না, কারণ পরবর্তীতে দেখা গেছে অ্যামনেশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিরা সব ধরণের দীর্ঘমেয়াদি মৌখিক স্মৃতিতে ভোগেন না।[১৯] আরও গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে যে অ্যামনেশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিরা বানান লেখার মতো বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের সময় অপ্রকাশ্য স্মৃতির ব্যবহার করতে সক্ষম, যা ইঙ্গিত করে যে অর্থবোধক স্মৃতি ও পর্বধারিত স্মৃতির মধ্যে আলাদা কোনো বিভাজন নেই।[১৯]
ফ্ল্যাশবাল্ব স্মৃতি
[সম্পাদনা]ফ্ল্যাশবাল্ব স্মৃতি হলো নির্দিষ্ট ঘটনাগুলো স্মরণ করার একটি বিশেষ ধরণের স্মৃতি। এই ধরণের স্মৃতি অত্যন্ত নির্দিষ্ট এবং সাধারণত এমন কোনো আবেগঘন ঘটনার সঙ্গে জড়িত যা ব্যক্তির জীবনে গুরুত্বপূর্ণ।[২১] উদাহরণস্বরূপ, কেউ ৯/১১ এর সন্ত্রাসী হামলার মতো আবেগঘন ঘটনা স্মরণ করার সময় ফ্ল্যাশবাল্ব স্মৃতি অনুভব করতে পারে। যদিও এই স্মৃতিগুলোকে নিখুঁত প্রতিফলন হিসেবে ভাবা হয়, গবেষণায় এর বিপরীত প্রমাণ পাওয়া গেছে; ফ্ল্যাশবাল্ব স্মৃতি আসলে পূর্বে যেমনটা ধরে নেওয়া হতো, ততটা নির্ভুল নয়।[১৯] এ থেকে প্রশ্ন উঠে, ফ্ল্যাশবাল্ব স্মৃতি কি "একটি বিশেষ ধরণের আবেগঘন স্মৃতি", নাকি সেগুলোকে সাধারণ আত্মজৈবনিক স্মৃতি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা উচিত?[২১]
পুনঃশিখন
[সম্পাদনা]পুনঃশিখন হলো হারিয়ে যাওয়া বা ভুলে যাওয়া তথ্য পুনরুদ্ধার করার প্রক্রিয়া, যেখানে একই উপকরণ প্রথমবার শেখার চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম সময় লাগে। এই প্রক্রিয়া দেখায় যে আমাদের অজান্তেই স্মৃতির কিছু অংশ দীর্ঘমেয়াদে সংরক্ষিত থাকে। এর সমর্থনে বলা যায়, প্রথমবার শেখার তুলনায় আমরা হারিয়ে যাওয়া তথ্য পুনরায় শিখতে অনেক দ্রুত হই।[২২] একটি ভালো উদাহরণ হতে পারে, যখন একজন শিক্ষার্থী এলোমেলো কিছু শব্দ মুখস্থ করে, এবং পরে যখন কিছুই মনে করতে পারে না, তখন আবারো প্রক্রিয়াটি করে। প্রথমবার ও দ্বিতীয়বার শেখার সময়ের তুলনা করলে দেখা যায়, দ্বিতীয়বার অনেক কম সময় লাগে। পরবর্তী অংশে আমরা এ সংক্রান্ত অতীতের কিছু পরীক্ষার কথা দেখব।
পুনঃশিখনের পদ্ধতির ইতিহাস
[সম্পাদনা]হেরমান এববিংহাউস ছিলেন এই বিষয়ে প্রথম গবেষকদের একজন যিনি পুনঃশিখনের পদ্ধতি পরীক্ষা করেন। তিনি এমন কিছু অর্থহীন শব্দ মুখস্থ করতেন যতক্ষণ না নির্ভুলভাবে তা বলতে পারতেন।[১৯] কিছু সময় পরে, যখন তার মেমোরি পুরোপুরি মুছে যেত, তিনি আবারো সেই শব্দগুলো মুখস্থ করতেন এবং প্রথম ও পরবর্তী চেষ্টার সংখ্যা তুলনা করতেন। দ্বিতীয়বার কম সময় লাগার অর্থ হলো, প্রাথমিক অধ্যায়ের কিছু তথ্য তার স্মৃতিতে রয়ে গেছে।[১৯]
তবে, আধুনিক স্মৃতি গবেষণায় পুনঃশিখনের পদ্ধতি এখনও তেমনভাবে অনুসন্ধান করা হয়নি, বরং স্মৃতিপরীক্ষার মতো পদ্ধতি আরও বেশি ব্যবহৃত হয়।[২২] এর একটি কারণ হলো, জটিল উপকরণ পুনঃশিখনের সময় সঞ্চয় পরিমাপের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত উপায়ের অভাব, কারণ এসব উপকরণ শুধু মুখস্থ নয়, গভীর বোঝাপড়াও দাবি করে।[১৯]
বিভক্ত বনাম গুচ্ছ অনুশীলন
[সম্পাদনা]যদিও ঠিক কীভাবে পুনঃশিখন ঘটে তা স্পষ্ট নয়, তবে গবেষণা বলছে শিক্ষার্থীরা কীভাবে অনুশীলন করে তা শেখা ও পুনঃশিখনের উপর বড় প্রভাব ফেলে। অনুশীলনের দুটি উপায় আছে যা আলাদা ফলাফল আনতে পারে। একটি হলো বিভক্ত অনুশীলন - নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নিয়মিতভাবে অনুশীলন (যেমন, কোনো দক্ষতা সপ্তাহ বা বছর ধরে উন্নত করা)। বিপরীত হলো গুচ্ছ অনুশীলন, যেখানে শিক্ষার্থী একবারেই নিবিড়ভাবে কোনো বিষয়ে কাজ করে (যেমন, পরীক্ষার আগের রাতে পড়া)।[১৯]
তথ্য সংরক্ষণ পরবর্তীতে বেশি কার্যকর হয় বিভক্ত অনুশীলন পদ্ধতিতে। তবে, যদি লক্ষ্য থাকে কেবল পরীক্ষায় পাশ করা বা অল্প কয়েকবার ব্যবহার করার মতো জ্ঞান অর্জন, তাহলে গুচ্ছ অনুশীলন বেশি কার্যকর হতে পারে।[২৩] তাই, শিক্ষার উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে শিক্ষার্থীরা কোন অনুশীলন পদ্ধতি গ্রহণ করবে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে বিভক্ত অনুশীলন গণিত জ্ঞানের সংরক্ষণে ভালো ফল দেয়। বিশেষ করে Bahrick এবং Hall (1991) বিশ্লেষণ করেন কী পরিমাণ তথ্য শিক্ষার্থীরা ১ থেকে ৫০ বছর পর স্কুলের অ্যালজেবরা ও জ্যামিতি থেকে মনে রাখতে পারে। গবেষণায় দেখা যায়, শিক্ষার্থী যত বেশি স্তরের একই বিষয়ের ক্লাস করে, তার স্মৃতি তত ভালো থাকে।[২৩]
গুচ্ছ অনুশীলনও কার্যকর হতে পারে, বিশেষ করে দুটি ক্ষেত্রে। এক হলো, যদি লক্ষ্য হয় বুঝে শেখা নয়, বরং নির্দিষ্ট কোনো আচরণ দেখানো যা উদ্দীপনা-প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক গড়ে তোলে। দ্বিতীয়টি হলো, যখন একজন বিশেষজ্ঞ যিনি ইতোমধ্যে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করেছেন, তিনি এটি ব্যবহার করেন।[২৪]
মস্তিষ্কে আঘাতের পর পুনঃশিখন
[সম্পাদনা]আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যেখানে পুনঃশিখন প্রয়োজন হয়ে ওঠে তা হলো, যখন মানুষ শুধু ঘোষণামূলক নয়, বরং এমন প্রক্রিয়াগত জ্ঞানও ভুলে যায় যা আমরা ছোটবেলা থেকেই শিখে আসছি। যখন মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে কার্যকারিতা ব্যাহত হয়, তখন মোটর ও কগনিটিভ কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজ করতেও সমস্যা হয়। এই ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণমূলক শেখা অত্যন্ত কার্যকর একটি পুনঃশিখনের কৌশল হিসেবে কাজ করে। অন্যদের নির্দিষ্ট কোনো কাজ করতে দেখলে রোগীরা তার মানসিক প্রতিফলন গড়ে তোলে।[২৫] যদি যথেষ্ট উৎসাহ দেওয়া হয়, তাহলে এমন অনুশীলন রোগীদের জন্য ফলপ্রসূ হয় যারা মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে পারে এবং নিজস্ব আচরণ পরিকল্পনা ও সম্পাদনে সক্ষম।[২৫]
পরীক্ষা একটি স্মৃতি অনুশীলন পদ্ধতি হিসেবে
[সম্পাদনা]পরীক্ষা নিয়ে ভাবলে, অধিকাংশ শিক্ষার্থী কেবল ফলাফল বা তাদের দক্ষতা ও জ্ঞানের একটি চূড়ান্ত মূল্যায়ন হিসেবেই তা বিবেচনা করে। তবে গবেষণা বলছে, পরীক্ষা নিজেই একটি শক্তিশালী শিক্ষণ পদ্ধতি হতে পারে। কাঙ্ক্ষিত ফলাফলের ওপর নির্ভর করে, পরীক্ষাগুলোকে শুধু মূল্যায়ন নয়, আরও কার্যকরভাবে পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
পরীক্ষার প্রভাব
[সম্পাদনা]পরীক্ষার প্রভাব নীতিমালাটি বলে যে, অধ্যয়নের সময় যদি শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট পরীক্ষা ও কুইজের মাধ্যমে যাচাই করা হয়, তাহলে চূড়ান্ত পরীক্ষায় তারা ভালো করে।[১৯] নির্দিষ্ট কিছু শর্তের অধীনে, পরীক্ষাগুলো পুনরায় পড়ার জন্য একই পরিমাণ সময় ব্যয় করার চেয়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের তথ্য পুনরুদ্ধারের উপর অনেক বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি যদি পরীক্ষার পরে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেওয়া হয় এবং পরীক্ষার পারফরম্যান্স নিখুঁত না হয়, তবুও পরীক্ষার মাধ্যমে শেখা বেশি উপকারি হতে পারে।[১৯]
তবে, যখন পরীক্ষার পরে বিশদ প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয় বা সফলতা অর্জন হয়, তখন ফল আরও ভালো হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, সফল পরীক্ষার সংখ্যা যত বেশি, দীর্ঘমেয়াদি স্মৃতি পুনরুদ্ধার তত ভালো হয়। এমনকি আরও ভালো ফল পাওয়া যায় যদি এসব পরীক্ষা একাধিক দিনে বিভক্ত হয়ে নিয়মিতভাবে নেওয়া হয়।[২৬]
পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের স্মৃতি পুনরুদ্ধারে অধ্যয়নের উপাদানগুলোর পাঠ পুনরায় পড়ার চেয়ে বেশি সহায়ক হওয়ার কয়েকটি কারণ রয়েছে। এই জাতীয় কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো, এটি তাদের স্মৃতি থেকে তথ্য খুঁজে বের করে তা প্রয়োগ করার অনুশীলন করায়, যা একটি মানসিক চ্যালেঞ্জের ছোট চাপের মধ্যে রাখে। ফলে তাদের স্মৃতি শক্তির দক্ষতার উপর কাজ করার সুযোগ পায়। আবার যদি অনুশীলন ও চূড়ান্ত পরীক্ষার মধ্যে মিল থাকে, তাহলে তা স্মৃতি রক্ষায় প্রাসঙ্গিক সংকেত তৈরি করে, যা এনকোডিং ও ডিকোডিং পরিবেশের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে।[১৯]
পুনরুদ্ধারের জন্য পরীক্ষার উপর গবেষণা
[সম্পাদনা]শিক্ষার্থীরা সাধারণত ধরে নেয় যে পরীক্ষার প্রাথমিক লক্ষ্যটি পরে মূল্যায়ন করা উচিত, জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে পুনরুদ্ধার বাড়ানোর পরীক্ষার ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। এটি যাচাই করার জন্য বেশ কয়েকটি গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রথমত, এটি শিক্ষার্থীদের নতুন উপাদান শিখতে হবে এবং তারপরে চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে এটির উপর পরীক্ষা দিতে হবে বা না নিতে হবে। ফলাফল প্রমাণ করেছে যে যারা অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়েছিল তারা চূড়ান্ত পরীক্ষায় আরও ভাল পারফর্ম করেছে। এই জাতীয় পদ্ধতির সাথে কিছু গবেষক প্রশ্ন করেছেন যে ইতিবাচক ফলাফলগুলো পরীক্ষার উপর নির্ভর করে বা পরীক্ষার উপাদান সম্পর্কে অতিরিক্ত অনুস্মারক দ্বারা সৃষ্ট হয়েছিল কিনা। অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালিত হয়েছিল যার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শেখার পরে একটি পরীক্ষা নিতে হবে বা পরীক্ষা না দিয়ে উপাদানটি পুনরায় অধ্যয়ন করতে হবে। চূড়ান্ত পরীক্ষায় আবার দেখা গেছে যে অতিরিক্ত পরীক্ষা নেওয়া শিক্ষার্থীরা চূড়ান্ত পরীক্ষায় আরও ভাল পারফর্ম করেছে। পরীক্ষিত উপাদানগুলোর প্রকৃতি হিসাবে, শব্দ, পাঠ্য এবং চিত্রগুলো মনে রাখার জন্য সমানভাবে উপকারী ফলাফল পাওয়া গেছে। সামগ্রিকভাবে, অসংখ্য গবেষণা পরিচালিত হয়েছিল যা এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছিল যে পরীক্ষাগুলো শেখার ফলাফলগুলোকে শক্তিশালী করে।
পুনরুদ্ধারের দক্ষতা রোডিগার এট আল এর "পরীক্ষার প্রভাব" দ্বারা উন্নত করা যেতে পারে। এই তত্ত্বটি চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য সামগ্রিক শিক্ষার উন্নতির প্রয়াসে অধ্যয়ন করা উপাদান সম্পর্কিত পরীক্ষাগুলো ব্যবহার করে। এই ধরণের পুনরুদ্ধার অনুশীলনের সুবিধাগুলো সম্পর্কে একটি গবেষণায় পরীক্ষা করা হয়েছে যে পুনরুদ্ধার অনুশীলনের সুবিধাগুলো হ্রাসমূলক অনুমানগুলোতে স্থানান্তর করতে পারে কিনা। ফলাফলগুলো দেখায় যে পরীক্ষার শর্তে শিক্ষার্থীরা বিষয়বস্তুর আরও ভাল চূড়ান্ত-পরীক্ষার প্রত্যাহার তৈরি করেছে তবে বহুনির্বাচনী স্বীকৃতি প্রশ্নে কোনও উন্নতি হয়নি। বেশিরভাগ শিক্ষণ সরাসরি নির্দেশের মাধ্যমে ঘটে এবং পরীক্ষাগুলো কেবল অগ্রগতি পরিমাপ করতে এবং গ্রেড নির্ধারণের জন্য প্রয়োগ করা হয়, তবে, পরীক্ষার প্রভাবটি দেখায় যে পরীক্ষাগুলো এনকোডিং এবং তথ্য পুনরুদ্ধারের উন্নতি করতে শেখার কৌশল হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি "শেখার হিসাবে মূল্যায়ন" হিসাবে পরিচিত।
শ্রেণিকক্ষ প্রসঙ্গ/কৌশল
[সম্পাদনা]এই বিভাগে এনকোডিং এবং পুনরুদ্ধারের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন কৌশল এবং শেখার প্রসঙ্গগুলোর উদাহরণ এবং আলোচনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কৌশলগুলোর মধ্যে অনেকগুলো ওভারল্যাপিং বা পুনরাবৃত্তিমূলক প্রক্রিয়াগুলোতে এনকোডিং এবং পুনরুদ্ধার উভয় অনুশীলনের উদাহরণ অন্তর্ভুক্ত করে, যেমন স্ক্যাফোল্ডিং, অধ্যয়নের কৌশল বা পিয়ার টিউটরিং; এই ধারণাগুলো বিশেষত এনকোডিং বা পুনরুদ্ধারের উল্লেখ না করে কিছু ক্ষেত্রে উপস্থাপিত হয়। গল্প বলার বিভাগটি উভয় প্রক্রিয়াকে আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সম্বোধন করে এবং বেশ কয়েকটি পৃথক উদাহরণ উপস্থাপন করে। প্রতিটি কৌশল প্রসঙ্গে বিবেচনা করা আবশ্যক, এবং শেখার বিভিন্ন দিক বা ধরনের সমর্থন করার জন্য অনন্য সুবিধা প্রদান করে (প্রকৃত তথ্য মুখস্থকরণ, ধারণাগত পরিবর্তন, পদ্ধতিগত জ্ঞান অর্জন)।
আত্ম-ব্যাখ্যা
[সম্পাদনা]তত্ত্ব স্ব-ব্যাখ্যা একটি দরকারী স্বাধীন কৌশল যেখানে শিক্ষার্থীরা পরিষ্কার, সচেতন এবং আরও সংগঠিত বোঝার সুবিধার্থে তাদের চিন্তাভাবনাকে মৌখিক করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোনও শিক্ষার্থী স্ব-ব্যাখ্যা কৌশলটি ব্যবহার করে কোনও গণিতের সমস্যা মোকাবেলা করে তবে তারা প্রতিটি পদক্ষেপ ব্যাখ্যা করে, প্রতিটি পদক্ষেপ সমাধানের জন্য তারা কী করবে এবং কেন তারা এটি করবে তা ব্যাখ্যা করে সমস্যার মাধ্যমে কাজ করবে। যদি তারা দেখতে পায় যে তারা কেন এটি করেছে তা ব্যাখ্যা করতে সক্ষম নয়, তবে তারা ফিরে যেতে পারে এবং অন্য উত্স থেকে ব্যাখ্যা সন্ধান করতে পারে। একইভাবে আমরা অন্যকে শেখানোর মাধ্যমে শিখতে সক্ষম হই, আত্ম-ব্যাখ্যা উপাদানটিকে নিজের বোঝার স্তরে ভেঙে কার্যকরভাবে নিজেকে শেখানোর মাধ্যমে কাজ করে।
গবেষণা আরও বোঝার জন্য, রায় ও চি[ এর একটি নিবন্ধ উচ্চমানের স্ব-ব্যাখ্যা এবং নিম্নমানের স্ব-ব্যাখ্যার মধ্যে পার্থক্য করে। প্রাক্তনটি এমন শিক্ষার্থীদের বর্ণনা করে যারা অনুমান, মন্তব্য এবং সংহত বিবৃতিগুলোর মাধ্যমে তাদের শেখার প্রতিচ্ছবি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়ে উপাদানটির আরও সমালোচনামূলক বোঝাপড়া দেখিয়েছে। পরেরটি এমন শিক্ষার্থীদের বর্ণনা করে যারা কেবল তারা যা পড়েছে তা পুনরায় বর্ণনা করে। দু'জনকে চিনতে সক্ষম হওয়া গুরুত্বপূর্ণ কারণ যারা উচ্চমানের স্ব-ব্যাখ্যায় অংশ নেয় তারা কেবল পরীক্ষার পরে আরও ভাল ফলাফল তৈরি করতে সক্ষম হয় না, তবে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বিপরীতে ভাল শিক্ষার্থী হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি থাকে (এই শিক্ষার্থীদের আগে পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তাদের স্কোর অনুসারে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছিল)। রয় অ্যান্ড চি আরেকটি গবেষণার দিকেও নজর দিয়েছিলেন যা চারটি ভিন্ন ধরণের স্ব-ব্যাখ্যা দেখায় - দুটি সফল এবং দুটি ব্যর্থ। নীতি-ভিত্তিক ব্যাখ্যাকারীরা তারা যা শিখেছে তা বিষয়টির নীতিগুলোর সাথে সংযুক্ত করতে পারে এবং প্রত্যাশিত ব্যাখ্যাকারীরা পড়ার আগে ভবিষ্যদ্বাণী করে এবং অতীতের প্রাসঙ্গিক উপাদানের সাথে সফলভাবে সংযুক্ত করতে পারে। গবেষণায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ব্যর্থ ধরণের বিভাগে পড়ে, যার মধ্যে প্যাসিভ ব্যাখ্যাকারী এবং অগভীর ব্যাখ্যাকারী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তারা উপসংহারে পৌঁছেছে যে শিক্ষার্থীরা স্ব-ব্যাখ্যা করার জন্য তাদের দক্ষতার মধ্যে পরিবর্তিত হয় এবং এই বৈচিত্রগুলো কোনও শিক্ষার্থীর উত্পাদিত ফলাফলের গুণমানকে অনুমান করতে পারে।
প্রয়োগ ওয়াইলি এবং চি স্ব-ব্যাখ্যার বিভিন্ন রূপ বর্ণনা করে যা তাদের এক বা একাধিক ব্যবহৃত পদ্ধতির অধীনে রেখে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে। ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলোর মধ্যে একটি ওপেন এন্ডেড পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত ছিল, প্রথমটি হলো যাতে শিক্ষার্থীদের পূর্বের জ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত করে এবং তারা যা জোরে জোরে পড়েছে তা ব্যাখ্যা করে উপাদানটির আরও সংযোগ এবং বোঝার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়। আরেকটি অনুরূপ ওপেন এন্ডেড পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে উপাদানটি কণ্ঠস্বর করার পরিবর্তে উপাদান সম্পর্কে তাদের বোঝার প্রকাশ করে। বর্ণালীটির অন্য প্রান্তে কিছু কম উন্মুক্ত পদ্ধতি ছিল যা শিক্ষার্থীদের একাধিক পছন্দের তালিকা থেকে কেন ভুল উত্তর দিয়েছিল তার ব্যাখ্যা বাছাই করার প্রয়োজন ছিল। উভয় চরমপন্থার সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে, ওপেন এন্ডেড পদ্ধতিগুলো খুব অনিয়ন্ত্রিত হলেও শিক্ষার্থীদের অবাধে নিজেদের মূল্যায়ন করার অনুমতি দেয়, যা নতুন এবং বিভিন্ন ধারণার অনুমতি দিতে পারে। অন্যদিকে, মেনু টাইপ পদ্ধতিগুলো খুব সীমাবদ্ধ হতে পারে তবে শিক্ষার্থীরা যে অপ্রাসঙ্গিক বা ভুল ব্যাখ্যা দিতে পারে তা দূর করুন।
স্ক্যাফোল্ডিং সংক্রান্ত নির্দেশনা
[সম্পাদনা]স্ক্যাফোল্ডিং লার্নিং আরেকটি শ্রেণীকক্ষ কৌশল যা শিক্ষাবিদদের কাছে খুব জনপ্রিয়। এটি একটি ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া জড়িত যেখানে শিক্ষাবিদ ক্রমাগত পৃথক শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়তা প্রদান করে কারণ তারা বিষয়টি বোঝার ক্ষেত্রে অগ্রসর হয়। শিক্ষক তাদের জ্ঞান বিকাশের জন্য শিক্ষার্থীদের গতির চারপাশে কাজ করেন। এর প্রভাব রয়েছে, যার মধ্যে সময়ের অভাব এবং এটি একটি সম্ভাব্য কাজ হওয়ার জন্য খুব বড় শ্রেণিকক্ষের আকার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি বলার সাথে সাথে, পর্যাপ্ত সময় এবং যথেষ্ট ছোট শ্রেণিকক্ষের আকার দেওয়া, স্ক্যাফোল্ডিং শেখার নির্দেশনা সরবরাহ করা অত্যন্ত কার্যকর শিক্ষার ফলাফল অর্জন করতে পারে।
কাবাত-জিন (২০১৫) এর একটি নিবন্ধে, তিনি স্ক্যাফোল্ডিংটির পতন নিয়ে আলোচনা করেছেন। যদিও এই মুহুর্তে স্ক্যাফোল্ডিং শিক্ষার্থীদের সমর্থন করার একটি দুর্দান্ত উপায় হতে পারে, তবে এটি শেষ পর্যন্ত ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে পারে কারণ শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত সহায়তার উপর নির্ভরশীল হয়ে উঠতে পারে। অন্যান্য ক্ষেত্রে, স্ক্যাফোল্ডিং নির্দেশনা নির্ভরতার অনুভূতি ছেড়ে যাওয়ার বোঝা বহন করে না। ইউক্রেনেটজ (২০১৫) দ্বারা করা একটি গবেষণায় শিক্ষার্থীরা যারা পড়ার বোধগম্যতার সাথে লড়াই করেছিল তারা একটি পাঠ্য বোঝার প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছিল যেখানে তাদের দক্ষতা উন্নত করার জন্য তাদের ব্যবহারিক এবং সুস্পষ্ট কৌশল দেওয়া হয়েছিল। এটি এমন উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করে যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের স্পিচ ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজিস্টদের দ্বারা সমর্থিত থেকে তাদের নিজস্ব জ্ঞান দ্বারা সমর্থিত হওয়ার জন্য সফলভাবে রূপান্তরিত হয়।
পড়াশোনা
[সম্পাদনা]অনেক ধরণের অধ্যয়নের কৌশল রয়েছে যা শিক্ষার্থীদের শেখানো হয়- যদিও প্রায়শই, শিক্ষার্থীরা কৌশলগুলো ব্যবহার করে না। এই অধ্যায়ে, তারা যে জনসংখ্যার সাথে সবচেয়ে ভাল কাজ করে তার সাথে বিভিন্ন কৌশলগুলো দেখা হবে। এটি তাদের ব্যবহৃত অধ্যয়ন কৌশলগুলোর সাথে সম্পর্কিত পৃথক গ্রুপ হিসাবে শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণ ও অধ্যয়ন করবে। শিক্ষক, গৃহশিক্ষক এবং পিতামাতা সহ সহকর্মী এবং প্রাপ্তবয়স্কদের অনুপ্রেরণা এবং সামাজিক সমর্থনও বিভিন্ন অধ্যয়ন কৌশলগুলোর কার্যকারিতার একটি কারণ হিসাবে দেখা হবে। আমরা সামগ্রিকভাবে অধ্যয়নের পরিবর্তে পৃথক গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কিত অধ্যয়নের দিকে নজর দেব। অতিরিক্তভাবে, অধ্যয়নের কৌশলগুলো বিভিন্ন বিষয় এবং পরীক্ষার বিভিন্ন ফর্ম অনুসারে বিভক্ত এবং শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে।
পিয়ার টিউটরিং
[সম্পাদনা]তত্ত্ব পিয়ার টিউটরিং শেখার একটি পদ্ধতি যেখানে সহপাঠীরা একে অপরের কাছ থেকে একের পর এক সরাসরি নির্দেশের মাধ্যমে শিক্ষা দেয় এবং শিখে। অনেক স্কুল, বিশেষত মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো পুরো ক্লাস হিসাবে এই কৌশলটি প্রয়োগ করেছে। এর উদ্দেশ্যগুলো শিক্ষার্থীদের এটি শেখাতে সক্ষম হওয়ার জন্য যথেষ্ট গভীরভাবে উপাদান প্রক্রিয়া করতে সক্ষম হতে এবং টিউটিদের চাপ ছাড়াই পরিবেশে শিখতে সক্ষম হওয়ার দিকে পরিচালিত হয়। সাধারণত, টিউটররা আরও ভাল পারফর্মিং শিক্ষার্থী, সম্ভবত যারা আগে যে ক্লাসটি পড়াচ্ছেন তা গ্রহণ করেছেন। পিয়ার টিউটরিংয়ের কয়েকটি চ্যালেঞ্জ, যেমন একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে মিনার্ড এবং আলমারজুকি এই সত্যটি অন্তর্ভুক্ত যে শিক্ষার্থীরা, বিশেষত উচ্চ বিদ্যালয়ে, অগত্যা একসাথে নাও থাকতে পারে এবং এইভাবে সমস্ত শিক্ষার্থীর সমন্বয় করা কঠিন হয়ে যায়। অতিরিক্তভাবে, কোনও গ্যারান্টি নেই যে টিউটর এবং টিউটিরা ধারাবাহিকভাবে ক্লাসের জন্য প্রদর্শিত হবে। পেশাদার শিক্ষাবিদদের মধ্যেও একটি ভয় রয়েছে যে শিক্ষার্থীদের তাদের সহকর্মীদের মধ্যে কার্যকরভাবে অন্য একজনকে শেখানোর পর্যাপ্ত তথ্য বা ক্ষমতা নেই।
গবেষণা কর্নার অ্যান্ড হপফের একটি গবেষণায় পদার্থবিজ্ঞানে ক্রস-এজ পিয়ার টিউটরিংয়ের দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছিল, যেখানে টিউটররা গ্রেড ৮ এ এবং টিউটিরা ৫ ম গ্রেডে ছিল। একটি প্রাক-পরীক্ষা-পরবর্তী নকশা ব্যবহার করে, তাদের তিনটি প্রধান গ্রুপ ছিল যার প্রত্যেকটিতে টিউটর, টিউটি বা টিউটর এবং টিউটি এবং দুটি পরামর্শদাতা গ্রুপ ছিল যা টিউটরিংয়ের আগে উপাদানগুলোর মাধ্যমে তাদের গাইড করবে। ফলাফলে দেখা গেছে যে কোন গ্রুপ টিউটরিং করছে তা কোন ব্যাপার না, সমস্ত গ্রুপ টিউটর, মেন্টর এবং টিউটিদের উপর ইতিবাচক প্রভাব দেখিয়েছিল, বিশেষত যখন শিক্ষার্থীরা টিউটরিংয়ের সক্রিয় ভূমিকায় অংশ নিয়েছিল। সাহিত্যের তাদের পর্যালোচনাতে, তারা অতীতের অধ্যয়নগুলোও বিবেচনা করে যেখানে "তারা শিক্ষার্থীদের কৃতিত্ব, বিষয়টির প্রতি মনোভাব এবং স্ব-ধারণাগুলো কেবল টিউটরিং শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, টিউটিদের জন্যও ইতিবাচক প্রভাবের উপর জোর দিয়েছিল। পিয়ার টিউটরিং টিম ওয়ার্ক এবং নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণের মতো বিভিন্ন আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতা বৃদ্ধি করেছিল। একইভাবে, অন্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে পিয়ার টিউটরিং দুর্বল সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের উপকৃত করে যারা নিম্ন আয়ের এবং / অথবা দরিদ্র আর্থ-সামাজিক পরিবার থেকে এসেছিল যদি তারা শিক্ষার ঐতিহ্যগত উপায়গুলো মেনে চলে। পার্থক্যটি হলো পিয়ার টিউটর এবং টিউটিরা এমন সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হয় যা শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা পারে না। প্রভাব, প্রদত্ত যে সিস্টেমটি সংগঠিত, কাঠামোগত এবং স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, টিউটর এবং টিউটি উভয়ের একাডেমিক কৃতিত্ব এবং স্ব-কার্যকারিতা বোধের উপর ইতিবাচক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রয়োগ শেখার একটি মোটামুটি নতুন পদ্ধতি হওয়ায়, পিয়ার টিউটরিং এখনও বিকাশের প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। বিভিন্ন স্তরের স্কুল, প্রাইভেট এবং পাবলিক স্কুল, বিভিন্ন দেশ ইত্যাদি সহ স্কুল সিস্টেমগুলো বিভিন্ন কারণের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। এই কারণে, শ্রেণিকক্ষে পিয়ার টিউটরিং প্রয়োগ করা যেতে পারে এমন বিভিন্ন উপায় রয়েছে।
আইভাজো এবং আলজিডেফের একটি নিবন্ধ[ ক্লাসওয়াইড পিয়ার টিউটরিং (সিডাব্লুপিটি) এবং অভ্যন্তরীণ-শহরের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে এর কাঠামো নিয়ে আলোচনা করেছে। সিডাব্লুপিটির প্রথম পদক্ষেপটি হলো টিউটরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। শিক্ষকরা প্রথমে টিউটরদের তাদের দক্ষতার নির্দেশ দেন এবং টিউটররা তখন তারা যা শিখেছেন তা শেখানোর অনুশীলন করতে হয়। এটি হওয়ার সাথে সাথে শিক্ষকরা শিক্ষার্থী থেকে শিক্ষার্থীতে চলে যাবেন, তাদের মূল্যায়ন করবেন এবং শিক্ষার্থীদের সংশোধন করার অনুমতি দেওয়ার জন্য সমালোচনা সরবরাহ করবেন। এরপরে, তারা যে দক্ষতাগুলো ভালভাবে করেছে তা পরীক্ষা করার জন্য এবং তাদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাগুলো অতিক্রম করার জন্য তাদের একটি পারফরম্যান্স রেকর্ড শীট দেওয়া হয়। এই জুড়ে, শিক্ষার্থীরা আন্তঃব্যক্তিক বৃদ্ধি সম্পর্কে পাঠ শিখতে থাকে, যেমন কীভাবে তাদের সমবয়সীদের যথাযথভাবে গ্রহণ করা যায় এবং প্রতিক্রিয়া জানানো যায়। এর পরে, শিক্ষার্থীরা তাদের ভূমিকা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হয়ে ওঠে কারণ তারা টিউটি এবং টিউটর উভয়ই গ্রহণ করে। এই পালা গ্রহণ সুবিধাজনক কারণ এটি শিক্ষার্থীদের উভয় ভূমিকা থেকে উপকার কাটাতে দেয়, কারণ তারা আরও ভাল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক হতে শেখে। এটি হীনমন্যতা বা শ্রেষ্ঠত্বের অনুভূতিও দূর করে, কারণ কিছু শিক্ষার্থীকে অন্যের চেয়ে বেশি যোগ্য বলে মনে করার পরিবর্তে সমস্ত শিক্ষার্থীকে একে অপরকে শেখানোর সুযোগ দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, ব্র্যান্ডট এবং ডিমিটের একটি গবেষণা[ স্কুলে লেখার কেন্দ্রগুলো তাদের নির্দিষ্ট অধ্যয়ন দ্বারা পৃথক করা পিয়ার টিউটরদের জন্য একটি সেটিং হিসাবে ব্যবহার করে। টিউটররা একটি স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায় যার মধ্যে তাদের অবশ্যই বেশ কয়েকটি নির্দিষ্ট, নির্বাচিত কোর্স সম্পন্ন করতে হবে, কমপক্ষে ৩.৫ জিপিএ থাকতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বর্ণিত অন্যান্য মানদণ্ড পূরণ করতে হবে। গৃহশিক্ষক হিসেবে তাদের সোজাসাপ্টা দিকনির্দেশনার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের স্ক্যাফোল্ডিং বেঁধে শেখানো হয়। তারা একটি ছাত্র-কেন্দ্রিক পদ্ধতির শিক্ষা দেয় এবং এই পদ্ধতিগুলো কেন ব্যবহার করা হয় তা বুঝতে টিউটরদের উত্সাহিত করে। এই লেখার কেন্দ্রগুলোতে ব্যবহৃত পদ্ধতিগুলো তাদের ভাড়া করা শিক্ষক এবং অধ্যয়নের বিন্যাসের ক্ষেত্রে সুসংগঠিত বলে মনে হয়েছিল। লেখার কেন্দ্রগুলোকে নিশ্চিত করতে হয়েছিল যে টিউটররা তাদের শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক পদ্ধতির ব্যবহারে খাঁটি ছিল তা এই প্রোগ্রামের সাফল্যকে ব্যাপকভাবে সহায়তা করেছিল। একটি পিয়ার টিউটরিং সিস্টেম যখন এটি প্রয়োগ করা হয় তখন কেবল কাজ করে না; এটি অবশ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরিকল্পনা করা উচিত এবং এর উদ্দেশ্যগুলো কী তা সমস্ত অংশগ্রহণকারীদের কাছে পরিষ্কার করা উচিত। এই পিয়ার টিউটরিং পদ্ধতির প্রভাবগুলো পদ্ধতির এবং স্পষ্ট নির্দেশিকা অনুসরণ করার উপর নির্ভর করে।
এটি স্পষ্ট যে পিয়ার টিউটরিং কৌশলগুলো ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষার্থীদের সাথে স্কুলগুলোতে বিশেষত ভাল ভাড়া দেয়, কারণ এটি এই শিক্ষার্থীদের সহকর্মীদের সাথে কাজ করতে দেয় যাদের সাথে তাদের সম্ভবত আরও মূল্যবান এবং অর্থপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। উপরন্তু, অসামাজিক ছাত্রদের জন্য, এটি মিথস্ক্রিয়া একটি সূচনা পয়েন্ট তৈরি করে- যা প্রায়ই বন্ধু তৈরীর সবচেয়ে কঠিন অংশ হতে পারে। পিয়ার টিউটরিংয়ের একটি কার্যকর পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, এটি শিক্ষার্থীদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এমন সম্ভাবনা কম এবং সম্ভবত এটি শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস, একাডেমিক কৃতিত্ব, সহকর্মী সম্পর্ক এবং আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতার উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
নোট গ্রহণ, সংক্ষিপ্তকরণ এবং পুনরায় পড়া
[সম্পাদনা]তত্ত্ব কারণ অধ্যয়নের সময় কৌশলগুলো তাদের সহকর্মী এবং শিক্ষকদের পরিবর্তে একজন ব্যক্তির অনুপ্রেরণা এবং প্রচেষ্টার উপর নির্ভরশীল, তারা একজন শিক্ষার্থীর বিকাশ এবং একাডেমিক কৃতিত্বে প্রধান ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার্থীরা তাদের তরুণ বয়সে যে অভ্যাস এবং উপলব্ধি অর্জন করে তা সারা জীবন ধরে চলতে পারে। নোট নেওয়ার প্রভাবগুলো পৃথক হতে পারে কারণ এটি বক্তৃতার সময় বা পড়ার সময় ঘটতে পারে। একইভাবে, উপাদান সংক্ষিপ্ত করার বিভিন্ন ফলাফল থাকতে পারে, আপনি উপাদানটি স্মরণ করছেন কিনা বা আপনি সংক্ষিপ্ত করার সাথে সাথে সরাসরি উপাদানটি উল্লেখ করছেন কিনা তার উপর নির্ভর করে। নোট গ্রহণ, সংক্ষিপ্তকরণ, পুনরায় পড়া এবং হাইলাইট সহ এই কৌশলগুলোর কার্যকারিতা বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে, যার মধ্যে কয়েকটি আমরা সাহিত্য বিশ্লেষণ করার সময় দেখা হবে।
গবেষণা ডায়ার এবং রাইলির একটি গবেষণা অধ্যয়নের কৌশল হিসাবে স্বতন্ত্রভাবে এবং সহযোগিতামূলকভাবে নোট গ্রহণ, সংক্ষিপ্তকরণ এবং পুনরায় পড়ার প্রভাবগুলো দেখায়। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একটি অনুচ্ছেদ সহ নির্দেশাবলী সহ একটি খাম দেওয়া হয়, তাদের বলে যে তারা নোট নেওয়া, পড়া, সংক্ষিপ্তসার এবং / অথবা একটি সম্পর্কহীন কাজ করার একটি এলোমেলো সংমিশ্রণ করতে হবে। যে শিক্ষার্থীরা নোট নেওয়া বা পুনরায় পড়ার মাধ্যমে উত্তরণটি পর্যালোচনা এবং অধ্যয়ন করতে বেশি সময় ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছিল তাদের উপাদানটির রেফারেন্স ছাড়াই স্মরণ করে উপাদানটির সংক্ষিপ্তসার করে তাদের চেয়ে পরীক্ষার পরবর্তী ফলাফল আরও ভাল ছিল। অন্যদিকে যারা পড়ার পর সম্পর্কহীন কোনো কাজ করেছেন তাদের পারফরম্যান্স স্কোর সবচেয়ে কম। লুডাস (১৯৮০) এর একটি মেটা-বিশ্লেষণ নোট গ্রহণের উপর সঞ্চিত অধ্যয়ন এবং তথ্য স্মরণে এর প্রভাবের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। পূর্ববর্তী গবেষণায় দেখা গেছে যে নোট নেওয়া হয় ইতিবাচক বা কোনও পার্থক্য নেই, তবে ফলাফলগুলোতে কখনই নেতিবাচক নয়। নোট নেওয়া উপযুক্ত পরিবেশে সর্বোত্তম, যেমন বক্তৃতাগুলো ধীর গতির, ভিডিওগুলোর সময় নোট নেওয়ার বিপরীতে। দ্রুত গতির বক্তৃতা চলাকালীন, কেউ কী লিখছে সে সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করার পরিবর্তে তারা যা শুনেছে তা হুবহু লিখতে পারে। নোট নেওয়ার দক্ষতার দিকে তাকানোর সময় সময়ও একটি ফ্যাক্টর - সেই ১৫ মিনিটের মধ্যে একজনের পক্ষে কার্যকরভাবে শোনার এবং মনে রাখা নোট নেওয়ার প্রক্সিমাল সময়।
প্রয়োগ নোট গ্রহণ, সংক্ষিপ্তকরণ এবং পুনরায় পড়া এমন কৌশলগুলো যা অনেক শিক্ষার্থী ব্যবহার করে কারণ এগুলো প্রায়শই অধ্যয়ন সম্পর্কে শেখানো প্রথম জিনিস। এগুলো খুব স্ব-ব্যাখ্যামূলক, যদিও এই কৌশলগুলোতে প্রযুক্তির যে প্রভাব রয়েছে তা উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলো সমস্ত ল্যাপটপ, কম্পিউটার এবং ট্যাবলেটগুলোতে করা যেতে পারে। সর্বোপরি, এটা স্পষ্ট যে, যে-কাজগুলো শেখানো বিষয়বস্তুকে আরও বেশি করে পর্যালোচনা করার সুযোগ করে দেয়, সেগুলো যা শেখা হয় তা আরও ভালভাবে বজায় রাখতে সাহায্য করে. নোট নেওয়ার জন্য আমরা আমাদের নিজের ভাষায় কী পড়ছি তা বোঝার জন্য পাঠ্যটি পুনরায় পড়া এবং বোঝার প্রয়োজন, এইভাবে এটি ধ্রুবক পর্যালোচনা প্রয়োজন। বক্তৃতা গ্রহণ নোট শিক্ষার্থীদের এমন উপাদান সরবরাহ করে যা পর্যালোচনা করার জন্য তাদের বোঝার জন্য লিখিত হয়, প্রদত্ত যে ক্লাসটি নোট গ্রহণের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ সরবরাহ করে।
গল্প ও গল্প বলা
[সম্পাদনা]এমন একটি অভিজ্ঞতার কথা চিন্তা করার চেষ্টা করুন যেখানে একজন শিক্ষক আপনাকে একটি গল্প বলেছিলেন। আমার জন্য, আমি আমার ইঞ্জিনিয়ারিং থার্মোডাইনামিক্স কোর্সের জন্য আমার অধ্যাপকের কথা ভাবছি যা তাপ স্থানান্তর নিয়ে কাজ করে। এই বিশেষ অধ্যাপকও একটি স্থানীয় প্রকৌশল সংস্থার একজন কর্মচারী ছিলেন এবং তিনি সর্বদা তার কর্মক্ষেত্র থেকে গল্পগুলো শ্রেণিকক্ষে নিয়ে আসতেন। যখন আমরা গণনা করতে এক্সেল ব্যবহার করতে শিখছিলাম, তখন আমি স্পষ্টভাবে মনে করতে পারি যে তিনি কীভাবে তার ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থায় এক্সেল ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় সে সম্পর্কে আমাদের স্পষ্টভাবে বলেছিলেন। এটি আমি তার ক্লাসে যা শিখছিলাম তাতে অর্থ এবং প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে এসেছিল। পরে যখন আমি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থায় কাজ করতে গিয়েছিলাম, তখন আমার সেই অধ্যাপকের গল্পটি মনে পড়েছিল যখন আমাকে আমার কাজের জন্য এক্সেল ব্যবহার করতে হয়েছিল। গল্প বলা একটি সাধারণভাবে ব্যবহৃত শেখার / শিক্ষণ কৌশল যা শিক্ষকরা ব্যবহার করেন যা শিক্ষার্থীদের তথ্য এনকোড এবং স্মরণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। গল্প বলার নাম অনুসারে এর অভিধান সংজ্ঞা অনুসারে "গল্প বলা বা লেখা একটি গল্প একটি আখ্যান হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যা বিমূর্ত এবং কংক্রিট ধারণার মধ্যে সংযোগ প্রদান করতে পারে। গল্প এবং আখ্যান শব্দটি একচেটিয়াভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, এবং একটি আখ্যানকে "বলা বা লেখা একটি গল্প" হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যা "ঘটনার ক্রমের পুনর্বিবেচনা"। আখ্যানগুলো সাধারণত নিম্নলিখিত উপাদানগুলো নিয়ে গঠিত: "১) একজন গল্পকার বা বর্ণনাকারী; ২) একটি ভৌগলিক, অস্থায়ী এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট যেখানে গল্পটি সেট করা হয়েছে; ৩) ঘটনার একটি সেট যা একটি নির্দিষ্ট ক্রমে উদ্ভাসিত হয়; ৪) নির্দিষ্ট গুণাবলী সহ একটি শ্রোতা যার জন্য আখ্যানটি কাস্টমাইজ করা উচিত; এবং ৫) গল্পের একটি বার্তা, উদ্দেশ্য বা নৈতিকতা, যা আখ্যানটি বোঝানোর চেষ্টা করছে "। প্রায়শই গল্পগুলো জ্ঞান পাস করতে, কোনও পয়েন্ট বা নৈতিকতা চিত্রিত করতে, কোনও নির্দিষ্ট ঘটনা ব্যাখ্যা করতে বা মানসিক চিত্র তৈরি করতে চিন্তাভাবনা এবং আবেগ ব্যবহার করতে ব্যবহৃত হয়। গল্পের মূল উপাদানগুলোর মধ্যে প্রায়শই "চরিত্র, বস্তু, অবস্থান, প্লট, থিম, আবেগ এবং ক্রিয়া" অন্তর্ভুক্ত থাকে। নিম্নলিখিত বিভাগগুলো আলোচনা করতে যাচ্ছে কেন গল্প বলা একটি কার্যকর শেখার / শিক্ষণ কৌশল কারণ অন্যান্য শেখার উপকরণের তুলনায় গল্পগুলো বোঝা এবং মনে রাখা সহজ।
একটি কার্যকর শেখার / শিক্ষণ কৌশল হিসাবে গল্প বলা
[সম্পাদনা]শেখার কৌশল হিসাবে গল্প বলা ব্যবহার করা শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সুবিধা দেয়। তথ্যের উপস্থাপনার তুলনায় গল্পের ব্যবহার শিক্ষার্থীর মস্তিষ্কে শারীরবৃত্তীয় প্রভাব ফেলে। সাধারণত, তথ্য উপস্থাপনার সময় মস্তিষ্কের ভাষা এবং বোধগম্যতার ক্ষেত্রগুলো জড়িত থাকে। যাইহোক, জ্ঞান উপস্থাপনের জন্য গল্প বলার ব্যবহারের সাথে সাথে মস্তিষ্কের অতিরিক্ত ক্ষেত্রগুলো সহ পাঠ্য, সংবেদন, গন্ধ, রঙ এবং আকারের দৃষ্টি এবং শব্দ জড়িত হয়ে যায়। এই বিস্তৃত মস্তিষ্কের সক্রিয়তা শিক্ষার্থীদের আরও সমৃদ্ধ স্মৃতি তৈরি করতে দেয় যার মধ্যে রঙ, ত্রিমাত্রিক এবং আবেগ সহ চিত্র অন্তর্ভুক্ত থাকে। এছাড়াও, যখন কোনও ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির দ্বারা বলা বাস্তব জীবনের গল্প শোনেন, তখন স্পিকার এবং শ্রোতার মধ্যে ব্যস্ততা বাড়ানোর জন্য মস্তিষ্কে শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটে।
শেখার কৌশল হিসাবে গল্প বলার ব্যবহারের অতিরিক্ত সুবিধার মধ্যে নিম্নলিখিতগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গল্পগুলো যোগাযোগের সবচেয়ে শক্তিশালী রূপ কারণ তারা সামাজিক মূলধন বৃদ্ধি করে এবং বজায় রাখে। মূলধনকে "মানুষের মধ্যে সক্রিয় সংযোগের স্টক: বিশ্বাস, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং ভাগ করা মূল্যবোধ এবং আচরণ যা মানব নেটওয়ার্ক এবং সম্প্রদায়ের সদস্যদের আবদ্ধ করে এবং সমবায় পদক্ষেপকে সম্ভব করে তোলে" হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। একটি শিক্ষাগত প্রসঙ্গে গল্পের ব্যবহার শিক্ষার্থীদের কৌতূহল এবং কল্পনাকেও সমর্থন করে, শেখার আগ্রহকে উদ্দীপিত করে, আলোচনাকে উত্সাহ দেয়, তথ্যকে মানবিক করে, সিদ্ধান্ত গ্রহণকে উত্সাহ দেয় এবং কোর্সের উপাদান মনে রাখার জন্য একটি কাঠামো সরবরাহ করে। জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার সরঞ্জাম হিসাবে ব্যবহৃত হলে গল্প বলা জ্ঞান স্থানান্তরকেও উত্সাহ দেয়। আমি যখন আমার ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যাপকের গল্প এবং কর্মক্ষেত্রে এক্সেল ব্যবহার সম্পর্কে তাঁর গল্পগুলোর কথা চিন্তা করি, তখন আমি দেখতে পাই যে তাঁর গল্পগুলো কীভাবে আমার জ্ঞান স্থানান্তরকে সহায়তা করেছিল। শেখার কৌশল হিসাবে ব্যবহৃত হলে গল্প বলা কীভাবে শেখার এবং জ্ঞান স্থানান্তরকে বাড়িয়ে তোলে তা বোঝার জন্য, পরবর্তী বিভাগটি গল্প এবং গল্প বলার সাথে সম্পর্কিত জ্ঞানীয় তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করে।
গল্প বলার জ্ঞানীয় তত্ত্ব: এনকোডিং এবং স্মরণ (পুনরুদ্ধার)
[সম্পাদনা]এই বিভাগটি কীভাবে গল্প এবং গল্প বলা এনকোডিং, পুনরুদ্ধার এবং প্রাসঙ্গিকভাবে সমৃদ্ধ শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত তা নিয়ে আলোচনা করবে।
এনকোডিং
[সম্পাদনা]ওয়াইয়ার (২০১৪) গল্প বলার শক্তি সম্পর্কে আরও চরম দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করে এবং দাবি করে যে সমস্ত জ্ঞান আসলে গল্প হিসাবে এনকোড করা হয়। (পৃষ্ঠা ২) আখ্যান-ভিত্তিক শিক্ষার গবেষণা শিক্ষার্থীরা কীভাবে গল্পগুলো এনকোড করে সে সম্পর্কে কিছু অন্তর্দৃষ্টি সরবরাহ করে। গ্লেজার এট আল (২০০৯) বলেছেন যে শিক্ষার্থীরা কোনও আখ্যান বা গল্পের বিভিন্ন অংশকে বেছে বেছে এনকোড করতে পারে। এটি শেখার জন্য প্রভাব ফেলেছে যে মূল তথ্যগুলো গল্পের অংশগুলোতে উপস্থাপন করা উচিত যা শিক্ষার্থীরা এনকোড করতে এবং মনে রাখার সম্ভাবনা বেশি। গল্পের এই অংশগুলোর মধ্যে রয়েছে "এক্সপোজিশন দৃশ্য, সমস্যা সমাধানের জন্য নায়কের বিচার এবং ফলাফল"। (পৃষ্ঠা ৪৩৪) প্রদর্শনীর দৃশ্যগুলো গল্পে প্রদত্ত পটভূমির তথ্যকে বোঝায়। নায়ক গল্পের প্রধান বা প্রধান চরিত্র। একটি গল্পের সংবেদনশীল বিষয়বস্তু গল্পের বর্ধিত এনকোডিংয়ের অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুমান করা হয় কারণ শিক্ষার্থীরা আরও মনোযোগ দেয়। গল্পের সংবেদনশীল বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীদের জাগিয়ে তোলে এবং ইতিবাচক বা নেতিবাচক আবেগের সাথে সম্পর্কিত। সংবেদনশীল সামগ্রীর একটি উদাহরণ কিছু সিনেমা বা ডকুমেন্টারিগুলোতে চিত্রিত করা হয়েছে যা পটভূমিতে সংবেদনশীল সংগীত যুক্ত করার সময় মানুষের মুখগুলোতে জুম করে। গল্পের সংবেদনশীল বিষয়বস্তু ব্যস্ততা, আলোচনা, ব্যক্তিগত প্রাসঙ্গিকতার কারণে সত্যতা, চরিত্রগুলোর সাথে সহানুভূতি, প্রত্যাশা এবং বিস্ময় দ্বারা বাড়ানো হয় যা গল্পগুলোতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। (পৃষ্ঠা ২৩) অ-বিশেষজ্ঞ শ্রোতাদের কাছে বিজ্ঞানের যোগাযোগের জন্য আখ্যানগুলো ব্যবহার করার সময়, ডাহলস্ট্রম (২০১৩) বলেছেন যে কোনও আখ্যান এনকোডিংয়ের জ্ঞানীয় পথটি বৈজ্ঞানিক প্রমাণকে এনকোড করতে ব্যবহৃত জ্ঞানীয় পথ থেকে পৃথক। গল্প বা আখ্যানগুলো শব্দার্থিক প্রক্রিয়াকরণ ব্যবহার করে আরও গভীরভাবে এনকোড করা হয়েছে বলে মনে করা হয় কারণ শিক্ষার্থীরা গল্পগুলোতে উপস্থাপিত তথ্যকে আরও ব্যক্তিগতভাবে প্রাসঙ্গিক বলে মনে করে। (পৃষ্ঠা ২১) গল্পগুলো এপিসোডিক মেমরি সিস্টেম দ্বারা এনকোড করারও তাত্ত্বিক করা যেতে পারে কারণ এপিসোডিক মেমরি মাল্টি-মোডাল এবং দর্শনীয়, শব্দ, গন্ধ ইত্যাদির জন্য কোড। শ্রোতা যদি গল্পের নায়কের সাথে সনাক্ত করে তবে এপিসোডিক মেমরিও গল্পটি এনকোড করতে পারে, তাই শ্রোতা তথ্যটি এমনভাবে কোড করবে যেন তারা সরাসরি ঘটনাগুলো অনুভব করছে।
প্রত্যাহার (পুনরুদ্ধার)
[সম্পাদনা]শিক্ষার্থীর শেখার জন্য গল্প বলা ব্যবহার করা হলে স্মরণও উন্নত করা যেতে পারে। শেখার এবং স্মৃতিশক্তিতে সহায়তা করার জন্য গল্প বলার শক্তিটি প্রথম ১৯৬৯ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বোয়ার এবং ক্লার্ক নামে দুজন গবেষক দ্বারা প্রদর্শিত হয়েছিল। বোভার এবং ক্লার্ক (১৯৬৯) আবিষ্কার করেন যে শিক্ষার্থীরা যখন মনে রাখার জন্য শব্দের তালিকার চারপাশে একটি অর্থবহ গল্প তৈরি করে, তখন তারা তাদের কথাগুলো তাদের সমবয়সীদের চেয়ে ভাল স্মরণ করে যারা শব্দগুলো শিখতে কোনও গল্প ব্যবহার করে না। গল্প বলার ব্যবহার শিক্ষার্থীদের থিম্যাটিক সংগঠনের মাধ্যমে শেখার বৃদ্ধি এবং শব্দের বিভিন্ন তালিকার মধ্যে হস্তক্ষেপ হ্রাস করার অনুমতি দেয়। তারা আরও দেখতে পেল যে গল্প বলার ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের তাত্ক্ষণিক এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মরণ ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছিল। শুধুমাত্র তথ্য উপস্থাপনের তুলনায় গল্প বলার ব্যবহারের মাধ্যমে কেন স্মরণ উন্নত করা হয় তার একটি ব্যাখ্যা হলো গল্পগুলো সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে বলে মনে করা হয়। সেরা গল্পগুলো আবেগকে অন্তর্ভুক্ত করে যাতে শিক্ষার্থীরা কল্পনা করতে পারে এবং গল্পের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে পারে। যেহেতু আবেগগুলো নিউরাল অ্যাক্টিভেটর, শিক্ষার্থীরা গল্পটি মনে রাখতে বা স্মরণ করতে পারে কারণ গল্পের সাথে তাদের সংবেদনশীল সমিতি রয়েছে। গল্পের কিছু স্মৃতি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে স্মরণ করা হয় যদি গল্পটি অত্যন্ত আশ্চর্যজনক বা তাৎপর্যপূর্ণ হয়। (পৃষ্ঠা ২২) এই ধরণের স্মরণকে ফ্ল্যাশবাল্ব মেমরি বলা হয় যা এই উইকিবইয়ের অধ্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। পৃ. ২২) গল্পগুলো কেন শিক্ষার্থীদের দ্বারা স্মরণ করা বা পুনরুদ্ধার করা সহজ তার আরেকটি ব্যাখ্যা হলো জ্ঞানটি প্রাথমিকভাবে আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে এনকোড করা হয়। এটি কারণ গল্প বা আখ্যানগুলো শিক্ষার্থীদের যুক্তি সরবরাহ করে যে তারা যা শিখছে তা কেন "বাস্তব জগতে" প্রাসঙ্গিক যা তথ্যটিকে ব্যক্তিগতভাবে প্রাসঙ্গিক করে তোলে। (পৃষ্ঠা ২১) গল্প বা আখ্যান ব্যবহারের মাধ্যমে এই "স্ব-রেফারেন্সিং" শিক্ষকদের দ্বারা সহজতর করা হয় যারা মূল চরিত্র হিসাবে শিক্ষার্থীর সাথে গল্পগুলো ব্যবহার করেন এবং শিক্ষার্থীদের তাদের অভিজ্ঞতাগুলো কীভাবে গল্পের সাথে সম্পর্কিত তা জিজ্ঞাসা করে গল্পের চরিত্রগুলোর সাথে তাদের পার্থক্যগুলোর তুলনা করার সুযোগ দেয়। (পৃষ্ঠা ২২) এই বিভাগের শুরুতে অনুশীলনটি আপনাকে একটি গল্প মনে রাখতে বলেছিল। সম্ভবত গল্পের পাশাপাশি, আপনি গল্পটি যে সামগ্রীর জন্য তৈরি করা হয়েছিল তার বিশদটি স্মরণ করতে পারেন। ঠিক যেমন আমার মনে আছে যে আমার ইঞ্জিনিয়ারিং প্রফেসর তার কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে একটি গল্প দিয়েছিলেন, এবং তারপরে আমি স্মরণ করেছিলাম যে এই পাঠটি আমাদের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থায় কাজ করার জন্য এক্সেল শেখার একটি বড় প্রয়োজন রয়েছে। এই গল্পটি ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে প্রাসঙ্গিক ছিল কারণ আমি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থায় কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে চেয়েছিলাম।
প্রাসঙ্গিকভাবে সমৃদ্ধ শিক্ষা
[সম্পাদনা]প্রাসঙ্গিকভাবে সমৃদ্ধ শেখার পদ্ধতি হিসাবে আখ্যান বা গল্পগুলো বোঝা গল্প বলার জন্য জ্ঞানের এনকোডিং এবং পুনরুদ্ধার ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করে। গল্প বা আখ্যানগুলো প্রাসঙ্গিকভাবে সমৃদ্ধ শিক্ষার জন্য একটি পদ্ধতি হিসাবে বিবেচিত হয় যার মধ্যে "সত্যতা, ক্রিয়াকলাপ, সমস্যা সমাধান, সহযোগিতা, আলোচনা, তুলনা এবং বৈসাদৃশ্য" এর কিছু সংমিশ্রণ জড়িত (পৃষ্ঠা ১২ প্রাসঙ্গিকভাবে সমৃদ্ধ শিক্ষা এছাড়াও "শিক্ষার্থীদের মেমরিতে নতুন জ্ঞানকে আরও ভালভাবে এনকোড করতে সহায়তা করতে পারে এবং সেইসাথে কীভাবে এই পরিস্থিতিতে সেই জ্ঞানটি আরও ভালভাবে পুনরুদ্ধার করা যায়" (পৃষ্ঠা ১২)। শেখার জন্য আখ্যানের ব্যবহার এনকোডিং এবং পুনরুদ্ধারকে সমর্থন করে কারণ আখ্যানগুলো শিক্ষার্থীদের জ্ঞান সংগঠিত করতে সহায়তা করার জন্য একটি কাঠামো সরবরাহ করে। গল্পগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য সামগ্রী সংগঠিত করতে সহায়তা করে কারণ তাদের "অনুমানযোগ্য প্লট, চরিত্র, উপাদান এবং রেজোলিউশন" (পৃষ্ঠা ২১)। গল্পগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য যে খাঁটি প্রসঙ্গটি প্রচার করে তা তাদের "কেবল বিশ্বের সাথে মিথস্ক্রিয়া থেকে শিক্ষার্থীদের যে মানসিক মডেলগুলো রয়েছে তার সাথে মেলে" (পৃষ্ঠা ২১) এটি শিক্ষার্থীকে গল্প হিসাবে উপস্থাপিত তথ্যের স্মরণে সহায়তা করে যা তাদের শেখার উন্নতি করে (পৃষ্ঠা ২১)।
শিক্ষণ এবং শেখার জন্য গল্প বলার উদাহরণ
[সম্পাদনা]শিক্ষাদান ও শেখার ক্ষেত্রে গল্প বলার উদাহরণ
[সম্পাদনা]জ্ঞান ধারণ ও স্মরণ করার প্রক্রিয়ায় গল্প বা বর্ণনার ব্যবহার শিক্ষার্থীদের শেখার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে, তাই শিক্ষকদের জন্য গল্প বলার কৌশল কীভাবে প্রয়োগ করা যায় তা বোঝা জরুরি।[২৭][২৮][২৯] চকবোর্ড, ওভারহেড প্রজেক্টর বা পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপনার মতো প্রযুক্তি ব্যবহারের আগে শিক্ষকরা "গল্পের মাধ্যমে তাদের জ্ঞান ভাগাভাগি করতেন" [২৯] (পৃ. ১)। শিক্ষকরা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, চলমান বা ঐতিহাসিক ঘটনা, কল্পকাহিনি, পাঠ্যপুস্তক ইত্যাদি থেকে গল্প ব্যবহার করতে পারেন।[২৯] কেস স্টাডি, ভূমিকাভিনয় বা এমনকি শিক্ষার্থীদের নিজেদের গল্প বলতেও উৎসাহিত করে গল্প বলা শ্রেণিকক্ষে আনা যেতে পারে।[২৯] আজও শিক্ষকরা এই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তবে বর্তমানে গল্প বলার আরও আধুনিক পদ্ধতি রয়েছে যা শিক্ষাদান ও শেখার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। চলচ্চিত্র ও ওয়েবসাইট ছাড়াও, [২৯] শেখার জন্য ব্যবহৃত গেম বা ডিজিটাল গেমগুলোতেও গল্প বলার উপাদান থাকে। গল্পের আবেগ শিক্ষার্থীদের তথ্য ধারণ ও পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে বলে এই আবেগের উপাদানগুলো গেমেও ব্যবহৃত হয়। প্রেন্সকি (২০০১) এর মতে, গেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো গেমে উপস্থাপনা ও গল্প থাকে যা আবেগ সৃষ্টি করে। গল্প বলার আরেকটি আধুনিক পদ্ধতি হলো ডিজিটাল স্টোরিটেলিং [৩০]। রুল (২০১০) ডিজিটাল স্টোরিটেলিং-এর জন্য নিম্নলিখিত সংজ্ঞা দিয়েছেন[৩১]: "ডিজিটাল স্টোরিটেলিং হলো প্রাচীন গল্প বলার শিল্পের আধুনিক রূপ। ডিজিটাল গল্পগুলো তাদের শক্তি পায় ছবি, সংগীত, বর্ণনা ও কণ্ঠ একত্রে মিশিয়ে চরিত্র, পরিস্থিতি, অভিজ্ঞতা ও অন্তর্দৃষ্টি গভীর ও প্রাণবন্তভাবে উপস্থাপন করে" (পৃ. ১)।
স্টোরিসেন্টারের প্রতিষ্ঠাতার মতে, ডিজিটাল স্টোরিটেলিং হলো "ব্যক্তিগত গল্প সংগ্রহ করে ছোট ছোট মিডিয়া ক্লিপে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া" [৩২](পৃ. ১)। ডিজিটাল গল্পগুলোকে মাল্টিমিডিয়ার একটি রূপ হিসেবে বিবেচনা করা হয় কারণ এতে একাধিক মাধ্যম ব্যবহৃত হয়।[৩১] ডিজিটাল গল্প সাধারণত "আপনি যা শুনছেন এবং যা দেখছেন" এই দুই উপাদানে গঠিত এবং এই দুটি উপাদানকে একত্রিত করে আরেকটি তৃতীয় মাধ্যম তৈরি হয়।[৩১] দৃশ্যের মধ্যে ভিডিও ও স্থিরচিত্র এবং শব্দে কথ্য বর্ণনা, শব্দ প্রভাব ও সঙ্গীত অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।[৩১] শব্দ ও দৃশ্যের সৃজনশীল সংমিশ্রণেই ডিজিটাল গল্পের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।
রুল (২০১০) বলেন[৩১]:
"চরিত্র, পরিস্থিতি ও অভিজ্ঞতাকে গভীর ও প্রাণবন্ত করে তোলা যায় এই সৃজনশীল সিদ্ধান্তগুলোর মাধ্যমে—যে ছবিগুলো একে অপরের পাশে বসানো হয়েছে, কোন ট্রানজিশন ব্যবহার করা হয়েছে এবং কতক্ষণ ধরে, এবং কোন অডিও ট্র্যাকগুলো একে অপরের সঙ্গে ওভারল্যাপ করেছে ফলে কণ্ঠ ও শব্দ মিশে গেছে" (পৃ. ১)।
ডিজিটাল গল্প সাধারণত প্রথম পুরুষ (I) ব্যবহার করে বলা হয়। "সে, তারা, এটি" ইত্যাদি তৃতীয় পুরুষ সাধারণত ব্যবহৃত হয় না [৩১]। এতে শিক্ষার্থী গল্পের মূল চরিত্র হিসেবে নিজেকে কল্পনা করতে পারে।
ল্যামবার্ট (২০১০) ডিজিটাল স্টোরি তৈরি করার জন্য নিম্নলিখিত ধাপগুলো নির্ধারণ করেছেন[৩২]:
- আপনার অন্তর্দৃষ্টি আত্মস্থ করা
- গল্পকারদের তাদের গল্প আসলে কী নিয়ে তা খুঁজে বের ও পরিষ্কার করতে হবে (পৃ. ১৪)
- গল্পটির অর্থও পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করতে হবে
- আপনার আবেগ আত্মস্থ করা
- গল্পকারদের তাদের গল্পের আবেগীয় অনুরণন সম্পর্কে সচেতন হতে হবে (পৃ. ১৭)
- গল্পের আবেগ শনাক্ত করে গল্পে কোন আবেগ থাকবে ও কীভাবে তা উপস্থাপন করা হবে তা নির্ধারণ করতে হবে (পৃ. ১৭)
- মুহূর্তটি খুঁজে বের করা
- সাধারণত ব্যক্তির জীবনের পরিবর্তনের মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত
- আপনার গল্প দেখা
- গল্পে ব্যবহৃত ছবির মতো ভিজ্যুয়াল ভাবা, বিশেষ প্রভাব যুক্ত করা
- আপনার গল্প শোনা
- গল্পকারের রেকর্ডকৃত বর্ণনা, কণ্ঠস্বরের ধরণ, শব্দ স্তর, সঙ্গীত বা পরিবেশগত শব্দ
- আপনার গল্প সাজানো
- স্ক্রিপ্ট ও স্টোরিবোর্ড রচনা করা
- আপনার গল্প ভাগ করে নেওয়া
- শ্রোতা
সরলভাবে বললে, ডিজিটাল স্টোরিটেলিং একটি বর্ণনাভিত্তিক পদ্ধতি যা সহজ মিডিয়া প্রযুক্তি ব্যবহার করে সংক্ষিপ্ত চলচ্চিত্র তৈরি করে। ডিজিটাল স্টোরিটেলিং বনাম মুখে বলা বা লেখিত গল্প বলার মাধ্যমে তথ্য ধারণ ও পুনরুদ্ধার নিয়ে গবেষণা খুব বেশি হয়নি। কাটুসচাকোভা (২০১৫) দেখিয়েছেন যে ডিজিটাল স্টোরিটেলিং প্রচলিত গল্প বলার মতোই জ্ঞান হস্তান্তরের সুবিধা দেয়।[৩৩] তিনটি ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের স্নাতক শিক্ষার্থীদের একটি জ্ঞান ব্যবস্থাপনা বিষয় শেখানো হয়েছিল—একটি গ্রুপকে পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপনা, একটি গ্রুপকে মৌখিক গল্প এবং অপর গ্রুপকে একই গল্প ডিজিটাল স্টোরির মাধ্যমে।[৩৩] প্রাক-পরীক্ষা ও পরবর্তী পরীক্ষার ফল অনুযায়ী, মৌখিক অথবা ডিজিটাল গল্প ব্যবহার করে যাদের শেখানো হয়েছিল, তাদের জ্ঞান হস্তান্তরের হার ছিল পাওয়ারপয়েন্ট গ্রুপের সমান।[৩৩] জ্ঞান হস্তান্তর বলতে বোঝানো হয়েছে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল গল্পে থাকা তথ্য মনে রাখতে পারার ক্ষমতা। ডিজিটাল স্টোরি শিক্ষার্থীদের নিজেদেরকে গল্পের মধ্যে রাখার সুযোগও দেয় এবং এতে প্রায়শই আবেগীয় উপাদান থাকে। যেহেতু ডিজিটাল গল্প মাল্টিমিডিয়ার একটি রূপ, তাই শেখার উপকরণ ডিজাইনের সময় মাল্টিমিডিয়া নীতিগুলো অনুসরণ করা উচিত যাতে অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমে। এই নীতিগুলোর মধ্যে রয়েছে রিডান্ডেন্সি (একই সময়ে বর্ণনাযুক্ত অ্যানিমেশনের সঙ্গে পর্দায় লেখা না দেখানো) এবং টেম্পোরাল কনটিগুইটি (বর্ণনা ও অ্যানিমেশন একই সঙ্গে উপস্থাপন করা)।[৩৪]
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রাসঙ্গিকতার ভিত্তিতে বিভিন্নভাবে ডিজিটাল গল্প ব্যবহার করতে পারে। আগে থেকে তৈরি ডিজিটাল গল্প ব্যবহার করে বিষয়বস্তু শেখানো বর্তমানে গণিত, বিজ্ঞান, শিল্পকলা, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাশাস্ত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে।[৩৫] গণিত ও জ্যামিতি শ্রেণিতে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্য ছোট ডিজিটাল গল্প বাজিয়ে তা থেকে শেখার সুযোগ করে দেন।[৩৬] এই শ্রেণিতে ব্যবহৃত ডিজিটাল গল্পগুলো ভগ্নাংশ শেখানোর পাঠে অন্তর্ভুক্ত ছিল [৩৬]। যদিও ডিজিটাল গল্প ব্যবহারের ফলে গণিত পারফরম্যান্সে উল্লেখযোগ্য উন্নতি পাওয়া যায়নি, তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভগ্নাংশ শেখার আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।[৩৬] এই গল্পগুলোর বিষয়বস্তু কী এবং কীভাবে তা শেখার লক্ষ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত—তা ভেবে দেখা দরকার। আরেকটি উদাহরণ হলো—রোগীদের তৈরি ডিজিটাল গল্প নার্সিং শিক্ষার্থীরা দেখে রোগীদের প্রতি সহানুভূতি গড়ে তুলতে পারে।[৩৭] শিক্ষার্থীরা নিজেরাও ডিজিটাল গল্প তৈরি করতে পারে, হয় নিজের জীবনের গল্প বলতে অথবা কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা ব্যাখ্যা করতে।[৩৫] তারা Windows Movie Maker, iMovie অথবা WeVideo-এর মতো ভিডিও সম্পাদনার সফটওয়্যার ব্যবহার করে নিজের ডিজিটাল গল্প তৈরি করতে পারে।
শব্দকোষ
[সম্পাদনা]- কনফাবুলেশন
- অনিচ্ছাকৃত মনগড়া ঘটনা নিজের চেতনায় বাস্তব স্মৃতি হিসেবে ফুটে ওঠে।
- বিতরণ অনুশীলন
- একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অধ্যয়ন সেশন যা সময়ের সাথে নিয়মিত সঞ্চালিত হয় (উদাঃ, বেশ কয়েক সপ্তাহ বা বছর ধরে একটি দক্ষতা উন্নত করার জন্য কাজ করা)।
- বিস্তৃত রিহার্সাল
- অন্যান্য তথ্যের সাথে শিখতে হবে এমন তথ্য সম্পর্কিত।
- এনকোডিং
- শিক্ষার্থীর দীর্ঘমেয়াদী মেমরিতে সঞ্চয়ের জন্য স্বল্পমেয়াদী মেমরি থেকে তথ্য স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া।
- এপিসোডিক মেমোরি
- ব্যক্তিগতভাবে তারিখযুক্ত, আত্মজীবনীমূলক অভিজ্ঞতার সঞ্চয় এবং পুনরুদ্ধার।
- বহিরাগত প্রেরণা
- পুরষ্কার এবং পুরষ্কারের মতো বাইরের বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে একটি কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য একটি ড্রাইভ।
- আলঝেইমার রোগ
- মস্তিষ্কের প্রগতিশীল অবক্ষয় দ্বারা চিহ্নিত এক ধরণের ডিমেনশিয়া।
- অন্তর্নিহিত স্মৃতি
- স্মৃতি ধরে রাখার একটি স্বয়ংক্রিয় এবং অচেতন উপায়।
- অন্তর্নিহিত প্রেরণা
- ব্যক্তিগত আগ্রহ বা বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে কোনও কাজ শেষ করার জন্য একটি ড্রাইভ।
- শেখার কৌশল
- কৌশলগুলো, যা শিক্ষার্থী আরও দক্ষতার সাথে মনে রাখার জন্য উপাদানগুলোতে প্রয়োগ করতে পারে।
- রিহার্সাল রক্ষণাবেক্ষণ
- স্বল্পমেয়াদী মেমরিতে এটি সক্রিয় রাখার জন্য তথ্য বারবার রিহার্সাল দেওয়া হয়।
- গণ অনুশীলন
- অনুশীলন করুন যেখানে শিক্ষার্থীরা কোনও কাজে কাজ করার এককালীন নিবিড় প্রচেষ্টা করে (যেমন, রাতারাতি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করা)।
- স্মৃতিবিদ্যা
- কৌশলগুলো অধ্যয়ন করুন, যা শিক্ষার্থীদের তথ্য ধরে রাখা এবং পুনরুদ্ধারে সহায়তা করে।
- প্রেরণা
- আচরণ এবং চিন্তাভাবনা যা ব্যক্তিদের সম্পাদন করতে চালিত করে।
- পূর্ব জ্ঞান
- একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে ঘিরে একজন শিক্ষার্থীর প্রাক-বিদ্যমান জ্ঞান রয়েছে।
- পুনর্গঠনমূলক স্মৃতি
- যেভাবে প্রত্যাহার প্রক্রিয়াটি দীর্ঘমেয়াদী মেমরিতে থাকা সীমিত মূল বিবরণের ভিত্তিতে একজনের ভাণ্ডারে সাধারণ এবং ডোমেন নির্দিষ্ট জ্ঞানের ভিত্তিতে তৈরি করে তথ্য পুনরায় একত্রিত করে।
- পুনরুদ্ধার
- মস্তিষ্কে এনকোড হয়ে গেলে তথ্য পুনরায় অ্যাক্সেস করার প্রক্রিয়াকীওয়ার্ড পদ্ধতি:'
অ্যাসোসিয়েটিভ উপাদান রয়েছে এমন উপকরণগুলো মনে রাখার জন্য একটি দ্বি-পর্যায়ের পদ্ধতি।
- স্ক্যাফোল্ডিং
- লেভ ভাইগটস্কি প্রথম একটি প্রক্রিয়া এগিয়ে রেখেছিলেন, যেখানে শিক্ষার্থীদের তাদের শেখার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তাদের নিজস্ব গতিতে ধাপে ধাপে সমর্থন করা হয়।
- স্কিম
- মানসিক কাঠামো যা জ্ঞানকে সংগঠিত করতে সহায়তা করে।
- সিলেক্টিভ মেমরি
- নেতিবাচক স্মৃতিগুলোর সক্রিয় দমন, বা ইতিবাচক স্মৃতিগুলোতে সক্রিয় ফোকাস।
- স্ব-নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা
- শেখা যা শিক্ষার্থীকে তাদের নিজস্ব গতি নিয়ন্ত্রণ করার স্বাধীনতা দেয়।
- শব্দার্থিক স্মৃতি
- সাধারণ ধারণা এবং নীতি এবং তাদের মধ্যে সমিতির স্মৃতি।
- পরীক্ষার প্রভাব
- পরীক্ষা নেওয়া তথ্য শেখার এবং ধরে রাখার উপর যে প্রভাব ফেলে।
- প্রক্সিমাল ডেভেলপমেন্টের অঞ্চল
- যে সময়ে শিক্ষার্থীরা উপাদান শিখতে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা এবং সক্ষম হয় এবং তারা এই সময় থেকে আরও এগিয়ে যায়, এটি শেখা আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
প্রস্তাবিত পাঠ
[সম্পাদনা]মাল্টিমিডিয়া শিক্ষায় আত্ম-ব্যাখ্যার নীতি।
Wylie, R., & Chi, M. H. (2014)। মাল্টিমিডিয়া শিক্ষায় আত্ম-ব্যাখ্যার নীতি। In R. E. Mayer, R. E. Mayer (Eds.), The Cambridge handbook of multimedia learning (2nd ed.) (pp. 413-432)। নিউ ইয়র্ক, NY, US: ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। doi:10.1017/CBO9781139547369.021 Siegler
শিক্ষক-শিক্ষার্থী পারস্পরিক যোগাযোগ, শিক্ষার্থীদের সামাজিক দক্ষতা এবং শ্রেণিকক্ষের প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের আবেগগত ও আচরণগত সমস্যার প্রভাব।
Poulou, M. (2014)। শিক্ষক-শিক্ষার্থী পারস্পরিক যোগাযোগ, শিক্ষার্থীদের সামাজিক দক্ষতা এবং শ্রেণিকক্ষের প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের আবেগগত ও আচরণগত সমস্যার প্রভাব। Br Educ Res J ব্রিটিশ এডুকেশনাল রিসার্চ জার্নাল, খণ্ড 40(6), 986-1004। http://dx.doi.org/10.1002/berj.3131
Mayer, R. E. (1980)। প্রযুক্তিগত পাঠ্যবস্তুর অর্থবোধকতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাখ্যামূলক কৌশল: শিক্ষণ কৌশল অনুমানের একটি পরীক্ষামূলক মূল্যায়ন। Journal Of Educational Psychology, 72(6), 770-784। doi:10.1037/0022-0663.72.6.770
K-W-L: একটি শিক্ষণ মডেল যা ব্যাখ্যামূলক পাঠ্য পাঠে সক্রিয় পাঠাভ্যাস গড়ে তোলে।
Ogle, D. (1986)। K-W-L: একটি শিক্ষণ মডেল যা ব্যাখ্যামূলক পাঠ্য পাঠে সক্রিয় পাঠাভ্যাস গড়ে তোলে। Reading Teacher, 39(6), 564-570। http://dx.doi.org/10.1598/RT.39.6.11
তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিশুদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী গ্রীষ্মকালীন পাঠাভ্যাসে সহায়তা: একটি পরীক্ষামূলক গবেষণা।
Kim, J. S., & White, T. G. (2008)। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিশুদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী গ্রীষ্মকালীন পাঠাভ্যাসে সহায়তা: একটি পরীক্ষামূলক গবেষণা। Scientific Studies of Reading, Scientific Studies of Reading, 12(1), 1-23।
স্মৃতি ও স্মৃতিচারণ
Bartlett, R.H. (1932)। Remembering: A Study in Experimental and Social Psychology. ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস।
Irish, M., Lawlor, B. A., Coen, R. F., & O'Mara, S. M. (2011)। স্মৃতিভ্রষ্ট হালকা জ্ঞানীয় ব্যাঘাতে দৈনন্দিন পর্বিক স্মৃতি: একটি প্রাথমিক অনুসন্ধান। BMC Neuroscience, 12 doi:10.1186/1471-2202-12-80
Lanciano, T., Curci, A., Mastandrea, S., & Sartori, G. (2013)। স্বয়ংক্রিয় মানসিক সংযোগ কি ফ্ল্যাশবাল্ব স্মৃতি শনাক্ত করতে পারে? Memory, 21(4), 482-493।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ১.০০ ১.০১ ১.০২ ১.০৩ ১.০৪ ১.০৫ ১.০৬ ১.০৭ ১.০৮ ১.০৯ Bruning, R., & Schraw, G. (2011). Cognitive psychology and instruction (5th ed.). Pearson Education.
- ↑ ২.০ ২.১ ২.২ ২.৩ ২.৪ ২.৫ ২.৬ Putnam, A. L. (2015). Mnemonics in education: Current research and applications. Translational Issues In Psychological Science, 1(2), 130-139. doi:10.1037/tps0000023
- ↑ Bakker, J., & Simpson, C. (2011). Mnemonic Strategies: Success for the Young-Adult Learner. Human Resource and Adult Learning, 7(2).
- ↑ ৪.০ ৪.১ ৪.২ ৪.৩ ৪.৪ ৪.৫ ৪.৬ ৪.৭ ৪.৮ Bjork, E., Kornell, N., Storm, B., Yue, C (2015). Highlighting and its relation to distributed study and students' metacognitive beliefs. Educational Psychology Review, 27(1), 69-78. http://dx.doi.org/10.1007/s10648-014-9277-z
- ↑ ৫.০ ৫.১ ৫.২ Den Elzen-Rump, V., Leopold, C., Leutner, D (2007). Self-regulated learning with a text-highlighting strategy: A training experiment. Journal of Psychology, 215(3), 174-182. http://dx.doi.org/10.1027/0044-3409.215.3.174
- ↑ ৬.০ ৬.১ ৬.২ ৬.৩ ৬.৪ Galli, G. (2014). What makes deeply encoded items memorable? Insights into the levels of processing framework from neuroimaging and neuromodulation. Frontiers In Psychiatry, 5doi:10.3389/fpsyt.2014.00061
- ↑ Nyberg L. Imaging episodic memory: Implications for cognitive theories and phenomena. Memory [serial online]. September 1999;7(5-6):585-597. Available from: PsycINFO, Ipswich, MA. Accessed December 7, 2015.
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Bruning20112
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ৯.০ ৯.১ Van Blankenstein, F. M., Dolmans, D. M., Van der Vleuten, C. M., & Schmidt, H. G. (2013). Relevant prior knowledge moderates the effect of elaboration during small group discussion on academic achievement. Instructional Science, 41(4), 729-744. doi:10.1007/s11251-012-9252-3
- ↑ ১০.০ ১০.১ ১০.২ ১০.৩ Ogle, D. (1986) K-W-L: A teaching model that develops active reading of expository text. Reading Teacher, 39(6), 564-570. http://dx.doi.org/10.1598/RT.39.6.11
- ↑ ১১.০ ১১.১ ১১.২ ১১.৩ ১১.৪ Tok, S. (2013). Effects of the Know-Want-Learn strategy on students’ mathematics achievement, anxiety and metacognitive skills. Metacognition and Learning, 8(2), 193-212. http://dx.doi.org/10.1007/s11409-013-9101-z
- ↑ ১২.০ ১২.১ ১২.২ Blunt, J (2014). Learning with retrieval-based concept mapping. Journal of Educational Psychology, 106(3), 849-858. http://dx.doi.org/10.1037/a0035934
- ↑ Hung, S., Ku, D., Shih, J (2014). The integration of concept mapping in a dynamic assessment model for teaching and learning accounting. Journal of Educational Technology & Society, 17(1), 141-153.
- ↑ ১৪.০ ১৪.১ Liu, P (2014). Using eye tracking to understand learners' reading process through the concept-mapping learning strategy. Computers & Education, 78, 237-249. http://dx.doi.org/10.1016/j.compedu.2014.05.011
- ↑ ১৫.০০ ১৫.০১ ১৫.০২ ১৫.০৩ ১৫.০৪ ১৫.০৫ ১৫.০৬ ১৫.০৭ ১৫.০৮ ১৫.০৯ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Bruning20113
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ১৬.০ ১৬.১ Bartlett, F.C. (1932). Remembering: A Study in Experimental and Social Psychology. Cambridge University Press.
- ↑ Nalbantian, edited by Suzanne; Matthews, Paul M., McClelland, James L. (2010). The memory process : neuroscientific and humanistic perspectives. Cambridge, Mass.: MIT Press. ISBN 978-0-262-01457-1.
- ↑ ১৮.০ ১৮.১ ১৮.২ ১৮.৩ ১৮.৪ ১৮.৫ ১৮.৬ Robin, J., Wynn, J., & Moscovitch, M. (2016). The spatial scaffold: The effects of spatial context on memory for events. Journal Of Experimental Psychology: Learning, Memory, And Cognition, 42(2), 308-315.
- ↑ ১৯.০০ ১৯.০১ ১৯.০২ ১৯.০৩ ১৯.০৪ ১৯.০৫ ১৯.০৬ ১৯.০৭ ১৯.০৮ ১৯.০৯ ১৯.১০ ১৯.১১ ১৯.১২ ১৯.১৩ ১৯.১৪ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Bruning20114
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ২০.০ ২০.১ Irish, M., Lawlor, B. A., Coen, R. F., & O'Mara, S. M. (2011). Everyday episodic memory in amnestic mild cognitive impairment: A preliminary investigation. BMC Neuroscience, 12doi:10.1186/1471-2202-12-80
- ↑ ২১.০ ২১.১ Lanciano, T., Curci, A., Mastandrea, S., & Sartori, G. (2013). Do automatic mental associations detect a flashbulb memory?. Memory, 21(4), 482-493.
- ↑ ২২.০ ২২.১ de Jonge, M., Tabbers, H. K., & Rikers, R. P. (2014). Retention beyond the threshold: Test-enhanced relearning of forgotten information. Journal Of Cognitive Psychology, 26(1), 58-64. doi:10.1080/20445911.2013.858721
- ↑ ২৩.০ ২৩.১ Rohrer, D., & Taylor, K. (2006). The effects of overlearning and distributed practise on the retention of mathematics knowledge. Applied Cognitive Psychology, 20(9), 1209-1224. doi:10.1002/acp.1266
- ↑ Mumford, M. D., & Constanza, D. P. (1994). Influence of abilities on performance during practice: Effects of massed and distributed practice. Journal Of Educational Psychology, 86(1), 134.
- ↑ ২৫.০ ২৫.১ Liu, K. Y., Chan, C. H., Lee, T. C., & Hui-Chan, C. Y. (2004). Mental imagery for relearning of people after brain injury. Brain Injury, 18(11), 1163-1172. doi:10.1080/02699050410001671883
- ↑ Rawson, K., Dunlosky, J., & Sciartelli, S. (2013). The Power of Successive Relearning: Improving Performance on Course Exams and Long-Term Retention. Educational Psychology Review, 25(4), 523-548. doi:10.1007/s10648-013-9240-4
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Andrews20102
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Glaser20092
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ ২৯.০ ২৯.১ ২৯.২ ২৯.৩ ২৯.৪ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Green20042
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Prensky, M. (2001). Digital game¬-based learning. New York: McGraw Hill
- ↑ ৩১.০ ৩১.১ ৩১.২ ৩১.৩ ৩১.৪ ৩১.৫ Rule, L. (2010). DIGITAL STORYTELLING: Never Has Storytelling Been So Easy or So Powerful. Knowledge Quest, 38(4), 56-57.
- ↑ ৩২.০ ৩২.১ Lambert, J. (2010). Digital Storytelling Cookbook: January 2010. Digital Diner Press
- ↑ ৩৩.০ ৩৩.১ ৩৩.২ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Katuscáková20152
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Mayer, R. E. (2008). Applying the science of learning: evidence-based principles for the design of multimedia instruction. American Psychologist,63(8), 760.
- ↑ ৩৫.০ ৩৫.১ Robin, B. R. (2008). Digital storytelling: A powerful technology tool for the 21st century classroom. Theory into practice, 47(3), 220-228.
- ↑ ৩৬.০ ৩৬.১ ৩৬.২ Petrucco, C., De Rossi, M., & Personeni, F. (2013). Digital Storytelling as a new meaningful teaching/learning strategy for mathematics and geometry.Learning & Teaching with Media & Technology, 503.
- ↑ Stenhouse, R., Tait, J., Hardy, P., & Sumner, T. (2013). Dangling conversations: reflections on the process of creating digital stories during a workshop with people with early‐stage dementia. Journal of psychiatric and mental health nursing, 20(2), 134-141.